![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।
একসময় নিয়মিতই আবৃত্তির চর্চা করতাম আমি। উচ্চারণের বিষয়ে সঙ্গে রাখতাম উচ্চারণবিদ নরেন বিশ্বাসের বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত ‘উচ্চারণ অভিধান’। বাংলা একাডেমি আয়োজিত ১৯৯২ সালের একুশে বইমেলার শেষদিনে আমি প্রথম নরেন বিশ্বাসের ‘উচ্চারণ অভিধান’ কিনি। তখন আমার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল কাজী আবু জাফর সিদ্দিকী, খায়রুল আলম সবুজ, সালেক খান, ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়সহ আরও অনেক নামকরা আবৃত্তিকারের সাথেই। বিগত ২০-২২ বছরে দেশে অনেক নতুন আবৃত্তিকারও তাদের পরিচয় দৃঢ় করেছেন। কিন্তু আমি শুধু আবৃত্তির বিষয়েই নয়, কোনো বিষয়েই একবিন্দুও সফলতা অর্জন করতে পারিনি। কারণ আমি খুবই অস্থির এবং অস্থিতিশীল এবং ...। বছর বছর ধরেই এখন আর আবৃত্তির চর্চাও করি না, যদিও কাজী নজরুলের ‘বিদ্রোহী’সহ বিখ্যাত কবিদের প্রায় সব কবিতাই আমার এখনও ঠিক মুখস্থ রয়ে গিয়েছে। তবে যখন আবৃত্তির চর্চা করতাম, এত বেশি কবিতার পাঠ কিংবা আবৃত্তি করতাম যে, অনেক কবিতার বিভিন্ন জটিল শব্দের উচ্চারণও এখনও মুখস্থ রয়েছে। এখনও যখন আমি মর্মান্তিক হতাশা মাথায় চেপে পথে হাঁটি, তখনও বিভিন্ন প্রসঙ্গে মনে মনে বাংলা-ইংরেজি কবিতার প্রাসঙ্গিক চরণ আবৃত্তি করি। ইদানিং বেঁচে থাকার জন্য অনেক আপোষ করতে হয় আমাকে। আমার বিবেচনায় এমন আপোষের চেয়ে আত্মহত্যাই শ্রেয়। কারণ ইদানিং আমি কবি আসাদ চৌধুরীর কবিতার চরণ: ‘জলের স্বভাব প্রায় অর্জন করেছি... ... ...
যে পাত্রেই ধরো
অবিকল তার রঙে ফুটে উঠতে পারি
মাঝে মাঝে লাল হই
কখনো সবুজ
প্রয়োজনে নীল হতে পারি...’ বড় বেশি উচ্চারণ করি। কারণ এখন আমাকে বেঁচে থাকতে প্রায়ই দালালের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হয়। অথচ আমি তো কখনো এমন ছিলাম না। কোনোদিন স্বপ্নেও ভাবিনি বেঁচে থাকার জন্য একবিন্দু হলেও দালালি করতে হবে আমাকে।
তবে ইদানিং বারংবার উচ্চারণ করা কবিতার চরণগুলো কবি আসাদ চৌধুরীর কোন কাব্যগ্রন্থের কবিতার চরণ, তা আর এখন মনে নেই। কবিতাটির প্রসঙ্গ এ জন্য উপস্থাপন করলাম যে, ইদানীং কিছু হলেই আমি মনে মনে উচ্চারণ করি, ‘জলের স্বভাব প্রায় অর্জন করেছি ...’। কারণ-এ সমাজ এখন এমনই হয়েছে যে, জলের স্বভাব [এখানে দালালি কিংবা আপোষ অর্থে] অর্জন না করা পর্যন্ত এ সময়ে-সমাজে-যেন আর কোনো রক্ষা নেই।
কবি আসাদ চৌধুরীর ‘নদীও বিবস্ত্র হয়’ কাব্যগ্রন্থটি আমাকে একসময় উপহার দিয়েছিল আমার ঢাকার কমিউনিস্ট বন্ধু আবিদ হোসেন। সেই কাব্যগ্রন্থের অনেক কবিতা এখনও আমার মনে পড়ে। যেমন: ‘বাবা তো বছর তিনেক রয়েছেন জেলখানাতে। অপরাধ অনেক বড়, এ-বাংলা ভালোবাসেন...’ ইত্যাদি। তবে ঘুরে ফিরে কিছুতে কিছু হলেই আজকাল খুব বেশি মনে মনে উচ্চারণ করি... ‘জলের স্বভাব প্রায় অর্জন করেছি...’। কারণ এখন আর আমি আগের আমি নেই। দালাল হয়ে গেছি। কারণ বেঁচে থাকার জন্য এখন আমি যথেষ্ট ছাড় দিচ্ছি। জীবনের এমন লগ্ন আমি অতিক্রম করবো কোনোদিন, স্বপ্নেও ভাবিনি। সত্যি এমন আপোষ করার চেয়ে আমার বিবেচনায় কবি জীবনানন্দ দাশের মতো আত্মহত্যাই শ্রেয় (আমি মনে করি তিনি সেদিন কলকাতায় ট্রামের নিচে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যাই করেছিলেন, যদিও আমার বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের শিক্ষক জীবনানন্দ গবেষক আবদুল মান্নান সৈয়দ আমরণ এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেননি )।
০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৯
জসীম অসীম বলেছেন: ভাই অপূর্ণ রায়হান, এতদিন ওয়াচে ছিলাম আমি। প্রায় দুই মাস। এই প্রথম আপনার মতামত পেলাম। ভীষণ ভালো লাগছে। আমার পেইজে এসেছেন বলে অনেক কৃতজ্ঞতা। ভালো থাকবেন, সব সময়। অনেক ভালো থাকবেন।
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:০৩
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: অনেকদিন পরে আপনাকে দেখলাম ভ্রাতা ! আছেন কেমন ?