নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এই ঘরটির জন্য আমরা কোন স্পেশাল ক্যারেক্টার / ইমোটিকন গ্রহন করছি না।\nশুধুমাত্র সংখ্যা ও যে কোন সাধারন ক্যারেক্টার ব্যবহার করুন।\n

আমি মিন্টু

আমি মিন্টু › বিস্তারিত পোস্টঃ

সিলেটের ইতিহাস পর্ব ৫

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:০৮


সিলেট ইতিহাস পর্ব ১
সিলেট এর ইতিহাস ২ য় পর্ব
সিলেটের ইতিহাস ৩য় পর্ব
সিলেটের ইতিহাস পর্ব ৪
মোসলমান শাসন আমল
১৩০৩ খ্রিস্টাব্দে শাহ জালাল কর্তৃক ৩৬০ আউলিয়ার মাধ্যমে সিলেট বিজয় সম্পুণ্য করেন । এই বিজয়ের মধ্যে শুরু হয় বা সূত্রপাট ঘটে সিলেটে সুলতানী শাসনের । সুলতানদের আমলে এই অঞ্চলের প্রশাসন ব্যবস্থাকে কয়েকটি ইকলিমে বা ইক্তায় বিভক্ত করা হয়েছিল । ইক্তার প্রাশাসককে ওজীর বলা হতো । সিলেটের সর্ব প্রথম ওজীর হলেন সিকান্দর খান গাজী । এই সময় দিল্লীর সুলতানী পদে উপবিষ্ট ছিলেন আলাউদ্দীন খিলজী এবং বাংলার ততকালীন সম্রাট ছিলেন শামস উদ্দীন ফিরুজ শাহ । সিকান্দর গাজী কয়েক বছর শাসন পরিচালনা করেন এবং শাহ জালাল জীবিত থাকা সময় সিকান্দর গাজী এক নৌকা ডুবিতে মৃত্যু বরণ করেন । আর এই বিষয়টি তোয়ারিখে জালালী গ্রন্থে কবিতায় এই ভাবে উল্লেখ আছে যেমনঃ
যখনে মরিল সেই গাজী সিকান্দর
বেসরদার হৈল সিলট নগর
এজন্যে হযরত শাহ জালাল এমনী
নিযুক্ত করি দেন সরদার তখনি ।


সিকান্দর গাজীর পরে শাহ জালালের অন্য সঙ্গী অনুসারী হায়দর গাজী উপর সিলেটের শাসন ভার ন্যস্ত করা হয় । হায়দর গাজীর মৃত্যুর পর কার দ্বারা সিলেটের শাসন পরিচালিত হয়েছিল তা অজ্ঞাত । অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধির ধারণা করেন যে হায়দর গাজীর পরে নবাব ইস্পেন্দিয়ার দ্বারাও শাসিত হতে পারে । তারপর দিনাজপুরের রাজা গনেশ কর্তৃক গৌড়াধিপতি শামস উদ্দীন যখন নিহ্ত হলেন তখন সিলেটের শাসনকার্য কি ভাবে চলে ছিল তা জ্ঞাত হওয়া যায় নাই । তারপর গৌড় সম্রাট ইলিয়াছ বংশীয় বরবক শাহের পর ইউছুফ শাহের আমলে ১৪৮২ পুর্বে সিলেটের সাথে গৌড়ের সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছিল । শাহ জালালের দরগাহে প্রাপ্ত প্রস্তরলিপিতে ইউছুফ শাহের নাম অঙ্কিত থাকা এর প্রমান বলে অচ্যুতচরণ চৌধুরী মনে করেন । এই বংশীয় গৌড়ের শেষ রাজা মোজাফরের আমল ১৪৯৫ সাল পর্যন্ত গৌড়ের ছত্র ছায়ায় থাকিয়া শাহ জালালের দরগাহের খাদিম গণ দ্বারা সিলেটের শাসন দণ্ড পরিচালিত হয় । অতপর হুসেন শাহের আমলে ময়মনসিংহ, ঢাকা, নেত্রকোনা, কিশুরগঞ্জ সহ সিলেটের সুনামগঞ্জ এলাকার নিম্না অঞ্চল নিয়ে ইকলিমে মুয়াজ্জমাবাদ নামে একটি প্রশাসনিক ইউনিট প্রদেশও ঘটিত হয় । এ সময় গৌড় হতে নিয়োজিত কানুনগ দেওয়ান গণ কর্তৃক সিলেট শাসিত হতো ।

মোঘল শাসনামল
দিল্লীর মোঘল সম্রাট বাবরের পরে তার পুত্র হুমায়ুন সম্রাট হওয়ার পর হুমায়ুন এবং শের শাহের বিগ্রহ কালে ১৫৩৭ সালে বাংলার দেওয়ান এবং কিছু কিছু জমিদারবর্গ স্বাধীনতা লাভে বিদ্রোহ গড়ে তুলেন । সে সময় খোয়াজ ওসমান নামক এক বিদ্রোহী ইটা ও তরফ রাজ্য অধিকার করেন । তখনকার সময়ে শ্রীহট্টের গৌড়রের শাসন কর্তা ইউসুফ খাঁ এর সাথে বিদ্রোহ খোয়াজ ওসমানের যুদ্ধ হয় । অপরদিকে মোঘল সম্রাট হুমায়ুনকে পরাজিত করে শের শাহ দিল্লীর সম্রাট হলেন । সিলেটের শাসনকর্তা ইউসুফ খাঁ এর ভ্রাতা লোদি খাঁ সম্রাট শের শাহের দরবারে দিল্লীতে উপস্থিত হয়ে সিলেটের সার্বিক রাজনৈতিক অবস্থা বর্নণা করলে । শের শাহ লোদী খাঁ কে বিদ্রোহ দমনে নিয়োজিত করেন এবং বাংলার নাজিম ইসলাম খাঁ এর সহযোগিতার জন্য সেখানে প্রেরণ করেন । পরবর্তিতে নাজিম ইসলাম খাঁ এর সেনাপতি সুজাত খাঁ এর সেনা বাহিনীর কাছে খোয়াজ ওসমান পরাজিত হলে তরফ এবং ইটা রাজ্য মোগলদের শাসনে আসে । বিদ্রোহ দমনের পর লদি খাঁ পুর্ণ ক্ষমতার সাথে সিলেটে মোগল শাসন পুণ্য প্রতিষ্টা করেন । লোদি খাঁ এর মৃত্যুর পর তার পুত্র জাহান খাঁ সিলেটের শাসন প্রাপ্ত হলেন । জাহান খাঁ এর সময় দিল্লীর শাসকদের মধ্যে পরিবর্তন সংঘটিত হয়ে পর্যায়ক্রমে সম্রাট আকবর দিল্লীর সিংহাসনে উপবিষ্ট হলেন । সম্রাট আকবরের সময় কানুনগোদের দেওয়ানী ক্ষমতা হ্রাস করা হয় । সম্রাট আকবরের সময়ে সুবে বাংলা ১৯ টি সরকার ঘটন করা হলে সিলেট একটি সরকার রুপে গন্য হয় । সম্রাট আকবরের রাজস্ব বিভাগের মন্ত্রী রাজা তডরমাল সিলেটকে ৮টি মহালে বিভক্ত করে প্রতি মহালের রাজস্ব নির্ধারিত করেন । প্রাচীন কালের মুদ্রা অনুযায়ী সিলেটের এক একটি মহালের রাজস্ব নিম্নরুপ যেমনঃ
মহালের নাম রাজস্ব মন্তব্য
প্রতাপগর ৩৭০,০০
বাণিয়াচং ১,৬৭২,০৮০
বাজুয়া ৮০৪,০৮০
জয়ন্তীয়া ২৭,২০০
হাবিলি (সিলেট শহর) ২,২৯০,৭১৭
সতের খণ্ডল ৩৯০,৪৭২
লাউড় ২৪৬,২০২
হরিনগর ১০১,৮৫৭

সিলেট বিভাগ হতে সম্রাট আকবরের মুদ্রানুসারে সর্ব মোট ১৬৭০৪০ টাকা রাজস্ব আদায় করা হত । তাছাড়া সিলেট হতে বিভিন্ন ফলমূল ও বৃক্ষ এবং পশু পাখী বিক্রয় করে আয়কর বৃদ্ধি করে দিল্লীর মোঘল দরবারে পাঠানো হতো বলেও আইন এ আকবরী গ্রন্থে বরাতে শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত সহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে । দিল্লী হতে নিযুক্ত আমিল বা ফৌজদারগণ রাজস্ব বিষয়ে ঢাকার নবাবের অধিনে এবং শাসন বিষয়ে মুর্শিবাদের অধিনে কাজ করতেন । ১৭২২ খ্রিস্টাব্দে বাংলার নবাব মুর্শিদকুলি খাঁ রাজস্বের পাকা হিসাব প্রস্তত করেন । এতে সরকার সিলেট এবং এর নিকটস্থ এলাকা নিয়ে চাকলা শিলহাট ততকালের রেকড পত্রে উচ্চারণ ঘটিত হয় । ততকালে সুবে বাংলার ১৩ চাকলার মধ্যে শিলহাট দ্বাদশ স্থানীয় গণ্য ছিল । ত্রিপুরা রাজ্যের সরাইল বর্তমান ব্রাহ্মণ বাড়ীয়া জেলার উপজেলা এবং ময়মনসিংহ জেলার জোয়ানশাহী প্রভৃতি প্রসিদ্ধ পরগণা চাকলা শিলহাটের অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং রাজস্ব বর্ধিত করে ১৬৭০৪০ থেকে ৫৩১ ৪৫৫ টাকা নির্ধারণে শ্রীহ্ট্টকে ৮ মহাল হতে ১৪৮ মহালে বিভক্ত করা হয় । মহাল গুলো পর্বতিতে ভিন্ন ভিন্ন পরগণায় খ্যাত হয় । পরবর্তিতে সুজা উদ্দীনের সময় বাংলা ২৫ টি জমিদারীতে বিভক্ত হলে সিলেটকে ২১ নং স্থানে রাখা হয় । এই সময় বিবিধ ভিন্ন ভিন্ন নামে জায়গীর ভুমি বাদে শ্রীহট্টের খালসা ভুমি ৩৬ টি পরগণাভুক্ত ছিল ।
ব্রিটিশ আমল
ষোলশ শতাব্দিতে ভারত এবং পুর্ব এশিয়ায় বাণিজ্যের উদ্দেশে একদল ব্রিটিশ বণিক একটি জয়েন্ট‌ স্টক কোম্পানি গঠন করেন । উক্ত কোম্পানির সরকারি নাম ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি রাখা হয় । ১৫৮৫ কিং বা ১৫৮৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর ইংলান্ডের রাণী প্রথম এলিজাবেথ কোম্পানিকে ভারতে বাণিজ্যের জন্য রাজকীয় সনদ প্রদান করেন । এই সনদের ভিত্তিতে উক্ত কোম্পানি ২১ বছর পর্যন্ত ভারতের পুর্বাঞ্চলে বাণিজ্যের একচেটিয়া অধিকার লাভ করেছিল । উক্ত কোম্পানি ভারতের গুজরাট রাজ্যের সুরাট শহরে ১৬০৮ খ্রিস্টাব্দে মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে প্রথম বাণিজ্য কুঠির স্থাপনের অনুমতি পান । পরে তারা হুগলি সহ ভারতের অন্যান্য শহরে কুঠির স্থান করেন । সপ্তদশ শতাব্দীতে ১৬৫৮ সালে কোম্পানির প্রতিনিধি জেমস হার্ট ঢাকা শহরে অনুপ্রবেশ করলে তার মধ্য দিয়ে বাংলায় ব্রিটিশদের আগমন শুরু হয় । ১৭১৫ সালে মোঘল দরবার হতে অনুমতি পেয়ে কোম্পানির নিজেস্ব ব্রিটিশ মুদ্রার প্রচলন শুরু করেন । ১৭৩২ সালে মির্জা মোহাম্মদ আলী আলীবর্দী খাঁ ওড়িশা ও রাজমহল এবং বিহারের ফৌজদার ও সুজাউদ্দিন মুহাম্মদ খানের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন । সম্রাট মুহাম্মদ শাহ কর্তৃক বিহারকে বাংলার সুবাদের অন্তর্ভুক্ত করেন । সে সময় পর্যন্ত সিলেট মুঘলদের নিযুক্ত নবাবগণ দ্বারা শাসিত হতো । মুর্শিদাবদের ইতিহাস গ্রন্থের বরাতে অচ্যুতচরণ চৌধুরী লিখেন সিলেটে নিযুক্ত ১৮ নং নাবাব শমশের খাঁ এর অধীনে সীমান্ত প্রদেশ রক্ষায় আরোও ৪ জন নায়েব সিলেটের ফৌজদারীতে কাজ করতেন । ১৭৪০ খ্রিস্টাব্দে গিরিয়ার যুন্ধ সংঘটিত হলে শমশের খাঁ সরফরজ খাঁ এর পক্ষে সসৈন্যে উক্ত যুদ্ধে অংশ নেন এবং সরফরজ খাঁ এর সাথে তিনিও সেখানে নিহ্ত হন । এদিকে মির্জা মোহাম্মদ আলী আলীবর্দী খাঁ জয়োল্লাসে বঙ্গের মসনদে অধিষ্ঠিত হন । তাহার আমলে সিলেট কাছার জয়ন্তীয়া প্রভৃতি অঞ্চল মুঘলদের নিযুক্ত নবাবগণ কর্তৃক শাসিত হতো । ১৭৫১ সালে ২৯ নং নবাব নজীব আলী খাঁ নবাবী পদ প্রাপ্ত হয়ে সিলেটের শাসন পরিচালনায় নিযুক্ত হলেন । তাহার আমলে সিলেটের পূর্বাঞ্চলে পাহাড়ি লোক কর্তৃক নানাহ উৎপাত ও সংঘটিত হয় । পাহাড়ি লোকদের উৎপাত বন্ধ করতে সীমান্ত রক্ষাকারী নতুন নায়েব ফৌজদার মিরাট হতে আগমন করেন এবং মোসলমান ও খ্রিস্টান গোলান্দাজ সৈন্য বুন্দাশীল নামক স্থানে অবস্থান করেন । পাহাড়িদের আক্রমন ঠেকাতে সিলেটের বদরপুরে এক বৃহত্ত দুর্গ প্রস্তত করা হয়েছিল। যা আজও বদরপুরের কেল্লা হিসেবে পরিচিত আছে । পরবর্তিকালে ১৭৫৬ সালের ১০ এপ্রিল বাংলার স্বাধীন নবাব শাহ কুলি খান মির্জা মোহাম্মদ হায়বৎ জং বাহাদুর সিরাজউদ্দৌলা বাংলার মসনদে অধিষ্ঠিত হন তখন ৩০ নং নবাব শাহ মতজঙ্গ নোয়াজিস মোহাম্মদ খাঁ সিলেট নবাবি পদ প্রাপ্ত হন । ১৭৫৭ সালে মীর জাফর আলী খাঁ, রায়দুর্লভ এবং জগতশেঠ গং দের চক্রান্তে বাংলার স্বাধীন নবাব সিরাজ উদ্দৌলা বঙ্গের নদীয়া জেলার আম বাগানে ইংরেজদের সাথে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে পরাজিত হলেন । সাথে সাথে বাংলার স্বাধীনতার সুর্য অস্তমিত হলো । সিরাজ উদ্দৌলার পতনের পর বিশ্বাসঘাতক মীর জাফর বাঙ্গাল সুবাদার হিসেবে স্বীকৃত হয় । পরবর্তিকালে তার উপর ইংরেজরা অসন্তুষ্ট হয়ে মীর কাসেমকে স্থলবর্তি করে । উল্লেখ আছে যে সিলেট সুলতানী আমল থেকে চুণা ব্যবসায় প্রসিদ্ধ ছিল । মীর কাসেমের আমলে ইংরেজরা সিলেট অনুপ্রবেশ করে এবং ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি চুণা ব্যবসা করার জন্য মীর কাসেম কে দিয়ে সন্ধি করেন । ১৭৬০ খ্রিস্টাব্দে ২৭ সেপ্টেম্বর মীর কাসেমের সাপক্ষে সিলেটে চুণা সরবরাহের সন্ধি করা হয় । কিন্তু ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির লোকজন চুণা সরবরাহের অজুহাতে সিলেটের মানুষের উপর অমানবিক উৎপিড়ন চালাতে থাকেন । মীর কাসেম ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির লোকদের অত্যাচার নির্যাতন থেকে সিলেট সহ বাংলার মানুষের পাশে এসে দাঁড়ান । ইংরেজরা মীর কাসেমকে তাদের বিপক্ষে দেখে মীর জাফরকে বাংলার মসনদে পুনস্থাপন করে ১৭৬৩ সালের ১০ ই জুলাই সিলেটের চুণা ব্যবসা ব্যপ্তি জন্য ৫ম দফায় নতুন সন্ধি পত্র প্রণয়ন করেন । এই সন্ধি পত্র মোতাবেক ইংরেজরা চুণার আয়করের অর্ধেক মালিক হইয়া পড়ে এবং অপরার্ধেক সরকারের ব্যবহারের জন্য রয়ে যায় । এই ভাবেই মীর জাফরের সহযোগিতায় একটি একটি করে দেশীয় রাজ্য ইংরেজদের দখলে চলে যায় । ১৭৬৫ সালে ইংরেজরা বঙ্গ বিহার এবং উড়িষার দেওয়ানী লাভ করায় সিলেটও তাদের দখলে চলে যায় ।সে সময় জয়ন্তীয়া এবং লাউড় রাজ্য ব্যতিত সিলেটের নবাবদের অধিকৃত ভূভাগের পরিমাণ ছিল ২৮৬১ বর্গমাইল । ইংরেজ কোম্পানী ২৮৬১ বর্গমাইল ভূভাগের শুধু মাত্র রাজস্ব আদায়ে নিযুক্ত ছিল । শাসন ভার বা ফৌজদারী ক্ষমতা তখন নবাবগণের হাতেই ন্যস্ত ছিল । ১৭৭২ সালে ওয়ারেন হিস্টিংস ভারতে ২৫০ টি মত জেলা সৃষ্টি করেন । তখন সিলেটকেও জেলায় রুপান্তর করা হয় । পূর্ব বঙ্গের রাজস্ব সংগ্রহ ইত্যাদি প্রয়োজনীয় কর্ম নির্বাহের জন্য ঢাকায় রেডিনিউ বোড প্রতিষ্ঠিত করা হলো । সেই বোড হতে মিষ্টার থেকার Thecker সর্বোচ্চ কর্মচারী রুপে সিলেটে প্রথম আগমন করেন । তখনকার সময় ইংরেজ কর্মচারী দিগকে রেসিডেন্ট উপাদিতে আখ্যায়িত করা হতো । থেকারের সময় জয়ন্তীয়ার রাজা ছত্রসিংহ সিলেটের বৃটিশ প্রজাদিগকে নিপিড়িত করতেন । যে কারণে থেকারের আদেশানুসারে মেজর হেনিকার কর্তৃক পরিচালিত বৃটিশ সৈন্য জয়ন্তীয়া জয়ে সমর্থ হয় । এই ভাবে জয়ন্তীয়া কাছার ইত্যাদি রাজ্য সমুহ বৃটিশ শাসনের আওতায় সিলেটের কালেক্টরীর অন্তর্ভূক্ত হলে সিলেটের ভূভাগের আয়তন ৩৮০০ বর্গমাইলে গিয়ে দাঁড়ায় । ১৭৮০ সালে থেকার চলে গেলে রবার্ট লিন্ডসে নামক এক ইংরেজ কাউন্সিলার সিলেটের কালেক্ট হয়ে আসেন । এখানে এসে নিন্ডসে সিলেটের সম্পদের প্রতি ধারণা লাভ হয় । তাই তিনি ব্যক্তিগত তবিল থেকে এখানে প্রচুর টাকা বিনোয়গ করে বিভিন্ন জাতীয় ব্যবসা যেমনঃ
চুনাপাথর, লবন, হাতির চামরা, জাহাজ তৈরি এবং বিক্রি ইত্যাদিতে আত্মনিয়োগ করেন । অফিসের সময়টুকু বাদ দিয়ে বাকি সময়টুকু ব্যবসায় ব্যয় করে লিন্ডসে অগাধ অর্থ উপার্জন করেন । এ সময় সিলেটের লোক সংখ্যা ছিল ১ লাখ । আর রাজ্যস্য ছিল ২ লাখ ৫০ হাজার । লিন্ডসে আত্মজীবনি গ্রন্থের বরাতে অচ্যুত চরণ চৌধুরী সহ অনেক ঐতিহাসিকগণ লিখছেনঃ এ প্রদেশের দায়ত্ব লাভ এবং বেশি দিন থাকার জন্য লিন্ডসে ইংরেজ কোম্পানির উর্ধতম কর্ম কর্তাদেরকে বহু উত্তকুচ দিয়েছেন এবং এখানের রাজস্ব বিষয়ে কোম্পানির কাছে তিনি তার নিজ তবিল থেকেও সময় মত রাজস্ব আদায় করে যোগ্যতা প্রমাণ করতেন । এভাবে তিনি প্রচুরটাকা উপার্জন করে লর্ড শ্রেণীতে উন্নিত হন । কিন্তু তিনি সিলেটবাসীর উন্নয়নের জন্যে সামান্যতম অবদান রাখেননি । ১৭৮১ সালে সিলেটে প্রলয়ঙ্করী বন্যার পানি ৩০ ফুট উঁচু হয়েছিল বলে রবার্ট লিন্ডসে তার জীবনিতে উল্লেখ করেন । কিন্তু ইংরেজ কোম্পানি দুর্গত্য মানুষের রাক্ষার্তে কোন উদ্যোগ নেয়নি । লিন্ডসেও তার দায়দায়িত্ব অবলিলায় এড়িয়ে যান । সে সময় দুর্ভিক্ষ এবং মহামারিতে কোম্পানির অবহেলায় সিলেটের হাজার হাজার মানুষ মারা যান ।


ছবিঃ গুগল
লেখা তথ্যঃ ইন্টারনেট

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:১৯

প্রামানিক বলেছেন: ইতিহাসের অনেক তথ্য জানা হলো। ধন্যবাদ

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৪০

আমি মিন্টু বলেছেন: ধন্যবাদ প্রামানিক ভাই শুরু থেকেই সাথে থাকার জন্য ।
বিট্রিশ আমল বাদ পরে গেছিল ওইটুক পড়ে যাইয়েন ।

২| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৩৪

নিমগ্ন বলেছেন: চালিয়ে যান!

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৪১

আমি মিন্টু বলেছেন: ধন্যবাদ সাথে থাইকেন :)

৩| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১:২৪

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য অনেক কিছু জানলাম ।

৪| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ২:০১

গেম চেঞ্জার বলেছেন: সিরিজ ভাল হচ্ছে.....।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.