নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গল্প শুনতে ও বলতে ভালবাসি ।
বিছানার এপাশ ওপাশ করতে করতেই কখন যে চোখ দুটো বন্ধ হয়ে এসেছিল বোধ পাইনি আকাশ ।
সচরাচর চারটার আগে ঘুম মহাশয়ের দেখা মেলে না।
আজ যেমন জলদি ঘুম এসেছিল ঠিক তেমনি ঠিক সোয়া চারটা বাজতেই বিধঘুটে সপ্নের আগমন আর সাথে ঘুমের অবসান।
কি সপ্ন দেখেছিল মনে নেই, তবে সপ্নের শেষ অংশে এক ঝাপটায় চোখ ছানাবড়া হয় আগের মতোই ।
ঘুম ভাঙ্গার পর দুটো ব্যাপার খুবই বিরক্ত করছিল আকাশকে।
প্রথমতো সপ্নের কথা মনে না করতে পারা আর দ্বিতীয়তো কম্বলের ফাঁক দিয়ে শিরশির করে বাতাসের অবাধ আনাগোনা ।
কম্বলের ফাঁকটা বন্ধ করে মাথা মুড়ি দিয়ে সপ্নটা মনে করার চেষ্টায় আবারও এপাশ ওপাশ শুরু করে আকাশ সকালের অপেক্ষায়।
সকালের সূর্যের আলো তৃতীয় বিরক্তির কারণ হয়ে উদয় হওয়ার সাথে সাথেই আরও একটা বিরক্তিকর কথা মনেপরে আকাশের-
যে এগারোটায় ডাক্তার ভোভোতোশের চেম্বারে যাওয়ার কথা তার ।
বিরক্তির কারণ দুটি একতো ডাক্তার বাবুর বিরক্তিকর নাম, দুই ডাক্তার বাবুর পদবী সাইকোলজিস্ট মানে পাগলের ডাক্তার।
রাতে ঘুম না আসা, খুব কষ্টকরে দুই একদিন আসলেও বড় জোর এক ঘন্টা তারপর আবারও ঘুম ভেঙ্গে যায় বিধঘুট সপ্নের আগমনে।
বিধঘুট সপ্নের কিছু বৈশিষ্ট্য আছে, রাত ভোর রঙ্গিন থাকলেও সকালে ঘুটঘুটে কালো হয়ে যায়।
সপ্নের মধ্যে নিয়মিত কেউ একজন রোজ আনাগোনা করে, যার আগমন ও প্রস্থানটা দুটোই বিরক্তিকর, অসহ্য রকম বিরক্তিকর।
ঘুমের মধ্যে এভাবেই নিজের মানসিক সমস্যাগুলোর বিশ্লেষণ করছিল আকাশ।
বেশ মনোযোগ দিয়ে শুনছিল ডাক্তার বাবু ।
হঠাৎ কি যেন মনে পড়ায়, নিজেতেই বিড়বিড় করে বলতে শুরু করলো ডিপ্রেশন, এক্সট্রিম ডিপ্রেশন। ইম্পুট এক্সট্রিম ডিপ্রেশন আউটপুট ইনসোমেনিয়া। ইকুয়েশন সিম্পল সিমটাম অব ইনসোমেনিয়া।
ডাক্তার সাহেব কি বলছিলো বুঝছিল না আকাশ কিন্তু তার বিরক্তির খাতায় যুক্ত হয় নতুন একটা বিষয় ডাক্তার সাহেবের টাকলা মাথার নিচে ফোকলা দাঁত সমেত বিচুমকিভুকার হাসিঁ ।
কিছুক্ষন জীবন নিয়ে মোটিভেশনাল স্পিস আর কিছু নতুন ঘুমের ঔষধ, সাথে বিগত তিন বছরের নিয়মিত রুটিন মাফিক চেকআপ শেষে বাড়ির পথে হাঁটা দিতেই আকাশের মনেপরে রিয়া কাচাঁ মরিচ নিতে বলেছিল।
কিন্তু এই রিয়াটা কে? রিয়া নাফিসের আম্মু, নাফিসটা আবার কে রে বাবা?
নাফিস আকাশেরই ছোট ছেলে অনেকক্ষণ হাঁটার পর আবিষ্কার করে আকাশ।
আকাশ-রিয়া তাহলে বাচ্চার নাম নাফিজ হলো কিভাবে? হয়তো নিজেই রাখেছিল কিন্তু কেন? নাফিজ নামটার কারণ খুঁজতে খুঁজতে দুটো লাইন কানে ভেসে আসছিল আকাশের,” বাচ্চার নাম কিন্তু আমার নামের সাথে মিল রেখে রাখবো, ছেলে হলে নাফিস, মেয়ে হলে নাফিজা।”
কোথায় থেকে আসছিল শব্দটা বুঝতে না পেরে এটাও মনের কল্পনা সিদ্ধ গল্পের অংশ ভেবে বিরক্তিকর মুখের ভঙ্গি নিয়ে হাঁটা শুরু করলো আবারও আকাশ।
নিলাদ্রী নামটা বেশ দাগ কাটে বারংবার আকাশের মনে।
গল্পটা শুরু হয় কলেজ জীবনের প্রথম বর্ষের মাঝামাঝি সময়ে, কলেজের বর্তমান ভিপি এবং আগামী ভিপি নির্বাচনের দাপুটে প্রতিনিধি আকাশ সেদিন নির্বাচনি প্রচারণায় বেশ ব্যাস্ত ছিল ।
কলেজের ছাদে দাড়িয়ে ব্যানারগুলোর অবস্থান নির্ধারণ করছিল আকাশ ।
নিচে হঠাৎ চিৎকার শুনে তাড়াহুড়ো করে নিচে নামতেই দেখে এক হুলস্থুল কান্ড ।
তার দলের সৌরভকে ইচ্ছেমতো মারছে কেউ, অন্য সময় হলে মানুষটা কলেজ থেকে ফিরতে পারতো না সুস্থ শরীর নিয়ে ।
কিন্তু একটা মেয়ের এতো সাহস অবাক করে আকাশকে ।
পরে জানতে পারে মেয়েটা সৌরভের প্রাক্তন নাম নিলাদ্রী, বিচ্ছেদের পর তার দেওয়া উপহারগুলো ফেরত না দেওয়ায় এমন করে মারছিল।
কিন্তু এত বছরপর কেনো সৌরভের ততকালীন প্রেমিকার কথা মনে দাগ কাটছে চিন্তা করতে করতেই রিয়ার ধমকে বুঝতে পারে আকাশ আজ আবারও নিশ্চই বাজারে কোন একটা গোজামিল করেছে সে এবং আজ আবারও নিশ্চিত দুপুরের খাবারে হরতাল তার ।
অন্যান্য খণ্ড
©somewhere in net ltd.