নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিশাল মহাবিশ্বের বুকে এক অতিক্ষুদ্র মানব যার প্রাণ সময়ের পরিক্রমায় ক্ষণস্থায়ী রক্তমাংসের দেহে আবদ্ধ, একদিন পার্থিব সময় ফুরোলে পারি দিবো অনন্তকালে।

আরোগ্য

পৃথিবী আজ তার বার্ধক্যে এসে পড়েছে, শৈশব পেরিয়ে যৌবন ও সে হারিয়েছে, তাই বৃথা আনন্দ করো না, ক্ষণিকের সময় হাতে, নশ্বর এ পৃথিবী যেন মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে। সে মৃত্যু আসার আগে আজ তীর্থে ভ্রমণ করো, পবিত্র জলে হে পৃথিবী তুমি অবগাহন করো, ধুয়ে ফেলো তোমার গায়ের শত কালিমা, সাজিয়ে নাও বিদায়ের আগে আবার আঙিনা।

আরোগ্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলামে নারীর মর্যাদা (পর্ব ৭)

১৫ ই অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১২:০০

সম্পদ:



ইসলাম ধর্ম নারীর সর্বোচ্চ মর্যাদা নিশ্চিত করেছে তার অন্যতম প্রমাণ পাওয়া যায় নারীর সম্পদের অধিকার থেকে। প্রতিটি সম্পর্কে নারীর অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিধান প্রদান করা হয়েছে। নারীর উপর শরীয়ত কারো ভরণপোষণের দায়ভার অর্পণ করে নি তদ্রূপ নারীর উপর শরীয়ত অর্থ উপার্জনের দায়িত্ব চাপিয়ে দেয় নি। অপরপক্ষে নারীর অর্থনৈতিক নিরাপত্তার দায়িত্ব শরীয়ত তার পুরুষ অভিভাবকের উপর ন্যস্ত করেছেন কিন্তু সেই সাথে নারীকে সম্পদের অধিকারও প্রদান করেছে আবার সেই সম্পদ নারীর ইচ্ছা মাফিক খরচ করার স্বাধীনতাও রয়েছে। অথচ ইতিহাস ও বিভিন্ন সংস্কৃতি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, নারীকে কদাচিৎ উত্তরাধিকার হিসেবে গণ্য করা হত, কিছু ক্ষেত্রে সম্পদ লাভ করলেও বিয়ের পর সেই সম্পদের মালিকানা স্বামী লাভ করতো এবং তালাক হলে কিংবা স্বামী মারা গেলে তাদের কোন সম্পদ দেয়া হতো না। ইংরেজি প্রচলিত আইন ব্যবস্থায়, বিবাহিত মহিলাদের সম্পত্তি, মজুরি সবই স্বামীর কর্তৃত্বের অধিকারে চলে যায়। ১৮৪৮ সালে নিউইয়র্ক রাজ্য বিবাহিত নারী সম্পত্তি আইন পাস করে। ("The New York State Married Women's Property Law") ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক নারীদের সম্পদ লাভের কয়েকটি ক্ষেত্র রয়েছে তা কোরআন হাদিসের আলোকে সুস্পষ্ট তুলে ধরা হলো -

উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পদ
ইসলামি শরীয়তে একজন অবিবাহিত নারীর সকল ব্যয়ভার বহনের দায়িত্ব তার পরিবারের পুরুষের। বাবা কিংবা ভাই, তাদের অবর্তমানে দাদা চাচা মামা নানা কিংবা কোন মাহরাম আত্মীয়ের। নারীর ভরণপোষণ করাকে শরীয়তে অনেক ফজীলত হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। নবী (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি দুজন বা তিনজন কন্যার ভরণ-পোষণ করে কিংবা দুটি বোন বা তিনটি বোনের ভরণ-পোষণ করে এবং এ অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বা তারা তার নিকট থেকে আলাদা হয় তো আমি ও সে এভাবে জান্নাতে থাকব। এ কথা বলে শাহাদত ও মধ্যমাকে একত্র করলেন। (ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৪৪৮)
ভরণপোষণের খরচ ব্যতিতও শরীয়ত নারীকে মৃত আত্মীয়ের সম্পদের ওয়ারিশ করেছেন। আত্মীয় স্বজনদের মৃত্যুর পর তাদের রেখে যাওয়া সম্পদের মধ্যে আল্লাহর নির্ধারিত বিচার মোতাবেক ওয়ারিশগণের যে ভাগ রয়েছে তাকে মিরাস বলা হয়। এ বিভাজনে ভিন্ন ভিন্ন সম্পর্কের উত্তরাধিকারগণ ভিন্ন ভিন্ন অনুপাতে সম্পদের ভাগিদার হয়। এক্ষেত্রে আল্লাহর হেকমত অনুযায়ী নারীকে কখনো অর্ধেক, কখনো সমান বা কখনো অধিক পরিমাণ মিরাসের অধিকারী করা হয়েছে। যেমন নারী যখন মা তার অনুপাত হবে একরকম, যখন বোন তখন এক রকম, কন্যা হিসেবে এক রকম আবার স্ত্রী হিসেবে এক রকম। এক্ষেত্রে নারীকে একচেটিয়া ভাবে কম দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করা এক ধরনের অজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ। সুরা নিসাতে মিরাস সংক্রান্ত আয়াত গুলো থেকে যথাযথ দলিল পাওয়া যায়।
"পুরুষদের জন্য মাতা পিতা ও নিকটাত্মীয়রা যা রেখে গিয়েছে তা থেকে একটি অংশ রয়েছে। আর নারীদের জন্য রয়েছে মাতা পিতা ও নিকটাত্মীয়রা যা রেখে গিয়েছে তা থেকে একটি অংশ- তা থেকে কম হোক বা বেশি হোক- নির্ধারিত হারে। (সুরা নিসা :৭)
"আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের সন্তানদের সম্পর্কে নির্দেশ দিচ্ছেন, এক ছেলের জন্য দুই মেয়ের অংশের সমপরিমাণ। তবে যদি তারা দুইয়ের অধিক মেয়ে হয়, তাহলে তাদের জন্য হবে, যা সে রেখে গেছে তার তিন ভাগের দুই ভাগ; আর যদি একজন মেয়ে হয় তখন তার জন্য অর্ধেক। আর তার মাতা পিতা উভয়ের প্রত্যেকের জন্য ছয় ভাগের এক ভাগ সে যা রেখে গেছে তা থেকে, যদি তার সন্তান থাকে। আর যদি তার সন্তান না থাকে এবং তার ওয়ারিছ হয় তার মাতা পিতা তখন তার মাতার জন্য তিন ভাগের এক ভাগ। আর যদি তার ভাই-বোন থাকে তবে তার মায়ের জন্য ছয় ভাগের এক ভাগ। অসিয়ত পালনের পর, যা দ্বারা সে অসিয়ত করেছে অথবা ঋণ পরিশোধের পর। তোমাদের মাতা পিতা ও তোমাদের সন্তান-সন্ততিদের মধ্য থেকে তোমাদের উপকারে কে অধিক নিকটবর্তী তা তোমরা জান না। আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। (সুরা নিসা:১১)
...... আর যদি মা বাবা এবং সন্তান-সন্ততি নাই এমন কোন পুরুষ বা মহিলা মারা যায় এবং তার থাকে এক ভাই অথবা এক বোন, তখন তাদের প্রত্যেকের জন্য ছয় ভাগের একভাগ। আর যদি তারা এর থেকে অধিক হয় তবে তারা সবাই তিন ভাগের এক ভাগের মধ্যে সমঅংশীদার হবে, যে অসিয়ত করা হয়েছে তা পালনের পর অথবা ঋণ পরিশোধের পর। কারো কোন ক্ষতি না করে। আল্লাহর পক্ষ থেকে অসিয়তস্বরূপ। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সহনশীল। "(সুরা নিসা : ১২)

বৈবাহিক বন্ধনের মাধ্যমে প্রাপ্ত সম্পদ
যেখানে বিভিন্ন ধর্ম ও সংস্কৃতিতে নারীকে বিবাহের জন্য পাত্রপক্ষকে যৌতুক প্রদান করতে হয় সেখানে ইসলাম এমন এক জীবন ব্যবস্থা যেখানে একজন নারীকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার অন্যতম একটি শর্ত হচ্ছে নারীর জন্য পাত্রপক্ষ হতে মোহর নিশ্চিত করা, যা উভয়পক্ষের বিবেচনা সাপেক্ষে নির্ধারণ করা হয়। এই মোহর স্থাবর অস্থাবর যে কোন কিছু হতে পারে এবং সেই সম্পদের উপর নারীর একচ্ছত্র মালিকানা থাকে। মোহর প্রদান করা স্বামীর জন্য ফরজ, জীবদ্দশায় যদি তা পরিশোধ না করে তবে তা মৃত্যুর পর ঋণ হিসেবে গণ্য করে পরিশোধ করা মৃতের উত্তরাধিকারের উপর দায়িত্ব।
"আর তোমরা নারীদেরকে সন্তুষ্টচিত্তে তাদের মোহর দিয়ে দাও, অতঃপর যদি তারা তোমাদের জন্য তা থেকে খুশি হয়ে কিছু ছাড় দেয়, তাহলে তোমরা তা সানন্দে তৃপ্তিসহকারে খাও।"(সুরা নিসা :৪)
মোহর প্রদান ব্যতিতও একজন নারীর সকল প্রকার ব্যয়ভার বহন করা তার স্বামীর দায়িত্ব, যেমনটি বিবাহের পূর্বে তার অভিভাবকের দায়িত্ব ছিলো। স্ত্রীদের ব্যাপারে আল্লাহর রাসুল (সা.) হাদিস শরিফে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছেন। পুরুষদের নির্দেশ দিয়ে এক হাদিসে তিনি বলেছেন, ‘তুমি যখন খাবে, তাকেও খাওয়াবে এবং তুমি যখন পরবে, তাকেও পরাবে। চেহারায় কখনো প্রহার করবে না, অসদাচরণ করবে না।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ২১৪২; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১৮৫০১)
এছাড়া যদি স্বামী তার স্ত্রীকে কোন উপহার এবং কিছু হাত খরচ প্রদান করে তাতেও স্ত্রীর একচ্ছত্র মালিকানা রয়েছে। সেসব সামগ্রী ও অর্থ স্ত্রী নিজের ইচ্ছামত খরচ করার জন্য কোন কৈফিয়ত দিতে বাধ্য নন। এতদ্ব্যতিত বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলে ইদ্দতকালীন অবস্থায় স্ত্রীর ভরনপোষণের ন্যায়সঙ্গত ব্যয়ভার বহন করা স্বামীর দায়িত্ব। এমনকি সন্তানের সকল প্রকার দায়িত্ব পিতার উপর, তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী নিজ সন্তানকে দুধ পান করালে সেই সময় পর্যন্ত মায়ের ব্যয়ভার সন্তানের পিতার উপর ন্যস্ত করা হয়েছে।
"আর তালাকপ্রাপ্তা নারীদের জন্য থাকবে বিধি মোতাবেক ভরণ-পোষণ। (এটি) মুত্তাকীদের উপর আবশ্যক।" ( সুরা বাকারা:২৪১)
"তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী যেখানে তোমরা বসবাস কর সেখানে তাদেরকেও বাস করতে দাও, তাদেরকে সঙ্কটে ফেলার জন্য কষ্ট দিয়ো না। আর তারা গর্ভবতী হলে তাদের সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত তাদের জন্য তোমরা ব্যয় কর; আর তারা তোমাদের জন্য সন্তানকে দুধ পান করালে তাদের পাওনা তাদেরকে দিয়ে দাও এবং (সন্তানের কল্যাণের জন্য) সংগতভাবে তোমাদের মাঝে পরস্পর পরামর্শ কর। আর যদি তোমরা পরস্পর কঠোর হও তবে পিতার পক্ষে অন্য কোন নারী দুধপান করাবে।" (সুরা তালাক :৬)
আর যেসব নারীদের স্বামী মারা যায় তাদের জন্যও স্বামীর সম্পদের উপর শরীয়ত মোতাবেক অধিকার রয়েছে যাতে নারী অর্থনৈতিকভাবে অনিশ্চয়তায় না ভুগে।
"আর তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীগণ যা রেখে গেছে তার অর্ধেক, যদি তাদের কোন সন্তান না থাকে। আর যদি তাদের সন্তান থাকে, তবে তারা যা রেখে গেছে তা থেকে তোমাদের জন্য চার ভাগের এক ভাগ। তারা যে অসিয়ত করে গেছে তা পালনের পর অথবা ঋণ পরিশোধের পর। আর স্ত্রীদের জন্য তোমরা যা রেখে গিয়েছ তা থেকে চার ভাগের একভাগ, যদি তোমাদের কোন সন্তান না থাকে। আর যদি তোমাদের সন্তান থাকে তাহলে তাদের জন্য আট ভাগের এক ভাগ, তোমরা যা রেখে গিয়েছে তা থেকে। তোমরা যে অসিয়ত করেছ তা পালন অথবা ঋণ পরিশোধের পর।" (সুরা নিসা :১২)
এছাড়াও শরীয়তে বিধবা নারীর খোরপোষ জোগাতে উৎসাহ দেয়া হয়েছে।
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, ‘বিধবা ও মিসকিনের জন্য খাদ্য জোগাড়ে চেষ্টারত ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারীর মতো, অথবা রাতে নামাজে দণ্ডায়মান ও দিনে রোজা রাখার মতো।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৩৫৩)

নিজস্ব উদ্যোগে প্রাপ্ত সম্পদ
ইসলামী শরীয়তে নারীর উপর উপার্জনের দায়িত্ব না থাকলেও নারীর নিজ উদ্যোগে উপার্জন করাকে হারাম করা হয়নি বরং ক্ষেত্রবিশেষে নারীর গৃহের বাইরে কাজকে সম্মানিত করা হয়েছে। আল কোরআনে ও হাদিসে এমন কতিপয় নারীর কর্মের উল্লেখ রয়েছে যারা গৃহের বাইরে কাজ করতেন সেই ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণ করলে গৃহের বাইরে নারীর কাজের নিয়মগুলো ভালোভাবে বুঝা যায়। নিম্নে নারীদের নিজস্ব উদ্যোগে সম্পদ অর্জনের ক্ষেত্রগুলো উদাহরণসহ তুলে ধরা হলো :

# নারীদের পরিবেশে বা নারীদের কল্যানে কাজ করা :
"আর আমি তার জন্য পূর্ব থেকেই ধাত্রী (স্তন্য পান) নিষিদ্ধ করে দিয়েছিলাম। তারপর মূসার বোন এসে বলল, ‘আমি কি তোমাদেরকে এমন একটি পরিবারের সন্ধান দেব, যারা এ শিশুটিকে তোমাদের পক্ষে লালন পালন করবে এবং তারা তার শুভাকাঙ্ক্ষী হবে’। (সুরা কাসাস:১২)
এ ঘটনা থেকে বুঝা যায়, যে সকল কাজ কেবল নারীরাই করতে পারবে, নারী ব্যতিত তা সম্পাদন সম্ভব নয় এবং সেগুলো নারীদের পরিবেশে হয়ে থাকে সেসকল কাজে যোগদান করাতে কোন বাধা নেই বরং এতে কল্যাণ রয়েছে।

# পরিবারে কর্মক্ষম/দায়িত্বশীল পুরুষ না থাকা
"আর যখন সে মাদইয়ানের পানির নিকট উপনীত হল, তখন সেখানে একদল লোককে পেল, যারা (পশুদের) পানি পান করাচ্ছে এবং তাদের ছাড়া দু’জন নারীকে পেল, যারা তাদের পশুগুলোকে আগলে রাখছে। সে বলল, ‘তোমাদের ব্যাপার কী’? তারা বলল, ‘আমরা (আমাদের পশুগুলোর) পানি পান করাতে পারি না। যতক্ষণ না রাখালরা তাদের (পশুগুলো) নিয়ে সরে যায়। আর আমাদের পিতা অতিবৃদ্ধ’। (সুরা কাসাস :২৩)
হাদীছে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ)-এর স্ত্রী নিজে ঘরে বসে শিল্পকর্ম করতেন এবং তা বিক্রি করে ঘর-সংসারের খরচ চালাতেন। একদিন তিনি নবী কারীম (ছাঃ)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললেন, আমি একজন কারিগর মহিলা। আমি হাতে তৈরি করা দ্রব্যাদি বিক্রি করি। এছাড়া আমার ও আমার স্বামীর এবং সন্তানদের জীবিকার অন্য কোন উপায় নেই। রাসূলে কারীম (ছাঃ) বললেন, এভাবে উপার্জন করে তুমি তোমার সংসারের প্রয়োজন পূরণ করছো। এতে তুমি বিরাট ছওয়াবের অধিকারী হবে। (মুসনাদে আহমদ হা/১৬১৩০, ১৬০৮৬)
এ ঘটনা দুটি থেকে বুঝা যায়, পরিবারের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুরুষের যদি বাইরে কাজ করার মত শক্তি সামর্থ্য না থাকে তবে নারীকে বাধ্য হয়ে বাইরে কাজে যেতে হয় এবং সেক্ষেত্রে নারী পুরুষের অবাধ মেলামেশা পরিহার করে চলতে হবে এবং নারীর এরূপ দায়িত্ব পালনকে ইসলাম সম্মানের দৃষ্টিতে দেখে।

# অবসর সময়ে উপার্জনের ব্যবস্থা করা
আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেছেন যে রাসুলুল্লাহ (সা.) একবার বললেন, ‘তোমাদের মধ্যে যার হাত সবচেয়ে বেশি দীর্ঘ, সবার আগে সে আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে।’ আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুলের কথা শুনে আমরা একে অপরের হাত মেপে দেখলাম, কার হাত সবচেয়ে লম্বা! প্রকৃত অর্থে জয়নবের হাত দীর্ঘ ছিল। কারণ, হাতের দৈর্ঘ্য বলতে রাসুলুল্লাহ (সা.) দানশীলতা ও উদারতা বুঝিয়েছেন। জয়নব নিজ হাতে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করে সদকা করতেন।’ (মুসলিম, হাদিস: ২,৪৫২)
এ ঘটনা থেকে বুঝা যায়, নারীরা তাদের উপর অর্পিত সমস্ত দায়িত্ব যথাযথ পালনের পর স্বামীর অনুমতিক্রমে শরীয়তসম্মত উপায়ে সম্পদ অর্জনের জন্য কাজ করতে পারে এবং স্বেচ্ছায় খরচ করার পূর্ণ স্বাধীনতা রাখে।

# হালাল ব্যবসায় বিনিয়োগ করা
"যারা সুদ খায়, তারা তার ন্যায় (কবর থেকে) উঠবে, যাকে শয়তান স্পর্শ করে পাগল বানিয়ে দেয়। এটা এ জন্য যে, তারা বলে, বিক্রয় সুদের মতই। অথচ আল্লাহ বিক্রয়কে হালাল করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতএব, যার কাছে তার রবের পক্ষ থেকে উপদেশ আসার পর সে বিরত হল, যা গত হয়েছে তা তার জন্যই ইচ্ছাধীন। আর তার ব্যাপারটি আল্লাহর হাওলায়। আর যারা ফিরে গেল, তারা আগুনের অধিবাসী। তারা সেখানে স্থায়ী হবে।" ( সুরা বাকারা:২৭৫)
এ আয়াত থেকে বুঝা যায়, আল্লাহ তায়ালা নারী পুরুষ উভয়ের জন্য ব্যবসাকে হালাল এবং সুদকে হারাম ঘোষণা করেছেন। নারীরা অনেক সময় তার জমাকৃত পূঁজি বা প্রাপ্ত সম্পদ বৃদ্ধির আশায় সুদের পথ বেছে নেয় অথচ আল্লাহ তা হারাম করেছেন। অপরপক্ষে নারীরা শরীয়তসম্মত উপায়ে ব্যবসায় বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারে। ইসলামের প্রাথমিক যুগে নারীরা নিজ হাতে তৈরি পণ্য দ্বারা বাজারে সরাসরি বিক্রয় করতো। কিন্তু যেহেতু এখন ইসলামি শাসন ব্যবস্থা বিরাজমান নেই তাই পর্দা ও নিরাপত্তার স্বার্থে কেবল নারীদের পরিবেশে বিক্রি কিংবা প্রত্যক্ষভাবে না হলেও পরোক্ষভাবে ভাবে ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে পারে। তৎকালীন আরবে খুব প্রসিদ্ধ ছিল মুদারাবা ব্যবসা, যেখানে একজন কেবল পূঁজি বিনিয়োগ করে এবং অপরজন শ্রম ও মেধা দিয়ে ব্যবসায় পরিচালনা করে এবং লাভ ক্ষতি নিজেদের মাঝে ভাগ করে নেয়। এক্ষেত্রে ক্ষতি হলে পূঁজি বিনিয়োগকারীর অর্থগত ক্ষতি হয় এবং অপরজনের মেধা/শ্রমের ক্ষতি হিসাবে ধরা হয়। বর্তমানে সমাজেও মুমিন পর্দাশীল নারীরা বিশ্বস্ত মাহরাম পুরুষের মাধ্যমে সহজেই এমন ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে পারেন। এভাবে বেকারত্ব হ্রাসেও তারা ভূমিকা পালন করতে পারে।

প্রিয় দ্বীনি বোন, ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখতে পাবেন পাশ্চাত্যের ধ্বজাধারী মানুষেরা পদে পদে নারীর অধিকার ক্ষুন্ন করেছে। নারীর সম্পদের অধিকার তো বহুদূরের কথা বরং নারীকেই তার স্বামী সম্পদ মনে করতো। অথচ ইসলাম আপনাকে হাজার বছর পূর্বেই সম্পদের অধিকার দান করেছে। সম্পদ অর্জনের ক্ষেত্রে পুরুষের যেমন কিছু বিধিনিষেধ আছে তেমনি আপনারও আছে। আপনার সার্বিক নিরাপত্তা ও কল্যাণের স্বার্থে ইসলামের বিধানসমূহ আপনার মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে।
প্রিয় দ্বীনি ভাই, আপনার পরিবারের নারীদের ভরণপোষণ ও সম্পদের অধিকার নিশ্চিত করা আপনার কর্তব্য। ফেতনার এই যুগে বাইরের পরিবেশ তাদের কর্মসংস্থানের জন্য কতটা নিরাপদ ও অনুকূলে তা নিশ্চিত করাও আপনার দায়িত্ব। একজন দায়িত্ববান পুরুষের নিকট তার পরিবারের নারীদের জীবন জীবিকা মান সম্মান আমানতস্বরূপ।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৩:২৭

জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:



১৯৭২ সাল থেকে আজ অবধি দেশের ৪ কোটী কিশোরীকে চাকরাণী ও ঝি বানানো হয়েছে; ইহা ইসলামের অংশ? ইসলাম এই মর্যদা দিয়েছে? ওদের জন্য বড়মিয়া এই রিজিকের বয়বস্হা করেছে? বড়মিয়া কি ভিক্ষুক?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.