নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইতিহাসের পাঠশালায়

আসিফ আযহার

শিক্ষার্থী, ইংরেজি বিভাগ, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়।

আসিফ আযহার › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইতিহাসের পাঠশালায়:পঞ্চম অধ্যায়:আর্যভাষী দেশে দেশে (১ম অংশ)

২৭ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১:৪৩


প্রাচীন হিব্রুভাষীদের ঘিরে ইতিহাসের যে আবর্তন আমরা দেখেছি, তাতে বারবার ঘুরেফিরে এসেছে মিসরীয় সভ্যতা, মেসোপটেমীয় সভ্যতা এবং পারস্য সভ্যতার কথা। মেসোপটেমীয় ৪ টি সভ্যতার অবস্থান ছিল দজলা ও ফোরাত নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলে। আলেকজান্ডার এই অঞ্চলের নাম দেন ‘মেসোপটেমিয়া’ অর্থাৎ দুই নদীর মধ্যবর্তী জায়গা। মেসোপটেমীয় সভ্যতাগুলো হল-বেশ কিছু বিচ্ছিন্ন শহর নিয়ে গড়ে ওঠা সর্বপ্রাচীন সুমেরীয় সভ্যতা, প্রাচীন ব্যাবিলন নগরীকে কেন্দ্র করে গড়ে ওটা আমোরীয়দের প্রাচীন ব্যাবিলনীয় সভ্যতা, নিনেভা শহরকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা অ্যাসিরীয় সভ্যতা এবং নতুন ব্যাবিলন নগরীকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা ক্যালদীয় সভ্যতা। মেসোপটোমীয় সভ্যতাগুলোর পরে আসে আর্য পারস্য সভ্যতা। তখনও পর্যন্ত দুনিয়ার আর কোথাও এত জমজমাট সভ্যতার দেখা পাওয়া যায় না।

এর বাইরে সিন্ধু ও চৈনিক সভ্যতা ছাড়া এশিয়ার আর কোথাও উল্লেখযোগ্য কোন নগর সভ্যতা গড়ে ওঠেনি। সিন্ধু সভ্যতাও বহু আগে খ্রিস্টপূর্বে ৩২৫০ থেকে ২৭৫০ সালের মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। কোন এক অজানা কারণে এশিয়ার অনেক অঞ্চলে তখনও সভ্যতার আলো পৌঁছায় নি। তবুও এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে গড়ে ওঠা সভ্যতাগুলোই ছিল পৃথিবীর সেরা সভ্যতা।

অন্যদিকে আফ্রিকা ও ইউরোপের সামান্য জায়গা ছাড়া বাকী পুরোটাই ছিল ঘোর অন্ধকারে ঢাকা। আফ্রিকার মিসর ছাড়া বাকী পুরো মহাদেশটাই ছিল অন্ধকারে। এ সময় সভ্যতায় সবচেয়ে পিছিয়ে ছিল ইউরোপ। গোটা ইউরোপ জুড়ে তখন অন্ধকারের রাজত্ব। ইউরোপের মূল ভূখন্ডে তখন ঘুরে বেড়াচ্ছে যাযাবর টিউটন জাতির লোকেরা। আর্যদের আগমনের পূর্ব পর্যন্ত ইউরোপের কোন ইতিহাস নেই। কারণ আদিম জীবনের তেমন কোন ইতিহাস থাকে না।



ইউরোপের মূল ভূখন্ডে সভ্যতার সূচনা ঘটায় এশিয়া মাইনর থেকে আসা আর্যরা। ‘আর্য’ বলতে এখন আর জাতি বোঝায় না। বরং ছাড়াছাড়ি হওয়ার আগে এশিয়া মাইনরের উত্তরের অধিবাসীরা যে ভাষায় কথা বলত, সেই ভাষাটিকে ‘আর্য’ ভাষা বললে বেশি সঠিক বলা হয়। জাতিসত্ত্বার ভিত্তি হল স্বাধীন ভূখন্ডে স্থায়ীভাবে বসবাস। আর্যরা ছিল মেষপালক ও যাযাবর প্রকৃতির। সম্ভবত খাদ্যাভাবের ফলে তারা ৩৪০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে, যা চলতে থাকে পরবর্তী ২০০০ বছর ধরে। ২০০০ থেকে ১৮০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে তারা এশিয়ার ভারত, মধ্যপ্রাচ্যের পারস্য অর্থাৎ ইরান, এশিয়া মাইনরের পশ্চিম অংশ তুরষ্ক এবং ইউরোপের দক্ষিণে গ্রিস ও ইতালিতে বসতি গড়ে তোলে। ছাড়াছাড়ি হবার পর এই দলগুলো আলাদা আলাদা এক একটা জাতি হিসেবে গড়ে উঠেছিল। প্রত্যেকের আলাদা আলাদা ভাষাও তৈরি হয়েছিল-সংস্কৃত, ফারসি, হিট্টীয় ভাষা, গ্রিক আর ল্যাটিন। ছাড়াছাড়ি হবার আগে পর্যন্ত এরা সকলেই যে একই ভাষায় কথা বলত, তা এই কটি প্রাচীন ভাষার অনেক মিল দেখে বোঝা যায়। পৃথিবীর সকল ভাষায় মূল উৎস যে ৭টি ভাষা বংশ চিহ্নিত করা হয়েছে তার অন্যতম হল আর্যদের ভাষা এ ভাষার নাম ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা।

আর্যদের যে শাখাটি ইউরোপের দক্ষিণে গিয়ে পৌঁছেছিল তাদের বংশধররাই একসময় গড়ে তোলেছিল গ্রিক ও রোমান সভ্যতা ও এরও আগে গড়ে তোলে মাইসেনীয় সভ্যতা। এ সময় ইউরোপের অন্ধকার ইতিহাস বাঁক নিল আলোর দিকে। মিশরীয় ও সুমেরীয় সভ্যতার সূচনার কয়েক হাজার বছর পরে গড়ে ওঠে গ্রিক ও রোমান সভ্যতা। আর্যদের একটি শাখা যখন এভাবে ইউরোপকে নিয়ে চলেছে, ইতিহাসের পথে, তখন আর্যদের আরেকটি শাখা মেসোপটেমীয় সভ্যতার অবসান ঘটিয়ে গড়ে তোলেছে বিশাল পারস্য সাম্রাজ্য।

গ্রিক সভ্যতার উত্থানের সময় মধ্যপ্রাচ্যের পারস্য সভ্যতা ছিল শক্তিতে দুনিয়ার সেরা। ৫৩৮ খ্রিস্টপুর্বাব্দে পারস্য সম্রাট সাইরাস এ শক্তিশালী সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন। পারস্য সাম্রাজ্য ছড়িয়ে পড়েছিল মিসর থেকে শুরু করে ভারতবর্ষের সিন্ধু নদ পর্যন্ত। এর আগে এত বড় সাম্রাজ্যের অস্তিত্ব পৃথিবীতে আর দেখা যায় না। গ্রিকদের সাথে পরাসীয়দের সম্পর্ক মধুর হয় নি। পরষ্পরের সাথে তারা যুদ্ধে জড়িয়েছে বারবার। এ যুদ্ধে অবিশ্বাস্য ভাবে প্রত্যেকবারই পারসীয়রা হেরে গিয়েছে গ্রিকদের কাছে, বিপুল সেন্যশক্তি থাকা সত্ত্বেও। পারসীয়দের এ পরাজয় গ্রিকদের উত্থানের পথ সুগম করে। পারস্য সভ্যতাকে ফেলে গ্রিক সভ্যতা পৌছে যায় সভ্য দুনিয়ার শীর্ষে। খ্রিস্টপুর্বে ৪৮০ থেকে ৪৩০ সাল পর্যন্ত এই দীর্ঘ ৫০ বছর গ্রিকরা সভ্যতায় দুনিয়ার শীর্ষে থাকলেও তাদের প্রতিপক্ষ পারসীয়দের সাথে আর কোন যুদ্ধে জড়ায় নি।

গ্রিক সভ্যতার পুর্বে অবশ্য ইউরোপ এশিয়ার মধ্যবর্তী ইজিয়ান সাগরকে ঘিরে গড়ে উঠেছিল আরেকটি ইউরো-এশিয়া সভ্যতা। এর নাম ইজিয়ান সভ্যতা। এ সভ্যতা ছিল দুটি অংশে বিভক্ত। একটি ছিল ইজিয়ান সাগরের দ্বীপমালা ও তুরষ্কের উপক’ল এলাকা নিয়ে গড়ে ওঠা মিনীয় সভ্যতা এবং অপরটি ছিল গ্রিসের উপকূলবর্তী মাইসেনিয়া শহরকে কেন্দ্র করে বিকশিত মাইসেনীয় সভ্যতা।

ইজিয়ান সাগরের প্রশস্ত দ্বীপ-‘ক্রীট’ দ্বীপকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল মিনীয় সভ্যতা। ক্রীট দ্বীপের ‘নসাস’ শহর ছিল মিনীয় সভ্যতার মূল কেন্দ্র। শহরটি ছিল সাগর থেকে ৩ মাইল ভেতরে। দেয়াল ঘেরা এই শহরে ছিল চমৎকার সব প্রসাদ। ক্রীটের ভৌগলিক অবস্থা ছিল বানিজ্যের জন্য অনুকূল। আবার পাহাড় আর সাগরের বেষ্টনী বিদেশী আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিল। ধারণা করা হয় একটি কৃষক সম্প্রদায় ৪০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে প্রথম ক্রীটে বসতি গড়ে তোলে। শহর সমূহ গড়ে ওঠে ৩০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে, অর্থাৎ মিশরীয় ও সুমেরীয়দের প্রাচীন শহরগুলোর সমসাময়িক ছিল সেগুলো। ক্রীটের রাজাদের উপাধি ছিল ‘মিনস’ আর এ থেকেই তাদের রাজ্যের নাম হয় মিনীয় রাজ্য। মিনীয়দের যেসব লেখা পাওয়া গেছে, তা আজও পাঠোদ্ধার করা সম্ভব হয় নি। সেসব লিখন পদ্ধতি পাঠোদ্ধারের বাইরে রয়ে গেছে তার মধ্যে অন্যতম হল এইসব মিনীয় লিপি। ক্রীটবাসীদের বাণিজ্যপোত যাতায়াত করত মিসর এবং পূর্ব ও পশ্চিম ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে।

অন্যদিকে ইজিয়ান সভ্যতার অন্য অংশটি গড়ে তোলে ইউরোপে আসা প্রথম দিকের আর্যভাষীরা। মিনীয়দের সংস্পর্শে আসা এই আর্যরা গ্রিসের উপকূলীয় শহর মাইসেনিয়াকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলে মিনীয় প্রভাব সমৃদ্ধ এই সভ্যতা। এটাই ইউরোপর মূল ভূখন্ডের সর্বপ্রাচীন সভ্যতা। যা ছিল আর্যদের অবদান।

আর্যভাষীদের সাথে সভ্যতার ইতিহাস ইহুদিদের মতই ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গিয়েছে। তবে ইতিহাসে তাদের ভূমিকা ইহুদিদের মত পরাধীনতা সর্বস্ব নয়, বরং তৎকালীন পৃথিবীর বিশাল আকারের সভ্যতাগুলো গড়ে তোলেছিল তারাই। প্রকট দখলদারি চরিত্র থাকার কারণে তারা অনেক দেশ দখল করে নিতে পেরেছিল। ভারতবর্ষে আসা আর্যদের রচিত রামায়ন, মহাভারতে তাদের এই চরিত্রটিই প্রকটভাবে ফুটে উঠেছে। রামায়নে যে লঙ্কার রাখা রাবনের উল্লেখ রয়েছে। তিনি ছিলেন এ ভূখন্ডের প্রকৃত অধিবাসী এবং সেই সাথে বলা যায় ভূখন্ডের স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধের সবচেয়ে পুরনো বীর। আধিপত্যবাদী রামের দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রাণ দেওয়া এই অনার্য বীরকে আর্যরা তাদের রামায়নে রাক্ষস বলে চিহ্নিত করেছে। স্বাধীনতাকামী অনার্যদের তারা রাক্ষস-খোক্ষস অভিধায় ভূষিত করেছে। সেভাবে সন্ত্রাসী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন তৃতীয় বিশ্বের বীরদেরকে সন্ত্রাসী অভিধায় চিহ্নিত করে থাকে। ভারতে আসা আর্যদের সাথে এখানকার অনার্যদের রক্তের সংমিশ্রণের ফলে বাঙালী জাতির মত বহু মিশ্র জাতির সৃষ্টি হয়েছে। সংমিশ্রণ ঘটেনি এমন জাতিও রয়েছে যেমন- তামিল, দ্রাবিড় ইত্যাদি।

এখানকার আর্যদের রচিত রামায়ন মহাভারতের সাথে গ্রিসের আর্যদের রচিত ইলিয়াড ওডিসির দারুন মিল দেখা যায়। রামায়নের গীতা ছিলেন দেবতার স্ত্রী আর ইলিয়াড-ওডিসির হেলেন ছিলেন দেবরাজ জিউসের জারজ কন্যা। উভয়েই অপহৃত ও মুক্ত হয়েছিলেন দীর্ঘ যুদ্ধের মধ্য দিয়ে। এভাবে দুনিয়া জুড়ে বিস্তৃত রয়েছে আর্যদের কীর্তির কথা।



কাস্পিয়ান সাগর সংলগ্ন এশিয়া মাইনরের উত্তরের তৃণভূমি এলাকা ছিল আর্যদের আদি নিবাস। ভাষার দিক থেকে তারা ছিল ইন্দো ইউরোপীয় ভাষাভাষী। সংখ্যায় বেড়ে গেলে একসময় তারা ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে পৃথিবীর বিভিন্ন দিকে। একটি শাখা দক্ষিণ পুর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে এসে পৌঁছায় ভারতে। একটি শাখা দক্ষিণ পশ্চিমে অগ্রসর হয়ে ইরান অঞ্চলে বসতি গড়ে তোলে। এদের মধ্য দিয়েই বিকাশ লাভ করে পারস্য সভ্যতা। আরেকটি শাখা দনিয়ুব নদী অতিক্রম করে ২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে বলকান উপদ্বীপে এসে পৌঁছায়। এরাই গ্রিক-রোমান জাতির পূর্বপুরুষ। ১৯০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে ইন্দো ইউরোপীয় ভাষাভাষী এই জনগোষ্ঠী গ্রিসের মূল ভূখন্ডে বসতি গড়ে তোলে। এই অঞ্চলের সাথে মিনীয়দের বাণিজ্যিক সম্পর্কে ছিল। ক্রমে এখানে মিনীয় সংস্কৃতি প্রবেশ করতে থাকে। মাইসেনিয়া শহর ছিল এই সংস্কৃতি বিকাশের কেন্দ্র। তাই এই অঞ্চলে গড়ে ওঠা সংস্কৃতি মাইসেনীয় সংস্কৃতি নামে পরিচিত হয় ।

মাইসেনিয়াতে ইজিয়ান সংস্কৃতি উন্নতির চরমে পৌঁছে ১৫০০ থেকে ১০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে। মিসর, ক্রীট, সাইপ্রাস ও উত্তরের বিভিন্ন নগরের সাথে মাইসেনিয়ার বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল। এক সময় ইজিয়ান সভ্যতারও অবসান ঘটে। আর্যদের অন্য একটি শাখা ডোরীয় ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাভাষী এক আক্রমণকারি গোষ্ঠি উত্তর দিক থেকে এগিয়ে আসে মাইসেনিয়ায়। ১২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে সমগ্র ইজিয়ান অঞ্চল এদের অধিকারে চলে যায়।

ইজিয়ান অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাভাষী আর্যরা বিভিন্ন নামে পরিচিত ছিল। যেমন-এচীয়, আইওলীয়, ইওলীয় এবং ডোরীয়। ১১৫০ থেকে ১০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে সমগ্র গ্রিস চলে যায় ডোরীয়দের দখলে। এই ডোরীয়রে সাথে মিশ্রণ ঘটেছিল ইজিয়ান আর্যদের। ফলে একটি শক্তিশালী জাতির উদ্ভব হয়। গ্রিস জুড়ে তারা ক্রমে একটি নতুন সভ্যতা গড়ে তোলতে শুরু করে। এ সভ্যতার একটি বিশেষত্ব ছিল। তা হল, এটি কোন নদীতীরে গড়ে ওঠেনি। তখন পর্যন্ত সবগুলো সভ্যতাই নদীতীর বা সমুদ্রতীরে গড়ে উঠতে দেখা গেছে। গ্রিক সভ্যতাই প্রথম, যা ভূখন্ডের গভীরে গড়ে উঠেছে পাহাড়ী এলাকার কাছে।

ভৌগলিকভাবে গ্রিস দেশটা ছিল কিছুটা ভিন্ন। খাড়া খাড়া পাহাড়ের কারণে দেশটি ছিল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অঞ্চলে বিভক্ত। ফলে জন্ম হয় অনেকগুলো নগর রাষ্ট্রের। ১১০০ থেকে ৭৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত সময়কালে গ্রিসের ইতিহাসের তেমন কোন উপাদান খুঁজে পাওয়া যায় না। একমাত্র হোমারের ইলিয়াড ও ওডিসিতে এ সময়ের কথা কাহিনীর চিত্র খুঁজে পাওয়া যায়। এসব কাহিনীতে দেখা যায় দেবদেবী আর মানুষে মাখামাখি সম্পর্ক। সেমেটিকদের মতো সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার অনুশাসন মেনে চলার কোন ব্যাপার তাদের মাঝে ছিল না। ইলিয়াড ও ওডিসিতে রামায়ন-মহাভারতের মতই প্রচলিত সামাজিক ধর্মের চেহারা ফুটে উঠেছে। গ্রিকদের সেই ধর্ম বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ায় ইলিয়াড ও ওডিসি এখন আর ধর্মগ্রন্থের মর্যাদা পায় না বরং সাহিত্যের মর্যাদা পায়। অন্যদিকে রামায়ন-মহাভারত এখনও সনাতন ধর্মের অনুসারিদের কাছে ধর্মীয়ভাবে পাঠ্য ।

ইলিয়াড-ওডিসি এবং রামায়ন-মহাভারতের দেবদেবীর ধারণা এত কাছাকাছি যে, দুই অঞ্চলের ধর্ম আলাদা দুটি ধর্ম নাকি একই ধর্ম তা নিরূপণ করা মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়। এমনকি সিরিয়ার উত্তরের আর্যদের আরেকটি গোষ্ঠী মিতানীদের ধর্মবিশ্বাসেও ভারতীয় বৈদিক দেব-দেবীর অস্তিত্ব দেখা যায়। তুরস্কের বোগাজকুই নামক জায়গায় প্রত্নতাত্ত্বিক খননের ফলে আর্যভাষী মিতানীদের সম্বন্ধে যেসব তথ্য পাওয়া যায় তাতে দেখা যায় ইন্দ্র, বরুণ, মিত্র প্রভৃতি বৈদিক দেবতারা মিতানীদেরও দেবতা ছিল। তবে এসব দেব-দেবীর ধর্মের চেয়ে পৃথিবীতে এক সর্বশক্তিমান স্রষ্টায় বিশ্বাসী ধর্মের ধারাসমূহ নিরংকুশভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে।

একত্ববাদী সেমেটিক ধর্মের ধারায় উদ্ভুত খ্রিস্টধর্মের তোড়ে গ্রিক ও রোমান দেব-দেবীরা ভেসে গেছে ইতিহাসের বিস্তৃতির আড়ালে। আর একত্ববাদী ধারায় সবচেয়ে র‌্যাডিকেল ধর্মমত ইসলামে প্রবেশ করেছে ভারতীয় আর্যদের হাতে নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার অনার্য শুদ্র সম্প্রদায়ের মানুষ। আর্য ধর্মীয় ধারায় অবশ্য ভারতবর্ষীয়দের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এখনও টিকে আছে। এখনও আর্য ব্রাহ্মণরা মন্ত্র পাঠ করে আর্যভাষার অন্যতম নির্দশন সংস্কৃত ভাষায়।

অন্যদিকে ইরানী তথা পারসীয় আর্যরা প্রথমে জরথ্রুস্তবাদ ও পরে ইসলামে প্রবেশ করে। এর আগেও পারসীয়দের দেখা যায় একেশ্বরবাদী ইহুদিদের পৃষ্ঠপোষকতায়। পারস্য সম্রাটদের বিপুল অর্থ বিত্ত সহকারে ইহুদি ধর্মের পেছনে পৃষ্টপোষকতার কথা, ওল্ড টেস্টামেন্টার ইষ্রার পুস্তকে সবিস্তারে বর্ণিত হয়েছে। তবে এই পৃষ্টপোষকতা ইহুদি আচার্য ইষ্রাকে শোষিত মানুষের প্রতিনিধিত্বকারি একত্ববাদী ধর্মের মূল চেতনা থেকে বিপথে নিয়ে যায়। নিজের যাজকতন্ত্রের ক্ষমতাকে নিরংকুশভাবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ধর্মকে তিনি বানিয়েছিলেন শোষণের হাতিয়ার, যা তাকে ঠেলে দেয় ইহুদি জাতির উপর বিশুদ্ধতার অনুশাসন চাপানোর দিকে। আর এ কাজের বৈধতা প্রমাণের জন্য তিনি ব্যবহার করেছিলেন নিজের বানানো অবৈধ দৈব বিধানের যুক্তি। ধর্মকে শোষণের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবৈধ ও বানোয়াট দৈব বিধান প্রবর্তনের এই পর্বটিতে এসে ভারতীয় আর্যভাষীদের সাথে হিব্রুভাষীদের দারুন মিল দেখা যায় । প্রাচীন মানুষের ভিন্ন দুটি ঐতিহাসিক ধারা হিব্রুভাষী ও ভারতীয় আর্যভাষীদের মধ্য থেকে উদ্ভুত বর্ণবাদের দুটি আলাদা ধারা যায়নবাদ ও ব্রাহ্মণ্যবাদ প্রকৃতিতে অভিন্ন। ইতিহাসের এই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের শেকড় অনুসন্ধানের পরে আমরা আবার ফিরে যাব আর্য ইতিহাসের সবচেয়ে সুদৃষ্টান্ত, গ্রিক সভ্যতার কথায়।

প্রাচীন জীবন ও অর্থনীতিতে শ্রেণি বিভাজনের ব্যাপারটি খুবই স্পষ্ট। সমাজের একদিকে অপ্রয়োজনীয় ফুর্তি বিলাসের বিপুল আয়োজন আর অন্যদিকে এসবের মূল্য দিচ্ছে শ্রমজীবী দাস, কারিগর ও প্রজাসাধারণ। যে ক্রীতদাস ও প্রজাদের শ্রমের সুফল ভোগ করে মালিক ও বড়লোকদের এত বিলাসিতা, সেই ক্রীতদাস ও প্রজারা প্রতিদানে পেত বড়লোকের চাবুকের ঘা, নিষ্ঠুর অত্যাচার ও দুঃখ দারিদ্র পীড়িত মানবেতর জীবন। এ অবস্থাটা বজায় রাখার জন্য সুবিধাভোগী বড়লোক শ্রেণির হাতে যেসব শক্তিশালী অস্ত্র ছিল তার অন্যতম হল তাদের স্বরচিত ধর্ম। সেই সব ধর্মে দেখা যায় খড়গহস্ত দেবী আর বল্লমধারী দেবতাদের ছড়াছড়ি। শোষণের ওপর গড়ে ওটা সমাজ ব্যবস্থাটাকে এসব দেব-দেবীরা পাহারা দিতেন। বড়লোকদের সাথে শোষণের অংশীদার ধর্ম যাজক ও পুরহিতকুল শোষণে জর্জরিত মানুষদের বোঝাত, তাদের দুর্গতির মূল হল দৈব বিধানের প্রতি অশ্রদ্ধা, পূর্বজন্মের পাপ ইত্যাদি। সমাজবিধির লংঘন কিংবা বিদ্রোহের শাস্তি হিসাবে দেখানো হত দেব-দেবীর বল্লমের ভয়, অভিশাপের ভয়। এ ভয়ে জবুর্থবু হয়ে থাকত শোষিত মানুষ। তাই মনমত দৈববিধান প্রবর্তনে কোন অসুবিধা ছিল না।

গ্রিক দেব-দেবীরা যেভাবে সাহিত্যের চরিত্র হয়ে উঠেছেন তার বিপরীতে ভারতীয় দেব-দেবীরা হয়ে উঠেছেন শোষণের পাহারাদার। প্রাচীন ভারতের আর্য ধর্মের শোষণ ও বর্বরতার প্রতীক হলে ওঠার পর্বটি শুরু হয় মনুর বিধানের মধ্য দিয়ে। ইহুদি আচার্য ইষ্রার জাতিগত শ্রেষ্ঠত্ব ও বিশুদ্ধতার বিধানের আর্য সংস্করণ যিনি নিয়ে এলেন তার নাম মনু। ভারতীয় আর্য ব্রাহ্মণ ও ক্ষত্রিয় রাজ-রাজড়াদের শোষণের দৈব অধিকার প্রতিষ্টায় তিনি সবচেয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। আর্য রক্তের বিশুদ্ধতা ও শ্রেষ্ঠত্ব রক্ষার জন্য তিনি ফিরিয়ে আনলেন বেদের বর্ণবাদী অনুশাসন। এ অনুশাসন পালনে কঠোরতা আরোপ করতে গিয়ে তিনি যে সংহিতা রচনা করলেন তার নাম মনুসংহিতা। কি আছে সেই মনুসংহিতায়? যা আছে তা শুনলে আতংকে রক্ত হিম হয়ে যায়। অকল্পনীয় নিষ্ঠুরতায় অনার্যদের জন্য একটি নরকতুল্য পৃথিবী সৃষ্টি করলেন মনু তাঁর এই মনুসংহিতায়। তাদেরকে বানালেন আর্যদের ক্রীতদাস, অস্পৃশ্য ও অপবিত্র জীব। এরা হল শুদ্র। অন্যদিকে আর্যদের বানালেন সৃষ্টির প্রভু। এরা হল ব্রাহ্মণ - প্রভুর জাত। এদেরকে স্পর্শ করাও শুদ্রের জন্য মহাপাপ। অন্য দিকে কোন ব্রাহ্মণ যদি নিকৃষ্ট জাত শুদ্রদের কাউকে মেরেও ফেলে তাহলে যে সামান্য পাপ হবে, তা মোচনের জন্য তিন রাত দুধ পান করা বা এক যোজন রাস্তা হাটা অথবা নদী স্নান করাই যথেষ্ট। এছাড়াও বিড়াল, নেউল, কুকুর, গোসাপ, প্যাঁচা বা কাক মেরেও শুদ্র হত্যার প্রায়শ্চিত্ত করা যাবে। (মনুসংহিতা, শ্লোক ১৩১ ও ১৩২)

হাম্মুরাব্বির আইন সংহিতায় নিম্নজাত মুশকেলুমের ওপর উচ্চজাত আওএলুমের যে দৈব শ্রেষ্টত্ব দেওয়া হয়েছে তার সাথে মনুর বিধানের মিল পাওয়া যায়। তবে মনুর বিধান তার চেয়েও অনেক বেশী অন্যায় ও পক্ষপাতদুষ্ট। মনুর কথায় দাসত্বের জন্যই শুদ্রের সৃষ্টি (মনুসংহিতা ৮:৪১৩)। ক্ষুন্ন না হয়ে, প্রসন্নমনে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যদের সেবা করা শুদ্রগণের প্রধান কর্তব্য (মনুসংহিতা ১:৯৯)। শুদ্র নামের এই দাসদের কোন পারিশ্রমিক দিতে হত না। কিন্তু গতর খাটাবার জন্যই তো এদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। তাই মনু বিধান দিলেন-শুদ্রভৃত্যকে উচ্ছিষ্ট অন্ন, জীর্ণ বসন, জীর্ণ শয্যা বা কুটির দান করিবে (মনুসংহিতা ১০:১২৫)। ভারতবর্ষের আদি সন্তান এই শুদ্রদের সম্পদ সৃষ্টির অধিকার ছিল, কিন্তু ভোগের অধিকার ছিল না। ভোগের অধিকার ছিল ছিল মালিকদের (মনুসংহিতা ৮: ৪১৬ এবং ৪১৭)। তিন বর্ণের মানুষদের চেয়ে যাতে শুদ্রদের আলাদাভাবে চেনা যায় সেজন্য প্রতি মাসে তাদের কেশ মুন্ডনের নির্দেশ দিলেন মনু (মনুসংহিতা ৫:১৪০)। এটাই হল মোটামোটিভাবে ভারতীয় ব্রাহ্মণ্যবাদের নৃশংস ও দানবীয় চেহারা।

আধুনিক ভারতের সংবিধান রচয়িতা শুদ্রজাত ড.বি.আর. আম্বেদকর ১৯৪৮ সালে অস্পৃশ্যদের আধুনিক আইনের মারপ্যাঁচে মনুবাদের বেড়াজালে আটকানোর জন্য মহাত্মা গান্ধী কর্তৃক তাদের হরিজন নামে অভিহিত করার ফন্দি ও কৌশলের প্রতিবাদে জানাতে গিয়ে তাঁর The Untouchables: A Thesis on the Orgins of untouchabitity গ্রন্থে বলেন,

"হিন্দু সভ্যতা ......... মানব সভ্যতাকে ক্রীতদাস বানাবার একটি কৌশল। এর যথার্থ নামকরণ হওয়া উচিত ‘কলঙ্ক’। একটি সভ্যতাকে আর কী অভিধায় চিহ্নিত করা যায়, যা সাধারণ মানুষকে ........ যাদের অস্তিত্বকে দেখা হয় সামাজিক মেলামেশা থেকে বাইরের কোন প্রাণী হিসেবে ....... যাদের একটুখানি স্পর্শ অপবিত্র বলে বিবেচিত হয়।"

মনুর পরে ব্রাহ্মণ্যবাদী নিষ্ঠুরতায় যিনি সবচেয়ে বেশী কৃতিত্বের পরিচয় দেন তিনি হলেন শংকরাচার্য। তার আবির্ভাবকাল ৬৭৭-৭২০ খ্রিস্টাব্দ। শশাংকের রাজত্বকালের শেষদিকে ব্রাহ্মণ্যবাদের বিজয় পতাকা উড়িয়ে তিনি কেরালা থেকে বের হলেন ভারতভূমি পরিক্রমণে। তার এই পরিক্রমণ সম্পর্কে তিব্বতীয় বৌদ্ধধর্মীয় পুস্তকে বলা হয়েছে।

"শংকরের আগমণে বৌদ্ধবিহার গুলি কম্পমান হইত এবং ভিক্ষুগণ ছত্রভঙ্গ হইয়া পলায়ন করিত।" - ড. মনিকুন্ত হালদার, বৌদ্ধধর্মের ইতিহাস। পৃষ্টা ৩২৩।

মনুর বিধানে শুদ্ররা অস্পৃশ্য হলেও তবু তো তারা ব্রাহ্মণ্যধর্মের অন্তর্ভূক্ত। কিন্তু বৌদ্ধ? সে তো বর্ণেরই বাইরে। অতএব সে কদাচারী, পাপিষ্ট এবং একদমই পরিত্যাজ্য। তাকে হত্যা করলে পাপ তো হবেই না, বরং দ্বিজ ব্রাহ্মণের অর্জিত হবে পূণ্য। এর মানে হলো যারা ব্রাহ্মণ্য ধর্ম মানে না, তারা কুকুর, সাপ বা বেজীরও অধম। এদেরকে শায়েস্তা করার জন্য মহাব্রাহ্মণ শংকরাচার্য নিখাদ হিংস্রতায় ভারতজুড়ে চালালেন নারকীয় বৌদ্ধ হত্যাযজ্ঞ। ১৮৫ খ্রিস্টপূর্বাদে আর্য ব্রাহ্মণ পুষ্যমিত্র শুঙ্গ যে বৌদ্ধ নিধনযজ্ঞ শুরু করেন তার দানবিক ব্যাপ্তি ঘটিয়ে শংকরাচার্য রাজকীয় সৈন্য সহযোগে হত্যা করলেন অসংখ্য বৌদ্ধধর্মাবলম্বীকে। শংকরাচার্যের আজ্ঞাবহ রাজা সুধন্বা প্রভৃতির মত রাজাদের হত্যার শিকার ৬৪০০০ বৌদ্ধের কথা উদ্ধৃত হয়েছে প্রাচীন শিলালিপিগুলোতে (রাহুল সাংকৃত্যায়ন : ভারতে বৌদ্ধ ধর্মের উত্থান পতন, পৃষ্টা ১২)।

শংকরাচার্য যে রাজ্যে পা রাখতেন সেখানকার বৌদ্ধধর্মীরা প্রাণভয়ে বনেজঙ্গলে গিয়ে আশ্রয় নিতেন। বিরুদ্ধবাদীদের প্রতি তার নিষ্ঠুরতার নমুনা হল, তার নির্দেশে ওদের হাত পা বেঁধে নিক্ষেপ করা হত ফুটন্ত তেলভর্তি কড়াইয়ে। যে বর্ণের ভিত্তিতে আর্য ব্রাহ্মণবাদের এত নিষ্ঠুরতা সেই বর্ণের বিশুদ্ধতার ভিত্তি কতটুকু ছিল? ইহুদি রক্তের বিশুদ্ধতার যায়নবাদী ভিত্তি যেভাবে মুখ থুবড়ে পড়ে ইব্রাহিম-মুসা-দাউদ-সলোমনের পরজাতীয় কন্য বিবাহের ঘটনায়, ঠিক সেভাবেই আর্য ব্রাহ্মণ্যবাদের ভিত্তি খসে পড়ে-খোদ মহাভারতের রচয়িতা ব্যাস দ্বৈপায়নের শুদ্র মায়ের গর্ভে জন্ম নেয়ার ঘটনায় এবং বেদের অন্যতম রচয়িতা ঋষি বশিষ্ঠর বেশ্যা গর্ভজাত হওয়ার ঘটনায় (দীনেশচন্দ্র সেন : বৃহৎ বঙ্গ, প্রথমখন্ড, পৃষ্টা ১২০) ।

ব্যাস দ্বৈপায়ন এবং বশিষ্ঠ দুজনেই ব্রাহ্মণ ধর্মের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যদিও তাদের মধ্যকার সময়ের ব্যবধান অনেক। একজন মহাভারতের রচয়িতা অপরজন বেদের রচয়িতা। দুজনকেই ব্রাহ্মণ্য ধর্মে অত্যন্ত শ্রদ্ধার সংগে বলা হয়-মহর্ষি অর্থাৎ মহা ঋষি। ঋষি নামক এই পরজীবী শ্রেণিটির সৃষ্টি আর্যরা ভারতে আসার ২০০ বছর পরে।

(বাকি অংশ পড়ুন পরবর্তী পোস্টে)

লেখক: আসিফ আযহার
শিক্ষার্থি, ইংরেজি বিভাগ, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ৭:২১

অদ্বিত বলেছেন: দারুণ লিখেছেন।

২| ২৭ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:০৩

পাজল্‌ড ডক বলেছেন: খুব ভাল পোসট, চলুক।

৩| ২৭ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:০৫

কিছু বলার বাকি বলেছেন: ইতিহাস বলার চেষ্টা করছেন যা খুব ভাল লাগছে কিন্তু দয়া করে খেয়াল রাখবেন যেন কোন ভাবেই তা পাঠক সমাজের কাছে কোন ধর্মীয় সুড়সুড়ি মনে না হয়, আর অবশ্যই তথ্য উপাত্ত দিয়ে Justified করবেন ।

৪| ০২ রা আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:৫৪

ইমরান আশফাক বলেছেন: ধারাবাহিকভাবে পড়ে যাচ্ছি, অনেক পরিশ্রম করেছেন আপনি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.