নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এই ঘরটির জন্য আমরা কোন স্পেশাল ক্যারেক্টার / ইমোটিকন গ্রহন করছি না।\nশুধুমাত্র সংখ্যা ও যে কোন সাধারন ক্যারেক্টার ব্যবহার করুন।\n

আমি মিন্টু

আমি মিন্টু › বিস্তারিত পোস্টঃ

সিলেট পর্ব ১

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১:২৯

সিলেটের ইতিহাসকে কয়েকটি বিভাগে ভাগ করা যেতে পারে যেমনঃ প্রাচীন অধিবাসী বিবরণ, ঐতিহাসিক বিবরণ, প্রাচীন রাজ্য সমুহ, আর্য যুগ, মোসলমান শাসিত আমল, মোগল আমল, ব্রিটিস আমল, পাকিস্তানে অর্ন্তভুক্তি, মুক্তি যুদ্ধ এবং বাংলাদেশ । সিলেট বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাংশের সিলেট বিভাগ বোজানো হয় যদওি ঐতিহাসিক সিলেট অঞ্চলের কিছু অংশ ১৯৪৭ সাল ধেকে ভারতের আসাম রাজ্যের অঙ্গীভূত হয়ে আছে ।
প্রাচীনকালে অস্ট্রেলীয়া দ্রাবিড় মঙ্গোলীয়সহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী সিলেট বিভাগে বাস করতেন । আর এর প্রমাণ হিসেবে এই অঞ্চলের বেড়ে ওঠা গৌরবময় প্রাচীন কৃষি সভ্যতাকে ধরা হয়ে থাকে । ঐতিহাসিক অচ্যূতচরণ চৌধুরী এই বিভাগীয় অঞ্চলের প্রাচীনত্বের স্বীকৃতি দিয়েছেন । নৃবিজ্ঞানের সূত্রে বলা যায় ভাষাগত দিক দিয়ে বিবেচনায়ও বলা হয়ে থাকে আদি অস্ট্রেলীয়াদের কথ্য ভাষার সাথে এখানকার আঞ্চলিক ভাষারও একটা মিল আছে । কুড়ি বিশ-সংখ্যা ও গন্ডা চার-সংখ্যা এবং নুন -লবণ, মিঠাই- মিষ্টী বিভিন্ন সিলেটের মানুষের মুখের বা আংচলিক ভাষা । এবং যাহা আদি অস্ট্রেলীয়াদের ভাষা হিসেবেও ধরা হয় । অস্ট্রেলীয়দের পরে কৃষিনির্ভর মঙ্গোলীয়দের এই অঞ্চলে আগমন ঘটে এবং কৃষিকর্মের মাধ্যমে তারা একে অন্যের সাথে মিশে যায় ।
অস্ট্রেলীয়দের আগমনের কিছু বছর পরেই এই অঞ্চলে মঙ্গোলীয়রা এবং আলপীয়রা আসেন ও বসবাস করেন । তার পর থেকেই উক্ত জাতিগোষ্ঠীগুলো একে অন্যের সাথে মিশে যান এবং মিলেমিশে এক সঙ্গে বসবাস শুরু করেন ।
উল্লেখিত আছে বিভিন্ন ঐতিহাসিক নিদর্শনের ভিত্তিতে মনে করা হয় আদি অস্ট্রেলীয় দ্রাবিড়, মঙ্গোলীয়দের থেকে বেড়ে উঠেছে সিলেট বিভাগের প্রাচীন জনপদ । শ্রীহট্ট বা সিলেট বিভাগে প্রাচীন কালে যে সব জাতিগোষ্টী বসবাস করতেন তাদের মধ্যে অনেকটি ছিল হিন্দুধর্ম্মাবলম্বী । যারা হিন্দু নয় তারা ভূত, বৃক্ষ অথবা পশুর উপাসনা করতেন । আবার বিভিন্ন সময়ে কেও কেও হিন্দু ধর্ম বর্জন করেছেন । উক্ত আদিবাসীদের মধ্যে কুকি, খাসিয়া ও ত্রিপরা, মণিপুরী এবং লালুং ইত্যাদি জাতিগোষ্ঠী প্রাচীন কাল থেকেই আগমন । অনুমানিক খ্রিস্টীয় চার শতকের পরে এদেশে আর্যজাতির আগমন ঘটে ছিল । আর্যদের পূর্বে কুকিরাই এই অঞ্চলের মালিক ছিলেন বলে ধারণ করা হয় । আর্যজাতি তাদেরকে বিতাড়িত করেছেন বলে জানা যায় । কুকিদের মধ্যে অনেকেই হিন্দু ধর্ম অবলম্বন করে হালাম বা ত্রিপরা বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন ।
ইতিহাসে যে বিবরণ পাওয়া যায় ।
অচ্যূতচরণ চৌধুরী সহ ইতিহাসবিদেরা বিভিন্ন তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে ধারণা করে থাকেন গঙ্গা এবং ব্রহ্মপুত্র নদের সমস্ত উত্তর ও পূর্ব অঞ্চল নিয়েই গঠিত ছিল প্রাচীন কামরুপ রাজ্য । যার অন্তরভুক্ত ছিল প্রাচীন শ্রীহট্ট অথবা সিলেট বিভাগটি । গ্রীক বণিকের বরাত দিয়ে বলা হয়ে থাকে গ্রীক বণিক টলেমির বাণিজ্য বিস্তার গ্রন্থের অনুবাদে বলা হয়েছে কিরাদিয়া অথবা কিরাত দেশের উত্তরে পার্শবর্তী দেশই প্রাচীন শ্রীহট্ট ভুমী । উল্লেখিত তথ্য অনুযায়ী শ্রীহট্ট বা সিলেট বিভাগকে একটি প্রাচীন জনপদ ধরা হত । আর প্রাচীন কামরুপ রাজ্যের অদিপতি ভগদত্ত রাজার উপ রাজধানী সিলেট বিভাগের লাউড় পর্বতে বিদ্যমান থাকা এই অঞ্চলের সর্ব প্রাচীন নিদর্শন ।শ্রীহট্ট অঞ্চলে জনশ্রুতি রয়েছে ও পৌরাণিক যুগে মহাভারত সমরে নিহত ভগদত্ত রাজা কামরুপ রাজ্যের শাসক ছিলেন । রাজা ভগদত্তের আমলে সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার আওতাধীন লাউড় অঞ্চলে কামরুপ রাজ্যের শাখা রাজধানী ছিল । লাউড় অঞ্চলে উচু একটি পাহাড় দেখাইয়া লোকে সেখানে রাজা ভগদত্তের রাজধানীর নির্দেশ করিয়া থাকেন । পৌরাণিক কালে কামরুপ রাজা ভগদত্ত এদেশে শ্রীহট্টে আসলে লাউড়ের রাজধানী হতে দিনারপুরের প্রাচীন বাণিজ্য ঘাটি বর্তমান দিনারপুর সদরঘাট পর্যন্ত নৌকায় ভ্রমন করতেন । লাউড় পাহাড়ের সুরঙ্গ স্থানে রাজা ভগদত্তের রাজ বাড়ী ছিল বলেও ধারণা করা হয়ে থাকে । সেই রাজ বাড়ীর ধ্বংসাবশেষ আজও বিদ্যমান আছে ।
প্রাচীনকালে হিন্দু রাজাদের দ্বারা সিলেট শাসন করা হয় যার কারান হিসেবে বা অনুমান করা হয় নিধনপুরে প্রাপ্ত ভাস্করভর্মনের তাম্রলিপি সহ ভাটেরায় প্রাপ্ত আরো দুই খানা ঐতিহাসিক তাম্রফলক । শ্রী যুক্ত স্বরুপ রায় শ্রীহট্ট ভূগোল এবং মৌলবী আহমদ সাহেব শ্রীহট্ট দর্পন পুস্তকে লিখেছেন উক্ত তাম্র ফলকদ্বয় পাঠে সাগর পশ্চিমে পদ পাওয়া যায় । পরবর্তি সময় প্রত্নতত্ববিদ ডঃ রাজেন্দ্র লাল মিত্র উক্ত ফলকদ্বয় পাঠ করে এদেশের পশ্চিমাংশে প্রাচীন কালে বিরাট সাগর বিদ্যমান ছিল বলেন । ঐতিহাসিক অচ্যুতচরন চৌধুরী ত্রিপুরার ইতিহাস গ্রন্থের বরাতে লেখছেন শ্রীহট্টের দক্ষিণ পশ্চিমাংশ ময়মনসিংহের পূর্বাংশ ও ত্রিপুরার উত্তর পশ্চিমাংশে পুরাকালে বৃহত্তর হ্নদ ছিল । পরে ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকায় তাহা বরাট হয়ে ঢাকা ময়মনসিং এবং ত্রিপুরার সন্ধিস্থলে পরিণত হয় । যার ফলশ্রুতিতে খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকের চীনা পর্যটক হিয়েং সাং এই অঞ্চল ভ্রমন করেন । শিলিচতলকে শ্রীহট্টকে সমদ্র নিকট বর্তী দেশ উল্লেখ করেন
গবেষনা এবং নৃতাত্ত্বিকভাবে ধরা হয় ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় আর্যজাতির আগমন কাল চতুর্থপঞ্চম শতকের সময় । ভারতবর্ষের আর্যযুগের শুরুতে যখন বঙ্গদেশে জনবসতি স্থাপনের প্রমাণ ছিলনা তখন সিলেট একটি দেশ হিসেবে খ্যাত ছিল । যখন রামায়ন লিখিত হয় তখন বঙ্গভূমী আর্যগণের কাছে এটি পরিচিত ছিল কিন্তু তখন মানুষ বাসযোগ্য ছিল না । সে সময় উত্তর পূর্ব বঙ্গই বঙ্গভূমী হিসেবে বাসযোগ্য ছিল অথবা বসবাস করতো ।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১:৫৪

গেম চেঞ্জার বলেছেন: ধন্যবাদ এইরকম গুরুত্বপূর্ণ পোস্টের জন্য। আরো বিশদ লিখতে পারতেন। এবং তথ্যসূত্রও দিতে পারতেন। +

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:০১

আমি মিন্টু বলেছেন: ধন্যবাদ গেম চেঞ্জার ভাই মূল্যবান মন্তব্য দিয়ে পাশে থাকার জন্য । অবশ্যই তথ্য দিবো ভাই । তবে শেষ পর্বে ।

২| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:০৫

প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ, অনেক সুন্দর ইতিহাস তুলে ধরেছেন। শুভেচ্ছা রইল।

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:১৯

আমি মিন্টু বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ প্রামানিক ভাই । আপনার জন্যও শতত শুভেচ্ছা রইল ।

৩| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৩:০৪

মিউজিক রাসেল বলেছেন: একজন সিলেটি হিসাবে এই ইতিহাস পড়ে অনেক ভাল লাগলো ++। #গেম_চেঞ্জার যেভাবে বলেছেন- আরো বিশদ লিখতে পারতেন। এবং তথ্যসূত্রও দিতে পারতেন। #অপেক্ষায় থাকবো। :)

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:৪১

আমি মিন্টু বলেছেন: ধন্যবাদ আমার ব্লগে স্বাগতম :)

৪| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৩:৫০

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: দেশের এসব আঞ্চলিক ইতিহাস পড়তে ভালই লাগে । পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম ভাই ।

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৩

আমি মিন্টু বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ ভাই । :)

৫| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:০৭

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: সুন্দর সিলেট সম্পর্কে পর্বতি পোস্টের জন্য পথ চেয়ে রইলাম ।

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৪

আমি মিন্টু বলেছেন: ধন্যবাদ দিয়েছি একবার গুরে যেয়েন :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.