নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমৃদ্ধ আগামীর প্রত্যেয়

আনিসুর রহমান এরশাদ

আমি আমার দেশকে অত্যন্ত ভালবাসি ।

আনিসুর রহমান এরশাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফেসবুকের অতীত ও বর্তমান:প্রভাব, ব্যবহার ও চ্যালেঞ্জ

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৫:১৫

বিশ্ব-সামাজিক আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থার ওয়েবসাইট ফেসবুক আজ অন্যতম যোগাযোগ মাধ্যম। সারাবিশ্বে সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোর মধ্যে ফেসবুক বর্তমান প্রজন্মের অন্যতম জনপ্রিয় ও সর্বাধিক ব্যবহৃত একটি সোশাল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইট। ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ৪ এই বৈপ্লবিক সাইটটির আত্মপ্রকাশ হয়। ব্যবহারকারীগণ বন্ধু সংযোজন, বার্তা প্রেরণ এবং তাদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলী, ছবি বা ভিডিও ইত্যাদি হালনাগাদ ও আদান প্রদান করতে পারেন। সেই সাথে একজন ব্যবহারকারী শহর, কর্মস্থল, বিদ্যালয় এবং অঞ্চল-ভিত্তিক নেটওয়ার্কেও যুক্ত হতে পারেন।



ফেসবুক সংক্রান্ত প্রাথমিক তথ্য

ফেসবুকের মালিকানা: মার্ক জুকারবার্গ - ২৪%, এক্সেল পার্টনার -১০%, ডিজিটাল স্কাই টেকনোলোজিস - ১০%, ডাস্টিন মস্কোভিৎজ - ৬%, এডোয়ার্ডো স্যাভেরিন - ৫%, শণ পার্কার - ৪%, মাইক্রোসফট - ১.৫%, কর্মচারী, বিভিন্ন তারকা (নাম অপ্রকাশিত) এবং বহির্ভূত মালিকানা ৩০%, অন্যান্য - ৯.৫%।

ধরণ: ব্যক্তিগত

সংস্থাপিত: ক্যামব্রিজ, ম্যাসাচুসেটস, (৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৪)

সদর দপ্তর: আলটো, ক্যালিফোর্নিয়া ডাবলিন, আয়ারল্যান্ড (ইউরোপ, আফ্রিকা ও মধ্য প্রাচ্য কার্যালয়)

প্রধান ব্যক্তিত্ব: মার্ক জাকারবার্গ, প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ডাস্টিন মস্কোভিতস, সহ-প্রতিষ্ঠাতা, শেরিল স্যান্ডবার্গ, প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা, ম্যাট কোহলার, ভাইস প্রেসিডেন্ট পণ্য ব্যবস্থাপনা, ক্রিস হিউজ, সহ-প্রতিষ্ঠাতা

ওয়েবসাইট: http://www.facebook.com

সাইটের ধরন: সামাজিক আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থা

বিজ্ঞাপন: ব্যানার বিজ্ঞাপন

যে ভাষায় সাইট: বাংলা,Catalan, Chinese (সাধারণ),Chinese (হংকং),Chinese (তাইওয়ান),Czech, Danish, Dutch, English (মার্কিন),English (ব্রিটিশ),English (Pirate), Filipino, Finnish, French, German (জার্মান),Greek, Hungarian, Indonesian, Italian, Japanese, Korean, Malay, Norwegian, Polish, Portuguese, Portuguese language(ব্রাজিলীয়),Romanian, Russian, Slovene, Spanish, Swedish, Thai, Turkish, Welsh



ফেসবুকের ইতিহাস:প্রতিষ্ঠা থেকে বর্তমান

হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়াকালে ১৯ বছরবয়সী মার্ক জুকারবার্গ একটি সামাজিক যোগাযোগ সাইটের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করেন। ২০০৪ সালের ৪ফেব্রুয়ারিতে মার্ক জাকারবার্গ হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন তার কক্ষ নিবাসী ও কম্পিউটার বিজ্ঞান বিষয়ের ছাত্র এডওয়ার্ডো সেভারিন, ডাস্টিন মস্কোভিত্‌স এবং ক্রিস হিউজেসের যৌথ প্রচেষ্টায় ফেসবুক প্রতিষ্ঠার পর ফেব্রুয়ারিতেই হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির আন্ডারগ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের প্রায় অর্ধেক ফেসবুকে রেজিস্ট্রেশন করেন। তখন এর মূল উদ্দেশ্য ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একই ওয়েবসাইটে একটি মেলবন্ধন সৃষ্টি করা। তারা যাতে সহজেই তাদের ছবি বা মনের ভাব অন্যের সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন সেটির ব্যবস্থা করা। ফেসবুক নির্মাণ করেন। ওয়েবসাইটটির সদস্য প্রাথমিকভাবে হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল, কিন্তু পরে সেটা বোস্টন শহরের অন্যান্য কলেজ, আইভি লীগ এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়।



২০০৩ সালের ২৮ অক্টোবর ফেসবুকের পূর্বসূরি ফেসম্যাশ (Facemash) তৈরি করেন মার্ক জুকারবার্গ। এতে হার্ভার্ডের ৯টি হাউসের শিক্ষার্থীদের ছবি ব্যবহার করা হয়। তিনি দুটি করে ছবি পাশাপাশি দেখান এবং হার্ভার্ডের সব শিক্ষার্থীকে ভোট দিতে বলেন। কোন ছবিটি হট আর কোনটি হট নয় সেটি নির্বাচনের জন্য ব্যবহার করেন বর্তমানের লাইকের মতো 'হট অর নট'। অবশ্য এতসব ছবি সংগ্রহের জন্য জুকারবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্ভার হ্যাক করেন। ফেসম্যাশ সাইটে মাত্র ৪ ঘণ্টায় ৪৫০ ভিজিটর ২২০০০ ছবিতে অনলাইনের মাধ্যমে ভোট দেন। ফলে ডাউন হয়ে যায় সার্ভার। সার্ভার হ্যাক ও ডাউন করার দায়ে মার্ক জুকারবার্গকে বহিষ্কার করা হয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এরপরও থেমে থাকেনি ফেসম্যাশ। শুরু করেন কোডিং তৈরি। এতে সহায়তা করেন জুকারবার্গের বন্ধু কম্পিউটার বিজ্ঞান বিষয়ের ছাত্র অ্যাডওয়ার্ডো সেভারিন, ডাস্টিন মস্কোভিতস এবং ক্রিস হিউজেস।অবশেষে ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ৪ তারিখে হার্ভার্ডের ডরমিটরিতে দিফেসবুক নামে (thefacebook.com) ফেসম্যাশের নতুন সংস্করণ চালু করেন জুকারবার্গ।



জুকারবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরালে ধীরে ধীরে বিশ্বব্যাপী চালু করা হয় ফেসবুক। ২০০৪এর জুনে প্যালো আল্টোতে দ্য ফেসবুকের অফিস নেয়া হয়। ডিসেম্বরে ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০ লাখে পৌঁছায়। ২০০৫ সালে দ্য ফেসবুক নাম পাল্টে শুধু ফেসবুক নামকরণ করা হয়। এ বছরের শেষদিকে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫৫ লাখে দাঁড়ায়। ২০০৬ সালে কৌশলগত কারণে আগস্টে ফেসবুকের সঙ্গে মাইক্রোসফট সম্পর্ক স্থাপন করে। সেপ্টেম্বর থেকে সর্বসাধারণের জন্য ফেসবুক উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। ডিসেম্বরে ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১ কোটি ২০ লাখ। পরের বছরের ফেব্রুয়ারিতে ফেসবুক ভার্চুয়াল গিফট শপ চালু করে। এপ্রিলে ব্যবহারকারীর সংখ্যা পৌঁছায় ২ কোটিতে। ২০০৮ সালে কানাডা ও যুক্তরাজ্যের পর ফেব্রুয়ারিতে ফ্রান্স ও স্পেনে ফেসবুকের ব্যবহার শুরু হয়। এপ্রিলে চালু হয় ফেসবুক চ্যাট। কয়েকগুণ বেড়ে আগস্টে ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১০ কোটিতে, যা পরের বছরের জানুয়ারিতে ১৫ কোটিতে পৌঁছায়। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে থাকা ৪০ কোটি ব্যবহারকারীর সংখ্যা ডিসেম্বরে ৫৫ কোটিতে পৌঁছায়। ২০১২ সালের শেষের দিকে এসে এ সংখ্যা ১০০ কোটি ছাড়িয়ে যায়। সারাবিশ্বে বর্তমানে এই ওয়েবসাইটটি ব্যবহার করছেন নানা শ্রেণী পেশার মানুষ। ২০১১ সালের এপ্রিল অনুযায়ী, ফেসবুকের প্রায় ২,০০০ জন কর্মচারি রয়েছে এবং তাদের দপ্তর রয়েছে ১৫টি দেশে। মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিদ এথান ক্রস জানান, ১০০ কোটিরও বেশি মানুষের সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটটিতে সক্রিয় ব্যবহারকারী প্রায় অর্ধেক।



ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ

ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ অভিবাসন সংস্কারের সপক্ষে প্রকাশ্যে কথা বলেছেন৷ রিডিও ডায়াচে ভেলে জানিয়েছে, ১৯ বছর বয়সে মার্ক জুকারবার্গ অভিজাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা ছেয়ে দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন সামাজিক যোগাযোগের সাইট ফেইসবুক। যা তাকে স্বউদ্যোগী বিলিয়নিয়ার বানিয়ে দিয়েছে কয়েক বছরে। এই ধনকুবের স্যান ফ্রান্সিসকোতে অভিবাসন সংস্কার সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য প্রকাশ করেছেন৷ এই সংস্কার দেশের ভবিষ্যতের জন্য সত্যিই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে মনে করেন জুকারবার্গ। জুকারবার্গ এবং তার প্রাক্তন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘রুমমেট’ জো গ্রিন সম্প্রতি গঠন করেছেন এফডাব্লিউডি ডট ইউএস নামে একটি প্রতিষ্ঠান। যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসরত প্রায় ১ কোটি ১০ লক্ষ অভিবাসির জন্য নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য কাজ করবে। স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে একটি স্কুলে বাণিজ্যিক বিভাগে ক্লাস নেয়ার সময়ই মার্ক প্রথম ইমিগ্রেশন সিস্টেম পরিবর্তনে প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সচেতন হয়ে ওঠেন। অর্থনৈতিক সাফল্যের পর থেকেই মার্ক সমাজসেবায় নিয়োজিত। ২০১০ সালে নিউইয়র্কের নেটওয়ার্ক পাবলিক স্কুল সিস্টেমের পুনঃসংস্কার ও উন্নতিসাধনে ১০ কোটি ডলার সাহায্য করেছেন৷ এ বছরই তিনি তার জীবদ্দশায় তার সম্পদের অন্তত ৫০ শতাংশ দাতব্য কাজের জন্য দানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ‘অঙ্গীকারণামায়’ স্বাক্ষর করেন। তার এই ‘অঙ্গীকারনামায়’ অন্যান্যের মধ্যে বিল গেটস, ওয়ারেন বাফেট এবং জর্জ লুকাসও রয়েছেন।



ফেসবুক ব্যবহার ও এর প্রভাব

নিজের মুক্তচিন্তা আর স্বাধীন মতপ্রকাশের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং যে কোনো বিষয়ে ভালো লাগা বা মন্দ লাগার অনুভূতি বিস্তৃত করার পাশাপাশি সমাজের অন্য মানুষদের মতাদর্শ জানার ক্ষেত্রে ফেসবুক একটি প্লাটফর্ম হিসেবে কাজ করে। ইতিমধ্যেই আমরা দেখেছি ফেসবুকের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনের ইতিবাচক ফলাফল। একই সঙ্গে সামাজিক দায়বদ্ধতার পাশাপাশি অরাজনৈতিক অনেক সফলতাও চোখে পড়ে ফেসবুকের মাধ্যমে। আর পারস্পরিক যোগাযোগের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগের বিস্তৃতির কথা তো উল্লেখ না করলেই নয়।



ফেসবুকের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগের পরিধি বেড়েছে। এখন খুব দ্রুতই কোনো বিষয় নিয়ে নিজেদের ভেতর যোগাযোগ করা যায়। যেমন ধরা যাক, কোনো মুমূর্ষু রোগীর রক্তের প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে ফেসবুকের অন্য বন্ধুদের কাছে বিষয়টি তুলে ধরলে তারা সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসতে পারে, কিংবা তারাও তাদের বন্ধুদের সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করে বৃহত্তর একটি যোগাযোগ সৃষ্টি করতে পারে।



এখন ফেসবুকে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় বেশিরভাগ গণমাধ্যম, রেস্তোরাঁ, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ইত্যাদির নিজস্ব ফ্যান পেইজ আছে, যেখানে মতামত দেয়ার পাশাপাশি তাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক যোগাযোগ করা যায়, যা পারস্পরিক যোগাযোগের এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আর বিখ্যাত কোনো ব্যক্তির অনুসারী হয়ে বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মতামত জানার সুবিধাটুকু তো আছেই।



যে কোনো একটি অনুভূতি বা ছবি প্রকাশ করেই একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী আশা করতে থাকে, তার ফ্রেন্ড লিস্টে থাকা অন্য ব্যবহারকারীরা এ বিষয়ে তাদের ইতিবাচক মতামত দেবে এবং ‘লাইক’ বাটনটি ক্লিক করে তাদের সন্তুষ্টি প্রকাশ করবে। এভাবে আমরা প্রতিমুহূর্তে সামাজিক স্বীকৃতির আশায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেসবুক ব্যবহার করে চলেছি। কখনও নিজের স্ট্যাটাস আপডেট, কখনো অন্য বন্ধুদের স্ট্যাটাস বা প্রকাশিত ছবিতে নিজেদের মতামত প্রকাশ করে প্রতিনিয়ত নিজের অস্তিত্ব জানান দিতে ব্যস্ত আমাদের তরুণ সমাজ।



ফেসবুেকর উপকািরতা:

বন্ধুত্বের সেতুবন্ধন সৃষ্টি: ফেসবুক জানিয়েছে, ‘‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ফেসবুকে সকলের তথ্য শেয়ারের অধিকার রক্ষা করা এবং একই সঙ্গে কিছু মানুষ ও ব্র্যান্ডের নির্দিষ্ট কিছু বিষয়বস্তু প্রকাশ না করা৷''ফেসবুকের মাধ্যমে দুনিয়াজুড়ে যে বন্ধুত্বের সেতুবন্ধন সৃষ্টি হয়েছে, তা এককথায় অসাধারণ। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে, যাঁরা প্রবাসে থাকেন, তাঁদের সঙ্গে কম খরচে সহজে যোগাযোগ করা যায়। তা ছাড়া পুরোনো অনেক বন্ধুকে এর মাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়।



আনন্দের সাথে সময় কাটানো: আজকাল বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ফেসবুকে সক্রিয়। যার মাধ্যমে দেশ-বিদেশের অনেক খবর খুব অল্প সময়ে আমরা জানতে পারি। তা ছাড়া আরও আনন্দ দেওয়ার জন্য ফেসবুকে বিভিন্ন অ্যাপস, গেমস ও ফ্যান পেজগুলো তো আছেই।



সহজে তথ্য আদান প্রদান: কিছু কথা বা ঘটনা আছে সবাইকে আলাদা করে বলা সম্ভব নয়। কিন্তু ফেসবুকের একটা স্ট্যাটাস দিয়ে সবাইকে জানাতে পারছি। তা ছাড়া ছুটির দিনে বাসায় বসেই ক্লাবের মিটিংগুলো করছি গ্রুপ চ্যাটে। আর পড়াশোনার তথ্যগুলো পাচ্ছি গ্রুপ পেজে। বিনোদন তো হচ্ছেই। পাশাপাশি জরুরি কাজগুলোও হয়ে যাচ্ছে।



সবার সঙ্গে সহজে শেয়ার করা: তথ্যপ্রযুক্তির যুগে ফেসবুকের ব্যবহার বেড়েই চলছে। অনেকের কাছে ফেসবুক সকালের পত্রিকার মতো। এটা যোগাযোগের খুব ভালো একটা মাধ্যম। বিশেষ করে, দেশের বাইরে আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ করা যায়। এর মাধ্যমে যেকোনো খবর দ্রুত জানা যায়, এমনকি সবার সঙ্গে শেয়ারও করা যায়। নিজের দেশের ভালো অনেক কিছু বিদেশি বন্ধুবান্ধবের কাছে তুলে ধরা যায়।



সামাজিক আন্দোলনের হাতিয়ার:ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। মনের একান্ত না-বলা কথাগুলো বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করা যায় এর মাধ্যমে। বিশেষ করে এর মাধ্যমে আশপাশে কী ঘটছে, তা সবার আগে জানতে পারছি। এ ছাড়া সামাজিক আন্দোলনের একটি হাতিয়ার হিসেবে ফেসবুককে সবচেয়ে বেশি কাজে লাগানো যায়।



ফেসবুকের অপকারিতা

মানসিক কষ্ট ও হতাশা বৃদ্ধি: সামাজিক যোগাযোগে ফেসবুকের ভূমিকা থাকলেও তরুণ ও যুবকদের মধ্যে হতাশা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে ফেসবুক।এ ক্ষেত্রে ‘ফেসবুক-ঘটিত ঈর্ষা’ তরুণদের মানসিক কষ্ট বাড়াচ্ছে। অন্যান্য ফেসবুক বন্ধুদের চমকপ্রদ ডিজিটাল জীবনব্যবস্থা দেখে নিজেকে তুচ্ছ মনে করছেন অনেকে।



জীবন সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা:২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আরেক দল গবেষক জানিয়েছিলেন, ফেসবুক ব্যবহারকারীরা যত বেশি ফেসবুকে লগ ইন করেন, তত বেশি নিজের জীবন সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা নেন তাঁরা। তাঁদের সব সময় এ ধারণা হয় যে, তাঁর চেয়ে বন্ধুরা অনেক বেশি ভালো আছে!



ঈর্ষা ও একাকিত্ব বোধ বাড়ে: জার্মান গবেষকেরা জানিয়েছেন, মানুষ যত বেশি সময় ফেসবুকে কাটায়, ততই তাঁর ঈর্ষা বাড়ে, একাকিত্ব বোধ হয় ও রাগে ফুঁসতে থাকে।ফেসবুকে অতিরিক্ত সময় না কাটিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে মুখোমুখি যোগাযোগের পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকেরা।





ফেসবুকের জন্যে চ্যালেঞ্জ ও সমালোচনা


ফেসবুক তার চলার পথে বেশ কিছু বাধার সম্মুখীন হয়েছে। সিরিয়া, চায়না এবং ইরানসহ বেশ কয়েকটি দেশে এটা আংশিকভাবে কার্যকর আছে। এটার ব্যবহার সময় অপচয় ব্যাখ্যা দিয়ে কর্মচারীদের নিরুৎসাহিত করে তা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।



ফেসবুক ওয়েবসাইটকে আইন জটিলতায় পড়তে হয়েছে বেশ কয়েকবার জুকেরবার্গের সহপাঠী কর্তৃক, তারা অভিযোগ এনেছেন যে ফেসবুক তাদের সোর্স কোড এবং অন্যান্য বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি আত্মসাৎ করেছে।



সমালোচকদের ভাষ্য হচ্ছে, ফেসবুক বা এ ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আসলে কোনো প্রয়োজন নেই। যাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ আছে, তাদের সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখার কোনো প্রয়োজন হয়না। আর যাদের সঙ্গে বহু বছর ধরে যোগাযোগ নেই, বুঝতে হবে সেসব মানুষের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ রাখা বা না রাখার তেমন কোনো গুরুত্ব বা দরকার নেই।



ফেসবুকে ঘন ঘন ছবি আপলোড নিয়ে যুক্তরাজ্যের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়- ওয়েস্ট অফ ইংল্যান্ড, এডিনবারা ও বার্মিংহামের গবেষকরা উপসংহারে পৌঁছেছেন, ঘন ঘন ছবি প্রকাশ বাস্তব জীবনে ঘনিষ্ঠতা কমিয়ে আনার পাশাপাশি জনবিচ্ছিন্ন করে এবং ব্যক্তিগত জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।



ফেসবুকে লক্ষ্যহীন সময় অপচয়কারীদের জন্য একটি সতর্ক সংকেত দিয়েছে আমেরিকার মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। তারা বলেছেন, ফেসবুকে অনেক বেশি সময় অপচয়কারীরা একটা সময় উপলব্ধি করতে পারে যে, তারা অকারণেই জীবনের অনেক মূল্যবান সময় ফেসবুকে ব্যয় করে ফেলেছে, যা তাদের হতাশ ও অসুখী করে তোলে।



ফেসবুকের ব্যবহারে ঝুঁকি

ব্যক্তিগত তথ্যের ওপর ফেসবুকের হস্তক্ষেপ:একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে ব্যবসা করছে ফেসবুক?তারচেয়েও মজার ব্যাপার হলো,আপনিই আপনার নিজের অজান্তে তাদের অনুমতি দিচ্ছেন আপনার তথ্যনিয়ে ব্যবসা করার। রেজিস্ট্রেশনের সময় টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশনস এবং প্রাইভেসি পলিসিরসঙ্গে একমত পোষণ করা মানেই আপনার ব্যক্তিগত তথ্যের ওপর ফেসবুকের হস্তক্ষেপের অধিকার সমর্থন করা।



ছবি নিয়ে যা ইচ্ছা তা করতে পারে: ফেসবুক ব্যবহার করার মধ্যদিয়ে আপনার ব্রাউজারে বেশ কিছু কুকি জমা হচ্ছে। এসব কুকি ফেসবুকই আপনার ব্রাউজারে জমা করছে। এসব কুকি আপনার ব্রাউজার ব্যবহার করে অন্যান্য ওয়েবসাইট ব্যবহার করার সময় আপনার ফেসবুক একাউন্টকে আইডেন্টিফাই করে দেয়। আপনি যদি ব্রাউজারে কুকি ডিজঅ্যাবল করে রাখেন,তাহলে আপনি ফেসবুকে ঢুকতেই পারবেন না। ১০ বিলিয়নেরও বেশি সংখ্যকছবি রয়েছে ফেসবুকে, যা আপনার মতোই সাধারণ ব্যবহারকারী কর্তৃক আপলোডকৃত। অর্থাৎ ফেসবুক শুধু সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইটই নয়,বরং বিশ্বের এক নাম্বার ফটো শেয়ারিং ওয়েবসাইটই বটে! কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ফেসবুকের প্রাইভেসি পলিসি মতে, ব্যবহারকারী ছবি আপলোডের মাধ্যমে ছবির সব অধিকার ফেসবুককে দিয়ে দিচ্ছেন। অর্থাৎ ফেসবুক আপনার ছবি নিয়ে যা ইচ্ছা তা করতে পারবে।



গোপনীয়ও ব্যক্তিগত তথ্যের আজীবন সংরক্ষণ: ফেসবুক আপনার ব্যক্তিগত তথ্য এবং ফেসবুকে আপনার কর্মকান্ড সব সংরক্ষণ করে।এমনকি একাউন্ট ডিলিটও করে ফেললেও ফেসবুকের কাছে সব তথ্য সংরক্ষিত থাকে। ফেসবুকের বর্তমানে নিযুক্ত ব্যারিস্টার টেড আমেরিকার সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির (সিআইএ) সাবেক অ্যাটর্নি ছিলেন। বলা বাহুল্য, তিনি সিআইএর ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’অভিযানে প্রাইভেসি ইস্যু নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটিতে বিখ্যাত ছিলেন। অর্থাৎ ফেসবুকে ব্যবহারকারীদের সাইবার স্পেসে ব্যক্তিগত তথ্যাদি অত্যন্ত মূল্যবান এবং এসব গোপন রাখা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু ফেসবুকে দেয়া প্রত্যেকটি গোপনীয়ও ব্যক্তিগত তথ্য ফেসবুক আজীবন সংরক্ষণ করে এবং প্রয়োজনে তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রির অধিকারও সংরক্ষণ করে।



একান্ত ব্যক্তিগত কার্যক্রমের ওপর নজর রাখে:আপনি লক্ষ্য করলে দেখবেন ফেসবুক ব্যবহারের সময়পাশে প্রদর্শিত বিজ্ঞাপনগুলো আপনার পছন্দের সঙ্গে মিলে যায়? ফেসবুকের একটি বিশেষ প্রক্রিয়া সাইবারস্পেসে প্রত্যেকের ব্যক্তিগত কার্যক্রম প্রত্যক্ষ ও বিশ্লেষণ করে যাতে ব্যক্তিগত তথ্যগুলোকে আরো মূল্যবান করে তোলা যায়। অর্থাৎ,ফেসবুকের একটি গোপন চোখ সবসময়ই আপনার একান্ত ব্যক্তিগত কার্যক্রমের ওপর নজর রেখে চলেছে!



আইডিয়া চুরি ও পুরনো তথ্যাদির রেকর্ড:প্রণীত আইন অনুসারে, আপনি যে দেশে অবস্থান করছেন,সে দেশে ফেসবুকের কোনো কার্যালয় না থাকলে ফেসবুকের বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারেননা। কারণ, আপনার কোনো অভিযোগ গ্রহণ করা হবে না। ফেসবুক থার্ডপার্টি ওয়েবসাইট থেকে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে। এমনকি মুছে দেয়া প্রোফাইলের ব্যবহারকারীর তথ্যও ফেসবুক সংগ্রহ ও সংরক্ষণ অব্যাহত রাখে। ফেসবুক তৈরিতে মার্কহার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির অন্য ছাত্রদের আইডিয়া চুরি করেছেন, এমন একটি দাবি এবং এ নিয়ে আইনি জটিলতাকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য ফেসবুক ২০০৮ সালের জুনে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিতে রাজি হয়, এ টাকার পরিমাণ কখনো প্রকাশ করা হয়নি। আপনি যদি আপনার নাম, ই-মেইল ঠিকানা,ঠিকানা ইত্যাদি পরিবর্তনও করে ফেলেন, তবুও ফেসবুকের‘ফ্রেন্ড ফাইন্ডার’অপশনে আপনার সব পুরনো তথ্যাদির রেকর্ড সংরক্ষিত থাকে। আপনার ফেসবুক প্রোফাইলে আপনার মোবাইল নাম্বার ‘টাইপ করা’ মোবাইল স্প্যামিং বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হতে পারে।



অ্যাপ্লিকেশন ব্যানকরা ও নিরাপদহীনতা:গত বছর ফেসবুক কর্তৃপক্ষের দ্বারা প্রায় ১হাজার ফেসবুক অ্যাপ্লিকেশন ব্যানকরা হয়েছে। ফেসবুকের অ্যাপ্লিকেশনগুলো পুরোপুরিই সাধারণ ব্যবহারকারীদের দ্বারা তৈরি এবং এগুলো ব্যবহার করা মোটেই নিরাপদ নয়। সুতরাং, ফেসবুক অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করার সময় সতর্ক থাকুন এবং ব্যক্তিগত তথ্যাদি দেয়া থেকে বিরত থাকুন।



ব্যক্তিগত তথ্যাদি পার্টনারদের কাছে ট্রান্সফার:৪ হাজারেরও বেশি বন্ধু আছে এমন ফেসবুক একাউন্টগুলো প্রায়ই কোনো প্রকার কারণ দর্শানো বা কারণ ব্যাখ্যা করা ছাড়াই বন্ধ করে দেয়া হয়। এ ব্যাপারে ফেসবুকের টার্ম অফএগ্রিমেন্টে কিছু উল্লেখ করা নেই। ফেসবুক ব্যবহারের মধ্য দিয়ে আপনি বৈশ্বিক সাইবার অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছেন! কেননা আপনার ব্যক্তিগত তথ্যাদি ফেসবুকের অন্যান্য পার্টনারদের কাছে ট্রান্সফার করা হচ্ছে,যাদের ব্যাপারে আপনার হয়তো কোনো ধারণাই নেই।



ছবি অকারণে ডিলিট বা অপব্যবহারের শিকার: ফেসবুক থেকে প্রায়ই চুক্তিপত্রের নীতিমালা লঙ্ঘনের নামে ছবি মুছে দেয়া হয়ে থাকে। তবে এসব ছবি চুক্তিপত্রের ঠিক কোন ধরনের লঙ্ঘনের কারণে মুছে দেয়া হয়েছে,তা কখনোই ব্যবহারকারীকে জানানো হয়না। অর্থাৎ ফেসবুকে আপনার ছবি অকারণেই ডিলিট বা অপব্যবহারের শিকার হতে পারে।



তথ্য নিয়ে ব্যবসা: ফেসবুক ব্যবহার যে সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়, তা কিন্তু ফেসবুক নিজেই উল্লেখ করে রেখেছে তাদের টার্মস অফ এগ্রিমেন্ট এবং প্রাইভেসি পলিসিতে। কিন্তু সাধারণত কোথাও রেজিস্ট্রেশনের সময় ব্যবহারকারীরা এগ্রিমেন্টের সঙ্গে একমত পোষণ করে রেজিস্ট্রেশন করলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়,ব্যবহারকারী জানেনই না সংশ্লিষ্ট কোম্পানির নীতিমালা কী বা গোপনীয়তার নীতি কী। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তারই পরিণাম ভোগ করতে হবে নিজেদের ব্যক্তিগত তথ্য পাচার হয়ে যাওয়ার মাধ্যমে। সুতরাং, ফেসবুকে কোনোক্রমেই ব্যক্তিগত ও গোপনীয় তথ্য প্রকাশ করা উচিত নয়। অন্যথায় আপনার তথ্য নিয়ে ব্যবসা চালাতে থাকবে ‘জনপ্রিয়’ ও ‘বিশ্ববিখ্যাত’ এই নেটওয়ার্কটি।



ফোন নাম্বার চুরি:এন্ড্রয়েড ডিভাইস থেকে ফোন নাম্বার চুরি করছে ফেসবুক!বিশ্বব্যাপী অসংখ্য এন্ড্রয়েড স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেট ব্যবহারকারীর ডিভাইস থেকে মিলিয়ন মিলিয়ন ফোন নাম্বার চুরি করেছে ফেসবুক। সামাজিক যোগাযোগের এই সাইটটির অফিসিয়াল এন্ড্রয়েড এপ্লিকেশনের মাধ্যমে ফোনবুকের সকল নাম্বার তাদের সার্ভারে পাঠিয়ে দিয়েছে। সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হচ্ছে, এজন্য ফেসবুক এপে কোন ব্যবহারকারীর লগ-ইন প্রয়োজন হয়না, এবং এমনকি কোন অনুমতিও লাগেনা। এপটি নিজ থেকেই ফোন থেকে নাম্বার সংগ্রহ করে সেগুলো সার্ভারে পাঠাতে সক্ষম! ডিজিটাল নিরাপত্তা গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিমানটেক (নরটন নির্মাতা) সম্প্রতি এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উদ্ঘাটন করেছে। ইতোমধ্যেই নরটনের অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছে মার্ক জুকারবার্গের নেতৃত্বাধীন ফেসবুক। তারা বলেছে, উল্লিখিত উপায়ে ফেসবুক সার্ভারে যেসব ফোন নাম্বার কপি করা হয়েছে সেগুলো মুছে ফেলা হচ্ছে।



অনুমতি ছাড়াই গোপনীয় তথ্য সংরক্ষণ: ফেসবুক এপ আপনার কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই যেকোন সময় এন্ড্রয়েড ফোন থেকে অডিও রেকর্ড করতে পারবে। এটি আপনার অগোচরে মোবাইলের ক্যামেরা ব্যবহার করে ছবি ও ভিডিও ধারণ করারও ক্ষমতা রাখে। এছাড়া ফেসবুক এপ ব্যবহারকারীদের ফোনবুক, কল লিস্ট, ব্যাটারি স্ট্যাট, নির্দিষ্ট কিছু ইমেইল যোগাযোগ প্রভৃতি তথ্যও এক্সেস এবং সংরক্ষণের অনুমতি বাই ডিফল্ট নিয়ে রাখে। অর্থাৎ ফেসবুক আপনার সম্পর্কে সবই জানে। আপনি কার নাম্বারে কতক্ষণ ভয়েস কল করছেন, সেটিও!!! এবং এতে কোম্পানিটি আপনার কাছে স্পষ্ট অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন মনে করেনা। আগেই বলেছি, নিজেদের সার্ভারে আপনার মোবাইলে সেভ করা ফোন নাম্বার কপি করার জন্য কোন লগ-ইনের দরকার হয়না। যেকোন এন্ড্রয়েড ডিভাইসেই এটি সম্ভব। আর যেসব হ্যান্ডসেটে প্রি-ইনস্টলড ফেসবুক এপ থাকে সেগুলো রিমুভ করাও সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য একটু ঝামেলার কাজ।





ফেসবুক ব্যবহারে করণীয়

ব্যক্তিগত তথ্যাদি মুছে ফেলা: এফবিআইয়ের পরামর্শ মতে,গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত লোকজনের (যেমন পুলিশ অফিসার)উচিত ফেসবুক থেকে ব্যক্তিগত তথ্যাদি মুছে ফেলা। কারণ,ফেসবুক থেকে ব্যক্তিগত তথ্যের অপব্যবহার খুব সহজেই করা সম্ভব এবং এমনটা হয়ে থাকে।



অপরিচিত কারো ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গ্রহণ করা নয়: ফেসবুক দাবি করে, তাদের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ গোপনীয়তা রয়েছে। কিন্তু এমআইটির (ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলোজি) দুজন ছাত্র স্বয়ংক্রিয় বা অটোমেটেড স্ক্রিপ্টব্যবহার করে ৭০ হাজারেরও বেশি ফেসবুক প্রোফাইল ডাউনলোড করতে সক্ষম হয়েছিল। এতে বোঝা যায়, ফেসবুকের দাবি সঠিক নয় এবং ব্যক্তিগত তথ্য ফেসবুকে প্রকাশকরা বা দেয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ফেসবুকের একটি বড় সংখ্যক প্রোফাইলই পেশাদার জালিয়াতদের দ্বারা তৈরি। এসব প্রোফাইলের মাধ্যমে তারা সাধারণ মানুষকে বন্ধুত্বের আবেদন পাঠায় এবং আবেদন গৃহীত হওয়ার পর প্রোফাইলে প্রবেশ করে ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেয়। তাই অপরিচিত কারো ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গ্রহণ করার আগে দশবার চিন্তা করুন!



কোনো লিংকে ক্লিক করার সময় সতর্ক থাকা: সম্প্রতি ফেসবুক বেশকিছু ভয়াবহ ভাইরাস শনাক্ত করেছে,যা ব্যবহারকারীকে বিনামূল্যে ভিডিওর কথা বলে আক্রমণ করে। অতএব,ফেসবুকে প্রাপ্ত কোনো লিংকে ক্লিক করার সময় সতর্ক থাকুন। ক্লিক না করাই নিরাপদ থাকার শ্রেষ্ঠ উপায়।



বন্ধু চেনায় সতর্কতা:ফেসবুকের কারণে জীবনের অনেক মূল্যবান সময় নষ্ট হয়। এটাই যোগাযোগের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম নয় একারণে যে, এখানে আসল বন্ধু-নকল বন্ধু চেনা কঠিন। এর কারণে আমরা আসল বন্ধুদের কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। ফেইসবুক কে ভাল অর্থে ব্যবহার করলেই এটা ভাল।



ফেসবুক একাউন্ট হ্যাকারের হাত থেকে রক্ষা করা: ফেসবুকে প্রত্যেকের একটি গুরত্বপূর্ণ একাউন্ট থাকে এবং যেটি দিয়ে সবার সাথে সহজেই যোগাযোগ করা হয়। এছাড়াও জরুরী ভিত্তিতে যোগাযোগের জন্য উক্ত একাউন্ট টি পরিচিত সবার সাথে শেয়ার করা হয়। এসব কারণে ফেসবুক একাউন্ট অনেকটা গুরত্বপূর্ণ হয়ে পড়ে। প্রয়োজন হয় বিশেষ নিরাপত্তা প্রদানের। নিরাপত্তাহীন ফেসবুক একাউন্ট সহজেই হ্যাকারের দ্বারা হ্যাক যায়। যদি এরকম গুরত্বপূর্ণ ফেসবুক একাউন্ট হ্যাকারদের দ্বারা হ্যাক হয়ে যায় তাহলে মাথায় হাত ছাড়া আর কিছুই করার থাকেনা।



উপসংহার:

পুলিশ কর্মকর্তা-দম্পতির হত্যায় অভিযুক্ত মেয়েটি তার অপর হত্যা-সহযোগীদের সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচিত হয়েছে, তেমনি এটাও সত্য, মিসরে হোসনি মোবারক সরকারের প্রতি অসন্তুষ্ট লাখ লাখ মানুষ তাহরির স্কয়ারে এসেছিল ফেসবুকের একটা ছোট্ট যোগাযোগের সূত্র ধরেই। সেক্ষেত্রে বলা যায়, যে কোনো একটি বিষয় থেকে আমরা ঠিক কী ধরনের সেবা নেব বা ঠিক কিভাবে কাজে লাগাব, সেটা নির্ভর করছে আমাদের ওপরই। তাই ইন্টারনেটের মাধ্যমে ফেসবুক আমাদের সামনে যে এক নতুন দুনিয়া উন্মোচন করেছে, তা কাজে লাগিয়ে সমাজে অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.