নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলো আমরা পাখিদের কাছ থেকে ইউক্লিডের নতুন পাঠ নেই জীবনানন্দের পাঠ নেই নিউটনের আপেল গাছটি থেকে।

জসীম অসীম

লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।

জসীম অসীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

সিরাজ উদ্দিন জ্যাঠা আমাকে হরিয়াল পাখি দেখিয়েছেন

০৫ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:০৬


সংশোধিত:
আমার বাবা মোহাম্মদ কফিল উদ্দিনের বড় ভাইয়ের নাম ছিলো মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন। এই সিরাজ উদ্দিন জ্যাঠা গান গাইতেন।
একতারা এবং দোতারা বাজিয়ে তিনি যখন মধ্যরাতে গান গাইতেন, তখন তাঁর মধুর সুরে প্রায়ই আমার ঘুম ভেঙ্গে যেতো। তারপর জেগে জেগে শুনতাম তাঁর মধু নি:সৃত হওয়া সব গান। আমার মা-ও জ্যাঠার গান শুনতেন। তবে জ্যাঠা নাকি কখনো কখনো কলকের মধ্যে তামাক পুরে তার ওপর জ্বলন্ত কয়লা দিয়ে রাশি রাশি দম টেনে চোখ লাল করে ফেলতেন। এ জন্য আমার মা প্রায়ই তার বিরুদ্ধেও কথা বলতেন। মা বলতেন, গান গাওয়া তো ভালো।কিন্তু ওই তামাকের নেশাটা খারাপ।
জ্যাঠা তাঁর বন্ধুদের বলতেন, এই কলকের মধ্যে দম দেয়াটায় নাকি ছিলো তাঁর সাধন পদ্ধতি।
আমার বাবা মোহাম্মদ কফিল উদ্দিন সরকারী চাকুরি করতেন। ছুটি পেলেই বাড়িতে আসতেন। তাই আমাদের শৈশবে দিনের অনেকটা সময় ধরেই সিরাজ উদ্দিন জ্যাঠার কাছে গিয়েই বসে থাকতাম। তাঁর বিভিন্ন গল্প শুনতাম।
এই জ্যাঠা বাড়িতে একবার একটি মুদি দোকানও দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি ব্যবসা ভালো বুঝতেন না। সারাদিন তাঁর দোকানে বিভিন্ন মতের মানুষজন আসতেন। আড্ডা আসর হতো। প্রায়ই ওসব আড্ডায় বসে থাকতাম।কিন্তু তাঁদের কথাবার্তার কোনোই অর্থই বুঝতে পারতাম না আমি।
বড় হয়ে যখন কিছু লেখাপড়া শিখেছি, তখন বুঝলাম...জ্যাঠা আমার সাধারণ কোনো জন নন, তিনি এক অসাধারণ ব্যক্তি। কারণ তিনি যে ধ্যান-জ্ঞান নিয়ে সারাদিন ব্যস্ত থাকেন, তা তার ব্যক্তিগত লাভালাভের জন্য নয়। তিনি যেসব বিষয় নিয়ে আলাপ করতেন, আরও পরে বুঝেছি, ওসব বাউল ধর্মের শাস্ত্রীয় কথাবার্তা কিংবা ইসলামি সুফিবাদ।
যখন ঢাকায় বাংলাভাষা ও সাহিত্যে অনার্স পড়তে গেলাম, বুঝলাম এসব বিষয় না পড়ে, না বুঝে, কেউই সভ্য হয় না। মানুষ তো নয়ই।
প্রায়ই রাতের বেলা সিরাজ জ্যাঠা জেগে থাকতেন। অনেকটা নিশাচর পাখির মতোই। আজ জ্যাঠাকে খুবই মনে পড়ে, যখন তিনি আর এ পৃথিবীতেই নেই।
এই সিরাজ জ্যাঠাই আমার শৈশবে আমাকে অনেকদিনই হরিয়াল পাখি দেখাতে নিয়ে গেছেন। আমাদের বাড়ি থেকে অনেকটা দূর পশ্চিমে ওই বটগাছের কাছে। আজকাল তো আর সেই হরিয়াল পাখি একেবারেই দেখা যায় না, যেমন করে এই পৃথিবীর মাটি থেকে হারিয়ে গিয়েছেন আমার প্রিয় ও শ্রদ্ধেয় সিরাজ উদ্দিন জ্যাঠাও।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:০৪

প্রামানিক বলেছেন: আপনার জ্যাঠার আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। ধন্যবাদ

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ২:০৩

জসীম অসীম বলেছেন: ভালো থাকবেন। আপনার জন্য রইলো আমার শুভকামনা।

২| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:৪৭

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: আমার বাবার মুখে ছোটবেলায় এই পাখি শিকার করবার কথা শুনেছিলাম মনে হয়। আজ এই লেখা পড়ে মনে পরলো

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ২:০৭

জসীম অসীম বলেছেন: ধন্যবাদ। বাবার সঙ্গে পাখি দেখা এবং মৎস্য শিকারের স্মৃতি আমারও রয়েছে। শুভ কামনা নিরন্তর।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.