নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এই আমি......

আল-মাসুম

ঢাবিতে আছি, আইনের মারপ্যাঁচ শিখছি, লেখলেখি করতাম এখন করিনা। মাঝে মাঝে কপি /পেস্ট মারি................

আল-মাসুম › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলা কবিতার সবচেয়ে জনপ্রিয় লাইনগুলো (আমি কিন্তু কপি/পেস্ট করেছি)

০৯ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ৭:৫৪









একটি কবিতা বা একজন কবির অমর হওয়ার জন্য কবিতার গোটা বিশেক লাইন কিংবা কবির অনেকগুলা সেইরকম কবিতার প্রয়োজন নেই বরং একটি-দুইটি লাইন, কবিতা সেই সাথে তার কবিকে দিতে পারে অমরত্ব। আর সেই রকম কিছু কবিতার লাইন একত্রে আনার দুঃসাহস এই পোস্টটি আপনিও জানান আপনার সবচেয়ে প্রিয় কিছু কবিতার লাইন।



কবিতা সেই বিশুদ্ধ শিল্প যার ছোঁয়ায় আলকিত হোক প্রতিটা পাঠক।তবে প্রথমেই শুরু করা যাক আমাদের কিশোর কবি সুকান্তকে দিয়ে......



সুকান্ত ভট্টাচার্য বাংলা সাহিত্যের মার্কসবাদী ভাবধারায় বিশ্বাসী এবং প্রগতিশীল চেতনার অধিকারী তরুণ কবি।





প্রয়োজন নেই, কবিতার স্নিগ্ধতা-

কবিতা তোমায় দিলাম আজকে ছুটি,

ক্ষুদার রাজ্যে পৃথিবী-গদ্যময়ঃ

পূর্ণিমা-চাঁদ যেন ঝল্সানো রুটি।

হে মহাজীবন





যে শিশু ভুমিষ্ঠ হলো আজ রাত্রে

তার মুখে খবর পেলুম :

সে পেয়েছে ছাড়পত্র এক,

নতুন বিশ্বের দ্বারে তাই ব্যক্ত করে অধিকার

জন্মমাত্র সুতীব্র চিৎকারে ।

ছাড়পত্র





এসেছে নতুন শিশু, তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান,

জীর্ণ পৃথিবীতে ব্যর্থ, মৃত আর ধ্বংসস্তুপ-পিঠে

চলে যেতে হবে আমাদের ।



চলে যাব-তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ

প্রাণপনে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল,

এ বিশ্বকে এ-শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি--

নব জাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার ।

ছাড়পত্র





অবশেষে সব কাজ সেরে

আমার দেহের রক্তে নতুন শিশুকে

করে যাব আশীর্বাদ,

তারপর হবো ইতিহাস ।

ছাড়পত্র







অবাক পৃথিবী! অবাক করলে তুমি

জন্মেই দেখি ক্ষুব্ধ স্বদেশভূমি।

অনুভবন





তোমাকে ভেবেছি কতদিন,

কত শত্রুর পদক্ষেপ শোনার প্রতীক্ষার অবসরে,

কত গোলা ফাটার মুহূর্তে।

প্রিয়তমাসু







কাজী নজরুল ইসলাম অগ্নিবীণা হাতে তাঁর প্রবেশ,

ধূমকেতুর মতো তাঁর প্রকাশ





গাহি সাম্যের গান—

মানুষের চেয়ে কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান

মানুষ



সাম্যের গান--

যেখানে আসিয়া এক হয়ে গেছে সব বাধা-ব্যবধান

যেখানে মিশেছে হিন্দু-বৌদ্ধ-মুসলিম-ক্রীশ্চান ।

গাহি সাম্যের গান !মিথ্যা শুনিনি ভাই,

এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনো মন্দির-কাবা নাই ।

সাম্যবাদী



বল বীর —

বল উন্নত মম শির,

শির নেহারি আমারি নত-শির ওই শিখর হিমাদ্রির

বিদ্রোহী



বল বীর —

বল মহাবিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি

চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা ছাড়ি

ভূলোক দ্যুলোক গোলক ভেদিয়া

খোদার আসন আরশ ছেদিয়া,

উঠিয়াছি চির-বিস্ময় আমি বিশ্ব-বিধাত্রীর !

মম ললাটে রুদ্র ভগবান জ্বলে রাজ-রাজটীকা দীপ্ত জয়শ্রীর !



বল বীর —

আমি চির উন্নত শির।

বিদ্রোহী



মহা বিদ্রোহী রণ ক্লান্ত

আমি সেই দিন হব শান্ত,

যবে উত্পীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না,

অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না

বিদ্রোহী রণ ক্লান্ত

আমি সেই দিন হব শান্ত।

বিদ্রোহী



আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে–

মোর মুখ হাসে মোর চোখ হাসে মোর টগবগিয়ে খুন হাসে

আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে।



আজকে আমার রুদ্ধ প্রাণের পল্বলে -

বান ডেকে ঐ জাগল জোয়ার দুয়ার – ভাঙা কল্লোলে।

আসল হাসি, আসল কাঁদন

মুক্তি এলো, আসল বাঁধন,

মুখ ফুটে আজ বুক ফাটে মোর তিক্ত দুখের সুখ আসে।

ঐ রিক্ত বুকের দুখ আসে -

আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে!

আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে





আমি বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান বুকে এঁকে দিই পদ-চিহ্ন !

আমি স্রষ্টা-সূদন, শোক-তাপ-হানা খেয়ালী বিধির বক্ষ করিব ভিন্ন !

আমি বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান-বুকে এঁকে দেবো পদ-চিহ্ন !

আমি খেয়ালী-বিধির বক্ষ করিব ভিন্ন !

আমি চির-বিদ্রোহী বীর—

আমি বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা চির-উন্নত শির ।

বিদ্রোহী







সাম্যের গান গাই-

আমার চক্ষে পুরুষ-রমণী কোনো ভেদাভেদ নাই!

বিশ্বে যা-কিছু মহান্ সৃষ্টি চির-কল্যাণকর,

অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।

নারী







জীবনানন্দ দাশ রবীন্দ্র-পরবর্তী কালে বাংলা ভাষার প্রধান কবি হিসাবে তিনি সর্বসাধারণ্যে স্বীকৃত।





হাজার বছর ধ'রে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে

সিংহল সমুদ্র থেকে নিশীথের অন্ধকারে মালয় সাগরে

অনেক ঘুরেছি আমি; বিম্বিসার অশোকের ধূসর জগতে

সেখানে ছিলাম আমি; আরো দূর অন্ধকারে বিদর্ভ নগরে;

আমি ক্লান্তু প্রাণ এক, চারিদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন,

আমারে দু-দন্ড শান্তি দিয়েছিল নাটোরের বনলতা সেন।

বনলতা সেন







আবার আসিব ফিরে ধানসিড়ির তীরে — এই বাংলায়

হয়তো মানুষ নয় — হয়তো বা শঙ্খচিল শালিখের বেশে;

হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে

কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব এ কাঠাঁলছায়ায়;

আবার আসিব ফিরে





হায় চিল, সোনালী ডানার চিল, এই ভিজে মেঘের দুপুরে

তুমি আর কেঁদো নাকো উড়ে-উড়ে ধানসিঁড়ি নদীটির পাশে!

হায় চিল





অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ-পৃথিবীতে আজ,

যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশি আজ চোখে দ্যাখে তারা;

যাদের হৃদয়ে কোনো প্রেম নেই – প্রীতি নেই – করুণার আলোড়ন নেই

পৃথিবী অচল আজ তাদের সুপরামর্শ ছাড়া।

অদ্ভুত আঁধার এক



সুরঞ্জনা, অইখানে যেয়ো নাকো তুমি,

বোলো নাকো কথা অই যুবকের সাথে:

ফিরে এসো সুরঞ্জনা:

নক্ষত্রের রুপালি আগুন ভরা রাতে:



ফিরে এসো এই মাঠে, ঢেউয়ে:

ফিরে এসো হৃদয়ে আমার:

দূর থেকে দুরে-আরো দূরে

যুবকের সাথে তুমি যেয়ো নাকো আর।



কী কথা তাহার সাথে?-তার সাথে!

আকাশের আড়ালে আকাশে

মৃত্তিকার মতো তুমি আজ:

তার প্রেম ঘাস হয়ে আসে।



সুরঞ্জনা,

তোমার হৃদয় আজ ঘাস

বাতাসের ওপারে বাতাস-

আকাশের ওপারে আকাশ। আকাশ লীনা





শোনা গেল লাশকাটা ঘরে

নিয়ে গেছে তারে;

কাল রাতে - ফাল্গুনের রাতের আঁধারে

যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাঁদ

মরিবার হল তার সাধ ।

আট বছর আগে একদিন





বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ

খুঁজিতে যাই না আর :

বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি



আমি বলছি না ভালোবাসতেই হবে , আমি চাই

কেউ একজন আমার জন্য অপেক্ষা করুক,

শুধু ঘরের ভেতর থেকে দরোজা খুলে দেবার জন্য ।

বাইরে থেকে দরোজা খুলতে খুলতে আমি এখন ক্লান্ত ।

নির্মলেন্দু গুন



হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে...

মন বাড়িয়ে ছুঁই.....

দুইকে আমি এক করি না....

এক কে করি দুই...!!!!



হেমের মাঝে শুই না যবে...

প্রেমের মাঝে শুই...

তুই কেমন করে যাবি ????

পা বাড়ালেই পায়ের ছায়া....

আমাকেই তুই পাবি...!!!

যাত্রা ভঙ্গ( নির্মলেন্দু গুণ)





ভয় নেই

আমি এমন ব্যবস্থা করবো যাতে সেনাবাহিনী

গোলাপের গুচ্ছ কাঁধে নিয়ে

মার্চপাস্ট করে চলে যাবে

এবং স্যালুট করবে

কেবল তোমাকে প্রিয়তমা।

তোমাকেঅভিবাদনপ্রিয়তমা(শহীদ কাদরী)





অস্বীকার করার উপায় নেই ওরা মানুষের মতো

দেখতে, এবং ওরা মানুষই

ওরা বাংলা মানুষ

এর চেয়ে ভয়াবহ কোনো কথা আমি আর শুনবো না কোনোদিন।

হন্তারকদের প্রতি (শহীদ কাদরী)





ভয় নেই আমি এমন ব্যবস্থা করবো মুদ্রাস্ফীতি কমে গিয়ে বেড়ে যাবে

শিল্পোত্তীর্ণ কবিতার সংখ্যা প্রতিদিন

আমি এমন ব্যবস্থা করবো গণরোষের বদলে

গণচুম্বনের ভয়ে

হন্তারকের হাত থেকে পড়ে যাবে ছুরি, প্রিয়তমা।

তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা(শহীদ কাদরী)





গোলাপের নীচে নিহত হে কবি কিশোর আমিও ভবঘুরেদের প্রধান

ছিলাম ।

জোৎস্নায় ফেরা জাগুয়ারা চাঁদ দাঁতে ফালা ফালা করেছে আমারও

প্রেমিক হৃদয় !

গোলাপের নীচে নিহত হে কবি কিশোর

আবুল হাসান







ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেপ সমস্ত কাগজ !

আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !

……………………………….

আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

সচ্চরিত্র ফুল আমি যত বাগানের মোড়ে লিখতে যাই, দেখি

কলম খুলে পড়ে যায় বিষ পিঁপড়ে, বিষের পুতুল !

আমারআমার হবে না, আমি বুঝে গেছি

(আবুল হাসান)



অতটুকু চায়নি বালিকা!

অত শোভা, অত স্বাধীনতা!

চেয়েছিল আরো কিছু কম,

………………………………….

একটি পুরুষ তাকে বলুক রমণী!

নিঃসঙ্গতা (আবুল হাসান)



লক্ষি বউটিকে

আমি আজ আর কোথাও দেখিনা,

হাটি হাটি শিশুটিকে

কোথাও দেখিনা,

কতগুলি রাজহাঁস দেখি

নরম শরীর ভরা রাজহাঁস দেখি,



কতগুলি মুখস্থ মানুষ দেখি, বউটিকে কোথাও দেখিনা

শিশুটিকে কোথাও দেখিনা !

উচ্চারণগুলি শোকের(আবুল হাসান)











কেউ কথা রাখেনি, তেত্রিশ বছর কাটলো, কেউ কথা রাখেনি

ছেলেবেলায় এক বোষ্টুমী তার আগমনী গান হঠাৎ থামিয়ে বলেছিল

শুক্লা দ্বাদশীর দিন অন্তরাটুকু শুনিয়ে যাবে

তারপর কত চন্দ্রভূক অমাবস্যা চলে গেলো, কিন্তু সেই বোষ্টুমী

আর এলোনা

পঁচিশ বছর প্রতিক্ষায় আছি।

মামা বাড়ির মাঝি নাদের আলী বলেছিল, বড় হও দাদাঠাকুর

তোমাকে আমি তিন প্রহরের বিল দেখাতে নিয়ে যাবো

সেখানে পদ্মফুলের মাথায় সাপ আর ভ্রমর

খেলা করে!







নাদের আলী, আমি আর কত বড় হবো? আমার মাথা এ ঘরের ছাদ

ফুঁড়ে আকাশ স্পর্শ করলে তারপর তুমি আমায়

তিন প্রহরের বিল দেখাবে?

একটাও রয়্যাল গুলি কিনতে পারিনি কখনো

লাঠি-লজেন্স দেখিয়ে দেখিয়ে চুষেছে লস্করবাড়ির ছেলেরা

ভিখারীর মতন চৌধুরীদের গেটে দাঁড়িয়ে দেখেছি

ভিতরে রাস-উৎসব

অবিরল রঙের ধারার মধ্যে সুবর্ণ কঙ্কণ পরা ফর্সা রমণীরা

কত রকম আমোদে হেসেছে

আমার দিকে তারা ফিরেও চায়নি!







বাবা আমার কাঁধ ছুঁয়ে বলেছিলেন, দেখিস, একদিন, আমরাও…

বাবা এখন অন্ধ, আমাদের দেখা হয়নি কিছুই

সেই রয়্যাল গুলি, সেই লাঠি-লজেন্স, সেই রাস-উৎসব

আমায় কেউ ফিরিয়ে দেবেনা!

বুকের মধ্যে সুগন্ধি রুমাল রেখে বরুণা বলেছিল,

যেদিন আমায় সত্যিকারের ভালবাসবে

সেদিন আমার বুকেও এ-রকম আতরের গন্ধ হবে!

ভালোবাসার জন্য আমি হাতের মুঠেয়ে প্রাণ নিয়েছি

দূরন্ত ষাঁড়ের চোখে বেঁধেছি লাল কাপড়





বিশ্বসংসার তন্ন তন্ন করে খুঁজে এনেছি ১০৮টা নীল পদ্ম

তবু কথা রাখেনি বরুণা, এখন তার বুকে শুধুই মাংসের গন্ধ

এখনো সে যে-কোনো নারী।

কেউ কথা রাখেনি, তেত্রিশ বছর কাটল, কেউ কথা রাখে না!

"কেউ কথা রাখেনি"

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়







আমার জীবন ভালোবাসাহীন গেলে

কলঙ্ক হবে কলঙ্ক হবে তোর,

খুব সামান্য হৃদয়ের ঋণ পেলে

বেদনাকে নিয়ে সচ্ছলতার ঘর

হৃদয়ের ঋণ (হেলাল হাফিজ)



স্বাধীনতা তুমি,

রবিঠাকুরের অজর কবিতা, অবিনাশী গান।

স্বাধীনতা তুমি

কাজী নজরূল, ঝাঁকরা চুলের বাবরি দোলানো

মহান পুরূষ, সৃস্টিসুখের উল্লাসে কাঁপা

স্বাধীনতা তুমি(শামসুর রাহমানের)





তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা,

তোমাকে পাওয়ার জন্যে

আর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায় ?

আর কতবার দেখতে হবে খাণ্ডবদাহন ?

তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা

শামসুর রাহমান



একটি নতুন পৃথিবীর জন্ম হ’তে চলেছে –

সবাই অধীর প্রতীক্ষা করছে তোমার জন্যে, হে স্বাধীনতা।

পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে জলন্ত

ঘোষণার ধ্বনি-প্রতিধ্বনি তুলে,

মতুন নিশান উড়িয়ে, দামামা বাজিয়ে দিগ্বিদিক

এই বাংলায়

তোমাকেই আসতে হবে, হে স্বাধীনতা

তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা

শামসুর রাহমান



আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্য মারা যাবো

ছোট ঘাসফুলের জন্যে

একটি টলোমলো শিশিরবিন্দুর জন্যে

আমি হয়তো মারা যাবো চৈত্রের বাতাসে

উড়ে যাওয়া একটি পাঁপড়ির জন্যে

একফোঁটা বৃষ্টির জন্যে

............

আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্যে মারা যাবো

খুব ছোট একটি স্বপ্নের জন্যে

খুব ছোট দুঃখের জন্যে

আমি হয়তো মারা যাবো কারো ঘুমের ভেতরে

একটি ছোটো দীর্ঘশ্বাসের জন্যে

একফোঁটা সৌন্দর্যের জন্যে।

আমি সম্ভবত খুব ছোট কিছুর জন্য

হুমায়ুন আজাদ



আমি জানি সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে।

কড়কড়ে রৌদ্র আর গোলগাল পূর্ণিমার চাঁদ

নদীরে পাগল করা ভাটিয়ালি খড়ের গম্বুজ

শ্রাবণের সব বৃষ্টি নষ্টদের অধিকারে যাবে।

রবীন্দ্রনাথের সব জ্যোৎস্না আর রবিশংকরের

সমস্ত আলাপ হৃদয়স্পন্দন গাথা ঠোঁটের আঙুর

ঘাইহরিণীর মাংসের চিৎকার মাঠের রাখাল

কাশবন একদিন নষ্টদের অধিকারে যাবে।

চলে যাবে সেই সব উপকথাঃ সৌন্দর্য-প্রতিভা-

মেধা; -এমনকি উন্মাদ ও নির্বোধদের প্রিয় অমরতা

নির্বাধ আর উন্মাদদের ভয়ানক কষ্ট দিয়ে

অত্যন্ত উল্লাসভরে নষ্টদের অধিকারে যাবে।

সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে

হুমায়ুনআজাদ

এইখানে তোর দাদীর কবর ডালিম গাছের তলে,

তিরিশ বছর ভিজায়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে।

কবর(জসিমউদদিন)



আজিকের রোদ ঘুমায়ে পড়িয়া ঘোলাট-মেঘের আড়ে,

কেয়া-বন পথে স্বপন বুনিছে ছল ছল জল-ধারে।

কাহার ঝিয়ারী কদম্ব-শাখে নিঝ্ঝুম নিরালায়,

ছোট ছোট রেণু খুলিয়া দেখিছে অস্ফুট কলিকায়!

পল্লী-বর্ষা(জসিমউদদিন)



আজিকে বাহিরে শুধু ক্রন্দন ছল ছল জলধারে,

বেণু-বনে বায়ু নাড়ে এলোকেশ, মন যেন চায় কারে।

পল্লীবর্ষা(জসিমউদদিন)

রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি?

এখনো তোমার আসমান ভরা মেঘে?

সেতারা, হেলাল এখনো ওঠেনি জেগে?

তুমি মাস্তলে, আমি দাঁড় টানি ভুলে;

অসীম কুয়াশা জাগে শূন্যতা ঘেরি।

পাঞ্জেরি(ফররুখ আহমদ)



অবনী বাড়ি আছো?

দুয়ার এঁটে ঘুমিয়ে আছে পাড়া

কেবল শুনি রাতের কড়ানাড়া

‘অবনী বাড়ি আছো?

অবনী বাড়ি আছো?

শক্তি চট্টোপাধ্যায়



যে কোন একটা ফুলের নাম বল

- দুঃখ ।

- যে কোন একটা নদীর নাম বল

- বেদনা ।

- যে কোন একটা গাছের নাম বল

- দীর্ঘশ্বাস ।

- যে কোন একটা নক্ষত্রের নাম বল

- অশ্রু ।

- এবার আমি তোমার ভবিষ্যত বলে দিতে পারি ।

কথোপকথন (পুর্ণেন্দু পত্রীর)





আজো আমি বাতাসে লাশের গন্ধ পাই

আজো আমি মাটিতে মৃত্যুর নগ্ননৃত্য দেখি,

ধর্ষিতার কাতর চিৎকার শুনি আজো আমি তন্দ্রার ভেতরে…

এ দেশ কি ভুলে গেছে সেই দুঃস্বপ্নের রাত, সেই রক্তাক্ত সময়

বাতাসে লাশের গন্ধ ভাসে

মাটিতে লেগে আছে রক্তের দাগ।

বাতাসে লাশের গন্ধ

রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ



দৃশ্য থেকে দ্রষ্টা অব্দি ধারাবাহিকতা খেয়ে ফেলে

অবশেষে যথাক্রমে খাবো : গাছপালা, নদীনালা

গ্রামগঞ্জ, ফুটপাত, নর্দমার জলের প্রপাত

চলাচলকারী পথচারী, নিতম্ব প্রধান নারী

উড্ডীন পতাকাসহ খাদ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রীর গাড়ী

আমার ক্ষুধার কাছেই কিছুই ফেলনা নয় আজ

ভাত দে হারামজাদা

তা না হলে মানচিত্র খাব

ভাত দে হারামজাদা

রফিক আজাদ





তেলের শিশি ভাঙল বলে

খুকুর পরে রাগ করো

তোমরা যে সব বুড়ো খোকা

বাঙলা ভেঙে ভাগ করো!

তার বেলা?

খুকু ও খোকা(অন্নদাশঙ্কর রায়)





আমি আমার পূর্বপুরুষের কথা বলছি।

তাঁর করতলে পলিমাটির সৌরভ ছিল

তাঁর পিঠে রক্তজবার মত ক্ষত ছিল

আমি কিংবদন্তির কথা বলছি

আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ



আমি বাংলায় গান গাই।

আমি বাংলার গান গাই।

আমি আমার আমিকে চিরদিন এই বাংলায় খুজে পাই।

আমি বাংলায় দেখি স্বপ্ন।

আমি বাংলায় বাঁধি সুর।

আমি এই বাংলার মায়া ভরা পথে হেঁটেছি এতোটা দূর।

আমি বাংলায় গান গাই (প্রতুল মুখোপাধ্যায় )





ধনধান্য পুষ্পভরা আমাদের এই বসুন্ধরা;

তাহার মাঝে আছে দেশ এক- সকল দেশের সেরা;

ওসে স্বপ্ন দিয়ে তৈরী সে দেশ স্মৃতি দিয়ে ঘেরা;

এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি,

সকল দেশের রাণী সে যে- আমার জন্মভূমি।

ধনধান্য পুষ্পভরা (দ্বিজেন্দ্রলাল রায়)





অবশেষে কবিগুরুতে এসে বাংলা কবিতার পূর্ণতা........................



রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক





আজি হতে শতবর্ষ পরে

কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতাখানি

কৌতূহলভরে—

আজি হতে শতবর্ষ পরে।

১৪০০ সাল







বহু দিন ধ'রে বহু ক্রোশ দূরে

বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে

দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা,

দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু।

দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া

ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া

একটি ধানের শিষের উপরে

একটি শিশিরবিন্দু।

স্ফুলিঙ্গ

প্রহরশেষের আলোয় রাঙা

সেদিন চৈত্রমাস,

তোমার চোখে দেখেছিলাম

আমার সর্বনাশ

চার অধ্যায়



নীল নবঘনে আষাঢ়গগনে

তিল ঠাঁই আর নাহি রে।

ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের

বাহিরে।

বাদলের ধারা ঝরে ঝর-ঝর,

আউশের খেত জলে ভর-ভর,

কালী-মাখা মেঘে ও পারে আঁধার

ঘনিয়েছে দেখ্‌ চাহি রে।

ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের

বাহিরে।





শুধু বিঘে দুই ছিল মোর ভুঁই আর সবই গেছে ঋণে।

বাবু বলিলেন, "বুঝেছ উপেন, এ জমি লইব কিনে।'

কহিলাম আমি, "তুমি ভূস্বামী, ভূমির অন্ত নাই।

চেয়ে দেখো মোর আছে বড়ো-জোর মরিবার মতো ঠাঁই।'

দুই বিঘা জমি



আজি এ প্রভাতে রবির কর

কেমনে পশিল প্রাণের পর,

কেমনে পশিল গুহার আঁধারে প্রভাতপাখির গান!

না জানি কেন রে এত দিন পরে জাগিয়া উঠিল প্রাণ।

জাগিয়া উঠেছে প্রাণ,

ওরে উথলি উঠেছে বারি,

ওরে প্রাণের বাসনা প্রাণের আবেগ রুধিয়া রাখিতে নারি

নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ









উৎসর্গ : সামুর সকল কবি আর সেই সব ব্লগার এর প্রতি যারা ব্লগে ঘোরাঘুরি করে কবিতা পড়ে এবং কমেন্ট করে বাংলা কবিতা এবং তার কবিদের নিরন্তর প্রেরণা যুগিয়ে



মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ৮:২২

ানিক বলেছেন: অসাধারণ !!

০৯ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ৮:৩২

আল-মাসুম বলেছেন: থ্যাংকস

২| ০৯ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ৯:০২

খান ফেরদৌস বলেছেন: mugdho.....

৩| ০৯ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ৯:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো.....

৪| ০৯ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ৯:৪৬

জিয়া হক বলেছেন: একটা ভাল কাজ করেছেন। যা আমাদের মত ব্যর্থ কবিদের জন্য নতুন চিন্তার পথ খুলে দিবে। ধন্যবাদ দিয়েই শুধু ক্ষন্ত হবার দু.সাহস দেখালাম না।

০৯ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ৮:০৩

আল-মাসুম বলেছেন: তৈলাক্ত হয়ে গেল না?

৫| ০৯ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ৯:৫৮

উণ্মাদ তন্ময় বলেছেন: সাবাশ বাংলাদেশ
এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়
জ্বলে পুড়ে মরে ছারখার
তবু মাথা নোয়াবার নয়

০৯ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ৮:০৫

আল-মাসুম বলেছেন: ক্রিকেটাররা কিন্তু সুকান্তের আওতার বাইরে।

৬| ০৯ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ১১:২৬

সজল৯৫ বলেছেন: আমি বলছি না ভালোবাসতেই হবে , আমি চাই
কেউ একজন আমার জন্য অপেক্ষা করুক,
শুধু ঘরের ভেতর থেকে দরোজা খুলে দেবার জন্য ।
বাইরে থেকে দরোজা খুলতে খুলতে আমি এখন ক্লান্ত ।

আমিও....

ধন্যবাদ দাদা...........

০৯ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ৮:০৮

আল-মাসুম বলেছেন: ধন্যবাদ দেয়ার জন্য ধন্যবাদ

৭| ০৯ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ১১:৫৩

অণুজীব বলেছেন: কপি পেস্ট করেছেন ভালো কথা, লেখকের নামটা কি বললে ভালো হতো না। Click This Link

৮| ০৯ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ৮:১১

আল-মাসুম বলেছেন: সরি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.