নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমৃদ্ধ আগামীর প্রত্যেয়

আনিসুর রহমান এরশাদ

আমি আমার দেশকে অত্যন্ত ভালবাসি ।

আনিসুর রহমান এরশাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সড়ক দূর্ঘটনা, নিরাপত্তাহীন জীবন ও মানবিক বিপর্যয়

২৬ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:৩৭

প্রযুক্তি আমাদের জন্য আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ তা নির্ভর করছে প্রযুক্তিকে আমরা কিভাবে ব্যবহার করি তার উপর। তথ্য প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান উন্নতির ধারায় পৃথিবীর অনেক দেশ আজ অনেকাংশেই আধুনিক। প্রতিটি ক্ষেত্রে রয়েছে প্রযুক্তির ছোঁয়া - প্রযুক্তির জয় জয়কার, বাদ যাচ্ছে না সড়ক ও পরিবহন যোগাযোগ ব্যবস্থাও। প্রযুক্তির আশীর্বাদে কর্মময় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র হয়েছে অনেক বেশী সহজ, সরল ও প্রাণবন্ত। কিন্তু এচিত্র আমাদের ক্ষেত্রে ধারণ করেছে একটু ভিন্নরুপ। কারণ আমরা প্রযুক্তি থেকে পিছিয়ে। একের পর এক মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় ঝরে যাচ্ছে বহু মূল্যবান তাজা তাজা প্রাণ। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, চলচ্চিত্র নির্মাতা, শিক্ষাবিদ, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, সুশীল সমাজ কেউই আজ সড়কে নিরাপদ নন। প্রাণটাকে হাতের মুঠোয় নিয়ে চলতে হচ্ছে সবার। এযেন এক চিরচায়িত মৃত্যুর ফাঁদ। ১৯৪৮ সালে ঘোষিত ‘‘ইউনিভার্সাল ডিক্লারেশন অব হিউম্যান রাইটস" এ বলা হয়েছে, ‘‘Everyone has the right to seek, receive and import information and ideas through any media’ তাহলে আমরা কেন বঞ্চিত থাকব? তাই আমাদের কণ্ঠে আজ ধ্বনিত হচ্ছে-‘‘আমরা নিরাপদ সড়ক চাই, যথাযথ প্রযুক্তির ব্যবহার চাই।’’



বিশ্বে এখন এমন অনেক সফটওয়্যার তৈরি হয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে অর্থ-বাণিজ্য ছাড়াও উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জননিরাপত্তা, সড়ক, রেল, নৌপরিবহন, কৃষ্টি, সমাজকল্যাণ ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব হচ্ছে। তাই প্রযুক্তির ছোঁয়ায় নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা গড়ে তোলা এখন আর খুব চ্যালেঞ্জিং নয়। কিন্তু আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে এ প্রযুক্তিগুলোকে ব্যবহার করাটাই চ্যালেঞ্জিং। তবে আমরা যদি সকলে মিলে এ চ্যালেঞ্জটা গ্রহণ করতে পারি তাহলে আমরাও নিরাপদে চলাচল করতে পারব। প্রযুক্তিগুলোকে ব্যবহার করে পৃথিবীর অনেক দেশ আজ সড়কে নিরাপদ।



গাড়ি কিভাবে, কখন, কোথায় ড্রাইভিং করা হয়েছে এবং গতি নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে বেশি ছিল কিনা, তার একটি ফিডব্যাক ড্রাইভার এবং অন্য পার্টির কাছে ডাটা সম্বলিত বিশ্লেষণ পৌছে দেয়ার জন্য তৈরিকৃত যানবাহন মনিটরিং সিস্টেম। এ পদ্ধতিটি যুক্তরাষ্ট্রে অনেক দ্রুততার সাথে বেড়ে চলেছে; বেড়ে চলেছে প্রযুক্তির অনেক ধরন।



ড্রাইভারের ড্রাইভিং আচরণ মনিটরিং করাটাও গুরুত্বপূর্ণ। যেমন-ড্রাইভারের সংঘর্ষের ধরন, সংঘর্ষের সংখ্যার ডাটা সংগ্রহ করা হয় যা ড্রাইভারের সাংঘর্ষিক ঝুঁকি রেটিং করে।এক্ষেত্রে যে বিষয়গুলোর প্রতি অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয় তা হল:ভ্রমণের শুরু ও শেষ সময়, গাড়ির স্পিড, গাড়ির অবস্থান, গাড়ির ব্রেকিং এর ধরণ, সিট বেল্ট ব্যবহার।



The European Conference of Transport Research Institutes এর অধিবেশনে সড়ক দূর্ঘটনার ঝুঁকি কমাতে অটোমেটিক ড্রাইভিং ব্যবস্থার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়। অধিক দূরত্বের রাস্তায় চালকদের ক্লান্তি, অবসাদ ঘিরে ফেলে। ফলে অনেক দূর্ঘটনা ঘটে। এক্ষেত্রে এ সিস্টেম দূর্ঘটনা অনেকাংশেই হ্রাস করে।



স্লিপি-ড্রাইভার ওয়ার্নিং খুব কাজ দেয়। কিছু সিস্টেম যেমন-ডিসট্রেকশন বা স্লিপিং ডিটেকশন এর মাধ্যমে ড্রাইভার একটি ওয়ার্নিং পায়।এক্ষেত্রে একেবারে সমস্যাটি দূর না হলেও ড্রাইভার এর ড্রাইভিং এর প্রতি মনোনিবেশ ঘটানো যায় এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করা যায়।



E-call সিস্টেম তথা অটোমেটিক তাৎক্ষণিক কল সিস্টেম বোর্ড গঠন করে সময়োপযোগী ট্রাফিক ব্যবস্থা এবং ট্রাভেল মনিটরিং সিস্টেম প্রণয়ন করা যায়।



আইসিটির ব্যবহার সড়ক নিরাপত্তা বিধানে যোগ করেছে এক নতুন মাত্রা। লেন চেঞ্জের সময় সংঘর্ষ রোধ, ক্রসিং মনোটরিং সবই আজ হাতের নাগালে।



সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এর দেয়া তথ্য মতে, দেশে প্রতিদিন গড়ে ৩০জন সাধারণ নাগরিক সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যায়। সে অনুযায়ী বছরে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ১১হাজার। বিশ্বব্যাংকের হিসেবে বাংলাদেশে বছরে ১২ হাজার আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ২০হাজার মানুষের মৃত্যু হয় সড়ক দূর্ঘটনায়।৫এদেশের বড় বড় শহরগুলোর ব্যস্ততম মহাসড়কে প্রতিদিন মানুষ নানাভাবে দূর্ঘটনায় পতিত হয়। অকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়া, পঙ্গুত্ব বরণ করা যেন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। এই হচ্ছে আমাদের দেশের নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থাপনা। যে সড়ক ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তির উৎকর্ষতাতো দূরে থাক, অনেক ক্ষেত্রেই সাধারণ নিয়ম-নীতিও অনুসৃত হয় না। এ সকল ত্রুটিপূর্ণ সড়ক দূর্ঘটনার শতকরা ৬৪ ভাগই সংঘটিত হয় গ্রামাঞ্চলের সড়কে। প্রযুক্তি যেখানে আজও আলোরদেখা পায় নি। তবে হ্যাঁ, সময় এসেছে এ বিষয়টিকে ভেবে দেখবার, আর তা নিজেদের তাগিদেই, নিজেদের নিরাপত্তার তাগিদেই।



এক প্রতিবেদনে দেশে সংঘটিত সড়ক দূর্ঘটনার ধরন সম্পর্কে বলা হয়, শতকরা ৪৮টি দূর্ঘটনায় পেছন থেকে পথচারীকে এবং ১৬টির বেশী দূর্ঘটনায় সামনের যানবাহনকে পেছন থেকে আঘাত করা হয়। মুখোমুখি সংঘর্ষ হচ্ছে শতকরা ১৩ ভাগের বেশি। বেপরোয়া গতির কারণে দূর্ঘটনা ঘটছে শতকরা ৯ভাগের বেশি। ১৩ভাগ দূর্ঘটনা হচ্ছে অন্যান্য কারণে।যে কারণেই দূর্ঘটনা ঘটুক না কেন এটি যে মানব স্বার্থ সংশ্লিষ্ট জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় এব্যাপারে কোন সন্দেহ সংশয়ের অবকাশ নেই। তাই নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন সড়ক দূর্ঘটনায় বউ হারাইছে বলে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের সব দায় দায়িত্ব তাকে দিয়ে দায়িত্বমুক্ত থাকার সুযোগ নেয়াটা কি উচিত?



বিভিন্ন সময় সড়ক দূর্ঘটনার শিকার হয়েছেন বিভিন্ন পেশার মানুষ। কখনো বা এই নির্মম দূর্ঘটনায় বার বার শিকার হয়েছেন একই পরিবারের মানুষগুলোই। ২৯ জানুয়ারী২০১৩ ফরিদপুরে সড়ক দূর্ঘটনায় কলেজ ছাত্র মিরাজ নিহত হন। প্রসঙ্গত এর আগে ঐ একই স্থানে সড়ক দূর্ঘটনায় এই কলেজ ছাত্রটির বাবাও মারা যান।২২জুলাই ২০১২ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সড়ক দূর্ঘটনায় বুয়েট ছাত্রী শামীমা নাসরিনের দুই পা বিচ্ছিন্ন হয়। পঙ্গুত্ব আজ যার সারা জীবনের সম্বল হয়ে দাঁড়িয়েছে। সবচেয়ে মর্মস্পর্শী দূর্ঘটনা ঘটেছিল ১১জুলাই ২০১১ চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায়। এতে প্রাণ হারায় ৩৮ শিক্ষার্থীসহ ৪০ শিশু কিশোর। ২০০০-২০১০ সাল পর্যন্ত কিছু সড়ক দূর্ঘটনার চিত্র: ২০০০ সালে নিহতের সংখ্যা ৩৪৩০জন এবং আহত/পঙ্গু৩১৭২জন, ২০০১ সালে নিহতের সংখ্যা ৩১০৯জন এবং আহত/পঙ্গু ৩৬০৭জন, ২০০২ সালে নিহতের সংখ্যা ৩৩৯৮জন এবং আহত/পঙ্গু৩০৭০জন, ২০০৩ সালে নিহতের সংখ্যা ৩৩৮৯জন এবং আহত/পঙ্গু৩৮১৮জন, ২০০৪ সালে নিহতের সংখ্যা ২৯৬৮জন এবং আহত/পঙ্গু২৭৫২জন, ২০০৫ সালে নিহতের সংখ্যা ৩১৮৭জন এবং আহত/পঙ্গু৩৭৫৫জন, ২০০৬ সালে নিহতের সংখ্যা ৩১৯৩জন এবং আহত/পঙ্গু২৪০৯জন, ২০০৭ সালে নিহতের সংখ্যা ৩৭৪৯জন এবং আহত/পঙ্গু৩২৭৩জন, ২০০৮ সালে নিহতের সংখ্যা ৩৭৬৫জন এবং আহত/পঙ্গু৩২৮৪জন, ২০০৯ সালে নিহতের সংখ্যা ২৯৫৮জন এবং আহত/পঙ্গু২৬৮৬জন, ২০১০ সালে নিহতের সংখ্যা ৪০৬৭জন এবং আহত/পঙ্গু৪৯৭৫জন।



তথ্য প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার, ব্যবস্থাপনা ও কর্মদক্ষতা বাড়ানোর মাধ্যমে আমাদের সড়ক ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা সম্ভব। তথ্য প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে আমাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা পরিবর্তন করার জন্য ২০০২ সালে প্রথম জাতীয় আইসিটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছিল, কিন্তু দু:খের বিষয় তার অনেক পরিকল্পনাই এখনো বাস্তবায়ন হয় নি। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে আমরা কতটুকু এগিয়েছি তা পরিমাপ করতে হলে আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে আমরা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রভাব সৃষ্টি করে তোলার জন্য কতটুকু প্রস্তুত করতে পেরেছি। এজন্য জানা দরকার আইসিটিকে জাতীয় উন্নয়নে ব্যবহার উপযোগী করে তোলার জন্য দেশের রাজনৈতিক ও নিয়ন্ত্রণমূলক বিধিবিধানের পরিবেশ কেমন, উদ্ভাবনী পরিস্থিতি কেমন, অবকাঠামো কতটুকু উন্নত, ডিজিটাল কনটেন্ট কতটুকু সহজলভ্য, আইসিটি সেবা নাগরিক সাধারণের কতটুকু নাগালের মধ্যে, ব্যক্তি পর্যায়ে আইসিটির ব্যবহার কোন পর্যায়ে, অর্থনীতির উপর আইসিটি কতটুকু প্রভাব ফেলেছে এবং পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় আইসিটির ব্যবহার কতটুকু। এসব সার্বিক দিক গভীরভাবে খতিয়ে দেখার মাধ্যমেই শুধু সম্ভব একটি দেশের আইসিটির অগ্রযাত্রা পরিমাপ করা।



২০১২ সালের গ্লোবাল ইনফরমেশন টেকনোলজি রিপোর্টে ১৪২ দেশের মধ্যে নেটওয়ার্ক রেডিনেন্স ইনডেক্স তথা এনআরআই-এ দু:খজনকভাবে আমাদের অবস্থান ১১৩তম। শীর্ষ অবস্থানে সুইডেন।সর্বনিম্ন১৪২তম হাইতি।তাই আমাদেরকে শুধু ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখলেই চলবে না বরং যথাসাধ্য কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার মাধ্যমে সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটাতে হবে। যেহেতু আমরা স্বপ্ন দেখা শুরু করেছি, অতএব এর বাস্তবায়নও আমরাই পারব এবং তা আমাদের নিজেদের প্রচেষ্টার মাধ্যমেই।



নিরাপদ সড়ক বিনির্মাণে কিছু সুপারিশ:

সুষ্ঠু সড়ক ব্যবস্থাপনা: সড়ক সংস্কার করে সুষ্ঠু সড়ক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা। আমাদের রাজপথ ও মহাসড়কগুলো সংকীর্ণ, আঁকাবাঁকা ও ভারী যান-বাহন চলাচলের অনুপযোগী। তাই দূর্ঘটনা এড়াতে এর সংস্কার অতীব জরুরী।

চালকদের প্রশিক্ষণ: চালকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা। কোন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হলে অন্তত এটা নিশ্চিত করতে হবে যে ড্রাইভাররা সিস্টেমটির ব্যাপারে অভিজ্ঞ। তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে সিস্টেমটি কিভাবে ব্যবহার করা হয়।

ট্রাফিক আইন প্রয়োগ: দূর্ঘটনা রোধে একদিকে যেমন চালককে ট্রাফিক আইন মানতে হবে অন্যদিকে ট্রাফিক পুলিশকে তাদের যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে হবে। এর সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো যেমন: ওভার লোডিং ওভারস্পিডিং, গাড়িতে চালানো অবস্থায় চালকের মোবাইল ফোনে কথা বলা, নির্ধারিত ষ্টপেজ ব্যতিরেকে যাত্রী ওঠানামা করা। এসকল বিষয়গুলোকে যথাযথ আইনের আওতায় এনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

নিরাপদ রেলওয়ে তৈরি: বাংলাদেশ রেলওয়ের মোট লেভেল ক্রসিংয়ের শতকরা ৯৯ভাগ রেলগেটে ডিভাইস পদ্ধতির সিগন্যাল সিস্টেম নেই। প্রায় আড়াই হাজার লেভেল ক্রসিংয়ের মধ্যে গেট ব্যারিয়ার ও গেঁম্যান রয়েছে মাত্র ৩৭০টিতে।১০ বাকিগুলো অরক্ষিত। তাই দূর্ঘটনা এড়াতে অতিসত্ত্বর এসব ক্রসিংয়ে ডিভাইস প্রযুক্তির সিগন্যাল সিস্টেম চালু করতে হবে।

জেব্রা ক্রসিং ব্যবস্থা: সড়ক-মহাসড়কগুলোতে জেব্রা ক্রসিংয়ের ব্যবস্থা করা। দূর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় সড়কের বাক কমানো এবং হাইওয়েতে পথচারীদের চলাচলের জন্য পৃথক লেনের ব্যবস্থা করা।

কিছু ডিভাইস ডিজাইন: দেশের অভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ারদেরকে নিয়ে সময় উপযোগী ডিভাইস ডিজাইন করা যার মাধ্যমে নিরাপদ সড়ক বিনির্মাণের ক্ষেত্রে আমরা শক্ত অবস্থান নিতে পারব।

কার ইন্ডাস্ট্রির প্রতি নজরদারি: আমাদেরকে কার ইন্ডাস্ট্রির প্রতিও নজর দিতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে ইন্ডাস্ট্রিগুলো শুধুমাত্র লাভের জন্য মানহীন কার তৈরী করে। তাই সীমাবদ্ধ প্রযুক্তি দিয়ে এসব কার তৈরী করা হয়, এছাড়াও অত্যধিক বিনির্মান খরচতো রয়েছেই। এসকল কারণেই যানবাহন কিছুদিন রাস্তায় চলার পর ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে এবং দূর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ায়। তাই গাড়ির যথাযথ মানও নিশ্চিত করতে হবে।

বৈধ লাইসেন্স নিশ্চিতকরণ: দেশের অবৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্সগুলো জব্দ করে পরীক্ষার মাধ্যমে বৈধ লাইসেন্স দেয়ার ব্যবস্থা করা। এসব বিষয়ের দায়িত্ব প্রাপ্তদেরকে সঠিকভাবে মনিটরিং করা।

আইসিটি নীতিমালা: আইসিটি নীতিমালার কর্ম পরিকল্পনা সঠিকভাবে বাস্তবায়নে একটি পরিমিত কাঠামোর বাজেট পেশ করতে হবে। এই খাতে সরাসরি পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ দিয়ে এখাতের উন্নয়ন বেগবান করতে হবে। তবেই তা সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা এবং অন্যান্য যোগাযোগ ক্ষেত্রে কাজে লাগানো যাবে।

বেসরকারী সংস্থা: তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়ন সহজে ও সুলভে প্রযুক্তিকে মানুষের কাছে পৌছানো এবং সড়ক ও পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারী বিভিন্ন সংস্থাগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে। প্রয়োজনীয় আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের মাধ্যমে সকলে মিলে প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।এছাড়াও আন্ত:জেলা সড়ক ও মহাসড়কে দ্রুতগতি এবং কমগতির যানবাহনের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা।হাইওয়েতে স্থাপিত হাটবাজার, ঘরবাড়ি ও দোকানপাট অপসারণ করা।



সড়ক দূর্ঘটনায় হতাহতের পাশাপাশি অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৭হাজার কোটি টাকা যা আমাদের জিডিপির দেড় থেকে দুই ভাগের সমান। আমাদের যথাযথ নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থাপনা না থাকার দরুণ যে অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে তা দিয়ে মনে হয় যথাযথ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদ সড়ক বিনির্মাণই সম্ভব। শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতি নয় জীবনের যে ক্ষতি ঘটছে অকালে তার ক্ষতিপূরণ কে দিবে? এ ক্ষতিপূরণ সম্ভব নয়, সম্ভব নয় সেই কর্তব্যরত মানুষটিকে তার পরিবারের কাছে ফেরত দেয়া। তবে এধরনের দূর্ঘটনা যাতে হ্রাস পায় সেই ব্যাপারে সকলে মিলে পদক্ষেপ নেয়া সময়ের দাবি। আমরা আর কোন মিরসরাই দেখতে চাইনা, নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থাপনা চাই, নিরাপদ রাস্তায় হাটতে চাই।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.