![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আত্মহত্যা! ধর্মীয় এবং সামাজিক উপাখ্যান
আত্মহত্যা! ধর্মীয় এবং সামাজিক উপাখ্যান ‘আত্মহত্যা’ আমাদের সামাজিক এবং ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে এটি মারাত্মক রকমের গর্হিত অপরাদদ। আত্মহত্যা! ধর্মীয় এবং সামাজিক উপাখ্যান আপনার কোনো অধিকার নেই স্রস্টাপ্রদত্ত এই সুন্দর জীবন আত্মহত্যা করে নিজ হাতে ধ্বংস করার। আত্মহত্যা! ধর্মীয় এবং সামাজিক উপাখ্যান কেনইবা করবেন?? আপনার এ জীবনে সুখ থাকবে দুঃখ থাকবে কষ্ট থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এসব না থাকলে জীবনের স্বার্থকতা কোথায়? একবারও কি এসব কখনো ভেবেছেন। একটু ভাবলেই বুঝবেন এসব না থাকলে আপনি তো জীব না আপনি হলেন নির্জীব রোবট!
কারন এসবই আপনার জীবনের পরিচয় বাহক। এসব নেই তো আপনার জীবন নেই। তাই নিজ হাতে নিজের জীবন শেষ করার আগে এসব কথা একটু খেয়াল রাখবেন।
আসুন সামাজিকতায়, এটা সত্যি যে আমাদের সমাজে ধর্মের নামে অধর্ম ই চলে বেশি। আমাদের সমাজ এতই ধর্মভীরু যে আমাদের সমাজে একজন ধর্ষককে সামাজিক মতে কবরস্থ করা হয়। কিন্তু ঠিক বৈপরীত্যে প্রদর্শন করা হয় আত্মহত্যাকারীর দাফনের বেলায়। আমাদের সমাজ এই লাশ দাফন করতে খুবই মনগড়া ব্যাখা প্রদর্শন করে। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় সামাজিক জীবরা কবরস্থানে দাফন পর্যন্ত করতে দিতে চায় না! হুজুরেরা জানাজা পড়াতে চায় না! এটা কি নির্মমতা নয়? এটা চরম নির্মমতা এবং সেই সাথে ইসলামের আইনের বিরোধিতা ও বটে।
এক্ষেত্রে মনে পড়ে গেল রাজাবাজারের এক ছেলের আত্মহত্যার পর সমাজবানিজ্যের কথা। তার লাশের জানাজা আর দাফনের নাটক। শেষে অভিজ্ঞ এক মুফতি এসে সমাধান করেন এই সমস্যা। তিনি এটা নিয়ে জুমার দিনে আলোচনা ও করেছিলেন।
কিন্তু এর জন্য ইসলামের বিধান কি:
ইসলামের বিধান হলো আত্মহত্যা কারী ব্যাক্তিকে একজন স্বাভাবিক মৃত্যুবরন কারী হতে একটু কম সম্মানিত অবস্থায় দাফন করতে বলা হয়েছে।
যেমন খাটিয়াটা একটু নিচে ধরা, জানাযায় কম লোক শরীক হওয়া, ইমামের বদলে মুয়াজ্জিন বা তদ্রূপ লোককে দিয়ে জানাজা পড়ানো।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো আমাদের সমাজে অনেকে মনে করেন কেউ আত্মহত্যা করলে তার বুঝি জানাযা পড়া যাবে না।
এ ব্যাপারে প্রখ্যাত হাদীস ব্যাখ্যাতা ইমাম নাববী রহ. বলেন,
‘এ হাদীসকে তাঁরা প্রমাণ হিসেবে পেশ করেন, মানুষকে সতর্ক করার জন্য যারা আত্মহত্যাকারীর জানাযা পড়া হবে না বলে মত দেন। এটি উমর বিন আব্দুল আযীয ও আওযাঈ রহ.-এর মত। তবে হাসান বছরী, ইবরাহীম নখঈ, কাতাদা, মালেক, আবূ হানীফা, শাফেঈ ও সকল আলিমের মতামত হলো, তার জানাযা পড়া হবে। উপরোক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় তাঁরা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মূলত অন্যদেরকে এ ধরনের মন্দ কাজ থেকে সতর্ক করার জন্যই আত্মহত্যাকারীর জানাযা পড়ানো থেকে বিরত থেকেছেন। আর সাহাবীগণ তাঁর স্থলে এমন ব্যক্তির জানাযা পড়েছেন। [নাববী, শারহু মুসলিম : ৭/৪৭]
এ সূত্র ধরেই আমাদের সমাজে উচ্চ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন আলেমের স্থলে অনেক ক্ষেত্রে সাধারণ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন আলেম দ্বারা আত্মহত্যাকারীর জানাযার সালাত পড়ানো হয়।
এবার আসুন ইসলামের কেন এই বিধান:
এ বিধান এ জন্যই করা হয়েছে যাতে সবাই আত্মহত্যার প্রতি নিরুৎসাহিত হয়।
তাই এটা যথার্থ বিধান কারন আত্মহত্যা কোনো সমাধান নয় তাই এটা করতে নিরুৎসাহিত করার জন্য এটুকু বিধান যথার্থ ও যুক্তিসংগত।
কিন্তু কোথাও এটা লেখা নেই যে লাশ দাফন করা যাবে না, জানাজা পড়া যাবে না। এসব সবই মানুষের মনগড়া আইন।
তাই এসব তথাকথিত বিভ্রান্তিকর আইন পালন করা থেকে বিরত থাকুন। সে আত্মহত্যা করছে সে তার কর্মফল ভোগ করবে।
অন্যান্য ধর্ম আত্মহত্যার বিষয়ে কি বলে:
শুধু ইসলাম নয় কোনো ধর্মই আত্মহত্যাকে সমর্থন দেয় না।
ইহুদিদের ধর্মমতে আত্মহত্যা একটি জঘন্য ধরনের পাপ। এটি এমন একটি কাজ যা মানবজীবন যে স্বর্গীয় দান তা অস্বীকার করে এবং মনে করা হয় এটি সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত জীবনকালকে সংক্ষিপ্ত করার জন্য তার মুখমণ্ডলে চপেটাঘাত।
খ্রিষ্টানদের বাইবেল আত্মহত্যা নিষিদ্ধ বিষয়ে স্পষ্টভাবে কোনো কিছু বলা না হলেও রোমান ক্যাথলিক চার্চের ধর্মতত্ত্ব মতে, আত্মহত্যা নিরপেক্ষভাবে একটি পাপ যা নিজেকে হত্যা না করার নৈতিক আদেশের লঙ্ঘন।
বৌদ্ধদের ধর্মমতে আত্মহত্যাকে নেতিবাচক কাজ গণ্যে জীবননাশ হতে নিজেকে বিরত রাখতে বলা হয়েছে।
হিন্দু ধর্মমতে পরজন্মে বিশ্বাস করা হয় এ মতে আধ্যাত্মিকভাবে আত্মহত্যা অগ্রহণযোগ্য। সাধারণভাবে ধর্মটিতে আত্মহত্যাকে অহিংস আচরণের লঙ্ঘন বিবেচনা করা হয় এবং সে কারণে আত্মহত্যাকে অপরকে হত্যা করার মতো সমধরনের পাপ বিবেচনা করা হয়। তাদের কিছু ধর্মশাস্ত্রে আত্মহত্যার মাধ্যমে মৃত্যুর পরিণতি হলো দানবরূপে আবির্ভাব।
আমার লেখাগুলো পড়তে ভিজিট করুন: অন্যবাংলা ব্লগ
©somewhere in net ltd.