![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ থেকে ৭ বছর আগে যেদিন আমার এইচএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট দেয়, সেদিন আমার বন্ধুরা সবাই বাসায় জিপিএ ৫ নিয়ে ফিরেছিল। আমি পারি নাই। আমি ৪.৭ নিয়ে ফিরেছিলাম। মাত্র দশমিক তিন নম্বরের জন্য আমি যেন লজ্জায়-অপমানে মাটির সাথে মিশে যাচ্ছিলাম। এই দশমিক তিন নম্বরই যেন আমাকে দেশের ৩য় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত করেছিল। বাবা-মা হতাশ ছিলেন, কিন্তু আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ, যে তারা তাদের হতাশা আমাকে বুঝতে দেন নাই। আমাকে বকাঝকা তো দুরের কথা, হাতে টাকা দিয়ে ভাই-বোনকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে গিয়ে খেয়ে আসতে বলেছিলেন।
আমি যেদিন এইচএসসির রেজাল্ট পাই সেদিন হিসাব করে বুঝতে পারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০ নম্বরের যেই মূল্যায়ন তার মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে যেই ৮০ নম্বর, সেখানে আমার আছে মাত্র ৭০.২৮। আমার বেশীভাগ বন্ধুরই তখন ৮০। আমি প্রায় ১০ নম্বর পিছিয়ে আছি। শতকরা হিসেবে সেটা মাত্র ৫ শতাংশ। তবুও মনে হলো আমি যেন যোজন যোজন পিছনে আছি। তাই ঠিক করলাম, বন্ধুদের তুলনায় দ্বিগুন পড়তে হবে, দ্বিগুন এফোর্ট দিতে হবে। বন্ধুরা সিনেমা দেখতে যাচ্ছে, আমি যাচ্ছি না। বন্ধুরা ঢাকার বাইরে বেড়াতে যাচ্ছে আমি যাবনা। মাথার পিছনে ঐ ১০ নম্বরের পিছিয়ে থাকা। মনকে বুঝ দেয়া ‘এই ৩টা মাস ভালোমত খাটলে ওদের সাথে সবসময়ই ঘুরতে যাওয়া যাবে। মাত্র তো ৩ টা মাস’।
জীবনে কোনদিন এতো এফোর্ট দিয়ে পড়ি নাই যত ঐ ৩ মাসে পড়েছি। সবই ঐ ১০ নম্বর পিছিয়ে থাকার কল্যাণে। এইচএসসির রেজাল্ট দেয়ার আগে ভাবতেও পারিনি যে আমি ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম ২০০ এর মধ্যে থাকবো। অথচ ১০ নম্বর পিছিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত ১১৬ তম হলাম। আর এর সবথেকে বেশী কৃতিত্ব আমি দেই ঐ ১০ নম্বর পিছিয়ে থাকাকে। কচ্ছপ আর খরগোশের সেই গল্পটা মনে আছে? ঐ ১০ নম্বর আমাকে দৌড়ের কচ্ছপ বানিয়ে দিয়েছে। স্লো এন্ড স্টেডি। রেইস তো জিতবই, নাকি?
আজ ৭ বছর পার হয়ে গেছে। ৪.৭ আমার জীবনে এখন শুধুমাত্র একটা সংখ্যা, এর থেকে বেশী কিছু না। আমি বলছি না, জীবনে অনেক বড় কিছু করে ফেলেছি বা স্টিভ জবস হয়ে গিয়েছি। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা বেশ ভালোই রেখেছেন। একটা আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থায় ভালো একটা চাকরি করছি। পরিবারের দেখাশোনা করতে পারছি। আলহামদুলিল্লাহ
দিনশেষে তোমার জিপিএ ৫ ই হোক আর ৩ ই হোক, সেটা তোমার জীবনটাকে নির্ধারণ করে দিবে না। আজকের পর সেটা তোমার জীবনেও একটা সংখ্যা হয়েই রয়ে যাবে। তোমার আগামীকালটা এখন তোমার হাতে। সেই লড়াইয়ের জন্য শুভকামনা।
তোমাদের সবাইকে অভিনন্দন।
২| ১৯ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:১৯
কাইকর বলেছেন: ভাল লাগলো
৩| ২০ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১২:০০
রাজীব নুর বলেছেন: বাস্তব জীবন বড় কঠিন রে ভাই।
৪| ২০ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১২:১৯
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: ক্রেজি অভিভাবকদের এই লেখাটা পড়া উচিত...
৫| ২০ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১:৪৮
আলআমিন১২৩ বলেছেন: চমৎকার।
৬| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:৩৫
আনসারী বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:০৬
বাঁধন আচার্য বলেছেন: আপনার কথা গুলা অনেক ভালো লেগেছে