নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সারা বিশ্ব জুড়ে লক ডাউন চলছে। সব ফ্লাইট বন্ধ। তাই অয়নের বাড়ি ফেরা হয়নি। কবে ফিরবে অনিশ্চিত ।এক মাসের বেশী হয়ে গেছে ওকে দেখি না।কবে দেখা হবে তাও জানি না। সিঙ্গেল পেরেন্টিং আসলেই অনেক কঠিন।
অয়নের সাথে আমার জীবন যখন এক সুতোয় গেঁথে গিয়েছিলো সে দিন ক্ষণের কথা ক্যলেন্ডারে দাগ কেটে রাখিনি। কারন প্রেমটা হয়েছিলো বিনা দর্শনে । তার সম্পর্কে গল্প শুনতে শুনতে আর ভাবতে ভাবতে কখন যে শুরু টেরই পাইনি। ওর সম্পর্কে শুনতে শুনতেই মনের মাঝে নিজের মত করে মূর্তি তৈরি , তারপর ভালবেসে ফেলা। সে দিন তারিখ মনে না থাকলেও সেটা ছিলো কোন এক বৃষ্টির দিনের কথা- এটুকু মনে আছে। একটি বীজ যেমন চোখের অগচরে মাটির ভিতর থেকে চারা হয়ে বেড়ে ওঠে, ঠিক সেরকমই এই সম্পর্কটিও ধীরে ধীরে চারা গাছ থেকে বৃক্ষে পরিনত আজ। এই বৃক্ষ হবার পেছনে যে কত ঝর বৃষ্টি গেছে, সে কথা না হয় নাই বললাম। প্রকৃতির নিজস্ব নিয়মে এ সম্পর্ক বেড়ে উঠেছে। সেখানে ঝর আছে, বৃষ্টি আছে, খরা আছে এবং আছে ঝির ঝির বসন্ত বাতাস।
আজ একটু সময় হলো এই সম্পর্কের দীর্ঘকায় বৃক্ষের দিকে তাকিয়ে দেখার। হাতে এখন প্রচুর সময়, হয়তো তাই খুটিয়ে খুটিয়ে বিচার করার সুযোগ হলো। এই বৃক্ষের ছায়ায় আমারা স্বস্তির নিঃশ্বাস নেই - এ কথাটি আমি ভুলে যাইনি। এটা আসলে ভুলে যাওয়া অথবা মনে রাখার মত বিষয় নয়। এটা মনে রাখা এবং ভুলে যাওয়া বিতর্কের বাইরের জিনিস। প্রতিদিন অক্সিজেন নেয়ার মত।
আমাদের সাংসারিক কথা ছাড়া সেরকম কোন কথা হয় না বহুদিন। ছেলেমেয়ের ভবিষ্যৎ, সংসারের আয় উন্নতি অর্থাৎ ক্যারিয়ার প্রগ্রেস ইত্যাদি ইত্যাদি বিষয়ে কথা বলেই দিন পার হয়ে যায়। তারপর যার যার দৈনন্দিন কাজ কর্ম তো রয়েছেই। ব্যস্ততা ব্যস্ততা! আসলে সেই আগের মত মেটাবোলিজমও হয়তো আর নেই। রোমান্স হয়তো প্রাত্যাহিক বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিহীন, অথবা সমৃদ্ধ খাদ্যের মত, যাকে ভোগ করতে হাই মেটাবোলিজম লাগে। এই ব্যস্ততা হয়তো আমাদের এই অতি প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়াটি নষ্ট করে দিয়েছে। আর তাই প্রকৃতি বুঝে শুনেই বড় পরিসরে ছুটির আয়োজন করেছে। সব কিছু আবার নতুন করে পুনরুদ্ধার করার জন্য।
আমাদের ফোনে প্রয়োজনীয় কথা ছাড়া তেমন কোন কথা হয় না।আসলে কাছাকাছি থাকলে হয়তো এমনটাই হয়। অনেক বছর পর আজ যখন হাজার হাজারা মাইল দূরে বসে ফোনের স্ক্রিনে দুজন দুজনকে দেখছিলাম, তখন সেই নব্বই দশকের কথা মনে পরে গেলো। পাশাপাশি বাসা আমাদের। সামনাসামনি বারান্দা। আমরা শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতাম। কথা বলতাম না। সেটা ছিল মৌন কথোপকথন। দূরত্ব ছিলো কয়েক মিটার, কিন্তু মনের দূরত্ব একেবারেই ছিলো না। আজকের এই দূরত্ব সেই পুরনো দূরত্বকে মনে করিয়ে দিলো। কাছাকাছি থাকতে থাকতে হিসেবের খাতা নিয়েই বসা হয়নি কোনদিন , অথবা মনের বাড়ি ঘুরেই দেখা হয়নি বহুদিন।
আজকের এই দূরত্ব হাজার মাইলের উপরে।
সরকার দুই মিটার সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং বজায় রাখতে বলেছে। আর আমরা প্রয়জনের চেয়েও অনেক অনেক বেশী বজায় রাখছি, দুজন দুপ্রান্তে।
০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ২:৫১
গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। এতো সুন্দর একটি মন্তব্য পড়ে আমি আমি সত্যিই ভীষণ আনন্দিত।
সবাই অনেক ভয় আর আতংকের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
কারো কারো ভিন্ন ভিন্ন মাত্রার ক্রাইসিসও রয়েছে। সেগুলোরই একটা তুলে ধরলাম।
অনেক শুভকামনা রইল
২| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৯:২২
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: লকডাউন। আপনার হাজার মাইল দূরত্ব আর গুলশান আর বেইলী দূরত্ব এখন সমান কারণ সময়ের ভয়াবহতা আমাদের সাক্ষাৎ নামুঙ্কিম। জীবন টা পৃথিবীটা যেন কোভিড নাইনটিন।
০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ২:৫২
গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: আসলেই ভয়ংকর সময় পার হচ্ছে মানব জগত।
বাংলাদেশকে নিয়ে এখন বেশী বেশীই চিন্তা হচ্ছে।
৩| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৩:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: জানি না কি ঘটতে চলেছে। করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। আজ করোনায় মৃত্যু ৫জন, আক্রান্ত- ৪১ জন। মোট আক্রান্ত ১৬৪ ও মৃত্যু ১৭। করোনার গ্রাস থেকে সবাইকে হেফাজত করুন।
০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ২:৫৫
গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: ভয়ঙ্কর সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে গোটা বিশ্ব। বাংলাদেশকে নিয়ে এখন বেশী চিন্তা।
কি হবে, এখন সেটা সম্পূর্ণই অনিশ্চিত।
ভালো থাকবেন আপনারা সবাই।
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২০ ভোর ৪:৩১
মলাসইলমুইনা বলেছেন: গুলশান কিবরীয়া,
এই লক ডাউনে অনেক নিয়ম আজ অনিয়ম হয়ে গেছে । নিত্যদিন করা কাজগুলোও হয়ে গেছে ব্রাত্য । উল্টে পাল্টেই মনে হয় গিয়েছে আমাদের অনেকেরই জীবন।আজকেই কোথাও যেন দেখলাম লক ডাউনে হোম ভায়োলেন্স বেড়েছে। আপনার গল্প পরে ভাবছি লক ডাউনে ভালোবাসাওতো তা হলে আরো গারো হয়ে উঠতে পারে অনেক না পাবার মধ্যে ।অনেক সময় মনে হয় ছাই থেকে না জানা কোনো অপার্থিব উপায়েই ফিনিক্স পাখির জন্ম হয় তাই না ? লক ডাউনে তেমনি ঘুমিয়ে থাকা ভালোবাসাও ফিনিক্স পাখি হয়ে উড়ুক সেই আশাতো করতেই পারি আমরা।করোনার ভয়াল থাবায় উল্টাপাল্টা হয়ে যাওয়া রুটিন জীবনের অধরা ভালোবাসার ছোয়া নিয়ে লেখা আপনার গল্প কিন্তু সোশ্যাল ডিস্টেন্সিঙের ছয়ফুট দূরত্বের বাধা না মেনে মনের খুব কাছে ভালো লাগার হয়ে রইলো ।