নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ডা. অমিতাভ অরণ্য

ডা. অমিতাভ অরণ্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

পরাণ ডোমের পোস্টমর্টেম

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:০৩


ম্যাডাম যেদিন দেরি করে কলেজে আসে, সেদিন পরাণ অস্থির হয়ে যায়। বুক ধুকপুক করতে থাকে। তারপর হয়তো বারান্দার অন্য প্রান্তে ছোট্ট প্রলম্বিত পদক্ষেপে ম্যাডামের পদধ্বনি শোনা যায়। ওর কান উৎকণ্ঠ হয়ে থাকে। ম্যাডাম যেয়ে তার রুমে বসেন। কিছুক্ষণের মধ্যে পরাণ হাজির হয় তার সামনে। স্নেহা ম্যাডাম তাকে প্রতিদিনের মতো জিজ্ঞেস করেন, পরাণ, আজকে কয়টা?
পরাণের পলক পড়ে না। সে অপলক তাকিয়ে থাকে। সম্মোহিত হয়ে যায় স্নেহা ম্যাডামের দিকে তাকালে। ম্যাডামের লালচে পাতলা ঠোট কথা বলার সাথে সাথে তিরতির করে কাপতে থাকে। ম্যাডাম তার চোখের ঘন পত্রপল্লব কোনো একটা ভারী ইংরেজি বইতে সেটে রাখেন। হয়তো পরাণের উত্তর না পেয়ে এবার তিনি মুখটা উর্ধ্বপানে তুলে ধরেন। পরাণের দিকে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকান। ওকে ডাক দেন, পরাণ...
পরাণ ডোমের বুক ধ্বক করে ওঠে। এতো জোরে তার হৃদপিণ্ড শব্দ করে ওঠে যে সে স্পষ্ট শুনতে পায়। পরাণ অস্ফুট স্বরে উত্তর দেয়, জি ম্যাডাম…
পরাণের ধ্যানময়তার ম্যাডাম মৃদু হাসে। ঠোট বাকিয়ে অদ্ভুত এক হাসি। পরাণ বুঝে পায় না, সেটি কি ব্যঙ্গ নাকি অন্য কিছু। সে কেমন দিশেহারা বোধ করে। আবার বলে, জি ম্যাডাম…
স্নেহা ম্যাডাম জিজ্ঞেস করেন, আজকে কয়টা কেস এসেছে?
পরাণ ডোম সম্বিৎ ফিরে পায়। মৃত্যুই তার কাছে স্বাভাবিক। মৃত্যুই একমাত্র জিনিস যার উপরে সে নিজের মাতব্বরি ফলায়। পরাণ নিজের জগতে ফিরে আসে। সে উত্তর দেয়,
-তিনটা গলায় ফাঁস, দুইটা পয়জনিং, একটা আগুনে পোড়া কেস ম্যাডাম।
ডাঃ স্নেহা কাজী বিতৃষ্ণায় চোখ বুজে চেয়ারে হেলান দেন। মৃত্যু আর মৃত্যু- মৃত্যু ভালোলাগে না তার। প্রতিদিন মৃত্যু দেখতে দেখতে ক্লান্ত সে। তবু দেখতে হয়। ফরেনসিক মেডিসিনের ডাক্তার সে। মৃত্যুকে নিয়েই তার কারবার।
পরাণ সব বুঝতে পারে। ম্যাডামের জন্য বড্ড কষ্ট হয় তার। আহা। বাচ্চা মেয়ে। কতই বা বয়স হবে? বড়জোর ত্রিশ। এখনো মৃত্যুর সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেননি তিনি।
পরাণের বয়সও যে ঢের বেশি তা নয়। স্নেহা ম্যাডামের চেয়ে বছর পাঁচেক বেশিই হবে। কিন্তু সংখ্যা সবসময় সঠিক বয়স তুলে ধরতে পারে না। জীবন মানে অভিজ্ঞতা। বয়স সেখানে তুচ্ছ সংখ্যা ছাড়া আর কিছুই নয়। আর সেই অভিজ্ঞতার হিসেব করলে স্নেহা ম্যাডাম স্রেফ একটি বাচ্চা বই তো কিছু নয়।
-পরাণ ডোমের পোস্টমর্টেম।চুম্বকাংশ।

পরাণ ডোমের পোস্টমর্টেম
-অমিতাভ অরণ্য
ধরণ- মনোস্তাত্ত্বিক গল্প সংকলন।
প্রকাশক- নহলী।

বইটি পাওয়া যাচ্ছে বইমেলায় নহলী-র ৩৭২ নম্বর স্টলে। সবাইকে সাদর আমন্ত্রণ।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:১১

নেওয়াজ আলি বলেছেন: মুগ্ধকর উপস্থাপন, ♥♥।

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ২:৩৮

ডা. অমিতাভ অরণ্য বলেছেন: ধন্যবাদ!

২| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:১৮

সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: বাকিটা জানতে ইচ্ছা হচ্ছে।
আচ্ছা, নহলী মানে কি?

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ২:৩৮

ডা. অমিতাভ অরণ্য বলেছেন: নহলী অর্থ নতুন। স্বাগতম!

৩| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:২৪

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: বইটি পাঠক হৃদয় জয় করুক এই প্রত্যাশায় শুভ কামনা।

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ২:৩৯

ডা. অমিতাভ অরণ্য বলেছেন: ধন্যবাদ!

৪| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: ভয়াবহ লেখা।
সংগ্রহ করবো।

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ২:৪১

ডা. অমিতাভ অরণ্য বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই!

৫| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:৪২

নীল আকাশ বলেছেন: এই মেয়ে কী সামু ব্লগে এইভাবে ছবি দেয়ার কথা জানে? মেয়ের পারমিশন নেয়া আছে?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.