নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলো আমরা পাখিদের কাছ থেকে ইউক্লিডের নতুন পাঠ নেই জীবনানন্দের পাঠ নেই নিউটনের আপেল গাছটি থেকে।

জসীম অসীম

লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।

জসীম অসীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

চট্টগ্রাম বিভাগের সর্ব প্রাচীন কারাগার কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ভোর ৫:৩৫

চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে ২টি কেন্দ্রীয় কারাগার ও ৯টি জেলা কারাগার রয়েছে, তার মধ্যে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার আয়তনে সর্ববৃহৎ। ১৯৬২ সালে জেলা কারাগার হতে কেন্দ্রীয় কারাগারে উন্নীত করার পর কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে কারা উপ মহাপরিদর্শকের পদ সৃজীত হয়। কেন্দ্রীয় কারাগার ও বিভাগের কার্যক্রম স্ষ্ঠুুুভাবে সম্পন্ন করার জন্য কেন্দ্রীয় কারাগারে সিনিয়র জেল সুপারের পদ সৃষ্টি করা হলে কারা উপ মহাপরিদর্শক বিভাগীয় কার্যাবলী আরো নিবিড়ভাবে সম্পন্ন করার সুযোগ পান। ২০১২ সালে ১লা নভেম্বর বিভাগীয় কার্যালয় কুমিল্লা হতে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হয়। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার বন্দী সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কারাগার। চট্টগ্রাম জেলার কোতয়ালী থানাধীন ঐতিহ্যবাহী লাল দিঘীর পূর্ব পার্শ্বে ১৮৮৫ সালে চট্টগ্রাম জেলা কারাগার প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৯৯ খ্রিঃ তারিখ কেন্দ্রীয় কারাগারে উন্নীত করা হয়। কারাগারের মোট জমির পরিমাণ ১৬.৮৭ একর, তন্মধ্যে পেরিমিটার ওয়ালের ভিতরে ১১.৫৫ একর এবং বাহিরে ৫.৩২ একর। ১৯১৭ সালে কক্সবাজার উপ কারাগার প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তী ২৭.০৫.২০০১ তারিখে পুনঃনির্মাণ কাজ শেষে নতুন স্থানে জেলা কারাগার স্থানান্তর করা হয়। কারাগারের মোট জমির পরিমাণ ১২.৮৬ একর, তন্মধ্যে পেরিমিটার ওয়ালের ভিতরে ৮.০৯ একর এবং বাহিরে ৪.৭৭ একর।
১৯৬৪ সালে খাগড়াছড়ি উপ কারাগার প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৭১ সালে উক্ত কারাগারটি পুনঃনির্মাণ করা হয়। কারাগারের মোট জমির পরিমাণ ১২.৫০ একর, তন্মধ্যে পেরিমিটার ওয়ালের ভিতরে ০.৫০ একর এবং বাহিরে ১২.০০ একর। ১৯২৩ সালে রাঙ্গামাটি উপ কারাগার প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৮৮ সালে জেলা কারাগারে রূপান্তর করা হয়। কারাগারের মোট জমির পরিমাণ ২.৭৬ একর, তন্মধ্যে পেরিমিটার ওয়ালের ভিতরে ০.৬৪ একর এবং বাহিরে ২.১২ একর। ১৯৮০ সালে বান্দরবান জেলা কারাগার প্রতিষ্ঠিত হয়। কারাগারের মোট জমির পরিমাণ ৭.০০ একর, তন্মধ্যে পেরিমিটার ওয়ালের ভিতরে ২.৫০ একর এবং বাহিরে ৪.৫০ একর। ১৭৯২ সালে কুমিল্লা জেলা কারাগার প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬২ সালে কুমিল্লা জেলা কারাগারকে কেন্দ্রীয় কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এটি চট্টগ্রাম বিভাগের সর্ব প্রাচীন কারাগার এবং প্রথম কেন্দ্রীয় কারাগার। কারাগারের মোট জমির পরিমাণ ৬৮.০০ একর, তন্মধ্যে পেরিমিটার ওয়ালের ভিতরে ৩৬.০০ একর এবং বাহিরে ৩২.০০ একর। ১৮৬০ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া উপ কারাগার প্রতিষ্ঠিত হয়। ১১.০৭.১৯৮৮ খ্রিঃ তারিখ ব্রাহ্মণবাড়িয়া উপ কারাগারকে জেলা কারাগারে রূপান্তরিত করা হয়। কারাগারটি ১৮.০৪.২০০৯ তারিখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার উর্শিউরায় স্থানান্তর করা হয়। কারাগারের মোট জমির পরিমাণ ১৭.০০ একর, তন্মধ্যে পেরিমিটার ওয়ালের ভিতরে ৮.০০ একর এবং বাহিরে ৯.০০ একর। ১৯০৭ সালে চাঁদপুর জেলা কারাগার প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তী ১৬.০৭.২০১০ খ্রিঃ তারিখে চাঁদপুর জেলা কারাগার বর্তমান স্থানে স্থানান্তর করা হয়। কারাগারের মোট জমির পরিমাণ ৯.৫০ একর, তন্মধ্যে পেরিমিটার ওয়ালের ভিতরে ৮.০০ একর এবং বাহিরে ১.৫০ একর।
১৯৬৭ সনে মাইজদি কোর্ট এলাকায় সর্বপ্রথম নোয়াখালী জেলা কারাগার প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৭২ সালে বর্তমান স্থানে স্থানান্তর করা হয়। কারাগারের মোট জমির পরিমাণ ৩৬.০০ একর, তন্মধ্যে পেরিমিটার ওয়ালের ভিতরে ৮.৫০ একর এবং বাহিরে ২৭.৫০ একর। ১৯১৫ সালে ফেনী শহরের প্রাণকেন্দ্রে শেরশাহ নির্মিত পুরাতন গ্রান্ড ট্র্যাংক রোডের পার্শ্বে ফেনী জেলা কারাগার নির্মাণ করা হয়। কারাগারটি অন্যত্র স্থানান্তর কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে। কারাগারের মোট জমির পরিমাণ ১.৫০ একর, তন্মধ্যে পেরিমিটার ওয়ালের ভিতরে ০.৭৫ একর এবং বাহিরে ০.৭৫ একর। ১৯৯৯ সালে লক্ষ্মীপুর-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের পার্শ্বে লক্ষ্মীপুর জেলা কারাগার প্রতিষ্ঠিত হয়। কারাগারের মোট জমির পরিমাণ ৬.০০ একর, তন্মধ্যে পেরিমিটার ওয়ালের ভিতরে ৩.৭৫ একর এবং বাহিরে ২.২৫ একর। কেন্দ্রীয় কারাগারে সকল শ্রেণীর বন্দি রাখা হয় বিধায় সেখানে বিভিন্ন রকমের প্রশিণ ও পণ্য সামগ্রী উৎপাদন করা হয়। চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে বাঁশ ও বেতের হরেক রকম সামগ্রী, তাঁতের কাপড় , পোশাক, কাঠের আসবাবপত্র ইত্যাদি তৈরী করা হয়। কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের বেকারীতে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে বিস্কুট, কেক ও পাউরুটি তৈরী করা হয়। বেকারীজাত খাদ্যদ্রব্য বন্দীরা পিসির মাধ্যমে এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বাহির দোকান হতে ক্রয় করে থাকে। প্রতিটি কারাগারে বন্দিদের ইলেকট্রনিক সামগ্রী মেরামতের প্রশিণ (যথা-টিভি, ফ্রিজ প্রভৃতি) গ্রহণ করে থাকে। বন্দিরা নিজেদের খাবার নিজেরাই তৈরী করে বিধায় রান্না প্রশিণ প্রদান করা হয়। মুক্তিপ্রাপ্ত হয়ে অনেক বন্দি পেশাদার বাবুর্চি হিসেবে রেস্টুরেন্টে কাজ করার সুযোগ পায়। প্রতিটি কারাগারেই কারা হাসপাতাল রয়েছে, যেখানে জনবল প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত কম। সহকারী সার্জন না থাকায় এবং ১/২ জন ফার্মাসিস্ট/ডিপ্লোমা নার্স দিয়েই হাসপাতাল পরিচালিত হয়ে থাকে। সন্ধ্যায় তালাবন্ধের পর অসুস্থ বন্দিদের সাজাপ্রাপ্ত বন্দিরাই দেখাশোনা করে থাকে। এজন্য প্রতিটি কারাগারেই আগ্রহী সীমিতসংখ্যক বন্দিদের রোগীদের পরিচর্যা ও ঔষধ বিষয়ক প্রশিণ প্রদান করা হয়। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃত মাস্টারদা সূর্য সেন ১৬ ফেব্রুয়ারী ১৯৩৩ সালে চট্টগ্রামের পটিয়া থানার ধলঘাটা গ্রামে ব্রিটিশ সৈন্য কর্তৃক গ্রেফতার হন। ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার পূর্ববর্তী সময় পর্যন্ত তিনি চট্টগ্রাম জেলা কারাগারে বন্দী অবস্থায় ছিলেন। ১২ জানুয়ারী ১৯৩৪ সালে চট্টগ্রাম কারাগারে মাস্টারদা সূর্যসেন এবং তার অন্যতম সহযোগী বিপ্লবী তারেকেশ্বর দস্তিদার এর ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ব্রিটিশদের কাছ থেকে চট্টগ্রাম স্বাধীন করে রাখা বিপ্লবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা হিসেবে ফাঁসির মঞ্চটি বর্তমানে সংরতি আছে। কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের পশ্চিম পার্শ্বে প্রায় ২২ একর পরিমাণ নিচুভূমি রয়েছে। উক্তস্থানে একটি দিঘী খনন করা যেতে পারে। দিঘী হতে প্রাপ্ত মাটি দিয়ে নিচুভূমি ভরাট করে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কারারি প্রশিণ কেন্দ্র নির্মাণ করা যেতে পারে। চট্টগ্রাম বিভাগে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার আয়তনে সর্ববৃহৎ এবং এখানের জনবল বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ। বিভাগীয়ভাবে কারারেিদর প্রশিণ ও রেফ্রিসার প্রশিণ কুমিল্লাতে দীর্ঘদিন যাবত হয়ে আসছে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৪৭

প্রামানিক বলেছেন: কারাগার সম্পর্কে অনেক কিছু জানা হলো। ধন্যবাদ আপনাকে।

২| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৮

জসীম অসীম বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার উৎসাহব্যঞ্জক মতামতের জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.