নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মুহাঃ ইজাজ আল ওয়াসী

মুহাঃ ইজাজ আল ওয়াসী › বিস্তারিত পোস্টঃ

সর্বনাশা গঙ্গা ব্যারেজ, তোর তরে শুধাই...

১১ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:০৪

ভারত গঙ্গায় ১৯৭৫ সালেই ফারাক্কা বাঁধ চালু করেছে। সে আদলে বাংলাদেশেও গঙ্গা ব্যারেজ করার চিন্তা করা হয়েছিল। ফারাক্কার কুপ্রভাব থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য ১৯৮১ সালে ভেড়ামারায় এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় । কিন্তু প্রকল্পের মোট ব্যয় ৩১ হাজার ৪১৪ কোটি টাকা সরকারের পক্ষে জোগান দেয়া সম্ভব নয়। এ জন্য বিদেশী সংস্থার আর্থিক সহায়তা একান্ত প্রয়োজন। কিন্তু প্রকল্পটিতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোনো কোনো এলাকা জলমগ্ন হতে পারে, তাই ভারতের গ্রিন সিগন্যাল না থাকায় বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফ অর্থ জোগানে অনীহা প্রকাশ করে আসছে।

১৯৯৬ সালে ফারাক্কা চুক্তিতে পদ্মায় শুষ্ক মওসুমে যে সর্বনিম্ন ৪০ হাজার কিউসেক পানি পাওয়ার কথা ছিল, তা কখনোই পাওয়া যায়নি। আর যা পাওয়া গেছে, সুষ্ঠু ব্যবহারেরর লক্ষ্যে ব্যারেজের মাধ্যমে সে পানি আটকানোর কোনো ব্যবস্থা ছিল না। সংরক্ষণের অভাবে এই পানি বিনা বাধায় বঙ্গোপসাগরে চলে যায়।

এ ব্যারেজ প্রকল্প চালু হলে, এ থেকে উৎপাদিত হবে ১১৩ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ। এ ব্যারেজের মাধ্যমে ধরে রাখা পানি চ্যানেলে সরবরাহ করে ২৬ জেলায়, ১৬৫ উপজেলার কৃষিকাজে সেচের জন্য ব্যবহার করা হবে, যার সুফল দেশের এক-তৃতীয়াংশ জনগণ ভোগ করবে । গবেষকদের মতে, চালু হওয়ার পর সাত বছরেই বিনিয়োগকৃত অর্থ উসুল হবে। কিন্তু অর্থের সঙ্কুলান না করতে পারায় এ প্রকল্প নিয়ে কোনো সরকারই এগোয়নি।

ব্যারাজের ডেকের ওপর স্থাপিত চার লেনবিশিষ্ট সড়কসেতু পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া হাইওয়ের সাথে যুক্ত করবে। একই সাথে উত্তর, উত্তর-পশ্চিম এবং মধ্যাঞ্চলকে পাবনা-সিরাজগঞ্জ-বগুড়া হাইওয়ের কাশিনাথপুরের সাথে সংযুক্ত করবে। মংলা বন্দর, বেনাপোল, বাংলাবান্ধা ও বুড়িমারী সীমান্ত বন্দরগুলোর সাথে নেপাল, ভুটান ও ভারতের উত্তরাঞ্চলের রাজ্যগুলোর সংযোগ সাধন করবে। সড়কসেতু থেকে প্রতি বছর ৩৪১ কোটি টাকা টোল আদায় হবে। ধুলিয়ান-রাজশাহী-গোদাগাড়ী আন্তর্জাতিক নৌরুটটি পুনরুজ্জীবিত হবে। আর মংলা বন্দরের পণ্য আনা-নেয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ রূপসা-মধুমতী-গড়াই নৌপথকে সংযুক্ত করা যাবে। এতে নৌপরিবহন খাতে আর্থিক সুবিধা পাওয়া যাবে বছরে ১৮৮ কোটি টাকা।

প্রাথমিক সমীক্ষা অনুযায়ী, রাজবাড়ীর পাংশা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাংখা পর্যন্ত মোট ১৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধ হবে। ফলে ৬২ হাজার ৫০০ হেক্টর এলাকাজুড়ে জলাধার তৈরি করা হবে। এর পানি বাম পাড়ের গোদাগাড়ী পাম্পহাউজ, রূপপুর আবাসিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, পাবনার বড়াল ও ইছামতি এবং ডান পাড়ে গড়াই, হিসনা, চন্দনা পানিবিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রয়োজন মেটাবে। তাছাড়া, মূল ব্যারাজের সাথে ৭৬ দশমিক ৪ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার একটি এবং গড়াইয়ে ৩৬ দশমিক ৬ মেগাওয়াটের উৎপাদন ক্ষমতার আরেকটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব করা হবে।

সর্বোপরি, এ প্রকল্পের ফলে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বৃহত্তর রাজশাহী, পাবনা, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, ফরিদপুর অঞ্চলে গঙ্গার সমন্বিত পানিব্যবস্থাপনা নিশ্চিত হবে। এর ফলে উত্তরাঞ্চলের মরুকরণ প্রবণতা দূর হবে এবং সব মরা নদী হবে পুনরুজ্জীবিত।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.