নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমৃদ্ধ আগামীর প্রত্যেয়

আনিসুর রহমান এরশাদ

আমি আমার দেশকে অত্যন্ত ভালবাসি ।

আনিসুর রহমান এরশাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বদলে দিতে পারে আমাদের ভবিষ্যত

২৪ শে জুলাই, ২০১০ রাত ১২:৪৫





বর্তমান বিশ্বের পর্যটন বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের শিল্প মাধ্যম। শতাব্দীর সেরা শিল্প পর্যটন । বিশ্বের একক বৃহত্তম শিল্প পর্যটন। উন্নত দেশগুলোর মধ্যে উন্নয়নশীল দেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের অন্যতম মাধ্যম পর্যটন। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও পর্যটন শিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আর কঙ্বাজার সমুদ্র সৈকতকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে কল্পনাই করা যায়না । অনিন্দ্য সুন্দর কঙ্বাজারের মূল আকর্ষণ হচ্ছে তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। এই সৌন্দর্যের টানে প্রতিবছর বাংলাদেশে প্রচুর পর্যটকের আগমন ঘটে।

কঙ্বাজারের শ্যামল বৈচিত্র্যময় প্রকৃতি, ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের দিক দিয়ে সমৃদ্ধ। পর্যটনের ক্ষেত্রে এ সকল বৈশিষ্ট্য বিরাট সম্ভাবনার দাবী রাখে। কেননা আজকের মানুষ চিনত্দা- চেতনা, আশা- আকাঙ্ক্ষা এবং অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের দিক দিয়ে অধিকতর ভ্রমণশীল ও গতিশীল। বর্তমানে মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার সাথে সাথে নান্দনিক চাহিদার মাধ্যমে পর্যটন তথা ভ্রমণ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। কঙ্বাজারের নৈসর্গিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যাবলীর আকর্ষনে অনেক বিদেশি পর্যটকের আগমন পরিলক্ষিত হয়। এখানকার প্রাকৃতিক নির্জনতা বিদেশি-পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ। অযুত সম্ভাবনাময় কঙ্বাজার সমুদ্র সৈকত সম্পূর্ণটাই যেন একটি পর্যটন কেন্দ্র। দেশের উন্নতির জন্য এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। এখানকার অফুরনত্দ প্রাকৃতিক শোভার কোন তুলনা নেই।

কঙ্বাজারের বিস্তীর্ণ সবুজ প্রকৃতি, দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত, মানুষের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিদেশিদের হাতছানি দিয়ে ডাকে। কঙ্বাজার সত্যিকারভাবেই সমৃদ্ধ। মানুষের ভ্রমণের উদ্দেশ্যে পৃথিবীর বৈচিত্র্যশীল প্রকৃতির মতই বৈচিত্র্যশীল চিনত্দা- চেতনা, আশা- আকাঙ্ক্ষা এবং অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের আলোকে ভিন্ন হয়। পর্যটকদের বিভিন্ন ধরণের উদ্দেশ্যই যাতে পূরণ হয় সেভাবে এস্পটটিকে প্রস্তুত করতে হবে।বাংলাদেশের অন্যতম নৈসর্গিক সৌন্দর্য কঙ্বাজার সমুদ্র সৈকত পৃথিবীর দীর্ঘতম সৈকত।এটার জন্যেই বাংলাদেশের পর্যটনের রাজধানী বলা হয় কঙ্বাজারকে। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ, বিসত্দৃত সমুদ্র সৈকত জুড়ে রয়েছে সোনালী বালুকা রশ্মি। সৈকতে ফেনিল ঢেউয়ের আছড়ে পড়া এবং বিকালে সুর্যাসত্দ উপভোগ করা অত্যনত্দ আকর্ষণীয়।

বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের বিকাশের ক্ষেত্রে কঙ্বাজার সমুদ্র সেকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সমৃদ্ধতা ঈর্ষণীয়। এখন দেশের সমৃদ্ধির জন্য কঙ্বাজারকে কেন্দ্র করে অভ্যনত্দরীণ পর্যটন উন্নয়ন এবং এ শিল্প উন্নয়নে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কঙ্বাজার সমুদ্র সৈকতকে যুগের চাহিদা অনুযায়ী গড়ে তোলা সময়ের একানত্দ অনিবার্য দাবি। এর যৌক্তিকতা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না।

বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে সমুদ্র সৈকতই কেন্দ্রবিন্দু; আমাদের করণীয়



কঙ্বাজারকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের বিরাট সম্ভাবনা আছে। পর্যটকদের আকর্ষণ করার মত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যথেষ্টই রয়েছেএখানে। দেশে পর্যটন শিল্পের বিকাশ এবং শিল্প হিসেবে এর উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব। নাসরিন (১৯৯৮৪) রব (১৯৮৪) এর ধারণা হলো, বাংলাদেশের ভূমিরূপের দর্শনীয় বস্তুসমূহ চিত্তবিনোদনের আকর্ষণ ঘটতে সক্ষম। রশিদ (১৯৮৮) তার গবেষণায় বলেন, ভবিষ্যতে যদি পর্যটন ব্যবস্থার উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয় তবে কঙ্বাজার, সেন্টমার্টিন ও উপকূলীয় সম্পূর্ণ এলাকা পর্যটনের ক্ষেত্রভূমিতে পরিণত হবে। এক্ষেত্রে আমাদের করণীয় হচ্ছে,

১)কার্যকর ব্যাবস্থা গ্রহণ :পর্যটকেরা বেড়াতে, ছুটি কাটাতে, অবসর যাপনে ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের জন্য আগমন করে থাকে। ১ কেউ নিজস্ব ইচ্ছা অনুযায়ী কাঙ্ক্ষিত বিষয় ও সৌন্দর্য অবলোকন করার উদ্দেশ্যেও ভ্রমণ করে থাকে । পর্যটনের উদ্দেশ্য হচ্ছেঃ ১. চিত্তবিনোদন ও মানসিক অবস্থা পরিবর্তন ২. অর্থনৈতিক ও পেশাগত কারণে ৩. সামাজিক বন্ধনের কারণে ৪. শিক্ষালাভের জন্য ৫. ধর্মীয় কারণে । কঙ্বাজার সমুদ্র সৈকত যাতে এসব উদ্দেশ্য পূরণ করতে পারে সেজন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

২)প্রয়োজন পূরণে ঢেলে সাজানো :পর্যটন দুই ধরণের হয়ে থাকে। যথাঃ১. আনত্দর্জাতিক পর্যটন ২.আভ্যনত্দরীণ পর্যটন। এক্ষেত্রে দুটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ । এগুলো হলো, ১. সরবরাহ (ঝঁঢ়ঢ়ষু) ২. চাহিদা (উবসধহফ) সরবরাহ। উপাদান হলো সেইসব উপাদান যা একটি প্রতিষ্ঠান, সমাজ পর্যটককে প্রদান করে। উদাহরণ স্বরূপ ঃ সমুদ্র সৈকত, ভ্রমণের সুবিধা, সসত্দায় বিভিন্ন দ্রব্য কেনাকাটার সুবিধা। চাহিদার উপাদান হলো- একজন পর্যটক সমাজ ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে যা আশা করে। উদাহরণ স্বরূপ- নিরাপত্তা, নির্জনতা। সমুদ্র সৈকতকে এসকল প্রয়োজন পূরণে ঢেলে সাজাতে হবে ।

৩)বিভিন্ন উপাদানের সমারোহ ঘটানো :পর্যটন তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো ঃ ১. পরিবহন ২. স্থান ৩. বসবাসের সুবিধা। এগুলো ছাড়া আরও অন্যান্য উপাদান হলো ঃ সাংস্কৃতিক বিষয়, ঐতিহ্য, দৃশ্যাবলী, আমোদ -প্রমোদ ব্যবস্থা। সাংস্কৃতিক বিষয় হচ্ছে, ধমর্ীয় প্রতিষ্ঠান, প্রত্নতাত্তি্বক স্থান, ঐতিহাসিক স্থান ইত্যাদি। ঐতিহ্যের মধ্যে রয়েছে জাতীয় উৎসব, আদিবাসীদের জীবন যাপন, সামাজিক রীতিনীতি । দৃশ্যাবলীর মধ্যে- পার্ক, বন্য জন্তুর আবাস, সমুদ্র সৈকত, প্রত্নতাত্তি্বক স্থান। আমোদ-প্রমোদ ব্যবস্থা যেমন- চিড়িয়াখানা, ক্রীড়ার ব্যবস্থা , সিনেমা, থিয়েটার, ভ্রমণ ইত্যাদি। সমুদ্র সৈকতের আশেপাশে এ উপাদান গুলোর সমারোহ ঘটাতে হবে।



৪) গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সুচিনত্দিত পদক্ষেপ :পর্যটনে ভৌগোলিক যে উপাদান থাকতে পারে, (জড়নরহংড়হ ১৯৭৬) সেগুলো হলোঃ ১. সহজগম্যতা এবং অবস্থান ২. স্থান ৩. দৃশ্য ৪. জলবায়ু ৫. জীবজন্তু ৬. জনপদের বৈশিষ্ট্য। দৃশ্যের মধ্যে (ক)ভূমিরূপ পাহাড় , পবর্ত, প্রবাল দ্বীপ ইত্যাদি। (খ)জলভাগ- হ্রদ, নদ-নদী, জলপ্রপাত ইত্যাদি। জীবজন্তুর ক্ষেত্রে (ক) বন্য জন্তু (খ) শিকারের ব্যবস্থা (গ) মৎস শিকারের ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ । জনপদের বৈশিষ্ট্যের ক্ষেত্রে (ক) নগর-গ্রাম (খ) ঐতিহাসিক বৈশিষ্ট্য (গ) প্রত্নতাত্তি্বক বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। এসকল বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে সমুদ্র সৈকতকে ঘীরে পুরো কঙ্বাজারকে পরিকল্পিত ভাবে সাজাতে সুচিনত্দিত পদক্ষেপ নিতে হবে ।

৫) ইতিবাচক প্রচারণা বৃদ্ধি:কঙ্বাজার সৈকতে বিদেশি পর্যটকদের ভাল লাগার মত অনেক কিছু্ই রয়েছে। কিন্তু প্রচারের ক্ষেত্রে দীনতা থাকায় বহু পর্যটকদের আকৃষ্ট করা যাচ্ছে না। আমাদের দেশের অনেকেই অবকাশকালীন সময়ে বিদেশে ভ্রমনের উদ্দেশ্যে গমন করেন। কিন্তু দেশের আভ্যনত্দরীন পর্যটন শিল্প দারুণভাবে উপেক্ষিত । সেজন্য প্রচারণা বাড়াতে হবে ।

৬)সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা এবং সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা:রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও আনত্দর্জাতিকভাবে প্রচারণার অভাবে আমরা পর্যটকদের নিকট এদেশকে উপস্থাপিত করতে পারছিনা। যাতায়াত ও বাসস্থান সমস্যা এক্ষেত্রে প্রধান অনত্দরায়। হোটেল গুলির মান ও সেবার তুলনায় ভাড়া এবং গরমের মাত্রা অনেক বেশি। এ সমস্যা গুলোর সমাধানে নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ।

৭) জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি :প্রকৃতি আমাদের প্রতি অনুদার নয়। পর্যটকদের আকর্ষণ করার মত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সুবিধা যথেষ্ঠ রয়েছে। শুধু যেটা প্রয়োজন সেটা হল অবকাঠামোগত সুবিধা তৈরি করা। কঙ্বাজারের উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি করতে হলে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা, সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি জনসাধারণের মধ্যে পর্যটন সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষা ও প্রচারের যথেষ্ঠ ভূমিকা রয়েছে।

৮)বিশেষ তহবিল গঠন :কঙ্বাজারের পর্যটন শিল্পখাতের কাঙ্ক্ষিত বিকাশের লক্ষ্যে বেসরকারী খাতের উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার জন্য নানা ধরণের সরকারী ইনসেনটিভ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সরকারের রাজস্ব বাজেট থেকে পর্যটন প্রচারণা ও বিপণনের জন্য বরাদ্দ আবশ্যক। ব্যাপক ও ধারাবাহিক প্রচারণা ও বিপণন অব্যাহত রাখতে বিশেষ তহবিল গঠন করা প্রয়োজন। স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে অধিকতর সাফল্য অর্জন করা সম্ভব।

৯) নানাবিধ কৌশল গ্রহণ:কঙ্বাজার সমুদ্র সৈকত সম্পকে র্ রেডিও, টেলিভিশন এবং সংবাদ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার চালানো। বেসরকারী খাতে উৎসাহী করার জন্য টেলিফোন, ফ্যাঙ্, গ্যাস, বিদু্যৎ প্রভৃতি সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা। বিদেশি পর্যটকদের জন্য নির্দিষ্ট স্থান/ দ্বীপগুলি সংরক্ষিত করে বিভিন্ন বিনোদনের ব্যবস্থা করা। এছাড়া দরকার অবকাঠামোগত উন্নতি, দক্ষ ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারীদের নিকট সুলভ মূল্যে জমি প্রদান করা যাতে হোটেল তৈরি করা যায়। বিনিয়োগকারীদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করা যেতে পারে । বিনিয়োগ ও বিপণন কার্যক্রম জোরদার করা সম্ভব হলে বিদেশি পর্যটক আগমন ও আয় কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাবে।



১০) কাঙ্ক্ষিত পরিবেশ সৃষ্টি: গঁৎঢ়যু(১৯৮৫) দেখান, মানুষের পর্যটন উপকরণ ভোগ আচরণের সাথে পরিবেশের সম্পর্ক বিদ্যমান। করিম (১৯৭৭) উলেস্নখ করেন, পরিবেশ পর্যটন উন্নয়নের প্রধান নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। উপযুক্ত পরিবেশের জন্যই গড়ে ওঠে পর্যটন শিল্প। তাই বনায়ন ও বৃক্ষরোপন বৃদ্ধি করে কাঙ্ক্ষিত পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।

১১) প্রয়োজন সম্মিলিত প্রয়াস:প্রয়োজন সরকারের পাশাপাশি বেসরকারী উদ্যোগ ,এতদসংক্রানত্দ বিভিন্ন প্রকার শিক্ষা কার্যক্রম ,যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি,আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল রাখা উদার দৃষ্টিভঙ্গি, সমাজে অনুকূল পরিবেশ , আভ্যনত্দরীণ পর্যটককে ভ্রমণে উৎসাহী করা , সরকারী / বেসরকারী কর্মচারীদের ভ্রমণের টিকিট প্রদান ,বিদেশের বিভিন্ন মিশনের মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার ,পর্যটন স্থানটির উন্নয়ন ও আধুনিকীকরণ ,টু্যরিস্ট গাইড এবং সংশিস্নষ্ট সকলকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দান, দেশের কুটির শিল্প এবং অন্যান্য সামগ্রী বিক্রয়ের সুব্যবস্থা, বিশেষ সমুদ্র দ্বীপ গুলিকে আলাদা পর্যটন দ্বীপ হিসেবে উন্নয়ন, সমপ্রসারণ, পর্যটন সুবিধাদি প্রবর্তন।

১২)আকর্ষনীয় বৈশিষ্টাবলী বৃদ্ধি:কোন স্থানে পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্য কতকগুলি বিশেষ বৈশিষ্ট্য থাকতে হয়। যেমন - নৈসর্গিক প্রাকৃতিক দৃশ্য, সমুদ্র সৈকত ইত্যাদি। ভ্রমণ সেবা - বাস, ট্রেন, নৌকা, বিমান ইত্যাদি খাদ্য সেবা - রেসত্দোরাঁ, ক্যাফেটেরিয়া, ফাস্টফুডের দোকান, বাসস্থান - হোটেল, বোর্ডিং হাউস, বিনোদন-থিয়েটার, কনসার্ট, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্পোর্টস, নাইটক্লাব। শপিং-স্থানীয় বিভিন্ন আকর্ষণীয় দ্রব্যাদি ক্রয়ের উপরিউক্ত বিষয়াবলীর উপর জোর দেয়া প্রয়োজন।

১৩) পৃথক একটি সংস্থা গঠন :কঙ্বাজার সমুদ্র সৈকতকে আনত্দর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত করার জন্য পৃথক একটি সংস্থা গঠন করা দরকার। এই সংস্থা পর্যটন কপের্ারেশনের অধীনে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন পর্যটন উন্নয়ন কর্মসূচির বাসত্দবায়ন করবে।

১৪)প্রাকৃতিক সম্পদের যথোপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করণ: এখানে প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে যথা- প্রাকৃতিক গ্যাস, গন্ধক, জেরকন, ইলমেনাইট, ব্রুটাইল, ম্যাগনাটাইল, কয়নাইট, চুনাপাথর,বেলেপাথর ইত্যাদি ।যা কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধি অর্জনসহ শিল্প-কারখানা তৈরী সম্ভব ।

১৫)কুটির ও মাঝারি শিল্পের প্রসার: লবণ চাষ, লবণ মিল, বরফ কল, মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প, মৎস্য খাদ্য মিল ইত্যাদি অফুরনত্দ সম্ভাবনা রয়েছে কঙ্বাজার সমুদ্র সৈকতের আশেপাশে।

১৬)বৈচিত্রময় অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের সুযোগ সৃষ্টি: কঙ্বাজারে সমুদ্র স্নানসহ পর্যটকদের জন্য আলাদা বিনোদনের ব্যবস্থা করার মাধ্যমে কঙ্বাজারকে আরও বেশী আকর্ষণীয় করা সম্ভব।

১৭)আনত্দর্জাতিক যোগাযোগ বৃদ্ধি: কঙ্বাজারের টেকনাফ বন্দরের মাধ্যমে মায়ানমার থাইল্যান্ড এমনকি চীন পর্যনত্দ ব্যবসা -বাণিজ্য, আমদানী- রপ্তানীর দ্বারা বাণিজ্যিক খাতের উন্নয়নে বাড়তি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারি। এর ফলে আনত্দর্জাতিক যোগাযোগের ক্ষেত্র প্রসারিত হবে এবং পর্যটনের বিকাশ ঘটবে।

১৮)প্রশিক্ষিত টু্যর গাইড ও প্যাকেজ টু্যরের ব্যবস্থা: উন্নত দেশের মত আমাদের দেশের শিক্ষিত, স্মার্ট তরুণ সমাজকে পর্যটনের উপর উপযুক্ত প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে এ পেশায় নিয়োজিত করা গেলে এক দিকে যেমন পর্যটন শিল্পের গুণগত মান বৃদ্ধি পাবে অন্যদিকে শিক্ষিত বেকার তরুণ সমাজের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

১৯)সমুদ্র সৈকতে বালি ভাস্কর্য: কঙ্বাজার সমুদ্র সৈকতে বালিভাস্কর্য নির্মাণ করার মাধ্যমে পর্যটকদের আকৃষ্ট করা সম্ভব। এর মাধ্যমে আমরা আমাদের শিল্প সংস্কৃতি প্রদর্শন সহ টিকিটের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারি। ।

২০)বৈদেশিক বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করা: শুধুমাত্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণেই নয় কঙ্বাজার হতে পারে বিদেশি বিনিয়োগ কারীদের উত্তম স্থান। এর মাধ্যমে আমরা বিদেশিদের সাথে ভালো যোগাযোগ সহ সুসম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারি।









যেভাবে বদলে যাবে আমাদের ভবিষ্যত:



পর্যটন শিল্প আজকের পৃথিবীতে সবচেয়ে জনপ্রিয়, দ্রুত উন্নয়নশীল ,অর্থকারী ,বিজ্ঞানভিত্তিক এবং সংবেদনশীল শিল্প। পৃথিবীর বৈচিত্র্যশীল প্রকৃতির মতই আজকের মানুষ অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে অধিকতর ভ্রমণশীল ও গতিশীল। পর্যটন শিল্প তাই বর্তমান বিশ্বে আর্থ- সামাজিক উন্নয়ন, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন , বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্র তৈরি এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার অবকাশ রাখে। এছাড়া পর্যটনের মাধ্যমে দেশের ভাবমূর্তি বর্হিবিশ্বে প্রচার এবং আনত্দর্জাতিক সুনাম ও সুসম্পর্ক তৈরি করা যায়। পর্যটন একটি সংগঠিত অর্থনৈতিক কর্মকান্ড 'টু্যরিজম সুনারিও 'দৃষ্টিভঙ্গিতে ভ্রমণ আধুনিক অর্থনীতির চতুর্থ ধারা, পর্যটনের গুরুত্ব শুধুমাত্র অর্থনৈতিক প্রপঞ্চতে প্রভাব বিসত্দার করে না। ইহা সামাজিক ও সংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যের উপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব বিসত্দার করে। এবড়ৎমব(১৯৮০) উলেস্নখ করেন, কোন একটি দেশের পর্যটনের উন্নয়নের সাথে সে দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থা জড়িত। ভৌগোলিক অবস্থান ও বৈশিষ্ট্যের দিক দিয়ে পর্যটনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সম্ভাবনা প্রচুর। বাংলাদেশেও কঙ্বাজারকে ঘীরে অর্থনৈতিক ও জাতীয় আয়ের উলেস্নখযোগ্য পরিবর্তন সম্ভব। এক্ষেত্রে প্রয়োজন সমস্যা গুলো চিহ্নিত করে সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ। যদি পর্যটনকে ব্যক্তি মালিকানাধীন পরিচালনায় আনা হয় তব পর্যটনের প্রভূত উন্নয়ন সাধিত হবে। (হাকিম আলী, ১৯৮৭)।কঙ্বাজার সমুদ্র সৈকত যেভাবে বদলে দেবে আমাদের ভবিষ্যত-

১)প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন: এবড়ৎমব(১৯৮০) পর্যটনকে একটি উলেস্নখযোগ্য শিল্প হিসেবে চিহ্নিত করেন। অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য পর্যটনের গুরুত্ব অপরিসীম। বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার আয় বাড়ানো সম্ভব। পর্যটকদের জন্য কেনাকাটার সুবিধা সৃষ্টির মাধ্যমে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ রয়েছে।

২) দারিদ্রতা দূরীকরণ:দেশের দারিদ্রতা দূরীকরণের উপায় হিসেবে পর্যটনকে শিল্প হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। জনসাধারণের মধ্যে পর্যটনের প্রতি উৎসাহ বৃদ্ধিকরণ ও তাদের জন্য অল্পখরচে পর্যটনের সুযোগ সৃষ্টি এবং কঙ্বাজার সমুদ্র সৈকতের উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ এর মাধ্যমে দ্রারিদ্র বিমোচনে ভূমিকা রাখা যেতে পারে। এতে বেশি সংখ্যক নাগরিকের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব। এতে বেসরকারী পুঁজির জন্য একটি স্বীকৃত বিনিয়োগের ক্ষেত্র উন্মোচিত হতে পারে।

৩) বেকার সমস্যার সমাধান :শুধুমাত্র সমুদ্র সৈকতকে কেন্দ্র করে প্রচুর মুনাফা অর্জন , দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব এবং পাশাপাশি বিরাট আকারের বেকার সমস্যার সমাধান সম্ভব। পর্যটন বাংলাদেশের অন্যতম বিনিয়োগ ও আয়ের মাধ্যম হতে পারে । এটি জাতীয় রাজস্ব আয়ের একটি গুরুত্বপূূর্ণ অংশ পূরণ করতে পারে ।



সীমানত্দে দাড়িয়ে

পর্যটনের ক্ষেত্রে কঙ্বাজার সমুদ্র সৈকত অমিত সম্ভাবনাময় । এবিপুল সম্ভাবনার বিকাশের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কঙ্বাজার সমুদ্র সৈকতের উন্নয়নের জন্য সরকারকে অবশ্যই কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে হবে।একে কেন্দ্র করে পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, 1.Product Development 2.International Marketing 3.Full Security . . কেননা পর্যটকরা কোন দর্শনীয় স্থানে নিছকই থাকা ও খাওয়ার জন্য যান না। এর পাশাপাশি সময় কাটানো এবং ঘুরে বেড়ানোর অনুষঙ্গও প্রয়োজন। আমাদের উচিত Product Development করার মাধ্যমে চাহিদা বৃদ্ধি করা। এ্ছাড়া আমাদেরকে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি পত্র পত্রিকা এবং রেডিও টেলিভিশনে পণ্যের বিজ্ঞাপন,Familiarization Trip, Media Campaing, Tourist survey, পর্যটন বিষয়ক সভা সেমিনার এবং সর্বোপরি বড় পর্যটন মেলায় অংশগ্রহণ বাবদ অর্থ ব্যয় করতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারের পূর্ণ সহযোগিতা ও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত হলেই কঙ্বাজার সমুদ্র সৈকত তার লক্ষ্যে পেঁৗছতে পারবে । কঙ্বাজার কেন্দ্র করে পর্যটন শিল্পের যথাযথ বিকাশে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপর দন্ডায়মান হতে পারে।এখানকার প্রকৃতি আমাদের যা দিয়েছে তা যদি সার্বিকভাবে সংরক্ষণ করার পদক্ষেপ নিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় তাহলে সমুদ্র সৈকত হবে এদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম হাতিয়ার, বদলে যাবে আমাদের ভবিষ্যৎ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-৩

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জুলাই, ২০১০ রাত ১:৩০

হিমচরি বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ.,,

১১ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৩৯

আনিসুর রহমান এরশাদ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকেও।

২| ২৪ শে জুলাই, ২০১০ দুপুর ১:৩৮

গুরু তুমি মহান, তোমারে করি প্রনাম বলেছেন: আমাদের জীবন যাত্রার মানের সাথে কক্সবাজারের ভ্রমন খরচ অত্যন্ত বেশী।
পাবলিকের কক্সবাজার যা যাবার এইটাই মূল কারন।

১জন মানুষ ৫দিন ভ্রমন করলে ৮/১০হাজার টাকা খরচ হয়। এইটা এ দেশের কয়জন বহন করার সামথ্য রাখে?
একটা পরিবার যদি ৪ জনের হয় সে পরিবারের ৫দিনের খরচ কত? আর সেই খরচ উক্ত পরিবারের কত মাসর আয়ের সমান। সেটা হিসাব করুন।

১১ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৪২

আনিসুর রহমান এরশাদ বলেছেন: আপনার উত্থাপিত পয়েন্টটি গুরুত্বপূর্ণ। মনে হয় আমার লেখায় এর সাথে সাংঘর্ষিক কোন বয়ান উল্লেখিত নেই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.