নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আত্মসর্বস্ব ও ব্যক্তিস্বার্থের ওপর প্রতিষ্ঠিত মালিকদেরও অনেকে লোক দেখানো নামাজ পড়েন, টুপি মাথায় দেন, বড় দাঁড়ি রাখেন, পাঞ্জাবি পড়েন অথচ মিথ্যা বলেন, ওয়াদা রাখেন না, আমানতের খেয়ানত করেন। মানুষের সম্মান ও ইজ্জতের তোয়াক্কা করেন না লোভী ও স্বার্থপর হয়ে থাকেন। যেখানে মালিক আর কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে এক রুক্ষ,শুষ্ক ও কৃত্রিম সম্পর্ক বিদ্যমান সেখানে সবাই নিজ নিজ স্বার্থ উদ্ধার নিয়ে ব্যস্ত থাকে। এই স্বার্থান্ধতার ফলে মালিক ও অধীন্স্তরা দুটি মারমুখী প্রতিদ্বন্দ্বী দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে। মালিক পক্ষের অপরের প্রতি সম্মানবোধ এবং মানবিক ও সামাজিক দায়বদ্ধতার অভাবে মালিক ও বেতনভুক্ত অধীনস্তদের মধ্যে এক নিরন্তর দর কষাকষি চলে। পারস্পরিক সৌহার্দপূর্ণ ও গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ে না ওঠায় প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারণ প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্তদের সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক ব্যতিরেকে কোনো প্রতিষ্ঠানের উন্নতি-অগ্রগতি একেবারে অসম্ভব।
একজন মালিকের কী ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি থাকা উচিত, সে সম্পর্কে মহান আল্লাহ সূরা : কাসাসে হজরত শোয়াইব ও হজরত মুসা (আ.) এর ঘটনা বর্ণনা করে ব্যাপক অর্থবহ ইঙ্গিত দিয়েছেন। হজরত মুসা (আ.) অনেক দিন পর্যন্ত শোয়াইব (আ.) এর অধীনস্থ হিসেবে কাজ করেছেন। তাকে নিয়োগ করার সময় তিনি বলেছিলেন, ‘আমি আপনার ওপর অহেতুক কষ্টের বোঝা চাপিয়ে দিতে চাই না। আল্লাহর মর্জিতে আপনি আমাকে সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত পাবেন।’ ওই আয়াত থেকে এ কথা সুস্পষ্ট প্রতিভাত হয় যে, একজন মুসলমান শিল্প মালিকের কাঙ্খিত লক্ষ্য টাকা-পয়সা নয়, বরং তাকে দরদি ও সৎকর্মশীল হতে হবে। তিনি অধীনস্তদেরকে শুধু খাটিয়ে মারবেন না। অথচ যদি কেউ নিজেকে ইসলামপন্থী দাবি করেন আবার ব্যক্তিজীবনে বিলাসী জিন্দেগী যাপন করেন, অপচয় ও অপব্যয় করেন, অঝথা বকা ঝকা করেন, গালিগালাজ করেন, অন্যের প্রাপ্য দিতে গড়িমসি করেন তাকে কি বলা যায়? সে নি:সন্দেহে মুনাফিক ও প্রতারক।
নবী করিম (সা.)অধীনস্থ-মালিকের সম্পর্কের ব্যাপারে বলেছেন, যারা তোমাদের কাজ করবে তারা তোমাদেরই ভাই। আল্লাহ এদের তোমাদের অধীনস্থ করে দিয়েছেন। অর্থাৎ, এদের সঙ্গে তোমাদের সম্পর্ক প্রভু-ভৃত্যের নয় বরং এরা আর তোমরা ভাই ভাই। একজন ভাই তার সহোদর থেকে যা কিছু আশা করতে পারে, পেতে পারে তারাও তোমাদের কাছে তাই আশা করতে পারে। তাই তাদের জন্য কষ্টকর হয় এমন কাজের বোঝা তাদের ওপর চাপিয়ে দিও না। অগত্যা তা যদি করাতেই হয় তবে নিজে তাদের সর্বতোভাবে সাহায্য কর। অথচ ছুটির দিনেও বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করানো, কোন বিনিময় ছাড়া অতিরিক্ত সময় খাটানো এমনকি জরুরী প্রয়োজনেও ছুটি না দেয়ার মত জঘন্য মানসিকতার নীচু প্রকৃতির লোকজন যখন নিজেদেরকে ইসলাম প্রেমিক বলে প্রচার করে তা রীতিমত হাস্যকর হয়ে ওঠে।
ইসলাম মালিককে সহনশীল হতে শিক্ষা দেয়। দোষত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে মাফ করে দিতে উৎসাহিত করে। একদিন এক সাহাবি এসে নবী করিম (সা.) কে প্রশ্ন করেন, হুজুর চাকর-খাদিমদের অপরাধ কতবার ক্ষমা করব? নবী করিম (সা.) চুপ করে রইলেন। ওই সাহাবি আবার প্রশ্ন করলে নবী করিম (সা.) ব্যাকুল হয়ে বলে উঠলেন, প্রত্যেক দিন ৭০ বার হলেও ক্ষমা করো। হজরত আনাস (রা.) বলেন, আমি নবী করিম (সা.) এর সঙ্গে ১০ বছর অতিবাহিত করেছি, তার সেবা করেছি কিন্তু তিনি কোনোদিন আমাকে ভর্ৎসনা করেননি, কোনো দিন বলেননি, এটা এভাবে কেন করেছ? বা ওটা ওইভাবে কেন করনি? নবী করিম (সা.) আরও বলেন, তোমরা যা পরিধান করবে, যা খাবে তোমাদের চাকরদেরও তা পরিধান করাও এবং তা খাওয়াও। সাহাবায়ে কেরাম যেন এর বিপরীত ভাবতেই পারতেন না। অথচ কেউ যদি নিজেকে ইসলামের ধারক বাহক হিসাবে দাবি করেন, নিজেকে দাঈ ইলাল্লাহ হিসাবে পরিচয় দেন অথচ সর্বত্র বৈষম্য চর্চা করেন, ন্যায্য অধিকার থেকে অপরকে বঞ্চিত করেন, যৌক্তিকতা ও আইন লংঘন করেন-তাকে কি বলা যায়?
হজরত ওমর (রা.) একবার বলেছিলেন, আল্লাহ ওই জাতিকে লানত করুন, যারা নিজেদের চাকরদের নিয়ে একসঙ্গে খেতে ঘৃণা বোধ করে। এ কথা শুনে হজরত সাফওয়ান (রা.) বলে উঠলেন আল্লাহর কসম, আমরা এ ঘৃণাবোধ করি না। অধিকন্তু নিজেদের ওপরও আমরা তাদের প্রাধান্য দিয়ে থাকি। ইসলাম অধীনস্থকে বলে নিজের মালিকের হক আদায়ে সচেষ্ট থাকতে। সে যেন তাতে কোনো প্রকার ফাঁকি না দেয়। অপরদিকে মালিককে সহনশীল, হৃদয়বান এবং সহানুভূতিসম্পন্ন হতে শিক্ষা দেয়। মালিক নিজের মনের মধ্যে অধীনস্থকে কোনো প্রকার শোষণের অভিপ্রায়ও রাখতে পারবে না। স্বাস্থ্যহানিকর ও তার সাধ্যাতীত কোনো কাজে তাকে নির্দয়ভাবে নিযুক্ত করতে পারবে না বরং সে অধীনস্থের কষ্টকে নিজের কষ্ট বলে মনে করবে। সমব্যথী হয়ে তার কল্যাণ সাধনে সচেষ্ট থাকবে, নিজের আনন্দের ভাগী হবে, তাকে আত্মীয়তার স্নিগ্ধ পরিবেশে রাখবে, যাতে সে কোনো রকমের হৃদ্যতার অভাব অনুভব না করে।
২| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:০২
ভারসাম্য বলেছেন: +++
৩| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:১০
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: মুসলিম পান কই?
দেখানতো কে মুসলিম? কিভাবে মুসলিম?
চলতি সমাজে যাদের দেখেন পান তাদের সর্বোচ্চ বিশ্বাসী বলতে পারেন। যাদের উদ্দেশ্য করে কোরআনেও অনেক অনেক আয়াত আছে।
এই বিশ্বাসী থেকে মুসলিমে উত্তীর্ন হতে হয়। ইসলাম গ্রহেনর মাধ্যেম। বাইয়াত বা শপথ গ্রহনের মাধ্যমে।
আপনি বিএনপি বা আওয়ামীলিগ যাই করেন না কেন- শুধু সমর্থক বা তাদের নীতিতে বিশ্বাসী হয়ে সারা জীবন থাকলেও কোন পদ পাবেন? পাবেন না। তাদের সদস্য ফরম পূরণ করতে হয়। অর্থাৎ শপথ গ্রহন করলেন-তাদের নীতি আদর্শের প্রতি ঐক্যমত পোষন করে সাক্ষর করার পর আপনার পদ, পদোন্নতি স্বীকৃতি সব মেলে।
তাহলে আমাদের এই যে চলে আসা সমাজে আমরা কিভাবে মুসলমান হলাম?
জন্মসুত্রে? সেতো কোরআন মতে সকলেই। সকল শিশুই ইসলামের উপর জন্মগ্রহন করে।
গরু খাওয়ার সূত্রে? বাপে -দাদায় মুসলমান তাই আমি মুসলমান এই সূত্রে!!!
আমাদের গোড়ায় গলদ এখানেই।
আমরা মুসলমানিত্ব কি তাই বুঝিনি। আহলে বাইয়াত পদ্ধতিকে ঠেলে দিয়ে আমরা কো অন্ধকারে চলেছি। স্বীকৃতি হীন! স্ব-ঘোষিত সন্তুষ্ঠিতে!!!
আপনার আক্ষেপ সেই চলতি বিশ্বাসীদের দেখেই । সেখানে মুসলমান খুজে দেখুন পান কিনা?????
আর যে মুসলমান সে আপনার বর্ণিত বিষয় সমূহে অবশ্যই যত্নশীল।
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:৪৫
মুদ্দাকির বলেছেন: দারুন সুন্দর করে লিখেছেন!! আশা করি এই রকম লেখা লিখতেই থাকবেন!! যাযাকাল্লাহ