![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।
সংগ্রামী চলচ্চিত্রশিল্পী চার্লি চ্যাপলিনের জন্ম বস্তিতে। কিন্তু বস্তির অন্ধকার তার জীবনকে বন্দী করতে পারেনি। বরং তিনি এ সমাজের জন্য যা করেছেন, তা বর্ণনাতীত।
আমাদের এ সমাজ নানা পঙ্কিলতায় পরিপূর্ণ। আর সমাজের এ পঙ্কিলতার অন্ধকারকে দূর করতে হলে সমাজের প্রত্যেককেই সচেতন ভূমিকা পালন করতে হয়। কোনো একক মানুষ এককভাবে সমাজ পরিবর্তন করতে পারে না।
আর এ সমাজ পরিবর্তনে বিশাল ভূমিকা পালন করতে পারে গণমাধ্যম এবং শিল্পমাধ্যম।
সিনেমা বা চলচ্চিত্র এ যুগের খুবই শক্তিশালী গণমাধ্যম ও শিল্পমাধ্যম। সমাজ পরিবর্তনে, মানুষের মানসিকতার বিকাশে চলচ্চিত্রকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা তাই আজ সময়ের দাবী। এই দাবী পূরণে যেসব বিশ্ববিখ্যাত চলচ্চিত্রকার অংশ নিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে স্যার পেন্সার চার্লস চ্যাপলিনও অন্যতম, যিনি চার্লি চ্যাপলিন নামেই বিশ্বে সর্বাধিক পরিচিত।
চ্যাপলিনের জন্ম লন্ডনের এক বস্তিতে। তার মা ছিলেন লন্ডনের নাচিয়ে দলের নাচিয়ে। বাবা সেই দলেরই গাইয়ে। সংসারের আয় উপার্জন তেমন ছিল না। ফলে প্রচন্ড রকম দুঃখ যন্ত্রণার ভিতর দিয়েই বেড়ে উঠতে থাকেন চ্যাপলিন।
শৈশবের এই নির্মম যন্ত্রণা তার সমগ্র সৃষ্টিতেই ছড়িয়ে রয়েছে।
শৈশবে চার্লি রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতেন। দেখতেন জীবনের বিচিত্র রূপ। বৈষম্যের তাড়না।
তার মা কখনো কখনো খাবারের সময় হলে তাকে আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দিতেন যেন ঐ বেলার খাওয়াটা আত্মীয়ের বাড়িতেই শেষ করে নিতে পারে।
চলচ্চিত্রের মতো দুর্গম পথের পথিক হওয়ার পর চ্যাপলিন ১৯২০ সালে ‘দি কিড’ ছবি দিয়ে যাত্রা শুরু করেন। এই ছবির পূর্ণাঙ্গ কাহিনীটিও ছিল তারই রচিত।
১৯৫২ সালে চ্যাপলিন তৈরি করেন ‘দি গোল্ডরাশ’ ছবিটি । সমালোচকদের মতে, এ ছবি বানানোর পরই তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকতে পারতেন।
এই ‘গোল্ডরাশ’ ছবিটিতেও তার শৈশব যন্ত্রণার নির্মম ছায়া রয়েছে। এ ছবির একটি দৃশ্যে হতদরিদ্র চার্লি তার জুতো রান্না করে খান। ক্ষুধা আরও লেলিহান হলে চার্লির বন্ধু তাকেই মুরগী ভেবে খাওয়ার জন্য লালায়িত হয়ে উঠেন। এই দৃশ্যের প্রতীকী অর্থও রয়েছে। এ ছবির মধ্য দিয়েও চার্লি দারিদ্রপীড়িত মানুষের চিত্র, সামাজিক বৈষম্য ও শোষকদের আভিজাত্য নামের শঠতাকে ফাঁস করে দিয়েছেন।
চ্যাপলিনের ছবিতে রয়েছে হাসির খনি। কিন্তু এ হাসির সমান্তরালে ও অন্তরালে রয়েছে প্রচন্ড এক মর্মবেদনা। ঢোলাপ্যান্ট, আঁটোসাঁটো কোট এবং ঢিলে জুতো পরা সেই বিশ্বজনীন চরিত্রটি কেবল হাসি আর আনন্দই সরবরাহ করে না, আমাদের সামাজিক বৈষম্যকেও দারুণভাবে ব্যঙ্গ করে যায়।
তাই বলা যায় চ্যাপলিনের বিকল্প শুধু চ্যাপলিনই। তিনি যা বলতে পেরেছেন, তা বর্ণনাতীত। চলচ্চিত্রের নির্বাক যুগের পর সবাক যুগ সৃষ্টি হওয়ার পরেও চ্যাপলিন তার চলচ্চিত্রে শব্দ সংযোজন না করে দেখিয়ে দিয়েছেন বলার লক্ষ্য থাকলে শব্দ ছাড়াও জীবনের সত্য কথাটি কিভাবে বলা যায়।
চ্যাপলিনের জন্ম ১৮৮৯ সালে। সে বছর জার্মানীর হিটলারও জন্মগ্রহণ করেছেন। দু’জনই সারা পৃথিবীতে পরিচিত। যদিও দু’জন দু’মেরুর মানুষ ছিলেন। চ্যাপলিন ছিলেন সৃষ্টির পক্ষে। আর ধ্বংসের পথে ছিলেন হিটলার। তাই আজ আমরা চ্যাপলিনকেই স্মরণ করি তার মানবতার জন্য। আর হিটলারকে ঘৃণা করি তার বর্বরতার কারণে। আজ, এ সময়ে সুন্দর একটি সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে চ্যাপলিন চর্চার প্রয়োজনীয়তা তাই অপরিসীম। স্যার পেন্সার চার্লস চ্যাপলিনের জন্ম বস্তিতে। কিন্তু বস্তির অন্ধকার তার জীবনকে বন্দী করতে পারেনি। বরং তিনি সবকিছু অতিক্রম করে মানুষের ইতিহাসে চিরকাল অমর আলোয় আলোকিত হয়ে থাকবেন। অমর হয়ে থাকবে তার অবিনশ্বর চিন্তার ফসল পৃথিবী বিখ্যাত চলচ্চিত্রগুলোও।
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৪১
জসীম অসীম বলেছেন: ভাই , মতামতে খুশি হয়েছি অনেক। আমার মধ্যে যদি লেখালেখির একবিন্দু ইচ্ছে থাকে, সেক্ষেত্রে আপনাদের নিশ্চিত অবদান রয়েছে । আর আপনার মতামত থেকে অনেক নতুন তথ্য জানলাম। অশেষ ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
২| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:১৭
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
//চ্যাপলিনের জন্ম ১৮৮৯ সালে। সে বছর হিটলারও জন্মগ্রহণ করেছেন। দু’জনই সারা পৃথিবীতে পরিচিত। যদিও দু’জন দু’মেরুর মানুষ ছিলেন। চ্যাপলিন ছিলেন সৃষ্টির পক্ষে। আর ধ্বংসের পথে ছিলেন হিটলার। তাই আজ আমরা চ্যাপলিনকেই স্মরণ করি তার মানবতার জন্য। আর হিটলারকে ঘৃণা করি তার বর্বরতার কারণে।//
-চমৎকার তুলনা তুলে ধরেছেন!
সুন্দর লেখাটির জন্য আপনাকে অভিনন্দন, অসীম জসীম
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:১২
জসীম অসীম বলেছেন: মাঈনউদ্দিন মইনুল ভাই, লেখাটি সম্ভবত ১৯৯৬ সালের লেখা। ১৯৯৮ সালে কুমিল্লার লোকাল দৈনিক পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। ইদানিং নিজে কম্পোজ করে করে অক্ষত লেখাটিই পোস্ট দিচ্ছি। লেখা প্রকাশের তারিখ আমি সংরক্ষণ করি। এ ধরনের কাজ শেষ হলে একটু ভালো লেখা লিখতে চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:১৭
জসীম অসীম বলেছেন: ব্যস্ততায় আপনার পেইজে আসা হয় না, তাই লজ্জা বোধ করছি। আসবো সময় করে। আপনি যে আমার লেখার খোঁজ রাখেন, সে জন্য কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৫৬
যাযাবর বেদুঈন বলেছেন: চ্যাপলিন মূলত হাসির মাধ্যমে জীবনের নিদারুণ বাস্তবতাকে তুলে ধরতেন। তার প্রতিটি কাজ তাই প্রমাণ করে। এক অন্ধ মেয়ের চিকিৎসার জন্য সে গিয়ে একটা হোটেলে কাজ নেয়। সেখানে দেখা যায় জীবন সংগ্রামের প্রকৃত রূপ। ধনী আর দরিদ্রের মাঝে বৈষম্য। ধনীরা সামান্য ভুলেও গরীবের পেটে লাথি মারতেও দেরী করেনা। এইযে বিবেক বোধ আর জীবনকে খুব কাছ থেকে উপলব্ধী করার চিত্র পাওয়া যায় চার্লির হাসির মাঝেও।
আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।