![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।
চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমার কাছে কখনো কিছু জানতে চাইলে আমি বলবো, ‘আমি তো চোখে দেখি না, কানে শুনি না।’ সাঁজোয়া গাড়ি এসে বুক পিষে দিলে হাত তুলে আত্মসমর্পন করবো। প্রতিবাদ কী তা আমার মনেও থাকবে না। তখন আমার মাথা থেকে খুশবন্ত সিং-এর গল্পগুলো উড়ে দূরে পালিয়ে যাবে। আমি তখন বলবো, ওই যে ‘ইটাখোলায় শিশু শ্রমিক নির্যাতন’ হয়েছিল, সে খবরটি আমি লিখিনি। যেমন লিখবো না ওই মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের খবরটিও।
চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা চলেছে যুগে যুগেই। অনুমোদনহীন চিকিৎসাকেন্দ্রের কথাও আপনারা জানেন। আমি এমন একটি মাদকাসক্ত চিকিৎসা কেন্দ্রের কথা জানি, যেটি একজন রাজনৈতিক নেতার। এটি তার ব্যবসাপ্রকল্প। অন্যদিকে তিনি আবার মাদক ব্যবসার সাথেও জড়িত। ওটাও নাকি তার আরেকটি ব্যবসা প্রকল্প। শহরে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে তার কতিপয় কর্মী দিয়ে তৈরী করেছেন এ মাদকাসক্ত নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্রটি। পরিচালনা করছেন তারই একজন ছোট ভাই। তিনি এবং তার ভাই ও তার কর্মীরাও মাদকাসক্ত। এ কেন্দ্রে মাদকাসক্ত সন্তান ভর্তি করিয়েছিলেন একজন ভুক্তভোগী অভিভাবক। মোটা অংকের টাকা নিয়েছে সেই প্রতিষ্ঠান। ফলাফল প্রায় শূণ্য। এ কেন্দ্রে একজন নার্স কাম যৌনকর্মীও রয়েছেন। এ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে নেশাও চলে। এসব কেউ কেউ জানেন। পুলিশ অতীতে বিভিন্ন সময়ে এ মাদকাসক্ত চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে ফেনসিডিলসহ একাধিকজনকে গ্রেফতারও করেছিল। তবে তারা আবার ওদের ছাড়তেও বাধ্য হয়। এতকিছুর পরও প্রশাসন থেকে এ চিকিৎসা কেন্দ্র বন্ধ করা হয়নি। এ বিষয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।
সিভিল সার্জন অফিস কিংবা সাংবাদিকগণ এসব অপরাধ সব সময় খুঁজে পায় না। হয়তো সেই নিরাময় কেন্দ্রের স্বাস্থ্য বিভাগের ছাড়পত্রও রয়েছে। জেলা মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরও এ মাদকাসক্ত চিকিৎসা কেন্দ্রটির বিষয়ে অবহিত রয়েছেন। কিন্তু যে লোক মাদকের ব্যবসার সাথে জড়িত, সেই লোক আবার রাজনীতিও করেন। অন্যদিকে করছেন তার মাদক নিরাময় কেন্দ্রের ব্যবসা। কী চমৎকার বাস্তব। এ কি অতিবাস্তব নাকি পরাবাস্তব আমি জানি না। আর আমি লোকটি কবে যে ধরা খাবে কিংবা কিভাবে ধরা খাবে, সে দিনের অপোয় রয়েছি। তার কথা আমি সরাসরি এখানে লিখে দিতে পারতাম। কিন্তু আমার সাহস ইদানিং শূণ্যের কোটায় নেমে এসেছে। রীতিমত কাপুরুষ হয়েছি আমি এখন। অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিও আগের মতো আস্থা নেই আর। সুতরাং আমি এখন আর আগের মতো বেশি সাহস দেখিয়ে নিজের সমূহ সর্বনাশ করতে চাই না। এই ৪৫ বছরের জীবনে আমার লেখার একটি টেবিল নেই, নিজের একটি কম্পিউটার নেই, শোয়ার জন্য একটি খাট নেই, স্থানীয় একটি দৈনিক পত্রিকার একজন মালিক তার অফিসে মধ্যরাতে ‘মাগীবাজি’ করেছিল বিধায় তার প্রতিবাদ করে এই মুহূর্তে চাকুরি (বার্তা সম্পাদক) নেই এবং...২০ বছর ধরে বিভিন্ন পত্রিকায় চাকুরি করেও স্থানীয় প্রেসকাবে আমার সদস্যপদও নেই। মাশাল্লাহ এগুলো আমার এক ধরনের সাহসেরই ফলাফল। তাই আমি এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সব বাদ দিয়ে একজন উৎকৃষ্ট দালাল হবো। একজন চাটুকার হবো। কদম ফুলের গাছ যে পথে রয়েছে, সে পথে আমি আর হাঁটবো না। রক্তকাঞ্চনের ফুলভরা গাছ মূলে কেটে দেবো। স্বর্ণচাপার সুগন্ধে যদি নাক আমার মুগ্ধ হয়ে যায়, তবে কেটে দেবো সেই নাক। এই অর্জুন-হিজলের দেশে আমি আর মানুষ থাকতে চাই না। পশু হতে চাই। কারণ আজ আমি পুরোপুরিই বুঝেছি আমার জীবনে যৌবন আসেনি কখনো। নির্বীজ বার্ধক্যে ভরা ছিলো আমার পুরোটা জীবন। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি আজ, কখনোই বলবো না আমাদের দেশে কোনো দুর্নীতি আছে কিংবা কখনো ছিলো। আছে কালো টাকা কিংবা কখনো ছিলো । চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কখনো কিছু জানতে চাইলে আমি বলবো, আমি তো চোখে দেখি না, কানে শুনি না। সাঁজোয়া গাড়ি এসে বুক পিষে দিলে হাত তুলে আত্মসমর্পন করবো। প্রতিবাদ কী তা আমার মনেও থাকবে না। তখন আমার মাথা থেকে খুশবন্ত সিং-এর গল্পগুলো উড়ে দূরে পালিয়ে যাবে। আমি তখন বলবো, ওই যে ‘ইটাখোলায় শিশু শ্রমিক নির্যাতন’ হয়েছিল, সে খবরটি আমি লিখিনি। আর আমি তখন সিনথেটিক ফাইবার কাগজে মুদ্রিত ১০ টাকার মাত্র একটি কাগুজে নোটের কাছে, একেবারে অতি সস্তায় প্রাণ বাঁচাতে, হয়তো সেই টাকায় দুটো সিঙারাই খাবো তখন এবং বিক্রি হয়ে যাবো। আমার জীবনের শেষ ল্য ও উদ্দেশ্য কিংবা শেষ সিদ্ধান্ত মৃত্যুর আগে আমি দালাল হয়ে মরবো। দালালির এত পুরষ্কার, আগে জানলে অতীত জীবনটা আমার এভাবে বৃথা করে দিতাম না। কনোই না। না না না।
©somewhere in net ltd.