![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার প্রাণের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আজ কিছু অতি পরিচিত ও প্রিয় মুখকে দেখলাম, যৌন হয়রানীর মত একটা ঘৃণ্য অপরাধের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি সংগঠন কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচীর অংশ হিসেবে পরিচালিত একটা জরিপের মাধ্যমে এ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে জনমত যাচাইয়ের চেষ্টা করতে। এমন একটি সমাজসেবামূলক কার্যক্রমের জন্য তাদের এ স্বেচ্ছাশ্রম নিঃসন্দেহে প্রশংসা ও অনুপ্রেরণার দাবীদার।
কিন্তু, এ ব্যাপারে কিছু কথা না বলে পারছি না।
শুনতে খারাপ হলেও সত্য, যৌন নিপীড়ন প্রতিহত করার একক সামর্থ্য নারীদের নেই। সেক্ষেত্রে তাদের পাশে চাই সচেতন সুপুরুষদের দৃঢ় অবস্থান। সুপুরুষ তারাই যারা অন্যের মা, বোন কিংবা স্ত্রীর সম্মান নিয়ে টানাটানি করার মাধ্যমে নিজের মা-বোন-স্ত্রীদের জন্য লজ্জা বয়ে আনে না।
তাই সচেতনতা আগে দরকার পুরুষের।
আবার লক্ষ্যনীয় বিষয় হচ্ছে, আপনাদের কর্মসূচীগুলোতে অংশগ্রহণকারীরা এ অপরাধকর্মে জড়িত নন। পক্ষান্তরে, জড়িতরা কিন্তু এ কর্মসূচীগুলোতে অংশ নিচ্ছে না। তাহলে সমাজের এ ক্যান্সারগুলোর চিকিৎসা হবে কিভাবে? আর যারা ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে সচেতন, তাদের পুনঃ পুনঃ সচেতনতা বৃদ্ধির দরকার টা কী, তা আমার কাছে দুর্বোধ্যই থেকে গেল।
তবে কি এ কর্মসূচীগুলো নির্যাতিতার প্রাপ্য প্রতিকারের ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য?
সরকার এ ব্যাপারে আইন করেছে বটে, তবে তার প্রয়োগ চোখে পড়ার মত নয় । আপনারা এ আইনের সাথে নারীদের পরিচিতি বাড়াতে চাচ্ছেন, কিন্তু তাতে আসলে লাভটা কি? এ আইন সম্পর্কে জেনে নারীরা আইনের আশ্রয় চাইবে, আর এভাবে এ আইনের প্রচলন বাড়ানোর আগে তো তাদেরকে সুবিচারের নিশ্চয়তা দেওয়া দরকার। ব্যর্থতা অবশ্য আপনাদের মত নিঃস্বার্থ সমাজসেবীদের নয়, ব্যর্থতা রাষ্ট্রের। রাষ্ট্র যদি আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগের ব্যাপারে জনগনকে আশ্বস্ত করতে না পারে তবে স্বাভাবিকভাবেই বিচারের নামে এ প্রহসনের যাঁতাকলে পড়ে নিজেকে রাস্তায় নামানোর ঝুঁকি নিতে চাইবেননা নির্যাতিতারা। বিচারের আশায় আদালতে গেলে বহুকালের প্রতিষ্ঠিত আইনানুযায়ী ধর্ষকের অপরাধ প্রমান করতে গিয়ে ধর্ষিতাকে যেমন হাজারবার ধর্ষিত হতে হয়, ২০০৯সালে প্রণীত এ নব্য আইনে যৌন হয়রানির প্রতিকার পেতে গেলে যে তেমনটি হবেনা, তার নিশ্চয়তাই বা কোথায়?
এবারে আসি কাজের কথায়, সামাজিক প্রতিরোধ যেহেতু সম্ভব নয়, তাই সরকারি নিরাপত্তাবাহিনীগুলোর শক্ত অবস্থান ছাড়া, এ অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। সেই সঙ্গে প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর কঠোরতা। সামাজিক প্রতিরোধ সম্ভব নয়, কারণ আপনি একজন নারী হয়ে অপর কোন নারীকে হয়রানীর শিকার হতে দেখলেও, ঝামেলা এড়ানোর খাতিরে নিজের ছেলে, স্বামী কিংবা ভাইকে প্রতিবাদ করতে নিরুৎসাহিত করেন। আবার আপনাকেই বা দোষারোপ করি কিভাবে?বলুন। পাছে আপনার প্রতিবাদী ছেলে-স্বামী-ভাইকেই না আবার দুষ্কৃতকারীদের হাতে লাঞ্ছিত হতে হয়, কেননা তাদের নিরাপত্তা দিতেও ব্যর্থ আমরা।
©somewhere in net ltd.