নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সিলেট ইতিহাস পর্ব ১
সিলেট এর ইতিহাস ২ য় পর্ব
সিলেটের ইতিহাস ৩য় পর্ব
সিলেটের ইতিহাস পর্ব ৪
সিলেটের ইতিহাস পর্ব ৫
সিলেটের ইতিহাস পর্ব ৬
সিলেটের ইতিহাস পর্ব ৭
এই পর্যন্ত বাংলাদেশের অন্য কোথায় বাংলা ভাষার দাবিতে কোন সভা হয়েছে বলে আর শোনা যায়নি । পরবর্তিতে ১৯৪৮ সালে ৮ মার্চে সিলেটের গোবিন্দ পার্কে সভা অনুষ্টিত হলে এতে বিঘ্নতা ঘটায় পাকিস্তান পন্থী মুসলিম লীগের সন্ত্রাসবাদি নেতারা । ১০ই মার্চে সিলেটের মহীলা মুসলীম লীগ প্রতিবাদ সভার ডাক দেন । কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন তা হতে দিলেননা । তারা সিলেট শহরে দুই মাসের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেন । প্রতিবাদের ফেটে পড়ে সিলেটবাসী । দুর্বার আন্দোলন গড়ে ওঠে সারা জেলায় । ধারাবাহিক আন্দোলন হয় হবিগঞ্জে, মৌলভীবাজার এবং সুনামগঞ্জেও । ১৯৫০ সালের কোন একসময় অসম্প্রাদায়ীক ছাত্র সংগঠন গড়ার লক্ষে সিলেটের রসময় মেমোরিয়েল হাইস্কুলে এক সমাবেশ আহবান করে সংগঠন গড়ার প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয় । উক্ত কমিটির আহবায়ক চেয়ারম্যান মনোনিত হন অধ্যাপক আসদ্দর আলী, আহবায়ক সদস্য বাংলাদেশের বর্তমান অর্থ এবং পরিকল্পনা মন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ও তারা মিয়া প্রমুখ । এ কমিটি গড়ার কিছু দিন পরেই পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিলেটে এক সরকারী সফরে এলে তিনি এধরণের সংগঠনের জন্ম রোধ করতে স্থানীয় প্রশাসনকে কড়া নির্দেশ দিয়ে যান । যার ফলে জেলা প্রশাসক ১৩ই নভেম্বর থেকে সিলেটের সদর থানা এলাকায় দুই মাসের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেন । এমনকি সংগঠনের উদ্যোক্তাদের উপরও ১৪৪ ধারা প্রয়োগের নির্দেশ দেওয়া হলো । তবুও সাবেক জেলা প্রশাসক তা দাবিয়ে রাখতে পারেননি । ১৯৫১ সালে আসদ্দর আলী, তারা মিয়া, এ এম আব্দুল মুহিত, নাসির উদ্দীন আহমদ চৌধুরী সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দের প্রচেষ্টায় ১৬ নভেম্বর গোলাপগঞ্জের মৌরপুর পরগণাধীন পাঠানটুলা মাঠে জমায়েত হলেন সিলেটের ছাত্র নেতারা । সম্মিলনের কাজ শেষ হবার পুর্বেই ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিরাট পুলিশবাহিনী নিয়ে সম্মিলেন স্থলে উপস্থিত হয়ে সম্মিলন মাঠে ১৪৪ ধারা জারি করলেন । তখন নেতৃবৃন্দ কৌশলগত ভাবে উপস্থিত সমাবেশকারী সকলের প্রতি নামাজ আদায়ের আহবান জানান । একজন দাড়িয়ে আজান দিলেন । সকলেই অজু করে এসে জামাতবদ্ধ হয়ে নামাজ আদায় করেন । নামজের ইমামতি করছিলেন মাওলানা শামসুল হক । তিনি নামাজ শেষে এক দীর্ঘ মোনাজাত করতে গিয়ে সমাবেশের উদ্দেশ্যের কথা ব্যক্ত করে বলেন হে আল্লাহ আজকের এই সমাবেশে গঠিত সিলেট জেলা ছাত্র ইউনিয়ন নামে সংগঠনকে তুমি কবুল কর । সংগঠনের মনোনিত সভাপতি আব্দুল হাই এবং খন্দকার রুহুল কুদ্দুসকে সাধারণ সম্পাদক এভাবে নেতাদের নাম এবং পদবি উল্লেখ করা হয়েছিল । পুলিশের ১৪৪ ধারার মধ্য দিয়ে মোনাজাতে সর্ব বিষয় ব্যক্ত করে সংগঠনের জন্ম হয়েছে বলে ওই দিনের মোনাজাতকে ঐতিহাসিক মোনাজাত বলে সিলেটে অভিহিত করা হয় । পরবর্তিতে এই সংগঠনের নেতারাই ঢাকা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ সহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় সংগঠনগুলোর সাথে যোগসাজশ রেখে বাংলাভাষার দাবিতে সংগ্রাম চালিয়ে যান । ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারির অনেক আগে থেকে সিলেট শহরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয় । ২১শে ফেব্রুয়ারির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালে আন্দোলন শুরু হলে সাথে সাথে সিলেট শহরে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে শহর জনস্রোতে পরিণত হয় । বিক্ষুব্ধ সিলেটবাসী ২১শে ফেব্রুয়ারি হতে ১৫ দিন সিলেটে ধর্মঘটের ডাক দেন । এভাবেই সিলেটবাসী ভাষা আন্দোলনে ভুমীকা রাখেন ।
প্রাচীন জাতিগোষ্ঠীর বিবরণঃ
খাসিয়ারা খাসিয়া ও জয়ন্তীয়া পাহাড়ে বসবাস করতেন । এরা কয়লা জাতীয় দ্রব্যের বিক্রেতা ছিলেন । বহু কাল পরে এদের অনেকে খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহন করেছেন ।
Manipuri dance Ras Lila
ত্রিপরা এরা ছিলেন বোদো জাতীয় হিন্দু । ত্রিপরাগণ বাঙ্গালী সংস্রব পেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে । পরবর্তিকালে মণিপুরিদের আচার ব্যবহার অনুসরণ করে তাদের ন্যায় বেশভূষা ধারণ করতে যত্নবান হন ।
মণিপুরী
মণিপুরীগণ শ্রীহট্টের ঔপনিবেশিক জাতি । মণিপুরীরা অর্জ্জুন পুত্র বভ্রুবাহনকে তাদের আদিপুরুষ বলিয়া ক্ষত্রিয়ত্বের দাবি করে ও উপবীত ধারণ করে। শ্রীহট্ট সদর, পাথারকান্দি, জাফরগড়ের লক্ষিপুর, শিলং, লংলা, ধামাই, তরফ, আসামপারা, সুনামগঞ্জ প্রভৃতি স্থানে ওদের বসবাস। বহ্মযুদ্ধের পরই মণিপুরিরা শ্রীহট্ট এবং কাছাড়ে আগমন করে উপনিবেশ স্থাপন করে । মণিপুরীদের আলাদা এক কথ্য ভাষা আছে ।
লালং
লালং প্রাচীনকালে ওরা কাছাড়ের ডিমাপুর নামক অঞ্চলে বসবাস করতেন । কথিত আছে যে তথাকার রাজা মানবদুগ্ধ পান করতেন এবং ওদের লালংগণ দৈনিক ছয়সের দুধ যুগান দিতে হতো । রোজ ছয়সের দুধ যুগান অসাধ্য ভেবে, রাজার ভয়ে পালায়ন করে জয়ন্তীয়ায় এসে বসবাস করেন । পরবর্তিকালে পাহাড়ি অঞ্চল পরিত্যাগ করে শ্রীহট্টের সমতল ক্ষেত্রে এসে বসবাস শুরু করেন । সামাজিক দিক দিয়ে ওরা বিবাহউত্তর স্ত্রী এর বংশভুক্ত হয় এবং স্ত্রী এর মরণউত্তর নিজ বংশে গণ্য হয় ।
উক্ত পার্বত্য জাতি ছাড়া শ্রীহট্ট জেলায় আরও বহু জাতিগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে। যাদের মধ্যে কামার, কুমার, কায়স্থ, কুশিয়ারী, কেওয়ালী, কৈবর্ত্ত, নমশ্রুদ্র, গণক, গাড়ওয়াল, গন্ধবণিক, গোয়াল, জেলে, চুণার, ঢোলি, তাতি, তেলী, দাস, ধোপা, নদীয়াল, নাপিত, ব্রাহ্মণ, বর্ণ-বাহ্মণ, ময়রা, যুগী, বারুই, বৈদ্য ইত্যাদি । এদের মধ্যে পার্বত্য সম্প্রদায় ব্যতিত সকলই বাঙ্গালী জাতি । খ্রিস্টীয় সহস্রাব্দের পরবর্তিকালে শ্রীহট্টে মোসলমান জাতিগোষ্ঠী আগমন ঘটে । মুসলমানদের মধ্যে সৈয়দ, কোরায়েশ, শেখ, মোগল বংশীয় বিশেষ উল্লেখ যোগ্য। মুসলমানদের মধ্যে সাধারণ মুসলমান সহ প্রায় ৯৫ শতাংশ সুন্নী মতাদর্শে বিশ্বাসী এবং বাকি ৫ শতাংশ শিয়া বা অন্যান্য মাতাদর্শের লোক বলে জানা যায় ।
প্রাচীন যুগে বাণিজ্য বিবরণঃ
সিলেটের ইতিহাস গ্রন্থ সমুহের উদ্ধৃতি মতে গ্রীকদূত মেগাস্থিনিস এবং খ্রিস্টীয় প্রথম শতকের টলেমির নৌবাণিজ্য নির্দেশিকা বিবরণীতে আছে কিরাদিয়া পরর্বতিতে কিরাত হতে ত্রিপুরা আখ্যা প্রাপ্ত দেশের সীমান্তে একটি মেলা বসতো । আর তাতে আমদানি হতো শ্রীহট্টের তেজপাতা এবং দ্রাক্ষাপত্রের ন্যায় পাটি । প্রখ্যাত ঐতিহাসিক অচ্যুতচরণ চৌধুরী উক্ত মেলায় আমদানি কৃত পাটিকে শ্রীহট্টের প্রসিদ্ধ শীতল পাটি বলেছেন । ঐতিহাসিক আলোচনায় বিভিন্ন দিক থেকে জানা যায় যে শ্রীহট্ট প্রাচীন কাল থেকেই সামাজিক, অর্থনৈতিক ও ভৌগোলিকভাবে সমৃদ্ধ ছিল । প্রাচীন রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক, শিল্প ও সাহিত্য বিষয়ে বিভিন্ন গ্রন্থের উদ্ধৃতিতে বলা হয় । বিভাগীয় এই শহরটি প্রাচীনকাল থেকেই বিশ্ব দুয়ারে বা দরবারে সুপরিচিত। এ বিষয়ে ইতিহাস গবেষক এবং সাংবাদিক মতিয়ার রহরমান চৌধুরী'র রচিত বিলেতে সিলেটবাসী গ্রন্থে এবং সিলেট বিভাগের ইতিবৃত্তে এই অঞ্চলে বিভিন্ন নৌ ঘাটির থাকার উল্লেখ পাওয়া যায । যার মধ্যে মৌলভীবাজার জেলার অধীন রাজনগর থানার ইন্দেশ্বরের নৌ ঘাটি এবং হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচংগের আজমিরিগঞ্জ ও ইনায়েতগঞ্জের প্রাচীন বাণিজ্যিক নৌ ঘাটিসমুহ উল্লেখযোগ্য। এছাড়া অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্বনিধি শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তে কাষ্ঠ শিল্প বিষয়ক অধ্যায়ে লিখেছেন শ্রীহট্টের কাঠ শিল্প প্রাচীনকাল থেকেই বিখ্যাত । প্রাচীনকালে এই অঞ্চলের কাঠ দ্বারা শ্রীহট্টের বিভিন্ন স্থানে বাণিজ্যের জাহাজ ও যুদ্ধের জন্য জাহাজ তৈরীর বিবরণ বিভন্ন ঐতিহাসিক গ্রন্থে লিখিত আছে । এই অঞ্চলে প্রাপ্ত ঐতিহাসিক তাম্রফলকে উদ্ধৃতি সহ বালা হয় । কামরুপ অধিপতি রাজা ঈশান দেবে এই অঞ্চলে সমর তরী যুদ্ধ জাহাজ তৈরি করতেন । মোগলদের রাজত্বকালে লাউড় অধিপতিরা মোগল সম্রাটদেরকে যুদ্ধ জাহাজ তৈরি করে দিতেন । পরবর্তী সময়ে ইংরেজ শাসনামলে মিঃ লিণ্ডস যখন এই অঞ্চলের শাসনকর্তা ছিলেন তখন প্রায় একাদশ সহস্র মণবাহী এক জাহাজ মিঃ লিণ্ডস নিজের জন্য তৈরি করান । তাছাড়াও সিলেট বিভাগে প্রাচীন কালে আগর কাট দ্বারা আতর তৈরি হতো । হ্যান্টের স্টাটিস্টিকেল একাউন্ট বলা হয় । সিলটের আগর কাটের আতর আরব ও তুর্কিতে রপ্তানি হতো এবং ইহা ভারত বিখ্যাত আতরে গণ্য ছিল । সিলেটের ছাতক হতে চুণা পাথর, দু আলীয়া পাহাড়ের লবণ, জয়ন্তীয়া ও লংলা পাহাড়ের কয়লা, এবং মালনী ছড়া, ইন্দেশ্বর এবং কালীনগর প্রভৃতি চা বাগান হতে রপ্তানি যোগ্য চা উৎপন্ন হয় । যা প্রাচীন কাল হতে অদ্যবদি দেশী বিদেশী কোম্পানির মাধ্যমে বাজার জাত করা হচ্ছে বলে উল্লেখ পাওয়া যায় ।
তথ্যঃ
ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ ও বিভিন্ন নিউজ পত্র পত্রিকা সাইট ও বিভিন্ন বাংলা ওয়েব সাইট থেকে ।
১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৬
আমি মিন্টু বলেছেন: কান্দনের কি আছেরে ভাই । মেল ঠিকানা দিয়াদেন ডিটালস রেফারেন্স দিয়াদিমুনি । কচুরমাথা
২| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:২৭
প্রামানিক বলেছেন: এটাও পড়লাম। অনেক ভাল লাগল। ধন্যবাদ
১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৯
আমি মিন্টু বলেছেন: ধন্যবাদ প্রামানিক ভাই ।
৩| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৮
জাতি_ধর্ম_বর্ণ বলেছেন: ঐশী মুসলমানের মাইয়া হয়ে এমন কাজ করতে পারলো? ছি ছিঃ
১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৭
আমি মিন্টু বলেছেন: কি করার আছেরে ভাই সব দোষ নেশার । যে নেশা করে তার সঙ্গে পাগল অবুঝের কোন পার্থক্য আছে কি ?
যেমন আপনি মাঁঝে মাঁঝে পাগল আর অবুঝ ছাগলের মত পোস্ট ও মন্তব্য করেন । তাতে কি কেউ আপনারে
বাঁধা দিছে দেয় নাই । আপনাকা মন্তব্যের জন্য ধনবাদ ।
আপনার পাগলামি দিন দিন বেড়ে চলছে চলুক আরো চলুক
তবে জানেনতো মাঝে মাঝে আপনাদের নিয়ে ভয় হয় কখন না আবার কার চাপাতির ভোগ হয়ে পরেন ।
যাই হোক ভাই একটু সতর্ক অবলম্ভবন কইরেন । সবাইতো ভালো না তাই সবার মনও এক রকম না ।
আমি আপনার পোস্ট ও মন্তব্যকে সাধু বাদ জানাই ।
৪| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৮
রুদ্র জাহেদ বলেছেন: দেখে ভালো লাগতেছে।সময় করে পড়তে হবে
১৪ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৯
আমি মিন্টু বলেছেন: দেখেই ভাললাগচ্ছে যহণ পড়লে আরো ভাললাগবো সময় কইরা পইড়া লইয়েন কিন্ত ।
৫| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:১০
সোনালী জামান বলেছেন: সিলেট বিভাগ গঠনও কিন্তু সিলেটের ইতিহাসের অংশ। কিন্তু এ বিষয়ে আপনার লেখায় কোন আলোচনা নেই। আশা করি এ বিষয়সহ ভাষা আন্দোলনের পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত সিলেটের ইতিহাস নিয়ে আরেকটি পর্ব লিখবেন। ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:২৫
গেম চেঞ্জার বলেছেন: পোস্ট অনবদ্য হয়েছে। + শেষটাও পড়লাম। ডিটেইলেড রেফারেন্স পেলাম না।