নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"মোমের পুতুল মমীর দেশের মেয়ে নেচে যায়
বিহবল চঞ্চল পায়।" অথবা " প্রজাপতি , প্রজাপতি, কোথায় পেলে ভাই এমন রঙ্গিন পাখা" - নজরুলের এই গান গুলোর কি যে যাদু! এক নিমিষেই সেই ছোট্ট বেলায় ফিরিয়ে নিয়ে যায় । তারপর 'খুকি ও কাঠ বিড়ালি' এবং 'লিচু চোর' কে না আবৃত্তি করেছে ছোট বেলায়! আবৃত্তি সুনিপুণ হোক বা না হোক , বাঙ্গালীর ছেলেবেলা এ ছড়া বিহীন কল্পনাই করা যায় না।কাজী নজরুল ইসলাম ছোটদের প্রজাপতি গান থেকে শুরু করে প্রেমের,দ্রোহের, সাম্যের ও জাগরণের গান করেছেন। কখনো হামদ-নাথ গেয়েছেন কখনোবা শ্যামা সংগীত । উন্মুক্ত হয়ে ছড়িয়ে দিয়েছেন নিজের মনস্তাত্ত্বিক অস্তিত্বকে সবখানে। বিস্মিত হয়েছেন সৃষ্টির লীলা-খেলায়। শূন্য থেকে মহাশূন্যে পরিভ্রমণ করেছে চিন্তাবিলাসী নজরুলের মন ।গেয়েছেন'খেলিছ এ বিশ্ব লয়ে বিরাট শিশু আনমনে।প্রলয় সৃষ্টি তব পুতুল খেলা নিরজনে প্রভু নিরজনে।' মানব জীবনের সব ধরনের অনুভূতিকেই শব্দে গেঁথেছেন, তাই তাকে শুধু একটি বিশেষণে বর্ণনা করা যায় না। তিনি শুধু দ্রোহের কবি নন, তিনি শিশুকিশোরদের কবি , প্রেমের কবি, সাম্যের কবি, আধ্যাত্মিক কবি , সর্বোপরি মানবতার কবি।
একবার নজরুল তার এক হিন্দু বন্ধুর বিয়েতে গিয়েছেন। তখন মেয়ের পক্ষ আপত্তি তুলল যে তারা সেখানে আর থাকতে পারবে না, কারণ একজন মুসলিমের ছেলের সঙ্গে একসাথে বসে খাবার খেতে তাদের আপত্তি । নজরুল ইসলাম খুবই মন:ক্ষুণ্ণ হয়ে বিনা শব্দে চলে গেলেন সেখান থেকে এবং কিছুক্ষণ পরে আবার ফিরে এলেন একটুকরো কাগজ হাতে নিয়ে। সেখানেই লেখা ছিল বিখ্যাত সেই কবিতাটিঃ
" জাতের নামে বজ্জাতি সব জাত-জালিয়াৎ খেলছ জুয়া,
ছুঁলেই তোর জাত যাবে? জাত ছেলের হাতের নয়তো মোয়া।
হুঁকোর জল আর ভাতের হাঁড়ি – ভাব্লি এতেই জাতির জান,
তাইত বেকুব, করলি তোরা এক জাতিকে একশ’-খান।
এখন দেখিস ভারত জোড়া পঁচে আছিস বাসি মড়া,
মানুষ নাই আজ, আছে শুধু জাত-শেয়ালের হুক্কাহুয়া।
জাতের নামে বজ্জাতি সব জাত-জালিয়াৎ খেলছ জুয়া।
জানিস নাকি ধর্ম সে যে বর্ম সম সহন-শীল,
তাকে কি ভাই ভাঙ্তে পারে ছোঁয়া ছুঁয়ির ছোট্ট ঢিল!
যে জাত-ধর্ম ঠুন্কো এত, আজ নয় কা’ল ভাঙবে সে ত,
যাক্ না সে জাত জাহান্নামে, রইবে মানুষ, নাই পরোয়া।
জাতের নামে বজ্জাতি সব জাত-জালিয়াৎ খেলছ জুয়া।
বলতে পারিস, বিশ্ব-পিতা ভগবানের কোন সে জাত?
কোন্ ছেলের তার লাগলে ছোঁয়া অশুচি হন জগন্নাথ?
ভগবানের জাত যদি নাই তোদের কেন জাতের বালাই?
ছেলের মুখে থুথু দিয়ে মার মুখে দিস ধূপের ধোঁয়া।
জাতের নামে বজ্জাতি সব জাত-জালিয়াৎ খেলছ জুয়া।।"
কি অসাধারন যুক্তি মিশ্রিত প্রতিবাদ ছুড়ে দিয়েছেন এই বৈষম্যে বিস্তৃত সামাজিক অথবা ধর্মীয় চেতনায়! অসাধারন মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন প্রতিটি অক্ষরে অক্ষরে।সবার মাঝে মানবিক বোধটা জাগাতে তিনি সদা তৎপর ছিলেন।বর্তমান সময়ের কবিরা এরকমভাবে চিন্তা করলে তাদের শিরদাঁড়া ভেঙ্গে দেয়া হয়, কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, চিরতরে বিদায় নিতে হয়। অথচ নজরুলের সময় মানুষ বেশী কুসংস্কারচ্ছন এবং মৌলবাদের ঘেরাটোপে শিকলাবৃত্ত ছিল । তবুও তিনি আজও পরম শদ্ধেয় বিদ্রোহী কবি হিসেবে, বাংলাদেশের জাতীয় কবি হিসেবে। কেউ কেউ তো তাকে নিয়ে টানা হেঁচড়াও করে থাকেন। তবে তারা তার জীবন দর্শন না বুঝেই তাকে নিয়ে অসুস্থ রাজনীতি করেন। রবীন্দ্র-নজরুল প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠেন। আসলে কে উত্তম আর কে অধম- এই বলে বলে লম্ফ ঝম্ফই সাড় তাদের মাঝে । অথচ রবীন্দ্রনাথ এবং নজরুলের মাঝে গভীর স্নেহ আর শ্রদ্ধার সম্পর্ক ছিল। এরা আসলে কবিতা অথবা জীবন দর্শনের মাথা-মুণ্ডুও বোঝেন না, দলাদলি করে দল ভারী করার প্রয়াসেই এরকম করে থাকেন।
"গাহি সাম্যের গান–
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান ,
নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্মজাতি,
সব দেশে, সব কালে, ঘরে-ঘরে তিনি মানুষের
জ্ঞাতি ।"
নজরুলকে নিয়ে অনেক বৈষম্য তৈরি হয়েছে তার সময় থেকে আজঅব্দি । অনেক দ্বিধা অনেক দ্বন্দ্ব তাকে নিয়ে। কেউ ভাবে তিনি হিন্দুর কবি কেউ ভাবে মুসলিমের কবি।কারন তিনি অসাধারন হামদ-নাথ করেছেন আবার শ্যামা সংগীতও করেছেন অবলীলায়। তবে তার লেখাতে বোঝা যায় তিনি আসলে মানুষের কবি, সাম্যের কবি।তিনি সর্বদা সাম্যের কথা বলেছেন। যারা এই বৈষম্য তৈরি করেন তারা আসলে নজরুলকে নিয়ে নিজেদের পরিচয় গড়তে চান অসাধু মতলব নিয়ে।তাদের কিচ্ছু যায় আসে না নজরুলের কবিতা ও জীবন দর্শন দিয়ে।
তিনি গান কবিতায়ই সীমাবদ্ধ নন, তার জীবন দর্শন, তার লড়াই তার নানান মুখি কাজ তাকে আজও আমাদের মাঝে বাঁচিয়ে রেখেছে। তার জীবন যন্ত্রণা, কারারুদ্ধ হওয়া, প্রেমে-বিরহ সব মিলিয়ে তিনি একজন বিশ্ব অনুভূতির ভাণ্ডার।তারুণ্য, উদ্যম আর ইতিবাচক শক্তির নাম কাজী নজরুল ইসলাম। তাইতো রবীন্দ্রনাথ তার বসন্ত গীতিনাট্য নজরুলকে উৎসর্গ করেছিলেন। নজরুল মানে প্রাণশক্তি , উদ্যম জীবনীশক্তি। নীচের কবিতাটি পড়লেই তার তারুণ্যমিশ্রিত উদ্যমকে চেনা যায়। ছেলে বুড়ো সকলেরই শরীরের রক্ত গলিত লাভায় পরিণত হয়ে টগবগ করে ওঠেঃ
" মোরা ঝঞ্ঝার মত উদ্দাম
মোরা ঝর্ণার মত চঞ্চল,
মোরা বিধাতার মত নির্ভয়
মোরা প্রকৃতির মত স্বচ্ছল।।
মোরা আকাশের মত বাঁধাহীন
মোরা মরু সঞ্চার বেদুঈন,
বন্ধনহীন জন্ম স্বাধীন
চিত্তমুক্ত শতদল।"
প্রতিটি শব্দে পজেটিভ এনার্জি, ইলেকট্রিক শক লেগে বাতি জ্বলে ওঠে প্রতিটি নিউরনে। কি উচ্ছলতা! নজরুলের ভিতর একটি ইতিবাচক শক্তি ছিল এবং তা তিনি ছড়িয়ে দিয়েছেন সবখানে।
জন্মসূত্রেই অসম্ভব প্রতিভা নিয়ে এসেছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। দুখু মিয়া থেকে কাজী নজরুল ইসলাম হয়ে ওঠা সহজ কথা নয় । দশ বছর বয়েসে বাবা মারা যাবার পরে পরিবারের দায় তার হাতে এসে পরেছে।রুটির দোকানে কাজ করে তিনি সংসার চালাতেন । তার কোনই সংস্কৃতিক ব্যগ্রাউন্ড ছিল না। কিন্তু অবাগ করে দিয়ে তিনি কোথা হতে কোথায় পৌঁছে গেছেন। তার হাজারের উপরে গান রচনা করা, সুর করা, নানান ভাষায় দক্ষতা বিস্মিত হবার মতই । অদম্য প্রতিভার অধিকারী না হলে এমনটি হয় না। তিনি সৃষ্টিকর্তার অপূর্ব এক সৃষ্টি।
দুর্গম গিরি কান্তার মরু দুস্তর পারাবার হে!
লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি নিশীথে, যাত্রীরা হুঁশিয়ার।।
দুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে জল, ভুলিতেছে মাঝি পথ-
ছিঁড়িয়াছে পাল কে ধরিবে হাল, কার আছে হিম্মত।
কে আছো জোয়ান, হও আগুয়ান, হাঁকিছে ভবিষ্যত,
এ তুফান ভারী, দিতে হবে পাড়ি, নিতে হবে তরী পার।।
তিমির রাত্রি, মাতৃ-মন্ত্রী সান্ত্রীরা সাবধান-
যুগ-যুগান্ত সঞ্চিত ব্যথা ঘোষিয়াছে অভিযান।
ফেনাইয়া ওঠে বঞ্চিত বুকে পুঞ্জিত অভিমান,
ইহাদেরে পথে নিতে হবে সাথে, দিতে হবে অধিকার।।
অসহায় জাতি মরিছে ডুবিয়া, জানে না সন্তরণ-
কান্ডারী, আজি দেখিব তোমার মাতৃ-মুক্তি-পণ।
হিন্দু না ওরা মুসলিম-ওই জিজ্ঞাসে কোন্ জন,
কান্ডারী, বল, ডুবিছে মানুষ সন্তান মোর মা’র।।
গিরি-সংকট, ভীরু যাত্রীরা, গরজায় গুরু বাজ-
পশ্চাৎ পথ যাত্রীর মনে সন্দেহ জাগে আজ।
কান্ডারী, তুমি ভুলিবে কি পথ? ত্যজিবে কি পথ মাঝ?
করে হানাহানি, তবু চল টানি’-নিয়েছ যে মহাভার।।
ফাঁসির মঞ্চে গেয়ে গেল যারা জীবনের জয়গান-
আসি’ অলক্ষ্যে দাঁড়ায়েছে তারা দিবে কোন বলিদান!
আজি পরীক্ষা জাতির অথবা জাতেরে করিবে ত্রাণ,
দুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে জল, কান্ডারী হুঁশিয়ার।।
এই গানটি শুনে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু বলেছেন যে আমি পুরো ভারত বর্ষ ঘুরেও এই রকম একটি গান শুনি নাই।এতবড় সম্মান তিনি অল্প বয়সেই কুড়িয়েছেন।
নজরুল প্রেমেরও কবি।অসম্ভব সুন্দর কিছু প্রেমের গান কবিতা তিনি দিয়ে গেছেন তার পাঠককে । প্রেম বিরহে ব্যথাতুর হৃদয়ে তিনি রচনা করে গেছেন বিখ্যাত কিছু কবিতা , গান ও প্রেমবানী। মোতাহার হোসেনের কাছে লেখা নজরুলের সেই বিখ্যাত চিঠিটি আজ পাঠকের মুখে মুখে। বেদনা মিশ্রিত সেই চিঠিটি পড়লে আজও পাঠকের চোখ ভিজে যায়। ফজিলাতুন্নিসারফজিলাতুন্নিসা প্রেমে ব্যর্থ হয়ে তিনি লিখেছেনঃ
" যেদিন আমি ঐ দূরের তারার দেশে চলে যাবো, সেদিন তাকে বলো, এই চিঠি দেখিয়ে, সে যেন দু’ফোটা অশ্রুর দর্পন দেয় শুধু আমার নামে। হয়তো আমি সেদিন খুশীতে উল্কা ফুল হয়ে তার নোটন খোঁপায় ঝড়ে পড়বো। তাকে বলো বন্ধু, তার কাছে আমার আর চাওয়ার কিছুই নেই। আমি পেয়েছি, তাকে পেয়েছি, আমার বুকের রক্তে, চোখের জলে। আমি তার উদ্দেশ্যে আমার শান্ত স্নিগ্ধ অন্তরের পরিপূর্ণ চিত্তের একটি সশ্রদ্ধ নমস্কার রেখে গেলাম। আমি যেন শুনতে পাই, সে আমারে সর্বান্তকরণে ক্ষমা করেছে। ফুলের কাঁটা ভুলে গিয়ে তার উর্ধ্বে ফুলের কথাই যেন সে মনে রাখে।"
মানব জীবন কখনো পূর্ণতা , কখনোবা অপূর্ণতার ভরাডুবির ভেতর দিয়েই চলে যায়। কবির জীবনও তার ব্যতিক্রম নয়। জীবনের নানান অনুভূতিকে শিল্পের কারুকার্য দিয়ে পরিবেশন করেছেন পাঠকের মাঝে। তার মৃত্যুর ৪২ বছর পরে আজও তার জীবন দর্শন, কবিতা, গান একই ভাবে প্রাসঙ্গিক।হয়তো প্রাসঙ্গিক থাকবে মানবকূল বিনাশের শেষঅব্দি। বাংলা সাহিত্যের একটি বিশেষ স্তম্ভ হয়ে নজরুল বেঁচে থাকবে আজীবন।তাকে অকারণ রবীন্দ্র নজরুল প্রতিযোগিতায় না নামিয়ে মনের বিশেষ স্থানে জায়গা করে দেয়াটাই প্রকৃত পাঠকের কাজ। বেঁচে থাক নজরুল প্রতি বাঙ্গালীর শিরায় শিরায় রন্ধ্রে রন্ধ্রে।
[ এতো অল্প কথায় নজরুলকে বর্ণনা করা যায় না, সময় অল্প তাই অল্পতেই শেষ করতে হলো আজ। তার মৃত্যুবার্ষিকীতে তাকে স্মরণ করেই এই সামান্য চেষ্টা। ]
নজরুলের লেখা চিঠি মোতাহার হোসেনকে
ছবিঃ সংগৃহীত।
২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:১৬
গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: হা হা হা, ব্যেলি ডান্স দেখে লিখতেই পারেন তাতে কি সমস্যা। তিনি কবি, তাকে নানান জিনিস আকৃষ্ট করবে এবং সেখান থেকে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে তার পাঠকের মনরঞ্জনা করাই তো তার কাজ। কেবল শ্যামা সংগীত লিখেই তিনি জাতীয় কবি হননি, শিল্প সাহিত্যে তার অবদান অপরিসীম, তাই জন্যই হয়েছেন।
ধন্যবাদ আপনাকে।
২| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:০৪
রাজীব নুর বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন।
আমার ইচ্ছা আছে কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে ১০০ পর্বের লেখা লিখব।
এর আগে আমি রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে ১০০ পর্বের ধারাবাহিক লিখেছি।
২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:১৭
গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। অবশ্যই লিখবেন, তাকে নিয়ে লেখা উচিৎ।
অপেক্ষায় রইলাম আপনার লেখা পড়বার জন্য।
৩| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:২৬
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: নজরুল ছিলেন চেতনার কবি সাম্যের কবি ।নিজ গুণে তিনি হয়ে ওঠেছিলেন অনন্য। তাইতো জাতীয় কবি। তাকে নিয়ে পিএইচডি হয় আরো কত কী!! ভালো লিখেছেন।
২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫২
গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।
৪| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:২৬
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আসলেই তাই
এত অল্পে কি সে বিশাল অধরাকে ধরা যায়! যায় না!
অতৃপ্তি লেগেই রয় মনের কোনে!
জাতীয় কবির প্রয়ান দিবসের স্মৃতি চারণে দারুন পোষ্টে অনেক অনেক ধন্যবাদ
আসলেই আমরা তাঁকে আজো বুঝতেই পারিনি।
তার কাব্যের কনাও যদি অনুভবে নিতে পারে কেউ সেওতো সেই মহা'র অংশ হয়ে যায়!
আমাদের না বোঝার আক্ষেপ কবি হৃদয় যেন আগেই অনুভব করে গেছেন
জীবদ্দশায়তো বুঝতে পারিইনি- আজো কি পেরেছি?
যেদিন আমি হারিয়ে যাব বুঝবে সেদিন বুঝবে
কাজী নজরুল ইসলাম
যেদিন আমি হারিয়ে যাব, বুঝবে সেদিন বুঝবে,
অস্তপারের সন্ধ্যাতারায় আমার খবর পুছবে-
বুঝবে সেদিন বুঝবে!
ছবি আমার বুকে বেঁধে
পাগল হ’লে কেঁদে কেঁদে
ফিরবে মর” কানন গিরি,
সাগর আকাশ বাতাস চিরি’
যেদিন আমায় খুঁজবে-
বুঝবে সেদিন বুঝবে!
স্বপন ভেঙে নিশুত্ রাতে জাগবে হঠাৎ চমকে,
কাহার যেন চেনা-ছোঁওয়ায় উঠবে ও-বুকে ছমকে,-
জাগবে হঠাৎ চমকে!
ভাববে বুঝি আমিই এসে
ব’সনু বুকের কোলটি ঘেঁষে,
ধরতে গিয়ে দেখবে যখন
শূন্য শয্যা! মিথ্যা স্বপন!
বেদ্নাতে চোখ বুঁজবে-
বুঝবে সেদিন বুজবে।
গাইতে ব’সে কন্ঠ ছিঁড়ে আস্বে যখন কান্না,
বলবে সবাই-“ সেই য পথিক তার শেখানো গান না?’’
আস্বে ভেঙে কান্না!
প’ড়বে মনে আমার সোহাগ,
কন্ঠে তোমার কাঁদবে বেহাগ!
প’ড়বে মনে অনেক ফাঁকি
অশ্র”-হারা কঠিন আঁখি
ঘন ঘন মুছবে-
বুঝ্বে সেদিন বুঝবে!
২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৩
গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: নজরুল এক বিশাল ভাণ্ডার, কোনটা রেখে কোনটা বলি। খুব ইচ্ছা ছিল একটি বিস্তর লেখা লিখবো তার সম্পর্কে। কিন্তু হয়েই উঠছে না। ছোট করে সামান্য কিছু বললাম তার এই মৃত্যু দিবসে।
চমৎকার একটি কবিতা তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন।
৫| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:৩২
অব্যক্ত কাব্য বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন।কাজী নজরুল ইসলামকে লেখার ইচ্ছে আছে। সময় করে লিখে নিবো
২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৪
গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: অবশ্যই লিখবেন।
অসংখ্য ধন্যবাদ রইলো মন্তব্যের জন্য।
৬| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:৫২
রাকু হাসান বলেছেন:
আমার যে কি ভাল লাগছে প্রিয় নজরুল ইসলাম কে নিয়ে পোস্ট পেয়ে বলে বা ভাষায় প্রকাশ করার মত না । লেখাটি খুব গোছালো ,পড়া সুখপাঠ্য হয়েছে । বেশ ক’দিনে নজরুল কে নিয়ে অনেককেই পোস্ট দিল ,লক্ষ্য করলাম ,ব্লগের বৃহৎ একটি গোষ্ঠী নজরুলের ভক্ত ।
নজরুল-রবীন্দ্রনাথ সম্পর্ক ছিল ,ভাই-ভাই,বন্ধু টু বন্ধুর মত । রবীন্দ্রনাথ যখন ‘বসন্ত’ নাটিকাটি উৎসর্গ করেছিলেন ,এবং কবির হাতে একটি বই যখন গেল ,তখন নজরুল নেচে গেয়ে উযযাপন করেছিলেন । এ থেকেই বুঝা যায় কেমন সম্পর্ক ছিল । অথচ লোকমুখে অনেক মিথ্যা ভিত্তিহীন কথা শুনতে পাই ,খারাপ লাগে ।
আপনি যথার্থ বলেছেন মানবতা কবি । নজরুল সকল দেশেরে সকল জাতির কবি । লেখাটিতে লাইক ও প্রিয় নিলাম প্রাণভরে ।
২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৯
গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: আপনার প্রোফাইলে ছবি দেখেই বোঝা যায় আপনি নজরুল প্রেমী। আসলেই নজরুল আর রবীন্দ্রনাথ ছিলেন ভাই ভাই বন্ধু বন্ধু সম্পর্ক, অথচ সুবিধাবাদীরা কি থেকে কি বানায়।
তার লেখায় মানবতার স্পষ্ট চিত্র রয়েছে , সে তো মানবতার কবিই। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য এবং প্রিয়তে রাখার জন্য। অনেক অনেক ভালো থাকবেন ।
৭| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১০
অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: প্রেমে ব্যর্থ হয়ে যে চিঠি, ভালো লাগছে পড়তে।
মোমের পুতুল এই গানটা ছোট বেলায় যখন শুনতাম, আমি আর আমার আপা দুজনেই নাচতাম। সম্ভবত বিটিভিতে কোন গানের সাথে এটার নাচও দেখেছিলাম। অনেক পুরনো কথা মনে পড়ে গেলো।
আপনি কি ব্লগে নিয়মিত ?
২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৬
গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: আমিও এই নাচটা ছোটবেলায় স্টেইজে পারফর্ম করেছি, প্রজাপতি, তারপর , ' লাল টুকটুকে বউ যায় লো লাল নটের খেতে...' এইসব নাচ করতে করতে বড় হয়েছি। এই গান গুলো শুনলেই ছোট বেলায় ফিরে যাই।
খুব একটা না, মাঝে মাঝে এসে দু একটা লেখা দিয়ে যাই। মাঝে মাঝে উত্তরও দেয়া হয় না। অনেকে হয়তো রাগও করে আমার উপর। কিন্তু কোন উপায় নেই বেশী সময় এখানে দিতে পারি না। এখানে বেশিক্ষণ থাকলে নেশা হয়ে যায়, তখন আর অন্য কাজ হয় না।
আপনার একটা লেখা দেখলাম, সময় করে পড়বো।
৮| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৯
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: সুন্দর পোস্ট।
নজরুল দ্রোহের কবি, সাম্যের কবি; সর্বোপরি আমাদের জাতীয় কবি, উনাকে নিয়ে বেশি বেশি আলোচনা হওয়া উচিত।
২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৯
গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: অনেক অনেক ভালো লাগা মন্তব্যে।
ভালো থাকুন সবসময়।
৯| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫০
কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: বাহহ,
প্রিয়তে নিতে এক সেকেন্ডও দেরি করিনি.................
২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২০
গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রিয়তে নেয়ার জন্য, মন্তব্যের জন্য এবং লাইকের জন্য।
অনেক অনেক অনেক অনেক ভালো থেকো।
১০| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১২
কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
ভাল লেগেছে আপনার লেখনিতে +++
২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২১
গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য এবং লাইকের জন্য। ভালো থাকবেন।
১১| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৪
মনিরা সুলতানা বলেছেন: চমৎকার ! অনেকদিন পর আপনার লেখা পড়লাম।
শুভ কামনা।
৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৫
গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার জন্যও রইল শুভকামনা।
১২| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:০৭
কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: তুমি ইদানিং নিয়মিতই লিখছো।
এ মাসেই দিলে পাঁচ পাঁচখান পোষ্ট!!
তবে মনিরা'পু ক্যান অন্নেএএএক দিন পরে তোমার লিখা পড়লেন ???
৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৮
গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: হা হা হা, সেইটা তাকেই জিজ্ঞাসো।
ও তাই ৫খানা লেখা দিয়েছি!! সে তো আমিও ভেবে দেখিনি।
১৩| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৯
কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: লেখক বলেছেন:
ও তাই ৫খানা লেখা দিয়েছি!! সে তো আমিও ভেবে দেখিনি।
দেখেছো তোমারে নিয়া
কত আমি ভাবি;
দিলিনে দিলেনে দাম
পাবি ফল পাবি।
:
:
:
:
:
হাতের কাছে সে পেলে
দেবেগো ডলাই;
আর থেকে কাম নেই
এ'বেলা পলাই।
©somewhere in net ltd.
১| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:০২
চাঁদগাজী বলেছেন:
উনি আরবী মেয়ের ভ্যালী-ডেন্স দেখে কবিতা লিখেছেন, উনি শ্যামা ট্যামা নিয়ে এত কিছু লিখে, শেষে আমাদের জাতীয় কবি হয়ে গেলেন?