নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সিলেট ইতিহাস পর্ব ১
সিলেট এর ইতিহাস ২ য় পর্ব
সিলেটের ইতিহাস ৩য় পর্ব
বানিয়াচং রাজ্য
বানিয়াচং রাজ্য পনেরো'শ শতকে হবিগঞ্জ জেলার ভাটি অঞ্চলে বানিয়াচং রাজ্য স্থাপিত হয়েছিল । এই রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা কেশব একজন বণিক ছিলেন । তিনি বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে এদেশে এসেছিলেন এবং কালী নামের দেবির পুজা নির্বাহের লক্ষ্যে দৈব বাণীতে শুকনো ভূমির সন্ধান প্রাপ্ত হয়ে সেখানে অবতরণ করেন ও দেবি পুজা সমাধান করেন এবং দৈব বাণী মতে সেখানেই বসতি স্থাপন করেন । এক সময় শ্রীহট্টের উত্তর সীমা হতে ভেড়ামোহনা নদী পর্যন্ত বানিয়াচং রাজ্য বিস্তৃত ছিল। প্রায় শতেরশ শতকের শেষের দিকে গোবিন্দ খাঁ কর্তৃক শ্রীহট্ট ভূমীর প্রাচীন রাজ্য লাউড় ইহার অধিকার ভূক্ত হন । যাহা মূলত ততকালিন জগন্নাপুর রাজ্যের রাজ বংশের অধিকারে আসার কথা ছিল । কিন্তু দুর্ভাগ্য বশত জগন্নাপুর রাজ্যের রাজ বংশ তাদের অধিকার হারায় এবং ইহার যের ধরে দুই রাজ্যের মধ্যে হতা হতীর কারণে জগন্নাপুর রাজ্যের রাজ বংশ ধংশ হয় । ওই সময়ে বানিয়াচং রাজা গোবিন্দ খাঁ দিল্লীর সম্রাটদের দ্বারা মোসলমান হয়ে হাবিব খাঁ নাম ধারণ করে দেশে ফিরেন । বাংলার জনপ্রিয় আপন দুললা কিচ্ছার কাহীনি এই রাজ বংশেরই লোকগাঁতা বলে ইতিহাসবিদেরা ধারনা করেন । বর্তমান বানিয়াচং গ্রাম দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্ব বৃহত্তর গ্রাম বলে ধারনা করা হয় ।
ইটা রাজ্য
ইটা রাজ্য সিলেটের প্রাচীন ইতিহাসের একটি অংশ । বর্তমান সিলেট জেলাধিন বিয়ানীবাজার থানার অর্ন্তগত ঐতিহাসিক গ্রাম নিদনপুর হতে ভাস্করবর্মনের তাম্রলিপি পাওয়ার কারণে এই গ্রাম শ্রীহট্টের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে । প্রাচীন কালে শ্রীহট্ট জেলার দক্ষিণাংশ মনুকুল প্রদেশ হিসেবে পরিচিত হতো । বর্তমান মৌলভীবাজার জেলার দক্ষিণ ও পূর্বাংশের কিছু অংশ ত্রিপুরার অন্তর্ভুক্ত এবং অন্যান্য সব অংশ কামরুপের এলাকা ছিল । খ্রিস্টিয় সপ্তম শতকের প্রথম দিকে ত্রিপুরার রাজা ধর্ম ফাঁ এক রাজ যজ্ঞের আয়োজন করেন এবং যজ্ঞ পরিচালনার জন্য পশ্চিম বঙ্গের মিতিলা ও কনৌজ হতে পাঁচ জন প্রসিদ্ধ বৈদিক ব্রাহ্মণকে শ্রীহট্টে আনেন । ত্রিপুরার রাজা ধর্ম ফাঁ উল্লেখিত পাঁচ ব্রাহ্মণকে হাকালুকি হাওয়রের পশ্চিমে কিছু ভূমী দান করেন । উল্লেখ আছে যে উক্ত হাকালুকি হাওয়রের পূর্ব এবং দক্ষিণাংশে তৎকালে কুকিদের উপ জাতীয় হাঙ্কালা ও টেঙ্করী নামের দুই সম্প্রদায় বাস করতেন । ব্রাহ্মণদের ভূমী দান করার পরে উক্ত কুকিরা স্থান ত্যাগ করে পাহাড়ে চলে যান এবং কুকিদের ত্যাগ করা উক্ত ভূমী উল্লেখিত পাঁচ ব্রাহ্মণ শ্রীনন্দ, আনন্দ, গোবিন্দ, ও পুরুষোত্ত এবং শ্রীপতি কে ত্রিপুরার রাজ কর্তৃক ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল । তারপর ব্রাহ্মণ বসতির এই স্থান পঞ্চখন্ড বিয়ানীবাজার নামে পরিচিত হয় । পরবর্তিকালে উক্ত ব্রাহ্মণদের হতে আনন্দ শাস্ত্রীর বংশের নিধিপতি শাস্ত্রী নামক ব্যক্তি ইটা রাজ্য পত্তন করেন ।
আর্য যুগের কথা
ঐতিহাসিক সৈয়দ মুর্তাজা আলীর মতে পঞ্চম হতে ষষ্ঠ শতাব্দীর মধ্যে আর্যরা এই অঞ্চলে আসেন । আর্যরা আসার পূর্বে অস্ট্রিক এবং মঙ্গোলীয় নরগোষ্টি ছিলেন এই অঞ্চলের আদিম আধিবাসী । আজকাল অস্ট্রিকরা ভেড্ডী বলে নিজেদের পরিচয় দেন । তাদের বড় জাতের লোক পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাস করতেন । আরেক ইতিহাস ব্রেতা মুমিনুল হক উক্ত জাতিগোষ্ঠির বর্ণনায় লিখেন যে তাদের অস্ট্রিক ও মঙ্গোলীয় নরগোষ্টি দেহের গঠন মাঝারী ধরণের বাঁকা চোখ, গায়ের রং শ্যামলা ছিল । তারা হাড় ও পাথর দিয়ে অস্ত্র তৈরী করতেন । ধান, পান, সুপারী, আদা, কলা এবং হলুদ ছিল ওই জাতিগোষ্ঠীর লোকের প্রাধান কৃষিজাত বস্তু ছিল । তাছাড়া অস্ট্রিক ও মঙ্গোলীয় উভয় নরগোষ্ঠী ডিঙ্গি নৌকা এবং ভেলা চড়ে জলপথে যাত্রা করতেন এবং নদী, খাল, হাওর ও বিলে মাছ ধরে শুকিয়ে শুঁটকি তৈরী করে রাখতেন । যা তাদের খাদ্য সংকটে ব্যবহারে লাগতো । পরবর্তিতে অনুমানীক পঞ্চম শতকে নাক লম্বা, মাথা মোটা, গৌর বর্ণের আর্যজাতীর এই অঞ্চলে আগমন ঘটে এবং হিন্দু বর্ণের উপর আধিপত্ত বিস্তার করে । সে সময়ে সিলেটের প্রাচীন সংস্কৃতিতে ভারতীয় আর্য সংস্কৃতির মিশ্রন ঘটে । ততকালিন সিলেটের কাছার এবং আসাম প্রভৃতি জুড়ে কামরুপ রাজ্য বিস্তৃত ছিল এবং শাসন দণ্ডে আর্যদের অধিকার ছিল বলে ঐতিহাসিক অচ্যুতচরণ সহ প্রায় সকলেই উল্লেখ করেছেন । রমেস চন্দ্র মজুমদার তার এনসিয়েন্ট ইন্ডিয়া Ancient India গ্রন্থে বাংলাদেশের রংপুর থেকে বগুরার করতোয়া নদী পর্যন্ত অত্র অঞ্চল কামরুপের অন্তর্গত ছিল বলে দেখিয়েছেন এবং সিলেট সহ বাংলাদেশের উল্লেখিত অলঞ্চ গুলো আর্যজাতীয় শাসকদের দ্বারা শাসিত হতো। খ্রিস্টিয় অষ্টম শতাব্দী পর্যন্ত সিলেট সহ ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার সমস্ত অঞ্চল অর্থাৎ আসাম মণিপুর কাছার ময়মনসিংহ জলপাইগুড়ি রংপুর ত্রিপুরা ইত্যাদিতে আর্যজাতীরাই শাসন দণ্ড পরিচালনা করত । আর্যদের অধিকারে ততকালে সিলেটের লাউড় অঞ্চলে আর্য রাজ্য থাকার প্রমাণ অচ্যুতচরণ চৌধুরী তার শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তে দিয়েছেন । ১৮৭২ সালে ভাটেরায় প্রাপ্ত তাম্রলিপি থেকে জানা যায় নবনীর্বান, গণগুণ নারায়ন ও গোবিন্দকেশব দেব নামক রাজাগণ এ অঞ্চলে এক সময় রাজত্ব করেছেন । অচ্যুতচরণ চৌধুরীর মতে ওরা আর্যবংশীয় রাজা ছিলেন । ঐতিহাসিক মতে দশম শতাব্দীতে বঙ্গদেশে যখন পাল রাজারা রাজ্যত্য করে সিলেটে তাদের অধিপত্য ছিল বলে কোন উল্লেখ নাই । সিলেটের প্রাচীন প্রশাসনিক ব্যবস্থার উল্লেখ সম্পর্কে এ অঞ্চলে প্রাপ্ত শিলালিপি, তাম্রলিপি, লোকগাঁতা ইত্যাদি সূত্রে বলা হয়েছে মহারাজ শ্রী চন্দ্রের সময়ে পৌণ্ডবর্ধন প্রদেশ বা ভুক্তির অন্তর্গত ছিল শ্রীহট্ট অঞ্চল । তখন শ্রীহট্ট মণ্ডল নামে ইহার উল্লেখ পাওয়া যায় ।
তথ্য ইন্টারনেট ।
০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:২২
আমি মিন্টু বলেছেন: ধন্যবাদ চেঞ্জার ভাই প্রথম থেকেই নিয়মিত লেখায় অনুপ্রেনা যোগানে । আর জী মাথায় রাখছি আপনার কথা ।
২| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ২:৩২
মামুন ইসলাম বলেছেন: প্রিয়তে নিয়ে রাখলাম সময় করে পড়ে নেব ।
০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:২৩
আমি মিন্টু বলেছেন: ধন্যবাদ বিগ ভ্রাদার মামুন ইসলাম ভাই । সময় করে পড়ে নিয়েন ।
৩| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:০৫
কিরমানী লিটন বলেছেন: সমৃদ্ধ ইতিহাসের চমৎকার পোষ্ট-অশেষ ধন্যবাদ রইলো,মুগ্ধ শুভকামনায় ...
০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:২৫
আমি মিন্টু বলেছেন: ধন্যবাদ কিরমানী লিটন ভ্রাদার পড়ার জন্য ।
৪| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৭:০৬
কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: পড়লুম জানলুম
লাগলো যে বেশ;
চাঁটগা ধরো বাছা
সিলেট করে শেষ
০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:২৭
আমি মিন্টু বলেছেন: ধন্যবাদ ভেবে না পাই ভ্রাদার তারাতারি করবো শেষ
তাহলে পড়ে মজা পাবেন বেশ বেশ ।
৫| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:০৭
সোনালী জামান বলেছেন: আপনার লেখা খুবই তথ্য সমৃদ্ধ। তবে সিলেটের লাউর রাজ্য সম্পর্কে কোন বর্ণনা প্রদান করেন নি। এ রাজ্য সম্পর্কে কি কোন বর্ণনা দেয়া যাবে।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ২:০৫
গেম চেঞ্জার বলেছেন: সিরিজ ভাল হচ্ছে। তবে যে কথা বলছিলাম সেটা যেন মনে থাকে। (১ম পর্বে)।