নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইতিহাসের পাঠশালায়

আসিফ আযহার

শিক্ষার্থী, ইংরেজি বিভাগ, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়।

আসিফ আযহার › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইতিহাসের পাঠশালায়: ৭ম অধ্যায়: ইতিহাসের পথে রোম (৪র্থ অংশ)

৩১ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:২৪


ল্যাটিন ভাষার বিখ্যাত কবি ভার্জিল ও হোরেসের আবির্ভাব ঘটেছিল অগাস্টাসের সময়েই। তাই সাহিত্যের ইতিহাসে এই যুগকে অগাস্টীয় যুগ বলা হয়। ভার্জিল ট্রয় যুদ্ধের অন্যতম বীর ইনিয়াসের কাহিনী নিয়ে লিখেছিলেন বিখ্যাত মহাকাব্য-ইনিড। অগাস্টাসের মৃত্যু হয় ১৪ সালে। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে তাঁর শাসনে রোমান সামাজ্য মোটামোটি স্থিতিশীল অবস্থায় পৌছায়। বর্তমান ক্যালেন্ডারের সাল অতিক্রম করছে তাঁর শাসন কাল। এই ক্যালেন্ডারে তাঁর নামে অগাস্ট মাসের নামকরণ হয়েছে। অন্যান্য মাসের নামকরণ করা হয়েছে বিভিন্ন রোমান দেব-দেবীর নাম ও সংখ্যা থেকে। মিসরীয় ক্যালেন্ডার সংস্কার করে আধুনিক বার্ষিক ক্যালেন্ডার প্রবর্তন করেছিলেন জুলিয়াস সিজার। তবে বছর গণনা শুরু হয় আরও কিছু দিন পর থেকে। ১ বছরের ক্যালেন্ডারে ১২ মাসের নাম এসেছে নিম্নোক্ত উৎস থেকে :

জানুয়ারি - রোমান দেবরাজ জুপিটারের স্ত্রী জুনোর নামে।
ফেব্রুয়ারি - পবিত্রতার প্রতীক ফেব্রুয়ারিয়াসের নামে।
মার্চ - যুদ্ধের দেবতা মারসের নামে।
এপ্রিল - ল্যাটিন ভাষায় এপ্রিলাস মানে ফুল-ফুটা। এ মাসে ফুল ফুটত।
মে - প্রধান দেবতা মাইয়াস জুপিটারের নামে।
জুন - জুনিয়াসের নামে।
জুলাই - জুলিয়াস সিজারের নামে।
অগাস্ট - অগাস্টাস সিজারের নামে।

ল্যাটিন ভাষায় সাত, আট, নয় এবং দশকে বলা হয় সেপ্টাম, অক্টো, নভেম এবং ডেসিম। এই শব্দগুলো থেকে বাকি চারটি-মাসের নাম রাখা হয়েছে। গ্রহের নামকরণেও নিম্নরূপ রোমান প্রভাব প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।
মার্কারি (বুধ) - রোমান ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী মার্কারি ছিলেন পণ্যদ্রব্য চুরি-চামারি ও ধাপ্পাবাজির অধিদেবতা এবং দেবতাদের দূত।
ভেনাস (শুক্র) - দেখতে সুন্দর গ্রহটির নাম ভেনাস। ভেনাস ছিলেন সুন্দরের দেবী। দেবীদের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দরী হওয়ায় কিছুটা অহংকারী ও আঁতেল ছিলেন ইনি।
মারস (মঙ্গল) - লাল রঙের গ্রহটির নাম মারস। মারস ছিলেন যুদ্ধের দেবতা।
জুপিটার (বৃহস্পতি)- সবচেয়ে বড় গ্রহ । সবচেয়ে বড় ও প্রধান দেবতা ছিলেন জুপিটার।
স্যাটার্ন (শনি) - রোমান কৃষি দেবতা স্যাটার্ন।
নেপচুন - সমুদ্রের দেবতা , জুপিটারের ভাই।
প্লুটো - জুপিটারর ভাই, পাতালে থাকেন।

অগাস্টাস সিজারের সময়ের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হল নবি যিসাসের জন্ম। খ্রিস্ট ধর্মের গ্রন্থ ইনজিলের বর্ণনা অনুসারে অগাস্টাসের সময়ে ফিলিস্তিন অঞ্চলে কয়েকটি রোমান প্রদেশের কথা জানা যায়। ফিলিস্তিনে দক্ষিণে ছিল ইহুদিয়া ও উত্তরে ছিল গালিল প্রদেশ। গালিল প্রদেশে ১ সালে যিসাসের জন্ম হয়। এ সময়ে এহুদিয়ার রাজা ছিলেন হেরোদ বংশের একজন রাজা। প্রধান বা বড় হেরোদ নামে তিনি পরিচিত। ইনজিলে মোট তিনজন হেরোদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যিসাসের মা মেরির বাড়ি ছিল গালিল প্রদেশের নাসরত গ্রামে। মেরির বিয়ে ঠিক হয়েছিল এহুদিয়া প্রদেশের বেথেলহেম গ্রামের ইউসুফের সাথে। রাজা দাউদের জন্মও নাকি এই গ্রামে হয়েছিল এবং ইউসুফও নাকি দাউদের বংশের লোক ছিলেন। (ইনজিল, লূক: ২: ৪-৬)।

অগাস্টাস সিজারের নির্দেশে রোমান সাম্রাজ্যে তখন আদমশুমারী শুরু হয়েছিল। সিরিয়ার রোমান শাসনকর্তা তখন কুরিনিয়ে। আদমশুমারীতে নিজের নাম উঠানোর জন্য ইউসুফ গালিল থেকে মেরিকে সংগে নিয়ে নিজের গ্রাম বেথেলহেমে যান। সেখানেই জন্ম হয় যিসাসের। তাঁর জন্মের অষ্টম দিনে ইহুদি নিয়মানুযায়ী খতনা করানো হয়েছিল। যিসাস বড় হয়েছিলেন গালিল প্রদেশে তাঁর মায়ের গ্রাম নাসরতে। বড় হয়ে যিসাস এহুদিয়ায় নবি ইয়াহইয়ার কাছে যান। ইয়াহইয়া হোরোদের কাছে বন্দী হওয়ার পরে যিসাস গালিল প্রদেশে চলে যান।

১৪ সালে অগাস্টাস সিজারের মৃত্যুর পর রোমান সাম্রাজ্যের সম্রাট হন টিবেরিয়াস সিজার। তাঁর সময়েই আশা ও আলোর বার্তা নিয়ে হাজির হন নবি যিসাস। তিনি একত্ববাদ প্রচার করতেন। তাঁর বাণীর মাঝে গরিব ও অত্যাচারিত ইহুদিরা জীবন খুজে পেল। অত্যাচারী রোমান শাসনের শেকল চেপে বসেছিল তাঁদের গলায়। দলে দলে তারা যিসাসের অনুসারি হতে লাগল। শোষণের কারাগারে তারা বাঁচার আশা পেল মানুষের প্রতি দয়ালু ও করুণাময় খোদার আশা ও অনুগ্রহের বার্তা শুনে।

প্রায় তিরিশ বছর বয়সে যিসাস তাঁর কাজ শুরু করেন। সমগ্র গালিল প্রদেশের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে তিনি মানুষের কাছে দয়া, মানবতা, ভালবাসা, ও শান্তির বার্তা নিয়ে হাজির হন। তাঁর আহবানে সাঁড়া দিয়েছিল মানুষ। সমস্ত সিরিয়ায় তাঁর কথা ছড়িয়ে পড়ে। শহরে শহরে ও গ্রামে গ্রামে গিয়ে ইহুদিদের সভায় তিনি শিক্ষা প্রচার করতেন। তাঁর সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন বারোজন। গালিল প্রদেশের যিসাসের কথা শুনে এহুদিয়া, জেরুজালেম, ইদোম, জর্ডান নদীর ওপারের অঞ্চল এবং টায়ার ও সিডন শহর থেকে অনেক লোক তাঁর কাছে এসেছিল। শিক্ষা প্রচারের একপর্যায়ে যিসাস তাঁর অনুসারিদের নিয়ে জর্ডান নদীর অন্যপাড়ে এহুদিয়া প্রদেশে যান। তাঁর এ আগমনে ইহুদি ধর্ম ব্যবসায়ী যাজক ও ফরিশীদের টনক নড়ে। জেরুজালেমের ধর্মগৃহে প্রবেশ করে তিনি বলে ওঠেন, ‘‘পাক-কিতাবে আল্লাহ বলেছেন, আমার ঘরকে এবাদতের ঘর বলা হবে, কিন্তু তোমরা এটাকে ডাকাতের আড্ডাখানা করে তুলেছ’’ (ইনজিল: মথি: ২১:১৩)।

শাসক পূজারি রোমান ধর্মের স্থলে রোমের প্রজাদের কাছে একত্ববাদী ধর্ম অনেক ভাল বিকল্প ছিল। গালিলের রোমান শাসনকর্তা হেরোদ কিন্তু এ ধর্মকে ভাল চোখে দেখে নি। এ ধর্মের প্রতি তাঁর একটি আচরণের নমুনা দেয়া যাক। যিসাসের সমসাময়িক নবী ছিলেন ইয়াইইয়া। হেরোদ তাঁর জন্মদিনে পরকীয়া স্ত্রী ও প্রেমিকার কাছে জানতে চেয়েছিলেন সে কী উপহার পেলে খুশী হবে। উত্তরে সে জানাল নবী ইয়াহইয়ার খন্ডিত মাথা। নবী ইয়াহইয়া তখন হোরোদের কারাগারে বন্দী । হেরোদ সত্যি সত্যিই জেলখানার মধ্যে ইয়াহইয়ার মাথা কাটিয়ে সেটা এনে থালায় করে তাঁর প্রেমিকাকে সামনে উপস্থাপন করেছিল। (ইনজিল: মথি:১৪)

বাহ্যিকভাবে এ ধর্ম বিদ্রোহী বা বিপ্লবী ছিল না। কিন্তু মূলত তা এমন বার্তা প্রচার করছিল যা শাসক ও ধর্ম ব্যবসায়ী উভয় শ্রেণির জন্য ভবিষ্যতে বিপদের কারণ হয়ে ওঠার যথেষ্ট সম্ভাবনা ছিল। তাই তারা এই ধর্মের ব্যাপারে শংকিত হয়ে ওঠে। ইহুদি ধর্ম কিংবা ইহুদি ধর্ম যাজকদের নিয়ে রোমান শাসকদের কোন মাথাব্যাথা ছিল না। কারণ এরা ভন্ড ধর্ম ব্যবসায়ীতে পরিণত হয়ে গিয়েছিল বহু আগেই। আর এই চরিত্রের সবচেয়ে বড় গুণটি অর্থাৎ শাসকের পাঁ চাটা দালাল হওয়ার গুণটি তাদের মধ্যে পূর্ণ মাত্রায় ছিল। নবি যিসাসের ভাষায় জেরুজালেমের ধর্ম গৃহকে তারা ডকাতের আড্ডাখানায় পরিণত করেছিল। এটি ছিল তাদের ধর্ম ব্যবসার প্রাণকেন্দ্র। নবী যিসাসের ধর্মমত সর্বপ্রথম তাদের জন্যই বিপদের সবচেয়ে বড় কারণ হয়ে দেখা দেয়। মুসার বাণীকে বিকৃত করে যে ধর্ম ব্যবসায়ী শাসক ভজা ইহুদি যাজকতন্ত্রের জন্ম হয় তা সবচেয়ে বেশী ধর্মীয় চ্যালেঞ্চের সম্মুখীন হয় যিসাসের মাধ্যমে। তাই নতুন ধর্মের বিরোধীতায় তারা উঠে পড়ে লেগে যায়। এদের সম্পর্কে যিসাস বলেন, “ভন্ড নবিদের বিষয়ে সাবধান হও। তারা তোমাদের কাছে ভেড়ার চেহারায় আসে, অথচ ভিতরে তারা রাক্ষুসে নেকড়ে বাঘের মত” -(ইনজিল : মথি: ৭: ১৫)।

গোঁড়া ইহুদি অর্থাৎ ফরীশীরা সব সময়ে যিসাসের পেছনে লেগে থাকত এবং তাকে কথার ফাঁদে আটকানোর চেষ্টা করত। ইনজিলের বর্ণনা অনুসারে এই ফরীশীদেরকে নবি ইয়াহইয়া বিষাক্ত সাপের প্রজাতি’ বলে সম্বোধন করেছিলেন। এরা ছিল বক ধার্মিক। আচার সর্বস্ব ধর্ম পালন করত। ধর্মের বাইরে দিকটা অর্থাৎ আচার-প্রথা খুব মেনে চলত। কিন্তু মানুষের দুঃখ দুর্দশায় তারা ভাবিত হত না। বিপন্ন মানুষের মুক্তির জন্য এগিয়ে যাবার ব্যাপারে তাদের কোন উৎসাহ ছিল না। এদের উদ্দেশ্যে যিসাস বলেন, “ভন্ড আলেম ও ফরীশীরা, ঘৃণ্য আপনারা; আপনারা পুদিনা, মৌরি আর জিরার দশ ভাগের এক ভাগ আল্লাহকে দিয়ে থাকেন; কিন্তু ন্যায়, দয়া এবং বিশ্বস্ততা, যা মূসার বিধানের আরও দরকারি বিষয় তা আপনারা বাদ দিয়েছেন।” -(ইনজিল : মথি: ২৩: ২৩)

ফরীশী ও ইহুদি ধর্ম যাজকরা-যিসাসকে হত্যা করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল। তিনি জেরুজালেমের ধর্ম গৃহে যাতায়াত করতেন এবং সেখানে প্রকাশ্যে তাঁর ধর্ম প্রচার করতেন। সেখানে তাকে কথার ফাঁদে আটকাতে ফরীশীরা ও প্রধান ইহুদি ইমামরা ব্যর্থ হয়। লোকজন যিসাসের কথা শুনত ও তাঁকে সমর্থন করত। উপায়ন্তর না দেখে ইহুদি মহা-ইমাম কাইয়াফার বাড়ীতে প্রধান ইমামেরা ও বৃদ্ধ ইহুদি নেতারা একত্র হয়ে যিসাসকে লোক পাঠিয়ে ধরে এনে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন। রোমান রাষ্ট্রশক্তি তখনও যিসাসের ধর্ম সম্পর্কে তেমন কিছু জানত না। রোমান প্রাদেশিক শাসককর্তারা এটাকে মনে করেছিলেন অন্যান্য নবিদের মতই ইহুদি সমাজের অভ্যন্তরে চলে আসা ধর্ম প্রচারের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার অংশ। তাই তারা যিসাসকে খুব গুরুত্ব দেন নি। এবং হত্যার প্রয়োজন ও মনে করেন নি তখনও পর্যন্ত। কিন্তু ইহুদিরা হত্যা করতে চাইলে তাতে তাদের বাধা দেওয়ারও তেমন কিছু ছিল না। তাই ইহুদি প্রধান ইমাম ও নেতারা নির্ভয়েই সশস্ত্র লোকজনদের পাঠিয়ে যিসাসকে ধরে আনালেন কাইয়াফার বাড়ীতে। যিসাসের অনুসারিদের পক্ষ হতে যাতে কোন বাধা না আসে সেজন্য তারা তাঁকে আইনিভাবে হত্যা করাই সুবিধাজনক মনে করেন।

সেসময় এহুদিয়ার প্রধান রোমান শাসনকর্তা ছিলেন পন্থিয় পিলাত। পরদিন সকালে তারা যিসাসকে পিলাতের কাছে নিয়ে যায়। পিলাত তাঁর অপরাধ জানতে চাইলে ইহুদি প্রধান ইমামরা রাষ্ট্রীয় দালালীর নির্লজ্জ বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে বলল, “আমরা দেখেছি, এই লোকটা সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের লোকদের নিয়ে যাচ্ছে। সে সম্রাটকে খাজনা দিতে নিষেধ করে এবং বলে সে নিজেই মসীহ, একজন বাদশাহ’’ (ইনজিল: লূক:২৩:২)। পিলাত যিসাসকে মৃত্যুদণ্ড দিতে আগ্রহী ছিলেন না। তিনি অভিযোগকারীদের কাছ থেকে জানলেন যিসাস গালিল প্রদেশের লোক। সেখানকার শাসনকর্তা তখন হেরোদ। ঘটনার দিন হেরোদ জেরুজালেমে উপস্থিত ছিলেন , যিসাস গালিল প্রদেশের লোক জেনে পিলাত তাকে হেরোদের কাছে পাঠিয়ে দেন। হেরোদ যিসাসকে অনেক প্রশ্ন করে জবাব না পেয়ে তাঁকে পুনরায় পিলাতের কাছে পাঠিয়ে দেন। পিলাত নির্দোষ যিসাসকে ছেড়ে দেয়ায় অনেক চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইহুদি ইমাম ও নেতাদের চাপের মুখে বাধ্য হয়ে যিসাসকে হত্যার অনুমতি দিয়ে তাদের হাতে তুলে দেন (ইনজিল: লূক: ২৩:২৪-২৫)।

নবী যিসাসের আবির্ভাব শুধু রোমান সামাজ্র্যের ইতিহাসে নয় সমগ্র মানব সভ্যতার ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার মধ্যে একটি । ইহুদিদের মধ্যে নবীদের আবির্ভাব ছিল খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। বলা যায় শত শত বছর ধরে ইহুদি সমাজ কথনও নবিবিহীন অবস্থায় ছিল না। এমনকি একই সময়ে ইহুদিদের সমগ্র অঞ্চলে শতশত নবির উপস্থিতিও ছিল স্বাভাবিক ব্যাপার। নবিরা কোন সাংগঠনিক বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় ধর্ম প্রচার করতেন না । তাঁরা সরাসরি মানুষকে খোদার পথে ডাকতেন। নবিদের কখনও কোন সংগঠন বা নেটওয়ার্ক ছিল বলে শোনা যায় নি। তারা সরাসরি মানুষের দ্বারে দ্বারে উপস্থিত হয়ে ব্যক্তিগতভাবে মানুষকে শ্ক্ষিা দিয়ে বেড়াতেন। তাদের জীবন যাপন ছিল খুবই সাদামাটা ও সরল। এরকমই একজন বৈচিত্রহীন ও সাদামাটা জীবনধারি মানুষ ছিলেন নবি যিসাস। সম্ভবত তিনি কাঠুরে হিসেবে প্রথম জীবনে জীবিকা নির্বাহ করেছিলেন। তাহলে তাঁর মধ্যে কী এমন শক্তি ছিল যে, তিনি মানব সভ্যতার গতিপথকেই দিলেন বদলে ? নবিদের একমাত্র শক্তি ছিল তাদের কথা, তাদের কাজ, তাদের আদর্শ। অধিকাংশ নবিদের আদর্শই ইতিহাসকে খুব বেশি প্রভাবিত করেনি। কিন্তু যিসাসের আদর্শ সমগ্র রোমান সভ্যতার বিবেক ও মূল্যবোধের ভিতকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। এর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটটি বোঝা দরকার।

প্রায় ৫০০ বছরের রোমান প্রজাতন্ত্রের ইতিহাস যেন লাগাতার যুদ্ধ - সংঘাত ও লাগামহীন নৃশংসতার ইতিহাস। বহুমাত্রিক শ্রেণি সংঘর্ষ ও ক্ষমতার দ্বন্দে ভরপুর রোমান প্রজাতন্ত্রের ইতিহাস যেন রক্তের কালিতে লেখা। প্লেবিয়ান-প্যাট্রেসিয়ান সংঘাত , বণিক ও প্যাট্রেসিয়ানদের সংঘাত, কখনও প্যাট্রেসিয়ানদের সাথে বণিক ও প্রলেতারিয়ানদের সংঘাত, আবার কখনও প্রলেতারিয়ানদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ বণিক ও প্যাট্রযিয়ানদের সংঘাত, বিদ্রোহী ক্রীতদাসদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ-প্রলেতারিয়ান, বণিক ও প্যাট্রসিয়ানদের সম্মিলিত যুদ্ধ - এতসব সংঘাত ও সংঘর্ষ পৃথিবীকে এতবেশী রক্তাক্ত করেছিল যে পৃথিবী যেন ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। মানবতা যেন গুমরে কেঁদে মরছিল । সবচেয়ে সস্তা হয়ে পড়েছিল মানুষের রক্ত ও জীবন। স্বার্থের কারণে মানুষের জীবন নেওয়া ও দেওয়া সমাজ জীবনের স্বাভাবিক অংশে পরিণত হয়েছিল।

শ্রেণি সংঘর্ষকে ছাপিয়ে গিয়েছিল সেনানয়কদের ক্ষমতার উচ্চাভিলাষ বাস্তবায়নের জন্য বেঁধে যাওয়া গৃহযুদ্ধ। পম্পেই, জুলিয়াস সিজার, মার্ক এন্টনি, ক্লিওপেট্রা একে একে সকলেই নির্মম পরিণতি বরণ করেছিলেন। নৃশংসতা ও নির্মমতায় ভরপুর রোমান প্রজাতন্ত্রের বিশাল অধ্যায় জুড়ে মহত্ত্ব ও মানবতার কোন ছিটাফোটাও ছিল না। ছিল শুধু ক্ষমতা, অর্থ, ভোগবিলাস, ও শোষণ-লুণ্ঠনের নারকীয় লালসা। কার চেয়ে কে বেশি প্রজাদের শোষণ করবে, কার চেয়ে কে বেশি ক্রীতদাসের মালিক হবে, প্রচন্ড ভোগবাদী জাগতিক স্বার্থ চর্চায় কে কার চেয়ে এগিয়ে যাবে এটা নিয়ে যেন প্রতিযোগিতা লেগে গিয়েছিল। কোন দয়া নেই .মায়া নেই, করুণা-ও সহানুভূতি নেই। সর্বত্রই মানবতার প্রচন্ড হাহাকার । মানুষের প্রতি দয়া বা মানুষের জন্য ত্যাগ ছিল হাস্যকর ধারণা। পৃথিবী
যেন ছিল এক হৃদয়হীন পাষাণপুরী। ক্রীতদাস, প্রজা ও গরীবের জীবন যে কতটা নারকীয় হয়ে উঠেছিল শোষক শ্রেণির ভোগবিলাসের খোরাক যোগাতে গিয়ে - তার খবর কেউ রাখত না।

দাস মালিকদের বিশাল আয়তনের কৃষি খামার ল্যাটিফান্ডিয়ায় সারাদিন পশুর মত খাটত অসংখ্য ক্রীতদাস। যুদ্ধবন্ধীরা হত ক্রীতদাস। এছাড়াও বণিকদের জাহাজ ও কলকারখানায় পশুর মত খাটত ক্রীতদাসেরা। রাষ্ট্রের মালিকানাধীন ক্রীতদাসেরাও দিন রাত বেগার খাটত। প্রজাদের চলাফেরার স্বাধীনতা থাকলেও ক্রীতদাসদের তা ছিল না। তাদের বিয়ে ও সন্তান নেওয়ারও সুযোগ ছিল না। হালের পশুর অবস্থাও তাদের চেয়ে উন্নত ছিল। রোমান সাম্রাজ্য তার ভোগের সমস্ত বোঝা চাপিয়ে দিয়েছিল ক্রীতদাসদের মাথায়। কৃষি উৎপাদনের বেশির ভাগই হত ল্যাটিফান্ডিয়ায়। তাই প্রজা বলতে যারা ছিল তার কৃষি কাজে তেমন একটা থাকত না। বরং সেনাবাহিনীতে কিংবা বেকার অবস্থায় থাকত। উৎপাদনে শ্রমের চাহিদা দাস শোষণ থেকে মিটে যাওয়ায় জমিতে প্রজা বসানোর দরকার পড়ত না। তাই দেশের মানুষের একমাত্র সুযোগ ছিল সেনাবাহিনীতে অংশ নিয়ে পরদেশে দখল কর লুণ্ঠনের বখরা নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করা। পরদেশ দখললেও দাস মালিকদের লাভের ভাগটা থাকত বড়। সেনাবাহিনীর কর্তৃত্ব ও ছিল তাদের হাতে।

সামাজিক সম্পদের আসল অংশটাই দাস মালিকদের হাতে থাকায় প্রজাতন্ত্রের রাজনৈতিক অধিকার প্রজাসাধারনের কোন কাজে লাগেনি। রোমান প্রজাতন্ত্রে কখনোই কৃষকদের জমির অধিকার স্বীকার করা হয়নি। গ্রেকাস ভাইদের আইন ও ভূমি মালিকানা সংকারের প্রস্তাব বাস্তবায়িত হয়নি। গ্রিক গণতন্ত্রেরও একই অবস্থা। এটি ছিল দাস মালিকদের নিজেদের গণতন্ত্র। প্রজাতন্ত্র ও গণতন্ত্র উভয় ব্যবস্থায়ই উৎপাদনের মূল কারিগর ক্রীতদাসকে দ্বীপদী পশু হিসেবে গণ্য করা হত। গ্রিক গণতন্ত্র ও রোমান প্রজাতন্ত্রের ভিত্তিই ছিল দাস শোষণ। পুরনো পৃথিবীর এসব রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ে কি আজকের দিনের মানুষের গর্ব করার কি কিছু থাকতে পারে ? এসব ব্যবস্থা মানুষকে কী দিয়েছে ? শোষণের আর্থ রাজনৈতিক ব্যবস্থার নিরাপদ মডেল ছাড়া ?

ইতিহাসে দেখা যায় টলেমিদের মিসর কিংবা সেলুসিডদের সিরিয়ার রাজতন্ত্রী শোষণ ব্যবস্থা রোমান প্রজাতন্ত্রের চেয়ে কম রক্তপাতময় ছিল। তাহলে গণতন্ত্রই হোক আর প্রজাতন্ত্রই হোক রাজতন্ত্রের সাথে তার তফাৎ ছিল উনিশ আর বিশের তফাৎ। গণতন্ত্র-প্রজাতন্ত্র-রাজতন্ত্র সবই ছিল নিষ্ঠুর মানুষ খেকো সমাজ ব্যবস্থা। এসব ব্যবস্থায় ক্রীতদাসের নিজেকে মানুষ বলে দাবী করাই ছিল অপরাধ। অন্যদিকে গণতন্ত্র প্রজাতন্ত্রের ধারক বাহক-শোষক গোষ্ঠী ও সামন্ততন্ত্রী রাজ-রাজড়া নিজেদেরকে দেবতা বা প্রভু বলে দাবী করত। রক্তপিপাসু শোষকেরা তাদের স্বরচিত ধর্মের ছড়ি ঘোরাত ক্রীতদাস ও প্রজাসাধারণের ওপর।

এসব ধর্মে খোদা ও প্রভুর জায়গায় ছিলেন শাসক নিজেই। মানুষকে শোষণ করা, মানুষকে অত্যাচার করা ও বিকৃত বিলাসিতার বিকারগ্রস্থ রুচি চরিতার্থ করার সমস্ত অধিকার ও বৈধতা শাসক ও শোষক শ্রেণি নিজেদের বানানো ধর্মীয় বিধান থেকে আদায় করে নিতেন। খোদা যা খুশি করতে পারেন। তাকে ঠেকাবার কেউ নেই। অতএব রাজা যেহেতু খোদা বা দেবতা শ্রেণীর লোক তাকে ঠেকাবার কেউ নেই। তাহলে সেই সকল মানুষ যারা ক্রীতদাস, যারা প্রজা, শোষকের তরবারির নিজে যাদের জীবন পরিণত হয় যন্ত্রণাময় বিভীষিকায় তাদের জীবনে এ ধর্ম আরেকটি বিভীষিকা ছাড়া আর কী হতে পারে?

গ্রিকো-রোমান প্যাগান ধর্ম বিশ্বাসীদের ধর্মে শাসকের দৈব ক্ষমতায় বিশ্বাস ও শাসক পূজাই ছিল ধর্মের সবচেয়ে বড় কর্তব্য। মিসরীয় ফারাও ও সেমেটিক রাজাদের খোদা বা দেবতা হিসেবে যেভাবে পূজা করা হত তারই ধারাবাহিকতায় গ্রিকো-রোমান আমলেও শাসক পূজা ধর্ম বিশ্বাসের অংশ ছিল। ৩২৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পর তাঁকে আলেকজান্দ্রিয়ায় সমাহিত করে দেবতার মর্যাদা দেওয়া হয়। ফারাওদের মতই টলেমিদের আমলেও মিসরে শাসক পূজা খুবই ব্যাপকতা লাভ করেছিল। প্রথম টলেমি ও তাঁর রাণী প্রথম বেরেনিসকে ত্রাণকারি দেব-দেবী হিসেবে পূজা করা হত। তাদের মৃত্যুর পরে দ্বিতীয় টলেমি আরও একধাপ এগিয়ে জীবিত অবস্থায়ই রাজা-রাণীকে পূজা করার প্রথা রাষ্ট্রীয় ভাবে প্রচলন করেন। দ্বিতীয় টলেমি ফিলাডেলফাস ও তাঁর রাণী দ্বিতীয় আরসিনো জীবিত অবস্থায়ই দেবতার মর্যাদা আদায় করেছিলেন। এই জঘণ্য প্রজা বিরোধী ধর্ম ব্যবস্থা পরবর্তী রাজা রাণীরাও চালু রেখেছিলেন। এটা চালু ছিল ক্লিওপেট্রার সময় পর্যন্ত। সেই যুগের বিভিন্ন সরকারি দলিল ও আবেদনপত্রে দেখা যায় ক্লিওপেট্রার পিতা দ্বাদশ টলেমি আউলেটসকে ‘আমাদের খোদা ও ত্রাণকর্তা রাজা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ৫২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে আলেকজান্দ্রিয়ার নাগরিকরা আউলেটস ও তাঁর সন্তানদের নামে একটি মন্দির উৎসর্গ করেন। এতে রাণী হওয়ার আগেই ক্লিওপেট্রা দেবী বনে যান।

খ্রিস্টপূর্ব ৪২ সালের ১ জানুয়ারি রোমান সিনেট জুলিয়াস সিজারকে আনুষ্ঠানিকভাবে দেবতা বলে ঘোষনা করে। এরপর অক্টেভিয়ানও নিজেকে ‘দেবতা জুলিয়াসের পুত্র’ বলে ঘোষণা করেন। খ্রিস্টপূর্ব ৪২-৪১ সালের শীতকালে ইফেসাসে (বর্তমান তুরষ্কের পশ্চিমাঞ্চলের সমুদ্র বন্দর) মার্ক এন্টনিকে দেবতার মর্যাদা দেওয়া হয়। ইফেসাসে প্রাপ্ত একটি শিলালিপিতে তাঁকে যুদ্ধের দেবতা মারস ও প্রেমের দেবী ভেনাসের পুত্র এবং মানবজাতির ত্রাণকর্তা বলে উল্লেখ করা হয়। ক্লিওপেট্রা ও এন্টনির বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ককেও দৈব ব্যাপার বলে গণ্য করা হত। মিসরীয়দের বিশ্বাস ছিল ক্লিওপেট্রা ছিলেন আসলে দেবী আইসিসের প্রতিরূপ। দেবী আইসিস ক্লিওপেট্রার রূপ ধরে নাকি পৃথিবীতে এসেছিলেন। মিসরীয়দের বিশ্বাস ছিল রাজারা দেবতা অসিরিসের অবতার। দেবতা অসিরিসের সাথে দেবী আইসিসের বিয়ের নাকি পার্থিব প্রতিফলন ছিল এন্টনি ও ক্লিওপেট্রার সম্পর্ক। খ্রিস্টপূর্ব ২৭ সালে রোমান সিনেট অগাস্টাস সিজারকে ‘অগাস্টাস’ অর্থাৎ ‘পবিত্রব্যক্তি’ উপাধী প্রদান করে। ইতিহাসে তিনি এই নামেই পরিচিত। প্যাগান ধর্মে শেখানো হত শাসকই খোদার প্রতিভূ। আবার খোদা একজন নয়। কয়জন তারও কোন হিসাব নেই। এসব খোদার কাছে গরিবের কোন আশ্রয় নেই। শাসক খোদারা যেভাবে ক্ষমতা নিয়ে গৃহযুদ্ধ বাধিয়ে দিয়েছিলেন তাতে এক খোদা আরেক খোদার হাতে নির্বিচারে মারা পড়ছিলেন।

শাসক পূঁজারি এসব ধর্মের যুক্তি ছিল শোষিতদের সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে। দাসবি্দ্রোহ ছিল ধর্ম-বিরোধী কাজ। দাস-বিদ্রোহ কোন বিদ্রোহী ধর্মীয় অনুপ্রেরণা প্রসূত ছিল না। দাসদের কোন স্বাধীন রাজনৈতিক ব্যবস্থা অর্থাৎ নতুন রাষ্ট্র কাঠামো গঠনের চিন্তাও ছিল না। তাই বিদ্রোহ কখনোই ফলপ্রসু হয় নি। অন্যদিকে প্রাচ্যের নবিদের প্রচারিত একত্ববাদ ধর্মের আদলে রাজদ্রোহের প্রতীক হয়ে উঠেছিল। শোষণের হাতিয়ার শাসক পূজারি ধর্মের বিপরীতে একত্ববাদ হয়ে উঠেছিল শোষিতদের সংগ্রামের হাতিয়ার। ইব্রাহিম ও মুসার রাজদ্রোহ ছিল একত্ববাদী নৈতিকতা প্রসূত। শাসকের দৈব মহত্ত্বকে অস্বীকার করাই এ ধর্মের মূল প্রেরণা। শাসক খোদা নয়, সে শুধু মাত্রই মানুষ। অন্যদিকে ক্রীতদাস পশু নয় সে পূর্ণাঙ্গভাবেই মানুষ - এটা হল একত্ববাদের মূল বিপ্লবী প্রেরণা। শাসক খোদা না হলে খোদা কে?

একত্ববাদ বলে আসল খোদা অদৃশ্য এবং একজন। তাঁর কোন মানবিক দুর্বলতা নেই। তাঁর কাছে শাসক ও শোষিত উভয়কেই কৃতকর্মের জন্য জবাবদিহিতা করতে হবে এবং তাঁর বিধানে তাঁকে ছাড়া অন্য কোন মানুষ, বস্তু কিংবা দেবতার উপাসনা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। যে শাসক দৈব কর্তৃত্ব দাবী করে সে আসল খোদার শত্রু এবং অবাধ্য। খোদা, দেবতা, দেবতাদের অবতার কিংবা প্রতিনিধি বলে যে শাসক নিজেকে দাবি করে সে একত্ববাদের চোখে একজন দুষ্ট প্রাণী। প্রাচ্যের নবিরা এই ধর্মীয় বিশ্বাসে মানুষকে অনুপ্রাণিত করে শাসক পুঁজারি ধর্মের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছেন। এই বিদ্রোহ বারবার রাজনৈতিক বিদ্রোহে রূপ নিয়েছে। আবার বিভিন্ন সময়ে তা পরাজিত ও পরাধীন রাজনৈতিক জীবনে সান্তনা ও বেঁচে থাকার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে।

এই নবি আগমণের ধারাবাহিকতায়ই নবি যিসাসের আবির্ভাব ঘটেছিল। রোমান সামাজ্য তখন গৃহযুদ্ধের সংকট কাটিয়ে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যকে নিয়ে অখন্ড রূপ ধারণ করেছে। এ অখন্ডতা সাম্রাজ্যজুড়ে প্রাচ্যের উন্নত ধর্ম বিস্তারের একটি সুযোগ তৈরি করে। রোমের রাজা এই অখন্ড সাম্রাজ্যের সর্বময় কর্তায় পরিণত হয়েছে। গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত জনজীবনের দেখা দিয়েছে হাহাকার আর স্তবিরতা। প্রবল পরাক্রমশালী নব্য রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিটি বিদ্রোহ শেষ হচ্ছিল ব্যর্থতা ও পরাজয়ের মধ্য দিয়ে। তাই অখন্ড সাম্রাজ্য জুড়ে পরাজিত প্রজাজীবনে সান্তনা ও আশার প্রতীক হিসেবে একত্ববাদী প্রাচ্য ধর্মই যে একটি শক্তিশালী অবলম্বন হিসেবে দেখা দেবে সে সম্ভাবনা তৈরি হয়ে গিয়েছিল।

(পরবর্তী পোস্টে বাকী অংশ পড়ুন)
লেখক: আসিফ আযহার, শিক্ষার্থি, ইংরেজি বিভাগ, শা.বি.প্র.বি.

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:০২

মহান অতন্দ্র বলেছেন: পড়তে হবে তো। প্রিয়তে নিচ্ছি।

২| ০১ লা আগস্ট, ২০১৫ রাত ৩:১৪

সজিব্90 বলেছেন: পরে পড়ব , প্রিয়তে রাখলাম।

৩| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৩

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ ৷

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.