নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমৃদ্ধ আগামীর প্রত্যেয়

আনিসুর রহমান এরশাদ

আমি আমার দেশকে অত্যন্ত ভালবাসি ।

আনিসুর রহমান এরশাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

অর্থহীন সংলাপ

০৩ রা জুন, ২০১৩ বিকাল ৩:২৯

যায়েদা বেগম-তুইতো মরবি আমাগোরেও মারবি। তোর জন্মটাই কি পাপ কিনা কে জানে?



আমিনা-ছি! তুমি এসব কি বলছ! জন্ম মৃত্যু আল্লাহর হাতে।যে যেমন কম করবে সে তেমন ফল পাবে। এটা পাপ হতে যাবে কেন? ভুল করল হালিম ভাই আর তার খেসারত দিলাম আমি-এটা কোন ধরনের নিয়ম মা?



হালিম-কেউ হেঁসে জিতে কেউ কেঁদে জিতে-জিতাটাই মূখ্য।মা তুমি নিজে একটা অপদাথ বলেই আমিনাকে অপদাথ ভাবতে পারছো।



রাগে যায়েদা বেগমের চোখ মুখ লাল হয়ে ওঠল। কোন কথা না বলেই রুমের ভিতরে চলে গেল।



হালিম-মা!ক্ষুধায় মরি মরি অবস্থা!গোস্বা অভিমান ভুলে দ্রুত খাবার দিন।



যায়েদা বেগম-হালিম!মায়ের সাথে মুখে মুখে তক কর। বেয়াদবির একটা সীমা থাকা চাই।তুমি গোল্লায় যাবে না জাহান্নামে যাবে যেখানে ইচ্ছা যাও, এনিয়ে ভাবার মানসিকতা আমার নেই।তুমি আগেতো খুব ভদ্র ছিলো! কার পিছ ধরে যে এমন ডানপিটে আর বেপরোয়া হয়ে ওঠলে। আগে কি ছিলে আর এখন কেমন হয়েছ! মানুষ কিভাবে এত সহজে বদলাতে পারে?



হালিম-আমি ঠিকই বলেছি মা। আমরা ভাইবোন। অথচ আমার সাথে এত ভাল ব্যবহার করো আর আমিনার সাথে খারাপ ব্যবহার করো।ওর সাথে তোমার ব্যবহার দেখলে মাঝেমাঝে মনে হয় তুমি মানুষতো নও যেন ভয়ংকর কোন পশু। বিষধর সাপের মতো স্বভাব, যেন কোন এক নরখাদক দানব। শযতানের চেয়েও জটিল আর জানোয়ারের চেয়েও অধম।–তারপরও তোমার কাছে আসি! ও মেয়ে হয়ে জন্মেছে বলেই তুমি তার সাথে যা ইচ্ছা তা করতে পারনা। স্রস্টা সইবেনা।



যায়েদা বেগম-আমি না মরলে কি আর তোদের পেরেশানি দূর হবে।যখন চোখের পানি শুকিয়ে যায়, কান্নায় বুকটা ফেঁটে চৌচির হবে তখন বুঝবি। মায়ের অভিশাপ নয় আশিবাদেই মঙ্গল বুঝলি।



হালিম- এসব কেন বলছ মা তুমি। দু:খ কষ্টের ভয় দেখাচ্ছো।কান্নায় ভয় নেই। পানি পানিই। সেটা বৃষ্টির পানি, ঝণার পানি, চোখের পানি-যাই হোক।রক্ত,খেজুরের রস, আখের রস-সবই তরল।ভিন্নতা কি তবে স্বাদে,গন্ধে,রুপে নাকি অথে,কাজে? আমি অনেক সময় গরীব শ্রমিকের ঘাম, প্রতিবাদী বিপ্লবীর রক্ত, অসহায়ের চোখের অশ্রুকে এমন মূল্যহীন হতে দেখেছি যে ফলের রস, বেল বা লেবুর শরবত কিংবা গাভীর দুধকে অতটা মূল্যহীন হতে দেখিনি। তারপরও এইযে ভিন্নতা, নানান বৈচিত্র-এজন্যেই সৃষ্টিজগত এত জটিল, এত সুন্দর।তবে এই সুন্দরের মাঝে কতযে অসুন্দর লুকিয়ে আছে তা ভাবতেই গা শিহরিয়ে ওঠে।



আমিনা-ভাইয়া তুমি যতই গলা ফাঁটায়ে চিৎকার করনা কেন ঐ বদলোকটার কানে ঢুকবেনা।হয়ত! স্রস্টা শুনবে, ফেরেশতা শুনবে, পশুপাখি শুনবে, গাছগাছালিও শুনবে কিন্তু মা শুনবেনা। মার শরীরটা বাস করে আমাদের সবচেয়ে কাছে কিন্তু আত্মাটা থাকে যোজন যোজন দূরে, দূর থেকে বহুদূরে।সেটা আসমানের থেকেও দূরে, চন্দ্র সূয থেকেও দূরে-এক অজানায়।আর আমিতো আর তার পেটের কেউ নই?



হালিম-মানুষ মানুষই। তোর মা নেই তাই এতিম বলে সব সহ্য করবি কেন?



আমিনা-আমি সব মেনে নিতে পারি। এখন আর দু:খ কষ্টের অনুভূতিও নেই।যার যে কাজ সে কাজই তার করা উচিৎ।যে যেটা বলার উপযুক্ত তার সেটাই বলা উচিৎ।যে যেটা পাবার যোগ্য সে সেটা পাবার জন্যেই আশা করতে পারে। বেমানান ও অযৌক্তিক আশা আসলে হতাশা বাড়ায়, আয়ু কমায়।মূলটা রেখে শাখা প্রশাখা নিয়ে ব্যস্ত হওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়। কেউ জিততে জিততে হেরে যায় আর কেউ হারতে হারতে জিতে যায়।সে যাগগে, একটা কথা বলব ভাইয়া রাখবি? তুই ফরিদাকে বিয়ে কর্। ওর মনটা খুব ভালো।



হালিম-মন থাকে ভেতরে। তার রুপ রস গন্ধ সবই অজানা। সহজে বুঝার সাধ্যই বা কি? তাই মনটা কেমন তা জানার আগে রুপ চেহারা সম্পকে জানতে চাই। ভেতরটা দেখে যেহেতু বাহিরটা অনুমান করার সুযোগ নেই সেহেতু মুখশ্রী বিবেচনা জরুরী।শরীরটাকে বিচার বিশ্লেষণ ছাড়া মনটাকে সম্পূণরুপে বুঝাটা খুব বেশি সহজ কাজ নয়।কেননা মনের অবস্থান তো শরীরের ভেতরেই।



আমিনা-রুপ যাই থাকুক-ওতো উচ্চশিক্ষিত,ধনাঢ্য পরিবারের মেয়ে।



হালিম-তুমি আমাকে বলতে পার, লিখতে পার, শুনাতে পার, দেখাতে পারবে কিন্তু আমি বুঝতে না চাইলে তুমি বুঝাতে পারবেনা।তোমার জ্ঞান যদি তোমাকে দুনীতিবাজ বানায় আর আমার মূখতা যদি আমাকে সৎ যিন্দেগী যাপনে সাহায্য করে তবে আমার মূখতাই আমার অহংকার।মনে রাখবে, ১ এর পর ০ দিলেও তার মূল্য আছে।১ ছাড়া শূণ্য মূল্যহীন। তেমনি মানুষ হলেই কেবল বাকি অজনের মুল্য আছে। কিন্তু সেই মানুষটাই না হয়ে যা কিছুই হন-ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার,ব্যরিস্টার,মন্ত্রী,এমপি, সচিব, অধ্যাপক-এর কোন মুল্য নেই।



আমিনা-আসলে আমাদের দুভাইবোনের ভাগ্যটাই এমন যে, আমরা যা চেয়েছি তা পাইনি আর যা পেয়েছি তা চাইনি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.