নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ পথিক বেশে ঘুরছে দেশে দেশে একটু ছায়াতলে থমকে দাঁড়ায়, স্মৃতিটুকু রেখে শুধু একদিন তো চলে যায়।
প্লাস্টিকের ব্যাগ দিয়ে তৈরি আর্জেন্টিনার জার্সি পরা ছবি ভাইরাল হওয়ার পরে একটি পাঁচ বছর বয়সী আফগান শিশু ইন্টারনেট তারকা হয়ে উঠেছিল। তার নায়ক ফুটবল স্টার লিওনেল মেসি। এটি ২০১৬ সালের কথা। যুদ্ধবিদ্ধস্ত আফগানিস্তানের ৫ বছরের এক শিশু মূর্তজা আহামাদী তার বাবার কাছে আবদার করেছিল তার প্রিয় খেলোয়ার মেসির একটি জার্সি কিনে দিতে। কিন্তু অভারের সংসারে তার বাবার সে সামর্থ্য ছিল না। পরে বড় ভাই হুমায়ুন ছোট ভাইয়ের অবদার মিটিয়েছিল সাদা-নীল প্লাস্টিক ব্যাগ দিয়ে জার্সি বানিয়ে। নিজের হাতে জার্সির এক পাশে ইংরেজি বর্ণে লেখে মেসি আর নিচে লেখে মেসির আইকনিক জার্সি নাম্বার ১০। আর ছোট ভাইয়ের সেই প্লাস্টিকের জার্সি গায়ে ফুটবল খেলার ছবি ফেসবুকে দিয়েছিল হুমায়ুন।
রাতারাতি অনলাইনে ভাইরাল হয়ে যায় সেই ছবি। এমনকি খোদ মেসি আগ্রহী হয়ে উঠেন আফগানিস্তানের এই খুদে ভক্তের সাথে দেখা করতে। দাতা সংস্থা ইউনিসেফের হাত ধরে মেসি খুদে ভক্ত মূর্তজার কাছে নিজে স্বাক্ষর করা একটি জার্সি আর ফুটবল উপহার দেন।
সেখানেই শেষ নয়। কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত বার্সেলোনা ও আল আহলির প্রীতি ম্যাচে মেসির সাথে খুদে ভক্ত মূর্তজার দেখা করার ব্যবস্থা হয়। সেদিন ম্যাচের মাঠে নামা থেকে কিক অফ পর্যন্ত মেসির সাথে সময় কাটায় মূর্তজা। এমনকি গোটা দলের ফটো সেশনেও অংশ নেয় সে। আর এ সকল ঘটনার মধ্য দিয়ে রীতিমতো তারকা বনে যায় মূর্তজা।
কিন্তু গল্প এখানেই শেষ নয়। মূর্তজার ইচ্ছে ছিল মেসির সাথে দেখা করার। আর সেই মেসির সাথে দেখা করাই যেন একসময় দুঃস্বপ্নে পরিণত হয় তার। মেসির সাথে দেখা করে সে আর তার পরিবার যখন আফগানিস্তানে ফিরে আসে, তখন সবাই তাকে হিংসার চোখে দেখতে শুরু করে। অনেকে গোপনে মেসির দেওয়া জার্সি ও বল চুরির চেষ্টা করে।
শুধু তাই নয়। মূর্তজার বাড়ি ছিল আফগানিস্তানের গজনী প্রদেশে। আর এই অঞ্চলটি তালেবান গোষ্ঠির দখলে ছিল। তারা যখন যখন জানল মূর্তজাকে মেসি জার্সি ও বল উপহার দিয়েছে, তারা সহ অন্যরা ভাবল মেসি শুধু জার্সি আর বল নয়, হয়তো অনেক টাকা পয়সাও দিয়েছে। ফলে তালেবানরা টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে।
পরিস্থিতি এত খারাপ হয়ে যায় যে মূর্তজার পরিবার জায়গা জমি বিক্রি করে পাকিস্তান চলে যায়। এবং সেখান থেকে স্পেনের দূতাবাসের মাধ্যমে স্পেনের অভিবাসী হওয়ার আবেদন করে। কিন্তু স্পেন সরকার এই আবেদন নাকচ করে দেয়। ফলে তাদেরকে আবার আফগানিস্তানে ফেরত আসতে হয়।
কিন্তু আফগানিস্তানে ফেরত এসে আরও খারাপ হয় পরিস্থিতি। সবাই তাদের বড়লোক বলে দাবী করতে থাকে। তাদের মতে মূর্তজার কাছে মেসির দেওয়া অনেক টাকা আছে। ফলে মূর্তজার কাছে টাকা চেয়ে বেনামী চিঠি আর ফোন আসতে শুরু করে। মূর্তজাকে অপহরণের হুমকিও আসতে থাকে। আর এমন নিরাপত্তাহীনতায় বাধ্য হয়ে স্কুল ছাড়তে হয় তাকে। নিরাপত্তার জন্য বাধ্য হয়ে তার এক কাকার বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
হাসিখুশি মূর্তজার সেই হাসি মুখ আর নেই। এখন চুপচাপ থাকতেই ভালোবাসে সে। মেসির একটি ছোট্ট উপহার তার জন্য এমন অভিশাপ হয়ে আসবে, সে কি কখনো ভাবতে পেরেছিল?
এত কিছু হওয়ার পরও সে এখনও মেসিকেই ভালোবাসে। মেসি এখনও তার জীবনের একমাত্র আইডল। সে চায় একদিন মেসির মতো বড় খেলোয়াড় হতে। আর মাঠে বসে মেসির খেলা দেখার জন্য এখনও উদগ্রীব সে। মূর্তজা ভাবে একদিন সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। সে আগের মতো আবার স্কুলে যেতে পারবে, যেতে পারবে খেলার মাঠে।
বিশ্ব-রাজনীতি আর মানুষের কাছে ছোট্ট মূর্তজা আজ পরাজিত। এত কম বয়সে দেখে ফেলল মানুষের মনের অন্ধকার দিক। মূর্তজার জীবন এমন থমকে যাওয়ায় মেসির হাত নেই, তবুও যেন মেসি আজ দোষী।
সূত্র ১
সূত্র ২
১২ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:১২
অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: নিষ্পাপ শিশু মানুষের মনের অন্ধকার দিক দেখে ফেলল।
২| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:৫৯
রানার ব্লগ বলেছেন: লোভি তালেবান !!! থু থু !!!
১২ ই ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:২৩
অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: অভাবে স্বভাব নষ্ট।
৩| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:৪৭
রাজীব নুর বলেছেন: আফগানিস্তান ভয়াবহ একদেশ।
আমেরিকার উচিৎ আফগানিস্তান থেকে তালেবান দূর করা।
১২ ই ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:৫৬
অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: আমেরিকা পাত্তারি গুটিয়েছে এখান থেকে।
৪| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২৪
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
মেসি বিশ্বকাপ জিতলে এ খবর জানানো দরকার, তাহলে একটা বিহিত করে দিবে।
১৩ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:২৪
অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: হয়তো।
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:০৩
জুল ভার্ন বলেছেন: দুঃখজনক!