নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

:):):)(:(:(:হাসু মামা

:):):)(:(:(:হাসু মামা › বিস্তারিত পোস্টঃ

করোনা ভাইরাস সম্পর্কে বলছি

২৬ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:০৬


২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে মধ্য চীনের হুপেই প্রদেশের প্রাদেশিক রাজধানী এবং চীনের ৭ম বৃহত্তম নগরী উহান নগরীতে একটি নতুন ধরনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল। আর সেই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের গুরুতর নিউমোনিয়া রোগ হয়েছিল এবং প্রথমদিকে ডাক্তাররা আক্রান্ত ব্যাক্তিদের রোগের কোনো সঠিক কারণ বের করতে পারেননি। হুয়ানান সামুদ্রিক খাদ্যের পাইকারি বাজারের দোকানদারদের মধ্যে প্রথম ভাইরাসটির সংক্রমণ ঘটে বলে ধারণা করা হয়। চীনা বিজ্ঞানীরা সেই নতুন প্রকারের করোনাভাইরাসটি আলাদা করতে সক্ষম হয়েছিলেন। বাজারটিতে জীবন্ত বাদুড়, সাপ এবং অন্যান্য বন্য প্রাণী ও তাদের সদ্য জবাইকৃত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি হত এবং প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয় যে হয়ত কোনো প্রাণীদেহ হতেই ভাইরাসটি বিবর্তিত হয়ে আরেকটি মধ্যবর্তী পোষক প্রাণীর মাধ্যমে মানবদেহে সংক্রমিত হয়েছে। ভাইরাসটির বংশাণুসমগ্রের অনুক্রম বা জিনোম সিকোয়েন্স ও সার্স করোনাভাইরাসের বংশাণুসমগ্রের অনুক্রমের মধ্যে ৭০% মিল পাওয়া গেছিল। তার আগে ২০০২ সালেও একই ধরনের জীবন্ত প্রাণী বিক্রির বাজার থেকে সার্স ভাইরাসের সংক্রমণ এবং বিস্তার ঘটেছিল। তার ১০ বছর পরে মধ্যপ্রাচ্য থেকে মার্স নামের একটি বিপজ্জনক প্রাণঘাতী ভাইরাস উট থেকে মানুষের দেহে সংক্রমিত হয়েছিল।

পলিমারেজ শৃঙ্খল বিক্রিয়া পরীক্ষার মাধ্যমে উপরোক্ত বাজারের সাথে সরাসরি জড়িত অনেক ব্যক্তির দেহে এবং বাজারের সাথে জড়িত নয় এমন ব্যক্তিদের দেহেও ভাইরাসটির সংক্রমণ হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছিলো। ভাইরাসটি মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ হতে পারে, এমন প্রমাণও পাওয়া গেছে।তবে এই নতুন ভাইরাসটি সার্স ভাইরাসের সমপর্যায়ের মারাত্মক কি না, তা এখনও পরিষ্কার নয়।এই ভাইরাসের সংক্রমণে জ্বর, অবসাদ, শুকনো কাশি,শ্বাসকষ্ট এবং শ্বাসনালীর রোগ হয়। ফ্লুয়ের মত উপসর্গ হলেও ফ্লুয়ের ঔষধে কোনও কাজ হয় না। এ পর্যন্ত রোগটির জন্য কোনও ঔষধ বা টিকা উদ্ভাবিত হয়নি। হাসপাতালে নিবিড় চিকিৎসা ছাড়া রোগ থেকে সেরে ওঠার উপায় নেই। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আগে থেকেই কম, তাদের নিউমোনিয়া হয়ে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। সাধারণত বৃদ্ধদের মধ্যে ভাইরাসটির ক্ষতিকর প্রভাব বেশি দেখা গেছে। তবে এই পর্যন্ত ইনফ্লুয়েঞ্জার চেয়ে বেশি মারাত্মক হবার কোনও সম্ভাবনা দেখা যায়নি। উল্লেখ্য যে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের কারণে প্রতি বছর ৪ লক্ষ লোকের মৃত্যু ঘটে।২০২০ সালের ২৩শে জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা উহান করোনাভাইরাসের বিস্তারকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি জরুরী অবস্থা হিসেবে ঘোষণা দেবার বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেন। তবে তারা বলেন তাদের জরুরী অবস্থা সমিতি প্রয়োজন হলে এই সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে পুনরায় খতিয়ে দেখতে পারেন। এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভাইরাসটির ব্যাপক বিস্তারের সম্ভাবনার ব্যাপারে সতর্ক করেছিলেন। সে সময় চীনা নববর্ষ উপলক্ষে চীনের পর্যটকদের গমনাগমনের শীর্ষ মৌসুমের কারণে ভাইরাসটির ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে দুশ্চিন্তা ছিল। আর সেই কারণে চীনের বহু নববর্ষ উৎসব বাতিল করেও দেয়া হয়, উৎসব-উদ্দীপনামূলক জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয় এবং পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় বেড়াবার স্থানগুলিও জনসাধারণের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়।

২০১৯ সালের ৩১শে ডিসেম্বর তারিখে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে প্রথম ভাইরাসটির সংক্রমণের কথা অবহিত করা হয়। এ পর্যন্ত চীনে প্রায় ১৩০০ ব্যক্তির দেহে ভাইরাসটির উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছে। ভাইরাসের কারণে ২০২০ সালের ৯ই জানুয়ারি প্রথম ব্যক্তিটি মারা যায়। ২৫শে জানুয়ারি ২০২০ তারিখ পর্যন্ত ভাইরাসটির কারণে চীনে ৪১ জন ব্যক্তি মারা যায়। উহান শহরে ও হুপেই প্রদেশের আরও ১২টি শহরে অন্তর্গামী ও বহির্গামী সমস্ত গণপরিবহন সেবা স্থগিত করা হয়েছে।চীনের বাইরে থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, তাইওয়ান, মাকাউ, হংকং, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, ফ্রান্স, নেপাল, অস্ট্রেলিয়া এবং মালয়েশিয়াতে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ব্যক্তির উপস্থিতি নিশ্চিত হয়েছে।

করোনা ভাইরাস শ্বাসযন্ত্রের প্রক্রিয়ায় সংক্রমণ ঘটায়। নতুনটিসহ প্রায় সাতটি করোনা ভাইরাস রয়েছে। ডব্লিউএইচও অস্থায়ীভাবে নতুন এই ভাইরাসের নাম দিয়েছে ‘২০১৯-এনসিওভি’। ২০০২ এবং ২০০৩ সালে মারাত্মক প্রাদুর্ভাবের পেছনে সার্স (সেভার অ্যাকিউট রিসপাইরেটরি সিনড্রোম) করোনা ভাইরাস ছিল। সার্সে প্রায় নয় হাজার মানুষ আক্রান্ত হয় এবং এর মধ্যে ৭৭৪ জনের মৃত্যু হয়। সার্স প্রাদুর্ভাবের এক দশক পর ২০১২ সালে মার্স (মিডল ইস্ট রিসপাইরেটরি সিনড্রোম) প্রাদুর্ভাব শুরু হয়, যা এখনো চলমান। মার্স ভাইরাসে ২ হাজার ৪৯৪ জন আক্রান্ত হয়, এর মধ্যে মারা যায় ৮৫৮ জন, যার বেশির ভাগ ঘটনা ঘটে আরব উপদ্বীপে। উহানের নতুন করোনা ভাইরাস এ ভাইরাসগুলো থেকে আলাদা, তবে আগে কখনো এর প্রাদুর্ভাব মানুষের মধ্যে দেখা যায়নি।

তবে বিজ্ঞানীরা বা গবেষকরা বেশ পরিশ্রমের সাথে গবেষনা বা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন যে কীভাবে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ছে এবং কীভাবে ছড়িয়ে পড়া রোধ করা যায় সেটা বের করার। হাঁচি,কাশির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার কথা বলা হলেও ভাইরাসটি কীভাবে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে স্থানান্তর হচ্ছে তা কিন্তু এখনো স্পষ্ট নয়। উহানের অসুস্থ রোগীদের যত্ন নেওয়ার কাজে যুক্ত ১৫ জন স্বাস্থ্যকর্মীও ঐ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ভাইরাসটি যদি হাঁচি-কাশির মাধ্যমেই ছড়িয়ে থাকে তাহলে মুখের মাস্ক অবশ্যই কিছুটা হলেও সুরক্ষা দিবে। যদিও মাস্কের ধরনের বিষয়টিও এখানে যুক্ত। শ্বাসকষ্টের ভাইলযুক্ত ফেসমাস্কগুলো কাগজের সার্জিক্যাল মাস্কগুলোর চেয়ে বেশি কার্যকর। যেহেতু হাঁচি,কাশির ফোঁটাগুলো বাতাসে ভেসে অন্য মানুষকে স্পর্শ করে তাই ঘনঘন হাত ধোয়াও কার্যকর হতে পারে।তাছাড়াও সম্প্রতি চীন ভ্রমণ করে থাকলে সেই ব্যক্তিকে অবশ্যই কোনো স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র থেকে পরীক্ষা করে নিতে হবে। পাশাপাশি অসুস্থ মানুষদের থেকে দূরে থাকতে হবে। করোনা ভাইরাসের লক্ষণ সর্দিজ্বর, মাথাব্যথা, গলাব্যথা, কাশি এবং শরীরে অস্বস্তি বোধ হওয়ার মতো কিছু মনে হলে দ্রুত হটলাইনে যোগাযোগ করুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এই ভাইরাসের উপসর্গগুলো অনেকটা নিউমোনিয়ার মতো। যেহেতু এখন পর্যন্ত ২০১৯-এনসিওভি ভাইরাসের নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা বা ভ্যাকসিন নেই, তাই সতর্ক থাকা এবং সাবধানতা অবলম্বনের কোনো বিকল্প নেই।

বৃহস্পতিবার এমআরএনএ ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক মোদার্না ঘোষণা দিয়েছে, নতুন এই ভাইরাসের জন্য ইতি মধ্যে একটি ভ্যাকসিন তৈরির কাজ শুরু করতে তারা কোয়ালিশন ফর ইপিডেমিক প্রিপার্ডনেস ইনোভেশন থেকে অনুদান পেয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এই স্ট্রেনের বিরুদ্ধে একটি ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যেভাবে করোনা ভাইরাস রুখতে ভ্যাকসিন তৈরির প্রচেষ্টা চলছে তাতে কয়েক মাসের মধ্যে পরীক্ষামূলক কিছু ভ্যাকসিন প্রস্তুত হতে পারে। যদিও ব্যাপক ব্যবহারের অনুমোদনের জন্য আরো সময় লাগবে।ভ্যাকসিন বা চিকিৎসা আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত ভাইরাসটির বিস্তার সীমাবদ্ধ করতে সবাইকে সচেতন হতে হবে। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলো এরই মধ্যে ভ্রমণকারীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু করেছেন। তাছাড়া বাংলাদেশসহ অনেক দেশ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিহ্নিত এবং আলাদা করতে কিছু স্বাস্থ্য সংস্থা ও হাসপাতালে রোগীদের ওপর নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে।



তথ্যসূত্র: Thailand reports 7 confirmed cases of Wuhan virus, airport continues to limit temperature scans
আরো বেশ কিছু সাইট থেকে নেওয়া ।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:২২

চাঁদগাজী বলেছেন:


পরিস্কার

২৬ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৩১

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: আল্লাহু আমাদের সকলকে রক্ষা করবেন ।

২| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ২:২৫

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: সর্তকতা এবং সচেতন থাকাই
এখন এই ভাইরাস থেকে বেচে থাকার একমাত্র উপায় ।

৩| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: এই রোগ থেকে আল্লাহ আমাদের মাফ করুক।

৪| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৫

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: সতর্ক এবং সচেতন থাকতে হবে সবাইকে ।

৫| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:৪৩

একজন অশিক্ষিত মানুষ বলেছেন: আপনার লেখাটা প্রিয়তে এবং ফেসবুকে শেয়ার করেছি ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.