নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গণতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদীদের জয়যাত্রা অগ্রগামী হোক

fb.com/naminrng হাতে গোলাপফুল ধরলে তার কিছু গন্ধ লেগে থাকে।

nurul amin

আমি

nurul amin › বিস্তারিত পোস্টঃ

মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমিকের মানবেতর জীবন, চোখের পানি আটকাতে পারলাম না

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৭:৫০

পরনে ছেঁড়া লুঙ্গি। পায়ে প্লাস্টিকের স্যান্ডেল। গায়ের ময়লা শার্টের এখানে-ওখানে ফুটো। কারও পরনে প্যান্ট, কিন্তু বেল্ট নেই। ছেঁড়া কাপড় দিয়ে তৈরী ফিতায় কোন রকমে আটকে রাখা। চেহারা বিবর্ণ। প্রত্যেকের মুখে অগোছালো লম্বা দাড়ি-গোঁফ। মাথার চুলও লম্বা। কারও হাতে পলিথিনের ব্যাগ, কারও বা হাত খালি। এক টুকরো ‘আউট পাস’ ছাড়া আর কিছু নেই। তারা ১২০ জন। উদ্ভ্রান্ত চেহারায় উন্মাদের মতো ঘুরছেন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে। গায়ের কাপড় আর চেহারা দেখে বোঝার উপায় নেই তারা বিমানে করে দেশে ফিরেছেন। সঙ্গে বাড়ি যাওয়ার টাকা না থাকায় সকাল থেকে বিমানবন্দরের সামনে পায়চারি করছিলেন তারা। ‘বিদেশী’ হওয়ার কল্যাণে কারও কাছে হাতও পাততে পারছেন না। আবার যোগাযোগ করতে পারছেন না গ্রামে থাকা স্বজনের সঙ্গে। সংসারে সচ্ছলতা আনতে স্বপ্ন নিয়ে বিদেশে গিয়ে উল্টো সর্বস্ব হারিয়ে এক কাপড়ে দেশে ফিরেছেন। গতকাল ভোরে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তাদের ৫৮ জন এবং ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের আরও একটি ফ্লাইটে করে আরও ৬২ জন ওমান থেকে ফিরেছেন। এভাবে প্রতিদিন শ’ শ’ বাংলাদেশী শ্রমিক মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে ফিরছেন। তারা সব হারিয়ে, একেবারে নিঃস্ব হয়ে পা রাখছেন দেশের মাটিতে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে ফেরা শ্রমিকরা জানিয়েছেন, নানা কারণে মধ্যপ্রাচ্যে বিপাকে পড়েছেন বাংলাদেশী শ্রমিকরা। বাংলাদেশী দূতাবাসের অসহযোগিতায় মাসের পর মাস কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে কাটতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। মাত্র ২০ টাকার জন্য দুই মাস জেল খাটতে হয়েছে। নির্যাতনের কারণে বন্দি অসংখ্য বাংলাদেশী শ্রমিক হাসপাতালে যাচ্ছেন। দেশে ফেরতরা শরীরের কাপড় খুলে দেখিয়েছেন নির্যাতনের চিহ্ন। এ কারণে অনেকের পা ফুলে গেছে। শরীরে সৃষ্টি হয়েছে ক্ষতের। ইলেকট্রিক শকে জটিল রোগে আক্রান্ত হয়েছেনও কেউ কেউ। তারা জানান, ওমানের সোয়ারের সাহাম জেলে সাড়ে ৪ মাস নির্যাতনের পর গত ২রা ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের সন্দ্বীপের তরুণ মোস্তফার মৃত্যু হয়। তিনি মারা যান বিনা চিকিৎসায়। গত চারদিন ধরে তার লাশ পড়ে আছে হাসপাতাল মর্গে। বাংলাদেশী নাগরিক হলেও দূতাবাস লাশ দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করেনি। একটি জেলে নির্যাতনের কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আরও দু’জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাদের অবস্থাও ভাল নয়। সোয়ারের জেলেই আছেন ১৮০০ বাঙালি। তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। হতভাগ্য শ্রমিকদের কেউ গিয়েছিলেন স্ত্রীর গহনা বিক্রি করে। কেউ বা বসতভিটা-জমি বিক্রি করে। কেউ আবার ধার-কর্জ করে পাড়ি জমিয়েছিলেন সুদিন ফেরানোর আশায়। কিন্তু তা ফেরেনি তাদের, দেনাও শোধ হয়নি। উল্টো অকল্পনীয় পরিস্থিতির শিকার হতে হয়েছে সেখানে। দেশে ফিরেছেন অন্ধকার ভবিষ্যৎ নিয়ে। তাই বিমানবন্দরেই হাউমাউ করে কাঁদতে দেখা গেছে অনেককে। আহাজারি করছেন অনিশ্চিত জীবনের জন্য।

কুমিল্লার আলী হোসেন ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সে দেশে ফেরেন গতকাল। বললেন, যারা চাকরি দিয়ে নিয়ে গেছে, তারা কথা রাখেনি। পৌঁছার পর আমাদের পাসপোর্ট ও অন্য কাগজ নিয়ে নেয়। কয়েক মাস কাজ করিয়ে বেতন না দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। তখনই আমরা অবৈধ হয়ে যাই। রাস্তায় বেরুলে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। এখন বৈধ-অবৈধ কোন বাঙালিকেই ছাড় দেয়া হচ্ছে না। যে কাউকেই ধরে নিয়ে জেলে ঢুকিয়ে রাখছে। পরে পাঠিয়ে দিচ্ছে দেশে। বাংলাদেশ এ বিষয়টি জানলেও কিছু করছে না। শ্রমিকরা ২ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত জেল খেটে দেশে ফিরছেন। তিনি বলেন, আমি ১০ মাস হলো গেছি, কিন্তু এর ৪ মাস জেল খেটে শুধুমাত্র শরীরটা নিয়ে দেশে ফিরেছি। অথচ যাওয়ার সময় ৩টি বড় ব্যাগ হাতে ছিল। একটিও আনতে পারেনি। আমার পাসপোর্টও নিয়ে গেছে। ছেলে বলেছিল, একটা খেলনার গাড়ি আনতে। আমি বলেছি, পড়ে বড় হও। মোটরসাইকেল কিনে দেবো। এখন তো খেলনার গাড়ি নিয়েও তার সামনে দাঁড়ানোর সামর্থ্য নেই। তাদের ভবিষ্যতের জন্য কিছু করতে পারলাম না। বাবা হিসেবে ব্যর্থ হয়ে গেলাম। তিনি জানান, দূতাবাসের কর্মকর্তারা জেলে গেলে মুক্ত করে আমাদের দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করার অনুরোধ করি। তারা এক সপ্তাহের মধ্যে পাঠানোর কথা বলেন। কর্মকর্তারা আমাদের টিকিট দেশ থেকে আনার কথা বলেন। আবার ওমান সরকারের কাছ থেকেও টিকিট নেন। পরে একটি টিকিট তারা বিক্রি করে সেই টাকা আত্মসাৎ করেন। জেলে থাকা প্রত্যেক বিদেশী শ্রমিককে সৌদি সরকার সহায়তা হিসেবে প্রত্যেক দিন ৭ রিয়াল করে দেয়। এগুলো জেল খরচ বাবদ। কিন্তু আমাদের যেভাবে রাখে তাতে ২ রিয়ালও খরচ হয় না। বাকি ৫ রিয়াল যা বাংলাদেশী মুদ্রায় এক হাজার টাকা। এগুলো দূতাবাসের কর্মকর্তারা জেলের লোকদের নিয়ে আত্মসাৎ করেন। এ জন্য আমাদের যত দিন বেশি জেলে রাখা যায় ততই তাদের লাভ বলে তারা কোন কাজই দ্রুত করেন না। কালক্ষেপণে থাকেন ব্যস্ত। এতে তাদের ব্যবসা হয়। বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম এই কাজটি করছেন। ফেনীর আনোয়ার হোসেন জমি বিক্রি করে দু’বছর আগে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশে যান। দু’টি দোকান দেন তিনি। এর জন্য দেশ থেকে সুদে ধার করে নেন ৩০ লাখ টাকা। বলেন, এক বছর দোকান চালাই। কিন্তু হঠাৎ একদিন দোকান থেকে আমাকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। ৫ মাস জেল খাটি। অবশেষে এক প্যান্ট আর এক শার্ট সম্বল নিয়ে দেশে ফিরেছি। আমরা দূতাবাসের সহায়তা চেয়েছি। কোন সহায়তা পাইনি। সাইফুল ইসলাম জেলে এলে তার কাছে আবেদন জানাই। তিনি বললেন, দেশে যাওয়ার দরকার নেই। গেলে গুলি করে মেরে ফেলবে। পরিস্থিতি ভাল না। চিঠি দেয়ার পরে তিনি পুলিশের কাছে আমাদের ‘কুকুর’ বলে গালি দেন। পুলিশ এসে আমাদের দেশপ্রেম নিয়ে কটাক্ষ করেছে। যশোরের মারুফ ছেঁড়া স্যান্ডেল পায়ে আর ছেঁড়া প্যান্ট পরে দেশে ফিরেছেন। তা দেখিয়ে বলেন, শুধুমাত্র সেখানকার লোকদের নির্যাতনের কারণেই আমার এ অবস্থা। তারা জেলে বাঙালিদের পশুর মতো পেটায়। ৭০ জনের ১২ বাই ৬ মিটারের রুমে ২৫০ বন্দি রাখে। আমরা ঘুমোতে পারতাম না। গায়ে গা লাগিয়ে থাকতে হতো। একজনের পা লাগতো আরেকজনের মুখে। এভাবে থাকতে থাকতে পুরো শরীরে ব্যথা হয়ে গেছে।মানবজমিন

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৭:৫২

nurul amin বলেছেন: অবৈধ সরকারের বোধোদয় হোক

২| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:৩৮

হতাশ নািবক বলেছেন: নিজেই লিখে , নিজেই কমেন্ট করেন। এই না হলে ব্লগার।


অবশ্য নিজের ঢাক নিজেই পেটানো ভাল তাতে ফেটে যাবার ভয় থাকেনা।


যে বিষয়ের অবতারণা করেছেন তা সত্যিই খুবই মানবেতর,কষ্টদায়ক সরকারের এ বিষয়ে আশু পদক্ষেপ কামনা করছি।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:০৩

nurul amin বলেছেন: এটা নতুন স্টাইল। এর মাঝেজা আপনি বুঝবেন না।

৩| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:৫৯

হাসিব০৭ বলেছেন: আমি যতটুকু জানি আওয়ামিলীগের সাথে মধ্যপ্রাচ্যের কোন সরকারের সাথেই কখনও ভাল সম্পর্ক ছিল না আজও নেই। তাই হয়তবা এই দূরবস্থা

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:০৫

nurul amin বলেছেন: বিগ গেম: বাংলাদেশ নিয়ে ৬ শক্তির লড়াই! Click This Link

৪| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১২

মো. আলী রেজা বলেছেন: জাতীর জন্য কান্না কাটি ।

৫| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:০২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অথচ রেমিটেন্স নিয়ে কত গর্ব!!!

আবার দুবাইকে ভোট না দিয়ে ভোট দেয় রাশীয়াকে-অথচ শেষমেষ দুবাইই পাস করে.. তাহলে এই ব্যর্থতার দায় কে নেবে? লাভ হয়েছে কি সকল কর্শী ভিসা বন্ধ!!!

জয় বাংলা!

এই চেতনা এই পররাষ্ট্রনীতি আর এই দূরদর্শীতা নিয়ে দেশ চালাচ্ছে তারা!!!

আর মিডিয়াতো ঘুমে। এইসব এখন আর নিউজ হয় না! এত এত টিভি চ্যানেল এত এত পতি্কা...!!! তারা সব শীতনিদ্রায়!!!!!

কিন্তু ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না।

এই লাখো মানুষের কান্না, তাদের উপর কৃত জুলুম অন্যায়ে র শাস্তিও পেতেই হবে।

শুধু একদেশমূখি নীতি নিয়ে সামনে যে কি দুরবস্থায় পড়তে যাচ্ছে দেশ ভাবতে কষ্ট হয়!!!

অথচ তাদের বিবৃতিবাজি অব্যহত চলছে!!!!!!!!!!!

৬| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:৩২

নিশাত তাসনিম বলেছেন: ছাত্রলীগকে দেশের সোনার ছেলে বলা হয়।

আমার মতে সোনার ছেলে তারাই যারা মিডল-ইস্টে এত জুলুম নির্যাতন কষ্ট সহ্য করে বাংলাদেশ বিলিয়ন বিলিয়ন কোটি টাকা রেমিটেন্স অর্জন করতে সাহায্য করছে।

ওয়ার্ল্ড এক্সপো ২০২০ আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ সরকার দুবাইকে ভোট না দিয়ে রাশিয়াকে দিয়ে অন্যায় করেছে। শুধু দুবাই থেকেই বাংলাদেশ বছরে কত কোটি টাকা রেমিটেন্স অর্জন করে তা কারও অজানা নয়।

দুবাই বাংলাদেশের ভিসা বন্ধ করে দিয়েছে। সরকার কি পারতোনা ভিসা খুলে দেওয়ার বিনিময়ে দুবাইকে ভোট দিতে? কিন্তু সরকার তা করবেনা। বাংলাদেশের ১৫০০ কোটি টাকার বাৎসরিক রেমিটেন্স জাহান্নামে যাক। সরকারের বাংলাদেশে রেমিটেন্স বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তা করার সময় কোথায়?

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৯:০৬

nurul amin বলেছেন: রাশিয়াকে ভোট দেয়ার কোন যুক্তিকতা ছিল না

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.