নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

:):):)(:(:(:হাসু মামা

:):):)(:(:(:হাসু মামা › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাইকেলেঞ্জেলোর সৃষ্ট এক অনবদ্য কীর্তি পিয়েতার ইতিহাস

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৯


পিয়েতা হল ইউরোপীয় নবজাগরণ বা রেনেশাঁস যুগের বিশ্ববিখ্যাত শিল্পী, চিত্রকর, ভাস্কর এবং স্থপতি মাইকেলেঞ্জেলোর সৃষ্ট এক অনবদ্য কীর্তি। পঞ্চদশ শতাব্দীর একেবারে শেষের দিকে তৈরি এই অনুপম ভাস্কর্যটি বর্তমানে রোমে ভ্যাটিকান সিটির সন্ত পিওত্র'এর ব্যাসিলিকা গির্জায় সংরক্ষিত আছে। এই একই বিষয়ের উপর তৈরি শিল্পীর একাধিক শিল্পকর্মর মধ্যে এটি ছিল প্রথম। কারারা মার্বেলে তৈরি এই মূর্তিটি আসলে ফরাসি কার্ডিনাল জ্যঁ দ্য বিলেরে'র নির্দেশে গির্জায় তার স্মৃতিরক্ষার্থে একটি আলঙ্কারিক ফলক হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল।কিন্তু অষ্টাদশ শতাব্দীতে এই ভাস্কর্যটি তার বর্তমান অবস্থানে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়। মাইকেলেঞ্জেলোর তৈরি এটি এমন একটি বিরল মূর্তি, যার উপর শিল্পীর নিজ সাক্ষর রক্ষিত আছে।ভাস্কর্যটির মূল বিষয়বস্তু হল মা মেরির কোলে শায়িত যিশুর মৃতদেহ। এখানে প্রতিটি চরিত্রই এতটাই জীবন্ত যা সত্যিই বিষ্ময় করে তুলে। নবজাগরণের যুগের ইতালীয় ভাস্কর্যের অন্যতম মূল বৈশিষ্ট্যই হল ফুটে ওঠা প্রতিটি চরিত্রর এই প্রাণময়তা যা তাদের বাস্তবের অত্যন্ত কাছাকাছি টেণে নেয়।
১৪৯৬সাল থেকে ১৫০১ সাল মাইকেলেঞ্জেলো যখন প্রথমবারের জন্য রোমে বসবাস করছিলেন তখন এই ভাস্কর্যটি সৃষ্টি করা হয়েছিল। শিল্প ইতিহাসে এই ভাস্কর্যটির গুরুত্ব আরও বেশি হওয়ার কারণ হল এটি নবজাগরণের যুগে কোনও ইতালীয় ভাস্করের হাতে এই বিষয়বস্তুর উপর তৈরি অন্যতম প্রথম কাজ। ভাস্কর্য শিল্পের বিষয়বস্তু হিসেবে যিশুর মৃত্যুতে শোকার্ত মাতা মেরির এই থিমটি তখন উত্তরে ফ্রান্সে যথেষ্ট জনপ্রিয় হলেও ইতালিতে তা তখনও খুব একটা জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি। ফরাসি কার্ডিনাল বিলেরের প্রস্তাব হাতে পেয়েই মাইকেলেঞ্জেলো এই কাজে হাত দেন। কিন্তু বিষয়বস্তুটি যে তাকে যথেষ্ট আকর্ষণ করেছিল সেটা আমরা বুঝতে পারি যখন দেখি এই থিমের উপর এই প্রথম কাজটির পরেও একই বিষয়ের উপর তিনি আরও কয়েকটি ভাস্কর্য তৈরি করেন। তবে এখানে মনে রাখা ভালো মাইকেলেঞ্জেলোর এই রোমীয় পিয়েতা এই বিষয়বস্তুর উপর নবজাগরণের যুগের ইতালিতে তৈরি প্রথম দিকের একটি কাজ হলেও এর আগেও এই বিষয়বস্তুর উপর ইতালিতে আরও কাজ হয়েছে, যদিও শিল্প সৌকর্য্যের মান বিচার করতে গেলে সেগুলির কোনওটিই মাইকেলেঞ্জেলোর কাজের পাশে উল্লিখিত হওয়ার যোগ্যতা রাখেনা।

১৪৯৭ সালে ভ্যাটিকানে সম্রাট অষ্টম শার্লের দূত এবং সাঁ দেনির বেনেডিক্টাইন অর্ডারের সন্ন্যাসী, ফরাসি কার্ডিনাল জ্যঁ দ্য বিলেরে রোমের একজন অভিজাত ব্যাঙ্কার জাকোপো গালি'র মাধ্যমে তার মৃত্যুর পর তার স্মৃতিরক্ষার্থে সন্ত পিওত্‌রের ব্যাসিলিকার দক্ষিণদিকে অবস্থিত সান্তা পেত্রোনিলা গির্জার একটি চ্যাপেলে অলঙ্করণ হিসেবে বসানোর জন্য এই মর্মর মূর্তিটি তৈরি করার দায়িত্ব দেন মাইকেলেঞ্জেলোকে। অর্থাৎ সেই হিসেবে দেখতে গেলে মাইকেলেঞ্জেলোর রোমীয় পিয়েতা একটি অর্ডারি শিল্পকর্ম। অবশ্য সে যুগে এটিই ছিল রেওয়াজ ও সে যুগের বেশির ভাগ শিল্পকর্মরই সৃষ্টির ইতিহাস আমরা দেখতে পাই এরকমই। ১৪৯৭ সালের শেষের দিকে এই বাবদ শিল্পী কিছু আগাম অর্থও লাভ করেন। কিন্তু মূল অর্ডারটি তার কাছে আসে পরের বছর ২৭শে আগস্ট। ইতোমধ্যে ৬ই আগস্ট ১৪৯৮ সালের কার্ডিনালের মৃত্যু ঘটে। কিন্তু অর্ডারপত্রে দেখতে যায় কার্ডিনাল খুব স্পষ্ট ভাষাতেই পিয়েতা সম্পর্কে তার ধারণা ব্যক্ত করেছেন - এটি হতে হবে মর্মর নির্মিত, যেখানে মাতা মেরির বয়স হবে কম, তিনি হবেন সম্পূর্ণ পোশাক পরিহিতা, আর তার কোলে শায়িত থাকবেন ক্রশ থেকে নামানো, মৃত ও অর্ধনগ্ন প্রভু যিশু।তাছাড়াও অর্ডারপত্রে খুব পরিষ্কার ভাষাতেই উল্লেখ করা ছিল যে মূর্তিটি হতে হবে প্রমাণ আকারের এবং শিল্প-সৌকর্যের দিক থেকে তাকে সেই সময় পর্যন্ত রোমে রক্ষিত অন্যান্য সমস্ত মর্মরভাস্কর্যের তুলনায় হতে হবে শ্রেষ্ঠতর। স্বভাবতই, সেইসময় রোমে রক্ষিত অসংখ্য ভাস্কর্যের কথা মাথায় রাখলে বলতেই হয় এটা ছিল এক যথেষ্টই বলিষ্ঠ দাবি।তাছাড়াও দাবি করা হয় যে একবছরের মধ্যেই সমগ্র কাজটি সম্পূর্ণ হওয়া চাই।

১৪৯৮ সালের মার্চ মাসে মাইকেলেঞ্জেলো কারারা যান। সেখানে মূর্তির জন্য প্রয়োজনীয় মনমতো মার্বেলের ব্লকটি নিজের হাতে বেছে নেওয়াই ছিল তার উদ্দেশ্য। পরবর্তীকালেও তার অন্যান্য বিভিন্ন ভাস্কর্যের ক্ষেত্রেও আমরা দেখতে পাই, এটাই ছিল তার অভ্যেস। এরপর তিনি নিজেই দাঁড়িয়ে থেকে সেই পছন্দ হওয়া মার্বেল ব্লকটি কারারা থেকে রোমে আনার ব্যবস্থা করেন। অর্থাৎ, ১৪৯৮ সালের গ্রীষ্মের আগে তার পক্ষে মূর্তির কাজে হাত দেওয়া নিশ্চিতভাবেই সম্ভব হয়নি। মূর্তিটি শেষ করতে এরপর তার সময় লাগে প্রায় এক বছর। অর্থাৎ এটির কাজ শেষ হয় ১৪৯৯সালে বা ১৫০০সাল। সেইসময় ১৪৭৫ সালের ৬ মার্চ জন্মগ্রহণ করা শিল্পীর বয়স ছিল প্রায় ২৫ বছর। ঊনবিংশ শতাব্দীর বিখ্যাত জার্মান শিল্প-ঐতিহাসিক ভিলহেলম ল্যুবকা'র মতে শিল্পী মাইকেলেঞ্জেলোর অল্পবয়সের শ্রেষ্ঠ শিল্পকীর্তি এই পিয়েতাই।


তথ্যসূত্র
wikipedia

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৩

নেওয়াজ আলি বলেছেন: লেখা খুবই ভালো লাগলো।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৪৭

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ।

২| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:১০

(লাইলাবানু) বলেছেন: অতন্ত একটা ভালো লেখা। ভালো লাগল পড়ে।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৪৮

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: ধন্যবাদ আপু ।

৩| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: ইতিহাস জেনে লাভ কি? যা অতীত।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৪৯

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: ইতিহাসেই যে সকলের পরিচয় হয় গুরু ভাই ।

৪| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:৪৯

শের শায়রী বলেছেন: লেখায় ভালোলা।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৫১

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই । তবে এখনো আপনাদের মত হতে পারি নাই। একটু দোআ কইরেন যেন আপনাদের মত হতে পারি ।

৫| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১১:৫২

নীল আকাশ বলেছেন: কাছ থেকে এটা দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার ভাটিক্যানে।
লেখা ভালো হয়েছে।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৫২

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই । আপনি বড় সোভাগ্যবান বলতে হবে ।

৬| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৪০

অজ্ঞ বালক বলেছেন: জটিল একটা লেখা ভাই। এই জিনিস নিয়া বাংলা ভাষায় লেখা মনে হয় কম, আমি বেশিরভাগ বই পড়সি আংরেজিতে।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৫৩

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: মুল্যবান কমেন্টের জন্য ভাই আপনাকে ধন্যবাদ ।

৭| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৫৩

ফয়সাল রকি বলেছেন: তথ্যমূলক পোষ্ট। +++

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৫৪

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ ভাই ।

৮| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৩৩

শামছুল ইসলাম বলেছেন: তথ্যবহুল চমৎকার লেখা।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৫৪

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ।

৯| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ২:৩২

সোহানী বলেছেন: চমৎকার কিছু জানলাম............

২২ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:১৪

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: ধন্যবাদ সোহানী আপু ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.