নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলো আমরা পাখিদের কাছ থেকে ইউক্লিডের নতুন পাঠ নেই জীবনানন্দের পাঠ নেই নিউটনের আপেল গাছটি থেকে।

জসীম অসীম

লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।

জসীম অসীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনিল্লা আর জনিল্লার গল্প

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ভোর ৬:১৮


আলোকচিত্র: জসীম অসীম।

বন্যায় মানুষের জীবনে সর্বনাশ নেমে এসেছে। আর কয়েকদিন পরেই ধানকাটা শুরু হতো। উঠতি ফসল ডুবে গেছে।
জয়দের বাড়িতেও বাড়ি-ছুঁইছুঁই পানি। জানালার পাশে বসেই বানের পানি দেখা যায়। পানি দেখে জয় ভীষণ আবেগতাড়িত হয়। দু'চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে।
শব্দ করে পানি ঢুকে গ্রামে। জয়দের সুফলা গ্রামে। ঘুম আসে না রাতে। মন থাকে ভীষণতর অশান্ত। পাখিডাকা-ছায়াঢাকা সারাটা গ্রামে আতঙ্ক নেমে আসে। রাতে মোশারফ তার বাঁশিতে তুলে সেই উদাসী সুর। পানির কলতান পাখির কলতানকে হত্যা করেছে যেন।
বানভাসি লোকজন পানির দরে গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগী বিক্রি করতে থাকে। নৌকার অভাবে বাজারে যাওয়া কঠিন। কেউ কেউ এর মধ্যেই নৌকা যোগাড় করে ফেলে। অধিকাংশ মানুষই কলাগাছের ভেলার ওপর নির্ভর করে। উজান এলাকা। আগেও এখানে নৌকার তেমন প্রচলন ছিলো না। রাত হলেই বাড়িতে বাড়িতে কলাগাছ চুরির হিড়িক পড়ে যায়।
গ্রাম থেকে অনেক মানুষ ট্রাকের ছাদে করে শহরের দিকে চলে যায়। এক কিলোমিটার পথ পেরুলে বাজার। সেখান থেকে ট্রাক ছাড়ে। অভুক্ত মানুষ এলাকায় আর কাজ খুঁজে পায় না। কোথাও থেকে কোনো ত্রাণ আসে না। কখনো কখনো একটু এলেও ভাঙ্গন এলাকার কাছাকাছি কিছু মানুষকে দিয়েই চলে যায়। পানি অতিক্রম করে ভিতরের গ্রামে আসে না। এসব কিছু দেখে দেখে প্রায়ই জয় কেঁদে ফেলে।
জয়ের কাকা কলিম উদ্দিন সকালবেলা রুটি-গুড় নিয়ে বসেছিলো খেতে। জয় তার কাছে গিয়ে বলে, কাকু, পানি তো গেরামডারে তছনছ কইরা ফালাইছে।
: হ-রে বাবা। এর থাইক্যা বেশি পানিও অইছিলো একবার। তহন তুই অস নাই।
-এইবার কী অইবো কাকু?
: একমাত্র ভরসা আল্লাহ। আর কিছু জানি না।
কলিমউদ্দিন খাওয়া রেখে দিয়ে উদাস হয়ে বসে থাকে। কোনো কথা আর বলে না। জয় বলে, কাকু বন্যার আগে আমার মামাতো ভাই সুমন আইছিলো বিদেশ থাইক্যা। তার সব মালামাল রাইতের বেলা ডাকাতি হইয়া গেছে।
: আরে কস কী? তর মা তো আমারে এই ব্যাপারে কিছু কইছে না।
-সময় পায় নাই।
অস্ত্রের মুখে সুমনের সব মালামাল ডাকাতি হওয়ার পর এলাকার লোকজন এসে জটলা করে সুমনদের বাড়িতে। ডাকাত আর ধরা পড়ে না। মালামালও পাওয়া যায় না আর।
বিদেশ থেকে এসে নিজের গ্রামেই নিজেকে বেশি পরাধীন লাগে সুমনের। চারদিকে অভাব। চোর-ডাকাতের উপদ্রব। নতুন করে হয়রানি করছে বন্যা। সংঘবদ্ধ চোর-ডাকাতের উপদ্রবে সারাটা গ্রাম নারকীয়। থানার পুলিশের সঙ্গে এসব চোর-ডাকাতের দহরম সম্পর্ক।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ভোটের সময় দরজায় দরজায় ভোট ভিক্ষে করে গিয়েছে। এখন তার আর চেহারা দেখা যায় না। দেশে এসে একবিন্দু শান্তি পায় না সুমন। ভাবে আবার বিদেশ চলে যাবে। আর আসবে না এমন দেশে। এলেও থাকবে শহরে। অথচ নুরুর এমন গ্রামটির প্রতিই ভীষণ ভীষণতর মায়া।
নুরু জয়ের কাকাতো ভাই-কলিমউদ্দিনের ছেলে। তাদের আর্থিক অবস্থা একেবারে খারাপ নয়। দিন চলে একপ্রকার। বেগ পেতে হয় না। সে তবু শান্তিতে থাকতে পারে না। এতো অভাব কেন? কেন মানুষ ভাত পাবে না খেতে? ভেবে পায় না সে। বন্যার পানিতে হাতে একটি লাঠি নিয়ে সারাটা গ্রাম ঘুরে। রাতেও ঘুরে নিশাচরের মতো। নিজের ঘরে ভাত থাকতেও অনাহারে-অর্ধাহারে ঘুরে। মুখের চামড়ায় ভাঁজ পড়ে। সেদিকে চোখ যায় না। দুপুর বেলা খেতে বসে। স্বচ্ছ বাসনে ঝকমক করে ভাত। হায়রে ভাত। খেতে পারে না ভাত। বাসন ঠেলে বাইরে বের হয়ে যায়। নিজের একার ভাত সে এ গ্রামের কজনের ঘরে দেবে?
বাড়ির পাশ দিয়ে হেঁটে যায় পথিক। কখনো কখনো স্বজন। বলে, নুরু ভাই কেমন আছেন?
: ভালো। খুব ভালো। বন্যার মতো ভালো। সুমন এসে যখন নুরুকে বলেন, 'দেশের প্রেমে পইড়েন না ভাই'-তখন নুরুর রাগে গা জ্বলে যায়। সালোয়ার-কামিজ পরা বোনটাকে দেখলে তাকে বিয়ে দেয়ার কথা একবারও মনে হয় না। মনে কেবল জলমগ্ন গ্রাম। নদীর প্রবল স্রোতের কারণে বাজার রক্ষা বাঁধটি ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা এখনো কাটেনি। শহর থেকে গাড়িতে করে ভদ্রলোকের [?] বাঁধ আর ভাঙ্গন দেখতে আসে। চা-সিগারেট খায়। তারপর কিছু আলাপ করে আবার চলে যায়।
বাজারের কাছে হাইস্কুল। উঁচু জায়গায়। সেখানে এখন আশ্রয়শিবির। সরকারি লোক চিড়া-গুড় এনে কখনো কখনো দেয়। গ্রামের ভিতরে যায় না। পানিসম্পদ মন্ত্রী বন্যা দেখতে আসে। পুলিশে ভরে যায় ভাঙ্গন এলাকা। এলাকার মানুষ মন্ত্রীর বক্তৃতা চুপচাপ দাঁড়িয়ে শোনে। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান যখন একটি গ্রামে যায়, তখন গ্রামের লোক চেয়ারম্যানকে তাড়া করে। চেয়ারম্যান অনিল পোদ্দার পালিয়ে প্রাণ বাঁচায়। জয়নাল চেয়ারম্যানকে ক্ষমতা থেকে নামিয়ে অনিল পোদ্দারকে হিন্দু জেনেও ক্ষমতায় বসায় জনগণ। কিন্তু ক্ষমতায় গিয়ে অনিল পোদ্দার জয়নাল চেয়ারম্যানের মতোই আচরণ শুরু করে। জনগণ তাই হিংস্র হয়ে ওঠে। বিশেষ করে চেয়ারম্যান একজন হিন্দু বলে তাদের সাহস আরও বেড়ে যায়। পেছনে রয়েছে জয়নাল চেয়ারম্যানের হাত।
নুরু আর জয় বন্যা দেখার ফাঁকে ফাঁকে মন একটু ভালো হলেই মাছ ধরা শুরু করে। মাছও পায়-অনেক অনেক মাছ। নদীর মাছ নয়। নদীতে তেমন মাছও নেই। পুকুর থেকে ছুটে আসা মাছ। মাছের তেমন দামও নেই বাজারে। তবু মাছ ধরে।
চুরি-ডাকাতিতে অসহায় মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। একদিকে ফসলহানি, অন্যদিকে চোর-ডাকাতের ভীষণ উপদ্রব। আতঙ্কে দিশেহারা মানুষ পথ খুঁজে পায় না। যেখানে কি-না বন্যার অভিজ্ঞতা এ অঞ্চলের মানুষের তুলনামূলক কম।
নামকরা অনেক সাংবাদিক এসে অনিল পোদ্দারের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করে দেয়। গ্রামের মুদি ব্যবসায়ী নাদের। পঙ্গু মানুষ। লোকে বলে, মসজিদে লাথি মেরে পঙ্গু হয়েছে সে। সেই নাদের বন্যার সুযোগে ওজনে কারচুপি শুরু করে। বাটখারার কারসাজিতে লোক ঠকিয়ে অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন করে। ব্যবহার করে সারা বছরই এক কাঠের প্রতারক দাঁড়িপাল্লা।
হাজার হাজার মানুষ যেখানে ছুটে এসেছে, সেই আশ্রয় শিবির দেখতে যায় নুরু। দেখতে গিয়ে অন্তহীন নদীর সমান্তরালে হাঁটে। মনে মনে বলে, হায়রে দজ্জাল-ভীষণ দজ্জাল নদী, তুই আমাদের মা? একি মায়ের রূপ?
দোকানদার নাদেরের সব খবর জানে নুরু। সিদ্ধান্ত নেয়-ধরবে তাকে সুযোগ করে। মারবে প্রচন্ড মার। কেউ বেঁধে রাখতে চাইলেও দড়িদড়া ছিঁড়ে গিয়ে মারবে। প্রবল বাতাসে নদী যেমন বিক্ষুব্ধ হয়, তেমন হয়ে গিয়ে মারবে।
নুরুর চেহারা পোড় খাওয়া এক মানুষের চেহারার মতো। জীবনও তার জলে ভেজা রোদে পোড়া জীবন। মুখভর্তি ধূসর দাড়ি। মাইলের পর মাইল হেঁটে বন্যা দেখে। চার পাঁচ দিনেও একবার গোসল করে না। গোসলের কথা ভুলে থাকে। টিপটিপ বৃষ্টি উপেক্ষা করে ভাঙ্গনের দিকে যায়। দেখে-নদীর পানির কমে নাকি বাড়ে।
বড় বড় বাজপাখি আকাশে উড়ে। নুরু তাকিয়ে দেখে। দেখে কখনো কখনো মেঘ। দেখে নীল আকাশ।
একদা এমন ছিল না নুরু। মনে তখন আনন্দ ছিলো অনেক। বছরের কিছুটা সময়ের জন্য ঘুড়ির দোকান দিতো নুরু। শুনতো পাখির গান। কিন্তু মোশারফের দাদীর প্রতি সংসারের সবার অবিচার দেখে মনে লাগে নুরুর। এ নিগৃহিত মহিলার এখন আর ছেলেমেয়ে বেঁচে নেই। নাতি-নাতিনদের সংসারে বেঁচে আছে। কাজকর্ম করতে পারে না বলে, সকলে তার মরণ সন্ধানে ব্যস্ত। কবে মরবে বুড়ি? আজরাইল কি ভুইল্যা গেছে সব? এমন এমন কতো কথা সারাটা দিন শুনে।

যেদিন অশান্ত নদী সশব্দে আছড়ে পড়ে এলাকায়, সেদিন রাতে বাতাসের দাপট ছিলো। ছিলো বৃষ্টির ছাট। মোশারফের দাদী বলে, অ-মোশারফ, ধান ডুইব্যা যাইবো। গিয়া কাইট্যা আন। মোশারফ ধমক দিয়ে বলে, চুপ থাক বুড়ি। জ্ঞান দিস না।
: কী অইসে তর। ধান তো ডুইব্যা গেলো।
-ডুবুক। তোর এতো চিন্তা কিয়ারে? না খাইয়া মরবি? আর কোনো কথা বলে না মোশারফের দাদী। নুরু এসব সহ্য করতে পারে না। আরে তোরা জমির লাইগ্যা এমন লালায়িত ছিলি। বুড়ি তো তোদের সব লেইখ্যা দিছে। এহন কি তার মরণ পর্যন্ত একটা বালা কথাও কবি না? একদিন কি বুড়ি এমন অক্ষম আছিলো?
নুরুদের গ্রামে খ্যাতিমান এক রাজনীতিকের জন্ম। তিনি এমন বন্যার লগ্নেও ঢাকায়। নির্বাচন না এলে গ্রামে নামেন না। কখনো আসেন আম-কাঁঠাল পাকার মৌশুম হলে। বন্যায় তার দুনাতিন এসেছিলো গ্রামে। রিকশায় করে বন্যা দেখে পথ থেকেই চলে গেছে। যাওয়ার সময় কোমর পানিতে নেমে কৃষকের ধান কাটার ছবি তুলে নিয়ে গেছে। অনেক কৃষক তাতেই অনেক খুশি। নুরুও সেদিন মাথায় রোদ পায়ে পানি নিয়ে দিনভর ধান কেটেছে। তার ইচ্ছে হয়েছিলো ধাক্কা মেরে রিকশাসহ দু'মেয়েকে বন্যার ঘোলা পানিতে ফেলে দেয়। পারেনি।
গরু-ছাগলের খাবার নেই। দুঃখের নেই শেষ। কলেরা ছড়িয়ে পড়ে। একে একে তিনটি বাড়ি ভাঙ্গনের গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। লোকাল বাসের চলাচল শহর থেকে ভাঙ্গন পর্যন্ত। আস্তে-আস্তে উঠানেও পানি ওঠে। কলার ভেলায় করে যাতায়াত চলে অনেক দুর্ভোগ নিয়ে।
বিকেলে একবার বাজারে যায় নুরু। গিয়ে দেখেসাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন এক রেস্টোরেন্টে বসে কয়েকজনকে নিয়ে চা-পুরি নিয়ে ভীষণ আড্ডায় মেতেছে। আড্ডার বিষয় অনিল পোদ্দারের ব্যর্থতা। সেই আড্ডাতে নুরুও গিয়ে এক সময় শরীক হয়। নুরুকে দেখে প্রাক্তন চেয়ারম্যান জয়নাল বলে, ভোট তো তোমরা অনিল্লারে দিলা। অনিল্লা তোমরারে দিলো দেবী গোমতির জল। এখন ভাত না খাইয়া জল খাও। ইন্ডিয়ার জলে অনেক পুষ্টি। অনেক ভিটামিন।
নুরু বলে, চেয়ারম্যান অনিল্লা আর জনিল্লা, আপনেরা দুইজনেরই অনেক দোষ। আপনেরার কারণেই এলাকা অহন বিরান মরুভূমি। এমনতো হইতে পারে আপনি নিজেই মাঝরাতে আপনার লোক দিয়া গাঙের বাঁধ কাইট্টা পানি ছাইড়া দিছেন?
: কী আমি পানি ছাইড়া দিছি? কইলো কী কতাটা? আরে তোরা হুনছস ?
-আপনে পারেন না, এমন কাম আছেনি আবার? থানার পুলিশ কিনতে পারেন। এই এলাকার সবচে বড় গাঁজার আড়ত তো আপনেরটাই। রাইতের বেলা তো কাষ্টমারের লাইন পইড়া যায়। চেহারাটা আপনের আর অনিল পোদ্দারের ভদ্র মানুষের হইলেও আপনেরা দুইজনই মূলত খুব অভদ্র লোক। আপনেরা দুইজনে মিললাই গাঙের পানি ছাড়ছেন হয়তো রিলিফ লুটপাট করার ধান্ধায়।
নুরুর কথা শেষ না হতেই নুরুকে গামছা দিয়ে বেঁধে ফেলে আড্ডার মধ্যেকার বখাটে টাইপের কিছু ছেলে। ওরা প্রাক্তন চেয়ারম্যানের হুকুমের দাস। চেয়ারম্যান ওদের ওপরওয়ালা। বসবাস করে একচালা-দু'চালা ছনের ঘরে। ওদের পরিশ্রমেই প্রাক্তন চেয়ারম্যানের আজ ফ্রিজ-সোফা-দোতলা বাড়ি-মোবাইল টেলিফোন হয়েছে। ওরা তৃপ্ত সামান্য পয়সা পেয়ে, চেয়ারম্যানের রঙিন টেলিভিশন দেখে।
নুরু বলে, আমারে ছাইড়া দাও। বাইন্ধা রাখতে পারবো না। গাঙের ভাঙ্গার মতো ছুইটটাম। চেয়ারম্যান নুরুর মুখের ওপর সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে বলে, হে, নুরুরে ছাউড়া দে। নুরু ইসলামের শত্রু না। যারা ইসলাম ধর্মের শত্রু, আমার শত্রু হেরা। কথা বলা শেষ করেই প্রাক্তন চেয়ারম্যান গালভরা সাদা দাড়িতে নিজের ডান হাত বুলায়। তারপর সেই বখাটে ছেলেদের বলে, আমার গোলায় অনেক ইঁন্দুর। কিছু মারনের দরকার। কী কস!
চেয়ারম্যানের শেষ কথাটি শুনে নুরুর বুক ধড়ফড় করে ওঠে। তারপরও নুরু বিনা প্রতিবাদে ওখান থেকে ফিরে আসে। কিন্তু রাতের বেলা নুরুর দরজায় অনেক লাঠি পড়ে। ঘর ছেড়ে বের হয় নুরু। ঘরের চালে জ্বলে ওঠে আগুন। কলিমউদ্দিন চিৎকার করে কাঁদতে থাকে। ঠিক এরই মধ্যে গামছা দিয়ে মুখ বাঁধা জনিল্লা চেয়ারম্যানের লাঠিয়াল বাহিনী অতর্কিতে নুরুর বুকে ওদের শাণিত বর্শা বিদ্ধ করে দেয়। তারপর আট-দশজনের লাঠিয়াল বাহিনী বড় একটি নৌকায় করে অন্য গ্রামের দিকে দ্রুতই ছুটে যায়। ততক্ষণে কলিমউদ্দিন ঘরের বাইরে এসে পুত্রশোকে হাউমাউ করে কাঁদে।

রচনা: সেপ্টেম্বর ১৯৯০।
পশ্চিম চানপুর, কুমিল্লা।

নোট: এ গল্পটি প্রথমে জাতীয় বা আঞ্চলিক কোনো সংবাদপত্র সম্পাদক ছাপেননি। ২০০১ সালে এ গল্পটি প্রথম পাঠ করা হয় সাহিত্য সংগঠন-'কবিচত্বর-কুমিল্লা' এর একটি সাহিত্য আসরে। পাঠের পরপরই একাধিক আঞ্চলিক সাহিত্যবোদ্ধা এ গল্পের বিরূপ সমালোচনা করেন

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৭:৩৪

স্বপ্নীল ফিরোজ বলেছেন:
সুন্দর পোস্ট । প্রথম ভালো লাগা।

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:২৫

জসীম অসীম বলেছেন: আপনাকে অভিনন্দন। প্রথম ভালো লাগার জন্য কৃতজ্ঞতা। লেখা সেই কত পুরনো! ওই যে বললাম, 2001 সালে একটি অনুষ্ঠানে পাঠ করা হয়েছিল। 2009 সালে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকায় অবশ্য ছাপা হয়েছে। হারিয়ে গিয়েছিল লেখাটি। সহসা পেলাম। তাই পোস্ট দিয়ে রাখলাম।

২| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:০২

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: সুন্দর লেখা।

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:৩২

জসীম অসীম বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। এই লেখাটি 2009 সালে অবশ্য আমারই সম্পাদিত একটি সাপ্তাহিক পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। হারিয়ে গিয়েছিল। লেখা আবার কম্পোজ করে দেয় আমার বউ। আজকাল সে আবার প্রুফও দেখে দেয়। সে ক্ষেত্রে আমাকে অনেকটা ভাগ্যবানও বলতে পারেন। সে মনে করে এই ব্লগের মাধ্যমেই আমার কিছু লেখা সংরক্ষিত থাকতে পারে। লেখার মানের কথা ভাবলে তো আর এসব লেখা পোস্ট দেওয়ার কোনো পর্যায়েই নেই। শুধু দেই, লেখাগুলো থাকুক। না হয় তো হারিয়েই যাবে...যেমন আমি নিজেই নিজেকে বারবার হারিয়ে ফেলি। শুভ কামনা।

৩| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:১৪

পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: বেশ পুরাতন লেখা। সময় করে পড়তে হবে...




লেখার দু-এক প্যারা পরপর আরেকটা ইন্টার মারতে হবে...

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:৪৭

জসীম অসীম বলেছেন: লেখার প্যারা নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমি বরাবরই অমনোযোগী অথবা অতি ব্যস্ততায়ও এটা কখনো হয়ে থাকে। পুরাতন লেখাই।লেখার মধ্যে অসংলগ্নতাও রয়েছে। তবে নতুন করে আর হাত দেইনি। পুর্নলিখন করতে গেলেই লেখা বদলে যাবে। সুন্দর মতামতের জন্য অভিনন্দন এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

৪| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:১৬

রাজীব নুর বলেছেন: প্রতি বছর বন্যায় মানুষের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এর কোনো স্থায়ী সমাধান আজও হয়নি।
আচ্ছা, কুমিল্লাতে কি বন্যা হয়?

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:৫৭

জসীম অসীম বলেছেন: রাজীব ভাই, পত্রিকায় আমার প্রথম প্রকাশিত কবিতার শিরোনাম ছিল ‘বন্যার কন্যা এই বাংলাদেশ’। সে অনেক বছর আগের কথা। বন্যার ক্ষতি থেকে সহজে মুক্তি নেই আমাদের। কুমিল্লাতে বন্যা অবশ্যই হয়। 2004 সালে আমার একটি একক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর শিরোনামই ছিল ‘বন্যা: নদীমাতৃক রাক্ষস’। ওই প্রদর্শনীতে কুমিল্লা অঞ্চলের বন্যার ছবিই ছিল। আপনার পোস্টে গিয়ে লেখা পড়া ও মতামত লেখা হয়ে উঠে না বলে লজ্জিত। আমি আসলে এতই ব্যস্ত থাকি যে, বিন্দুমাত্র সৌজন্যতাবোধও প্রদর্শন করতে পারি না। ভবিষ্যতে যেন এই সীমাবদ্ধতা থেকে মুক্তি লাভ করতে পারি, সেটাই কামনা করবেন। শুভ কামনা নিরন্তর।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.