![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্তিযুদ্ধ ও তার পরবর্তী সময়ের বাংলাদেশ এর রাজনৈতিক ইতিহাস আমার একটা প্রিয় বিষয়। আদার ব্যাপারীর জাহাজের খবরের মত প্রায়ই এই বিষয়ে একটু খুঁচানোর অভ্যাসটা বরাবরের। একটা বড় কারণ হল নিজেকে জানা, এবং তারচেও বড় কারণ হল আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসটা এত বেশি নাটুকে, এত বেশি controversial যে তার যেকোনো একটা ঘটনা আমাকে ১০ টা মুভি দেখার উত্তেজনা দেয়।
যাই হোক, আজকে নিজের সংগ্রহ থেকে কিছু ভিডিও বের করলাম। ভিডিও এর আলোচনায় প্রথমেই থাকছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, তার ৭১ এর সময়, পরবর্তীতে যাব তার দেশে ফেরার পর দেশ পরিচালনা এবং হত্যা সম্পর্কিত আলোচনায়। ষড়যন্ত্রের পিছনের মানুষগুলোর যুক্তিকেও আমার কাছে মনে হয় গুরুত্তপূর্ণ। তার আগে নিজের এই বিষয়ে এখন পর্যন্ত ধারনার কথা বলার লোভ সাম্লাতে পারছিনা।
পরিচিত গণ্ডিতে আমি প্রায় ই মোটামুটি গালি খেয়ে বিপর্যস্ত হই, বঙ্গবন্ধু কে সম্পূর্ণ ভাবে পারফেক্ট না শিকার করতে পারায়। তকে নিয়ে আমার বেশ কিছু প্রশ্ন আছে। সাংবাদিক অরিয়ানা ফাল্লাচি তার বঙ্গবন্ধুর সাথে সাক্ষাতকার এর বর্ণনায় যে প্রশ্নগুলি তুলেছেন, আমার নিজেরও সেই একি কথা মনে হয়। যদিও, অরিয়ানা ফাল্লাচি কে আমার বাড়াবাড়ি মনে হয়, সত্য কে দেখার চাইতে তিনি নিজের প্রতি আচরন কেই বেশি গুরুত্ত দিয়েছেন, এবং নিজের সাথে হওয়া ব্যাবহার কে সারা দেশের প্রতি ব্যাবহার বলে চালানর চেষ্টা করেছেন। এখন জামাতি রা নানা সময়ে তার রেফারেন্স দেন, যার সবটা সত্যি ভাবার কোন কারণ নাই। কেননা বঙ্গবন্ধু কে যেমন অরিয়ানা ফাল্লাচি ঘৃণা করেন, তেমনি ভালবেসেছেন ডেভিড ফ্রসট বা পিটার জেনিংস; উনারা তো আর তখন অজ এর সবুজ চশমা পড়ে ছিলেন না। অরিয়ানা ফাল্লাচি এর ইন্টার্ভিউ কে পুঁজি করে জামাত এবং বিএনপি পন্থিদের একটি ভিডিও আছে। চাইলে দেখতে পারেন।
http://www.youtube.com/watch?v=atEXu_BEhK0 – Sheikh Mujibur Rahman behind the mask with Oriana fallacy. (আগেই বলে রাখি, এ ভিডিও তে বেশিরভাগটাই বাহুল্য দোষে দুষ্ট, অরিয়ানা ফাল্লাচি কে তার নিজের সতীর্থ রাই একারনে দুষেছেন বারবার।আর জামাত-বিএনপি পন্থিরা যখন বঙ্গবন্ধুর উপরে একটি ডকুমেনটারি তৈরি করবেন, তখন নিশ্চিতভাবেই তারা কিছু fabrication আনবেন।)
মাথায় নেগেটিভ চিন্তা এসে থাকলে, এবার কিছু ভিডিও এর কথা বলব, যা আবার আপনাকে উল্টো করে ভাবাবে।
http://www.youtube.com/watch?v=hXZahA8D7JE –Sheikh Mujibur Rahman with David frost. His emotion on war.
Click This Link -interview of Mr. David frost with sheikh Hasina on her father.
তারপরও কিছু প্রশ্ন যা আমার মাথায় আসে, তা না করে পারছিনা। প্রথমত, প্রশ্নবিদ্ধ ২৫শে মার্চ এর সময়ের বঙ্গবন্ধু এর ভুমিকা। ৭ ই মার্চ এর বিখ্যাত ভাষণ দিয়ে, বঙ্গবন্ধু যখন সারা দেশ এর মানুষ কে উদ্ভুদ্দ করছেন সংগ্রাম এর জন্য, সেটা কি অধিকারের সংগ্রাম, না স্বাধীনতার সংগ্রাম। উনি বলছেন স্বাধীনতার সংগ্রাম, কিন্তু ২৫ শে মার্চ এর বিকাল বেলাতেও সাংবাদিকদের উনি বলছেন, উনি স্বাধীনতা চান না, অধিকার চান নিজের দেশের মানুষের। তখনও পর্যন্ত উনি বলছেন উনাকে ক্ষমতায় বসালেই সেটা সম্ভব।
http://www.youtube.com/watch?v=tHx9qmLhmro - Sheikh Mujibur Rahman on 25th march afternoon.
৭ই মার্চ এর ভাষণ নিয়েও আছে বিতর্ক। শুনেছি, এই ভাষণ টা তিনি দিএছিলেন বামপন্থি ও ছাত্র দলনেতাদের চাপ এ পরে। স্বাধীনতার আন্দোলন এর স্পষ্ট ঘোষণা দাওয়ার কথাও ছিল ঐ দিন ই। কিন্তু উনি করেননি সেটা, অসহযোগ আন্দোলন এর ডাক দিয়েছিলেন। যদিও আমার কাছে উল্লেখ্য কোন রেফারেন্স নাই এই মুহূর্তে।
কেউ কেউ বলতে পারেন, একটা দেশের মানুষ কে এত সহজে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়া যায়না। অবশ্যই যায়না, কিন্তু কখন? সারাদেশের মানুষ বুঝতে পারছেন, পাকিস্তানি নেতারা আলোচনা করতে আসেননি পূর্ব পাকিস্তানে। আলোচনা করার জন্য এত সৈন্য, এত অস্ত্র সাথে আনার দরকার পরেনা। জাহানারা ইমাম এর “৭১ এর দিনগুলি” এর একদম গোড়াতেই এই অস্থিরতার কথা বলা আছে, অথচ মুজিব নিজে একদম ই অন্ধকারে কি করে থাকেন। শেষ সময় পর্যন্ত উনি অপেক্ষা করেছেন, আশায় ছিলেন উনি ক্ষমতায় বসবেন, যা যুদ্ধ ঘোষণা করলে সম্ভব ছিলনা। আর তার ফলশ্রুতিতেই কি এতগুলি মানুষকে পাকিস্তানি সেনারা একদম অপ্রস্তুত অবস্থায় পেয়ে যায়নি? কিছুটা দায়ভার কি জাতির পিতার উপরও বর্তায় কিনা আমি বুঝতে পারছিনা।
আমার প্রশ্ন আছে উনার আত্মসমর্পণ নিয়েও। পালানো উনার স্বভাবে ছিলনা কখনই, সেটা মানতেই হচ্ছে। কিন্তু যুক্তিতে একটু খটকা বাধে। উনার যুক্তি উনি ধরা না দিলে, আরও বেশি মানুষ মারা পরত; এক রাতে ৯০ হাজার মানুষ হত্যা হয়েছিল উনার ধরা পরার পর ও। সংখ্যাটা পরবর্তীতে শুধু বেরেই গেছে। প্রশ্ন হল জাতির পিতা কি সেরাতেও বুঝতে পারেননি, যে এটা একটা যুদ্ধ। কর্তব্য কি সেসময় দিকনির্দেশনা দেওয়ার, নাকি আগেই ধরা দাওয়ার; বিষয়টা আমি বুঝতে পারিনা। আমার কাছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের রাজনৈতিক নায়ক মনে হয় তাজউদ্দীন আহমেদ, নজরুল ইসলাম, কাম্রুজ্জামান প্রমুখ নেতাদের। যারা যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন, সৈন্যদের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, অস্থায়ী বাংলাদেশের সরকার প্রবর্তন করে রাজনৈতিক ভাবে যুদ্ধটাকে গৃহযুদ্ধ থেকে স্বাধীনতার যুদ্ধে রূপ দিয়েছেন। নেতার অনুপস্থিতিতে ক্ষমতা নিয়ে নোংরা খেলা খেলেননি, মানুষের সমর্থন এর কথা মাথায় রেখেই হোক আর দেশের প্রতি আনুগত্তের জন্নই হোক। বাংলাদেশ সেসময় আসলেই ভারতের একটি উপনিবেশ এ পরিণত হওয়ার একটা বিরাট সম্ভাবনা ছিল। দলিল পত্রে, ৭১ এর যুদ্ধ আজো ভারত এবং পাকিস্তান এর যুদ্ধ। ১৬ই ডিসেম্বর এর যে সমর্পণ এর চুক্তি, সেখানেও বাংলাদেশ নয়, উল্লেখ ভারতের ই। কূটনৈতিক দক্ষতায় আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি করে, সে সময় বাংলাদেশ কে দখল থেকে রক্ষা করার কৃতিত্ব টা কি এই নেতাদের নয়? তারাই আমার কাছে মূলনায়ক। অথচ, ৭১ এর পর এ, উনাদের কে চরম অবহেলা করা হল।
বিতর্ক আছে উনার জেল এ থাকার অভিজ্ঞতা নিয়ে, জেল থেকে বের হওয়ার পরে ভুট্টো এর সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যাবহার নিয়েও। উনি বলছেন উনি জানতেন না, তারা এদেশের কি অবস্থা করেছে, উনাকে সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছিল। আবার উনি বলছেন, জেলার তাকে পালাতে সাহায্য করেছেন। ৯ মাস ধরে জেলার এর সাথে উনি শুধু পালানর আলোচনা করে গেলেন, নিজের দেশের কথা একবারও জানতে চাননি, অদ্ভুত!!!
কিন্তু, এক জায়গায় বঙ্গবন্ধু সম্পূর্ণভাবে আমার কাছে হিরো। একজন মানুষ, যার সেই ক্ষমতা ছিল এক ডাকে সারা দেশের মানুষকে এক জায়গায় জড় করার। স্বাধীন হবার জন্য বাঙ্গালির একটি নেতার প্রয়োজন ছিল, বঙ্গবন্ধু সেই নেতার জায়গা নিতে পেরেছিলেন। বাঙ্গালির নানা মত, নানা দল সব বিলুপ্ত করে তিনি সম্ভব করতে পেরেছিলেন একটা সংগ্রাম, যা স্বাধীন হওয়ার জন্য প্রয়োজন ছিল। দেশের মানুষকে উনি ভালবাসতেন, টা নিয়েও কোন সন্দেহ নাই।
আর হ্যা। স্বাধীনতার ঘোষণাটা অবশ্যই এবং অবশ্যই উনি দিয়েছেন, এবং পরবর্তীতে উনার বরাত দিয়েই বাকিরা সেটা মানুষ কে শুনিয়েছেন, তা নিয়েও কোন সন্দেহ নাই।
(সন্দেহ থাকলে এই ব্লগ টা পড়তে পারেন- http://mukto-mona.com/wordpress/?p=381)
For me, he is a hero; but not a perfect one.
(More to come up on his governing, and killing).
০৭ ই আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮
ভীতু রাজকন্যা বলেছেন: ভালো নেতা মানে যে ভালো শাসক হবেন, তা কখনই বাধ্যতামুলক নয়। ৪ বছরের শাসনামলে উনার অনেক ভুল পদক্ষেপ ছিল, মানি। উনি যদি বিষয়টা উপলব্ধি করতে পেরে সরে যেতেন সিংহাসন থেকে, তাহলে ব্যারথতার এই ট্যাগ লাগতনা।
একি সাথে এতাও বিবেচনায় আনা উচিত যে যুদ্ধপরবর্তী দেশে তখন অস্থিরতা তুঙ্গে পৌঁছেছিল। বাঙালিজাতি এর রাজনৈতিক ভাবনা বড্ড বেশি আবেগ দ্বারা পরিচালিত হয়। বঙ্গবন্ধুকে যে আবেগে তারা দেশের শাসনের দায়িত্তে বসিয়েছিলেন, উনার দেশ চালনায় ভুল সিদ্ধান্তে বাঙালি ঠিক ততখানিই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। আজকের সব দলের সরকার ই এর থেকে বড় বড় ব্যারথতার মুখ দেখেছে ক্ষমতায় থাকাবস্থায়। তাদের ব্যারথতার সমালোচনা হয়, কিন্তু এভাবে দেশের মানুষ হতবাক হয়না, কষ্ট পায়না। কারন, কোন সরকার প্রধান ই বঙ্গবন্ধুর মত বাঙ্গালির কাছের মানুষ হয়ে উঠতে পারেনি।
যেভাবে উনাকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে, তা কখনই বাঙ্গালির কাছে উনার প্রাপ্য ছিলনা। খুনিরা তার ভুলের কথা বলে, নিজেদের দেশপ্রেম এর কথা বলে এই খুন কে সঠিক সিদ্ধান্ত বানাতে চায়। কিন্তু তাকে হত্যার পরপর তাদের দেশ পরিচালনার যে নমুনা, তা সাফ বলে দেয় বঙ্গবন্ধুর হত্যা ছিল অফিসারদের উগ্রতা, ক্ষমতার লোভ, ব্যাক্তিগত ক্ষোভ এর ভিতর কিছু বেঈমান রাজনৈতিকদের ঘি ঢালার ফলাফল।
এ লজ্জা বাঙ্গালির থেকেই যাবে আজীবন।
আর পরবর্তী লেখাটা লেখার অপেক্ষায় আছি আমিও।
২| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৭:৪০
কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: ''কিন্তু, এক জায়গায় বঙ্গবন্ধু সম্পূর্ণভাবে আমার কাছে হিরো। একজন মানুষ, যার সেই ক্ষমতা ছিল এক ডাকে সারা দেশের মানুষকে এক জায়গায় জড় করার। স্বাধীন হবার জন্য বাঙ্গালির একটি নেতার প্রয়োজন ছিল, বঙ্গবন্ধু সেই নেতার জায়গা নিতে পেরেছিলেন''
১০০% সহমত
সকল ব্যপারে একমত না হলেও আপনার স্বীয় ঢংএ করা নিরপেক্ষ আত্মবিশ্লেষন ভালো লেগেছে।আজকাল ইতিহাস বিশ্লেষকদের মাঝে এই নিরপেক্ষতা এবং সচেতনতার বড়ই অভাব।একারনেই আমাদের গৌরবজ্জল স্বাধীনতার ইতিহাসের সিংহভাগ আজও অন্ধকারে রয়ে গেছে।
লেখককে জানাই প্রাণঢালা শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা
০৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:০৬
ভীতু রাজকন্যা বলেছেন: আপনাকেও শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।
আমার জ্ঞান অনেক সীমিত। আমি যাই লিখি তার মুল উদ্দেশ্যই থাকে আমি কি ভাবছি সেটা লিখিত ভাবে প্রকাশ করা। আমার ভাবনা ভুল হতে পারে, সঠিক হতে পারে, এমনকি একি বিষয়ে নতুন কিছু জানলে পরিবর্তিত ও হতে পারে। কাজেই এই বিষয়ে যেকোনো তথ্য, রেফারেন্স আমাকে জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।
৩| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:২৮
মহাকাল333 বলেছেন: আপনার লেখার কিছু অংশের সাথে দ্বিমত পোষণ করছি-
১)আপনি লিখেছেন “৭ই মার্চ এর ভাষণ নিয়েও আছে বিতর্ক। শুনেছি, এই ভাষণ টা তিনি দিয়েছিলেন বামপন্থি ও ছাত্র দলনেতাদের চাপ এ পরে। স্বাধীনতার আন্দোলন এর স্পষ্ট ঘোষণা দাওয়ার কথাও ছিল ঐ দিন ই। কিন্তু উনি করেননি সেটা, অসহযোগ আন্দোলন এর ডাক দিয়েছিলেন।’’এই বিতর্কের ব্যাপারটি পুরোপুরি গুজব ও ভিত্তিহীন। কারন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক যতগুলো বই পড়েছি তাতে কোথাও এ ধরনের বিতর্কের উল্লেখ নেই।
২)”জাহানারা ইমাম এর “৭১ এর দিনগুলি” এর একদম গোড়াতেই এই অস্থিরতার কথা বলা আছে, অথচ মুজিব নিজে একদম ই অন্ধকারে কি করে থাকেন। শেষ সময় পর্যন্ত উনি অপেক্ষা করেছেন, আশায় ছিলেন উনি ক্ষমতায় বসবেন, যা যুদ্ধ ঘোষণা করলে সম্ভব ছিলনা। আর তার ফলশ্রুতিতেই কি এতগুলি মানুষকে পাকিস্তানি সেনারা একদম অপ্রস্তুত অবস্থায় পেয়ে যায়নি? কিছুটা দায়ভার কি জাতির পিতার উপরও বর্তায় কিনা আমি বুঝতে পারছিনা।’’
যুদ্ধের ওই সময়টাতে দেশের একটা অস্থির সময় চলছিল। বিভিন্ন রকম গুজব ছড়াচ্ছিল।সে সময়টাতে বঙ্গবন্ধু অনুমান করতে পারেন নি যে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বাঙ্গালি নিধনের জন্য নামক ঘৃণ্য একটি অপারেশন পরিচালনা করবে। উনি ১৯৫২-১৯৭১ সালের মধ্যে বহুবার জেল খেটেছেন। ক্ষমতার লোভ উনার মধ্যে ছিল না। উনি, ক্ষমতায় যেতে চেয়েছিলেন,বাঙ্গালি জাতির অধিকার আদায় ক রার জন্য এবং দেশ এবং মানুষের কল্যাণের স্বার্থে। শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান সরকারের সাথে বারবার সংলাপ, শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে বাঙ্গালির অধিকার আদায় করতে চেয়েছিলেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, স্বাধীনতা ছাড়া দাবি আদায় সম্ভব নয়।
৩))আপনি লিখেছেন,"আমার প্রশ্ন আছে উনার আত্মসমর্পণ নিয়েও। পালানো উনার স্বভাবে ছিলনা কখনই, সেটা মানতেই হচ্ছে। কিন্তু যুক্তিতে একটু খটকা বাধে। উনার যুক্তি উনি ধরা না দিলে, আরও বেশি মানুষ মারা পরত; এক রাতে ৯০ হাজার মানুষ হত্যা হয়েছিল উনার ধরা পরার পর ও। সংখ্যাটা পরবর্তীতে শুধু বেরেই গেছে। প্রশ্ন হল জাতির পিতা কি সেরাতেও বুঝতে পারেননি, যে এটা একটা যুদ্ধ। কর্তব্য কি সেসময় দিকনির্দেশনা দেওয়ার, নাকি আগেই ধরা দাওয়ার; বিষয়টা আমি বুঝতে পারিনা"। ---
শেখ মুজিবুর রহমান দেশের মানুষ কে ভালবাসতেন। তাই সেই রাতে তিনি দেশের মানুষ কে বাঁচাতে স্বেচ্ছায় ধরা দিয়েছিলেন।তিনি মনে করেছিলেন তিনি স্বেচ্ছায় কারাবরণ করলে দেশের মানুষ অন্তত রক্ষা পাবে।শেখ মুজিবুর রহমান কিন্তু পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কাছে ধরা দেওয়ার পূর্বে দিকনির্দেশনা এবং স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়ে যান।
ইয়াহিয়া খান সামরিক আইন জারি করেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন এবং মুজিবসহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতাদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী রাজনৈতিক ও জনসাধারণের অসন্তোষ দমনে ২৫ মার্চ অপারেশন সার্চলাইট শুরু করে। সামরিক বাহিনীর অভিযান শুরু হলে মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।
মূল ঘোষণার অনুবাদ নিম্নরূপ:
"এটাই হয়ত আমার শেষ বার্তা, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের মানুষকে আহ্বান জানাই, আপনারা যেখানেই থাকুন, আপনাদের সর্বস্ব দিয়ে দখলদার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধ চালিয়ে যান। বাংলাদেশের মাটি থেকে সর্বশেষ পাকিস্তানি সৈন্যটিকে উৎখাত করা এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের আগ পর্যন্ত আপনাদের যুদ্ধ অব্যাহত থাকুক"।
মুজিবকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয় এবং ফয়সালাবাদের একটি জেলে কড়া নিরাপত্তায় রাখা হয়। পাকিস্তানি জেনারেল রহিমুদ্দিন খান মুজিবের মামলার পরিচালনা করেন। মামলার আসল কার্যপ্রণালী এবং রায় কখনোই জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয় নি। এ মামলাটি "লায়ালপুর ট্রায়াল" হিসাবে অভিহিত।( তথ্যসূত্রঃ বাংলাপিডিয়া)
৪) )আপনি লিখেছেন,"আমার কাছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের রাজনৈতিক নায়ক মনে হয় তাজউদ্দীন আহমেদ, নজরুল ইসলাম, কাম্রুজ্জামান প্রমুখ নেতাদের। যারা যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন, সৈন্যদের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, অস্থায়ী বাংলাদেশের সরকার প্রবর্তন করে রাজনৈতিক ভাবে যুদ্ধটাকে গৃহযুদ্ধ থেকে স্বাধীনতার যুদ্ধে রূপ দিয়েছেন।"
তাজউদ্দীন আহমেদ, নজরুল ইসলাম, কামরুজ্জামান প্রমুখ নেতাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে অনেক অবদান রয়েছে এবং কৃতজ্ঞচিত্তে তাদের অব দানের কথা স্মরণ করি। তবে তারা ইতিহাসের মূল নায়ক নয়, পার্শ্বনায়ক। ১৯৫২-১৯৭১ সালের ঘটনা প্রবাহ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে , বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা দাবি, সত্তরের নির্বাচন, একাত্তরের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে ভাষণ, অসাধারণ নেতৃত্বগুণ দ্বিধাবিভক্ত বাঙ্গালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল। ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময়টাতে বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তাজউদ্দীন আহমেদসহ অন্যান্য নেতারা বঙ্গবন্ধুর পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ঘটিয়েছিলেন। তাই এটা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, বঙ্গবন্ধুই ছিল স্বাধীন তার যুদ্ধের মূল নায়ক।
পরিশেষে বলা যায় যে, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরবর্তী ২৫ বছর(১৯৭৫-১৯৯৫ এবং ২০০১-২০০৬) বছর শেখ মুজি্বুর রহমান নানাভাবে অবহেলিত হয়েছেন এবং তাকে এদেশের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার ও ষড়যন্ত্র হয়েছিল। তাই নানা ধরনের নানা বিভ্রান্তি ও গুজব বারবার উঠে এসেছে এবং শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানকে খাটো করার চেষ্টা করা হয়েছে।
দেশের জন্য, মানুষের জন্য,একজন মানুষ কতখানি কিভাবে ত্যাগ স্বীকার করতে পারেন, জীবনের ঝুঁকি নিতে পারেন,জেল জুলুম নির্যাতন সহ্য করতে পারেন, তা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবন বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যায়।
For the nation of Bangladesh, he is not just only a perfect one, but also a real hero.
ব্লগার ভীতু রাজকন্যাকে ধন্যবাদ চমৎকার একটি বিষয় নিয়ে লেখার জন্য। শুভকামনা রইলো।
০৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:৪৪
ভীতু রাজকন্যা বলেছেন: মহাকাল আপনার সুচিন্তিত বক্তব্য ভাল লেগেছে। ।
১।আপনি বিতর্ক সম্পরকে কোথাও পড়েননি, আমি পড়েছিলাম, কিন্তু লেখার সময়ে বলেছি উল্লেখযোগ্য রেফারেন্স এই মুহুরতে নেই আমার কাছে। কাজেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, যদি এবিষয়ে ভুল জেনে থাকি সেক্ষেত্রে। আর যদি রেফারেন্সটা আবার খুজে পাই, তাহলে আপনাকে জানাব।
২। আমি মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে স্মৃতিচারণকারী খুব কম মানুষ ই দেখেছি যারা অনুমান করতে পারেনি যে কি হতে যাচ্ছে। আপনি "একাত্তরের দিনগুলি" বইটি আবার একটু চোখ বুলিয়ে নিন। একজন গৃহবধূ আসেম্বলি তে আসা নেতাদের সাথে এত বিপুল সঙ্খ্যক সৈন্য দেখে প্রায় নিশ্চিত হয়ে পড়েন যে কি ঘটতে যাচ্ছে, অথচ একজন সদ্য নির্বাচিত নেতা তার বিপক্ষের দলের মানুষদের গতিবিধির খোজ ও রাখেননি, আর জানলেও আপনারই ভাষ্যমতে উনি অনুমান করতে পারেননি। প্রিয় নেতার দুর্বল অনুমান শক্তি ই কি তবে যত নষ্টের গোঁড়া? বিষয়টা আরেক বার ভেবে দেখবেন। আরো নিশ্চিত হতে Genocide in Bangladesh, 1971. Gendercide Watch. বইটা পড়ে দেখতে পারেন।
৩। স্বরাজ আন্দোলন থেকে শুরু হয়েছিল শত্রুর কাছে ধরা দেওয়ার প্রচলন। সেটা চলেছে ১৯৭০ পর্যন্ত। রাজনৈতিক নেতাদের স্বেচ্ছায় ধরা দেওয়া একটা বহু পরিচিত রাজনৈতিক কৌশল যার মাধ্যমে নেতারা আন্দোলন কে আরও জোরদার করে তুলেন, কারাবাসের মাধ্যমে নিজেদের বক্তব্য সাধারন মানুষের কাছে পউছে দেন, যেন তারাও আন্দোলন এ যোগ দেন, সোচ্চার হয়ে উঠেন। কিন্তু বহুদিন ধরে চলে আসা আন্দোলন আর ২৫শে মার্চ রাতের পটভূমি একটু আলাদা। ২৫শে মার্চ রাতে বাঙালি আন্দোলন করছিলনা, তারা একটা যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল। যুদ্ধে নেতৃত্ব এর প্রয়োজন পড়ে, আত্মসমর্পণ নয়। এখন যদি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দিয়েও এটা যে একটা যুদ্ধ তা অনুমান করতে পারেননি, তাহলে কিছু বলার নাই। আপনি বলছেন, ধরা দিয়ে উনি নিজের জিবনের বিনিময়ে দেশের মানুষকে বাচানর কথা ভেবেছিলেন, কিন্তু আপনারই উল্লেখিত বক্তব্যে কোথাও তিনি বাঙ্গালিদের জান নিয়ে পালাতে বলেননি, নিজেদের বাচানর ব্যবস্থা নিতে বলেননি, উনি যুদ্ধ করতে বলেছেন। যাদের বাচানর জন্য ধরা দেবেন, তাদেরকে যুদ্ধ করতে বলবেন কেন? উনি কি জানতেন না, যুদ্ধে মানুষ মারা যায়?
ভাই, বঙ্গবন্ধু কে ছোট করার ইচ্ছা, অপমান করার যোগ্যতা আমার নেই। কিন্তু, তাই বলে তার ভক্তরা কেন স্বীকার করে নেন না, মুজিব স্বাধীন বাংলাদেশ না বরং পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান মন্ত্রী হয়ে দেশের মানুষের অধিকার বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলেন। তার ওই চাওয়ার মধ্যে তো দোষ এর কিছু নেই। যুদ্ধ কারই আকাঙ্খিত নয়।
৪। আমার কাছে যুদ্ধে যিনি নেতৃত্ব দেন, কৌশল বাতলান, পরিচালনা করেন, তিনি ই নেতা। সুদুর ফয়সালাবাদ থেকে ভেসে আসা প্রিয় নেতার চেতনা, তার প্রতি ভালবাসা যুদ্ধের মনোবল বাড়িয়েছে নিশ্চয়, কিন্তু যুদ্ধ মনোবল দিয়ে জেতা যায়না, জেতা গেলে আমাদের মিত্রবাহিনীর প্রয়োজন একদমি পরতনা।
* ওহ, ২৫ মার্চ এর আগেই দেশের বিভিন্ন স্থানে যে বিচ্ছিন্ন ভাবে যুদ্ধের প্রস্তুতি চলছিল, তা সম্পরকে অল্প একটু তথ্য পাবেন Click This Link এখানে। আমি সাধারনতো ওয়েব লিঙ্ক এর লেখা দেইনা, কিন্তু এ লেখাটি খুবি গুছানো, এবং রেফারেন্স গুলো সঠিক।
মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। এবং আবার ও বলব, আমার জ্ঞান অনেক সীমিত। আমি যাই লিখি তার মুল উদ্দেশ্যই থাকে আমি কি ভাবছি সেটা লিখিত ভাবে প্রকাশ করা। আমার ভাবনা ভুল হতে পারে, সঠিক হতে পারে, এমনকি একি বিষয়ে নতুন কিছু জানলে পরিবর্তিত ও হতে পারে। কাজেই এই বিষয়ে যেকোনো তথ্য, রেফারেন্স আমাকে জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।
৪| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:০৪
আরাফাত হোসেন অপু বলেছেন: For me, he is a hero; but not a perfect one...............শয়তান ছাড়া কেউ ই পারফেক্ট না....হওয়া সম্ভব ও না!!!!............তবে লেখাটি ভালো হয়েছে....১৯৭১ এর সঠিক ইতিহাস আমাদের এই জেনারেশানের কেউ ই জানেনা...রাজনিতিক দল গুলো বরং এটা নিয়ে ই রাজনিতি ফাদে!!!!!
০৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:২৪
ভীতু রাজকন্যা বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আপনার কথার সাথে আমিইও একমত। বর্তমানে রাজনৈতিক দল গুলি যেভাবে নিজ নিজ নেতাকে পারফেক্ট দেখানোর জন্য খেয়ে না খেয়ে তেল বাজি করে যায়, সেটা দেখলে মনে হয় নেতারা নিজেও লজ্জা পেতেন।
এ প্রজন্মের সঠিক ইতিহাস সম্পরকে ধারনা পাওয়ার আগ্রহ ও কম। স্বীকার দ্বিধা নেই, আমি নিজেও তার মধ্যে একজন। সঠিক ইতিহাস সঠিক ভাবে জানার জন্য যে পরিমান পড়াশোনা দরকার ছিল, তা করার ধৈর্য তৈরি করে উঠতে পারিনি আজো।
৫| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৩:৪৫
মহাকাল333 বলেছেন: মন্তব্যের সুন্দর জবাব দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ত বে আপনার কিছু বক্তব্যের সাথে একমত হতে পারলাম না।
১)"আমার কাছে যুদ্ধে যিনি নেতৃত্ব দেন, কৌশল বাতলান, পরিচালনা করেন, তিনি ই নেতা। সুদুর ফয়সালাবাদ থেকে ভেসে আসা প্রিয় নেতার চেতনা, তার প্রতি ভালবাসা যুদ্ধের মনোবল বাড়িয়েছে নিশ্চয়, কিন্তু যুদ্ধ মনোবল দিয়ে জেতা যায়না, জেতা গেলে আমাদের মিত্রবাহিনীর প্রয়োজন একদমি পরতনা।"
হুম, এ বিষয়ে আমি আপনার সাথে একমত। মিত্র বাহিনীর এক টা বিশাল অবদান ছিল আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ জয়ে।তবে সেই সাথে এটাও স্বীকার করা প্রয়োজন যে বাঙালি জাতির ব্যাপক জনমত, ঐক্যবদ্ধ চেতনা, অপরিসীম মনোবল ছাড়া শুধুমাত্র মিত্রবাহিনী দিয়েও দেশ স্বাধীন করা যেত না।
২) "২৫শে মার্চ রাতে বাঙালি আন্দোলন করছিলনা, তারা একটা যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল। যুদ্ধে নেতৃত্ব এর প্রয়োজন পড়ে, আত্মসমর্পণ নয়।"
আপনার বক্তব্যের সাথে আমি একমত নই।২৫ মার্চ সকালে শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তান ডিএফআই চিফ মারফত খবর পান ঢাকায় ক্র্যাকডাউন হতে যাচ্ছে। সাথে সাথে তিনি দলীয় হাই কমান্ডের নেতা ও অন্যান্য নেতাদের আত্মগোপনে যাবার নির্দেশ দেন। নিজে রয়ে যান ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডের বাড়িতে। ২৫ মার্চ রাতের শুরুতেই শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। বঙ্গবন্ধুর আত্নসমর্পন ছিল নেতৃত্বগুনের একটা অংশ। তিনি সারা জীবন পাকিস্থানি সরকারের সাথে মুখোমুখি লড়েছেন এবং কখনও কাপুরুষের মতো পালিয়ে যাননি।এজন্য বহুবার জেল খেটেছেন।২৫ শে মার্চ রাতেও তিনি কাপুরুষের মত পালিয়ে যাননি। গ্রেফতার হওয়ার পূর্বে স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়েছিলেন এবং তিনি জানতেন যে, তাকে গ্রেফতার করলেও বাঙ্গালির স্বাধীনতার দাবি পাকিস্থান রুখতে পারবে না। এর আগে ও তিনি জেল খেটেছেন, তাতে আন্দোলন থেমে না গিয়ে বরং তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে। এমনকি ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট যখন ঘাতকরা তার বাড়ি আক্রমণ করেছিল তখন তার পালিয়ে যাওয়ার সু্যোগ ছিল। কিন্তু তিনি পালিয়ে না গিয়ে ঘাতকদের মুখোমুখি দাড়িয়েছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত তাদের গুলিতেই মারা যান।
৩) "ভাই, বঙ্গবন্ধু কে ছোট করার ইচ্ছা, অপমান করার যোগ্যতা আমার নেই। কিন্তু, তাই বলে তার ভক্তরা কেন স্বীকার করে নেন না, মুজিব স্বাধীন বাংলাদেশ না বরং পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান মন্ত্রী হয়ে দেশের মানুষের অধিকার বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলেন। তার ওই চাওয়ার মধ্যে তো দোষ এর কিছু নেই। যুদ্ধ কারই আকাঙ্খিত নয়।"
আপনার এ বক্তব্যের সাথে ভিন্নমত পোষন করছি কারন ১৯৬৯ সালে আইয়ুব খানের আহ্বানে অনুষ্ঠিত একটি সর্বদলীয় সম্মেলনে মুজিব তাঁর ছয়-দফাসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের চাহিদাগুলো মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান এবং তা প্রত্যাখ্যাত হলে সম্মেলন থেকে বের হয়ে আসেন। ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক জনসভায় মুজিব ঘোষণা করেন যে এখন থেকে পূর্ব পাকিস্তানকে "বাংলাদেশ" নামে অভিহিত করা হবে:
" একটা সময় ছিল যখন এই মাটি আর মানচিত্র থেকে "বাংলা" শব্দটি মুছে ফেলার সব ধরণের প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিল। "বাংলা" শব্দটির অস্তিত্ব শুধু বঙ্গোপসাগর ছাড়া আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যেত না। আমি পাকিস্তানের পক্ষ থেকে আজ ঘোষণা করছি যে, এখন থেকে এই দেশকে পূর্ব পাকিস্তানের বদলে "বাংলাদেশ" ডাকা হবে"।
মুজিবের এই ঘোষণার ফলে সারা দেশে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। পশ্চিম পাকিস্তানি রাজনীতিবিদ এবং সামরিক কর্তারা তাঁকে একজন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হিসেবে মূল্যায়িত করতে শুরু করেন। মুজিবের বাঙালি সংস্কৃতি ও জাতিগত আত্মপরিচয়ের বহিঃপ্রকাশ প্রাদেশিক স্বায়ত্বশাসনের বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করে। অনেক বুদ্ধিজীবি ব্যক্তিত্ব্যের মতে, বাঙালিদের আন্দোলন দ্বিজাতিতত্ত্বকে অস্বীকার করার নামান্তর। এই দ্বিজাতিতত্ত্বের মাধ্যমেই পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। বাঙালিদের জাতিগত ও সংস্কৃতিগত এই আত্মপরিচয় তাদেরকে একটি আলাদা জাতিসত্ত্বা প্রদান করে। মুজিব পূর্ব পাকিস্তানে ব্যাপক জনমত গড়ে তুলতে সমর্থ হন এবং কার্যত ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। (source: Click This Link)
উপরোক্ত ঘটনাবলি দেখে বোঝা যায় যে,পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান মন্ত্রী হয়ে দেশের মানুষের অধিকার বাস্তবায়ন করতে চেয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষের নেতা হয়ে তিনি অধিকার আদায়ে পূর্ব থেকেই সচেষ্ট ছিলেন।
আপনি “বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্নজীবনী” বইটি পড়ে দেখতে পারেন। আশা করি ভাল লাগবে। ডাউন লোড লিংকটা দিয়ে দিলাম http://www.mediafire.com/?zj67lb96vyyzda9
পরিশেষে প্রিয় ব্লগার ভীতু রাজকন্যাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি চমৎকার একটি বিষয় নিয়ে আলোচনার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।আপনার স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস জানার আগ্রহ দেখে ভাল লাগলো। সবার যদি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার এই রকম আগ্রহ থাকতো তাহলে সবাই দেশের প্রতি, শহীদদের প্রতি, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আরও অনেক বেশি মায়া অনুভব করতো। শুভকামনা রইলো। ভাল থাকবেন সবসময়।
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:২৪
মোহাম্মদ জামিল বলেছেন: YES, He was a hero but not a good govt. মানুষের আসল পরিচয় ক্ষমতা পাওয়ার পর দেখা যায়, উনার ক্ষেত্রে ও তাই হয়েছে। পরের পর্বের অপেক্ষায় রহইলাম