![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আপনার অন্তিম পরিণতি আপনার কাজ দ্বারাই নির্ধারিত হয়, তাই এমন কিছু করবেন না যার জন্য ভবিষ্যতে পস্তাতে হয়।আত্মঅনুশোচনা একজনকে ভেতর থেকে শেষ করে দেয়। আর দিনশেষে লোকের কাছে নয় নিজের কাছে ভাল থাকাটাই ফ্যাক্ট।
আমরা বাংলাদেশি , এটিই কিন্তু আমাদের বড় পরিচয় নয়! ! আমাদের আরেকটি পরিচয় আছে , আমরা ভাষার দিক দিয়ে বাঙালি ।
এবং আমরা গর্বিত আমাদের ভাষা পৃথিবীর সপ্তম বৃহত্তম ভাষা , এবং বিশ্বের অন্যতম সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী শব্দ ভান্ডার সম্পন্ন ভাষা । ভাষার জন্য প্রাণ দেওয়া জাতি পৃথিবীতে বিরল , আমরা সেইসব জাতির মধ্যে অন্যতম ।।
কিন্তু মাতৃভাষার জন্য বীর ভাষা সৈনিকদের আত্নত্যাগ কতটুকু সফল ?? আমরা নিজেদের মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষা করতে পেরেছি ??
চলুন ফিরে যাই আদি ও অকৃত্তিম বাংলায় , যে বাংলায় বাংলা ভাষায় রচিত হত নজরুলের বিদ্রোহী , যে বাংলায় রচিত হত রবীন্দ্রনাথের গীতান্জলি । তখন বাংলা ভাষা নিয়ে পড়াশোনা করে জন্মেছেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লা । বিশুদ্ধ বাংলা শেখা ছিল তখনকার সময়ে পড়াশোনার প্রথম পদক্ষেপ ।
আজ নিজের দেশে বাংলা ভাষার অবস্থান দেখলে মাথাটা অটোমেটিক নিচু হয়ে যায় ।। এমন কি যুগ আসল নিজের মায়ের ভাষা রেখে , পরদেশি ভাষা শিখতে হয় ??
আমাদের ছেলে মেয়েদের ছোট থেকেই ইংরেজি শেখানো হয় , প্লে , কেজি ওয়ান , টু তে বাংলার চেয়ে ইংরেজিকেই বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয় । মা বাবারাও বাংলার চেয়ে গট গট করে ইংরেজি বললেই বেশি খুশি হন ।। এভাবেই আমরা নিজের ভাষা রেখে পরের ভাষা আকড়ে ধরে বড় হই ।।
তারপর প্রাইমারি বলেন , কলেজই বলেন সব জায়গাতেই বাংলা বইটা ছাড়া , ইংরেজিরই জয়জয়কার !!
যে ভাষাই বলা হওক না , তা শুদ্ধ করে শেখাটা বড় । বাংলা কিংবা ইংরেজি । তা ও হচ্ছে না ভাষা নিয়ে এত টানাটানির ফলে কোন ভাষাই ভাল করে শেখা হচ্ছে না ।।
বলতে ও লজ্জ্বা করে , আমাদের দেশে ছেলে মেয়েরা সব চেয়ে খারাপ রেজাল্ট করে বাংলাতেই !! এ কি শিক্ষকদের ব্যার্থতা না বাংলা ভাষার প্রতি আমাদের অবহেলার ফল ??
কয়েকদিন পরই তো ফেব্রুয়ারি মাস , ভাষা নিয়ে লাফা লাফি শুরু হয়ে যাবে , সারা বছরে ভাষার প্রতি অপমান , এই মাসে তার উসুল তোলার চেষ্টাই থাকে জাতি ।
শুরু হয়ে যাবে টকশো , ভাষা নিয়ে বিশেয় ক্রোড়পত্র !!
একটা দেশের ভাষাকে সবার সামনে নান্দনিকভাবে উপস্থাপন করত বই , এখন সেই জায়গাটা দখল করেছে মিডিয়া ।।
মিডিয়াতে ও বাংলা ভাষা উপস্থাপনের কি ছিড়ি !! শুধু খবর আর দেশের সবচেয়ে জ্ঞানীগুণী ব্যাক্তিদের মুখ ছাড়া শুদ্ধ বাংলা উচ্চারন শোনাই যায় না ।। আর তথাকথিত ছেলেব্রেটিদের বাংলা উচ্চারনের কথা না বললেই নয় , মিডিয়াতে একেকজন এমন উচ্চারন করে , কি বলব !! না বাংলা না ইংলিশ !!
রেডিওর আরজে বা টিভির উপস্থাপকরাও কম যায় কিসে ! এক লাইন বাক্য বললে ইংরেজি শব্দ থাকবে ৮ টি আর বাংলা ৩-৪টি । ব্যাপারটা এমনি ভয়ানক যে যারা নতুন আসে মিডিয়াতে যেমন রিডওতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তেনাদের মহান উদ্দেশ্য শেয়ার করার জন্য তারা পর্যন্ত এই আধা খিচুড়ি ভাষায় কথা বলেন অথচ উচ্চারন শোনলেই বোঝা যায় জোর করে বলছে । একটা উদাহরন দেই ; , ডিয়ার লিচেনার আজকে আমাদের সাথে আছেন জনপ্রিয় চংগার ,,,,, , আচ্ছা ভাইয়া বলেন আপনার এই স্টেজে আসতে আপনি যে পরিমান পেইন পেয়েছেন লিচেনারদের তার লিটল ডেসক্রিপসন দিবেন পিলিজ !!
~অফ কোর্স , কেন নয় ! টুডে আমার এই সিচুয়েশন সবটাই আমার মা'র কন্ট্রিবিউশন । ইভেন যখন আমি ভেরি পেইন পেতাম ....
আর বলতে ইচ্ছা করছে না , উপরের কথা কাল্পনিক কিন্তু পরিস্থিতি ঠিক এমনি ।।
নিজের প্রয়োজনে ইংরেজি বলা আর ভাষার সৌন্দর্য নষ্টার্থে ইংরেজি বলা এক নয় । একটি বাক্য বললে তার মধ্যে ইংরেজি শব্দ থাকতেই পারে কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের সম্মান বাড়ানোর লক্ষে নিজের ভাষাকে অপমান করার কোন মানেই হয় না ।।
কয়েকদিন পরে দেখবেন এরাই ফেব্রুয়ারি মাসে লম্বা চওড়া স্ট্যাটাস মারছে !
এরপর ফেসবুকে দেখবেন আরেকদল বের হয়েছে , এরা করে কি বড় বড় শব্দ গুলাকে সংক্ষিপ্তকারে লিখে , এটা কি ইচ্ছাকৃতভাবে মজা করা না ইচ্ছাকৃত ভাবে নিজের ভাষাকে অপমান ?? যেমন সুন্দরি কে এনারা লিখেন সুন্দ্রী !! , ফরেন্ডকে লিখে ফ্রান্স !! আমি জানি এইগুলা কোথা থেকে আসে তবে নেহায়েত মজা করার উদ্দেশ্যে এইভাবে লেখা শব্দগুলা যে বাস্তবেও ব্যবহার শুরু হয়ে গেছে !!
এটা কি ভাষার শুদ্ধ চর্চা ??
এতসব বাজে পরিস্থিতির মাঝেও দেশে এখনো শুদ্ধ বাংলার চর্চা হচ্ছে বাংলা ব্লগ গুলোতে , এটা খুবই প্রশংসাজনক । এক্ষেত্রে সামু অগ্রনী ভুমিকা পালন করছে ।।
সময়ের অভাবে বিস্তারিত লিখতে পারলেম না । হয়ত ব্যাকারন খুব ভাল বুঝি না কিন্তু এসবে যে ভাষার সৌন্দর্য রক্ষা হয় না ভালই বুঝি ।।
অন্তত এটা বুঝি এ দেশ আমার , দেশের ভাষা আমার আজ আমি যদি আমার ভাষা রক্ষা না করি , আগামী প্রজন্ম ভুলে যাবে আমার মায়ের ভাষা তার বদলে বিশ্বায়নের নতুন খিচুড়ি ভাষা এর স্থান দখল করবে ।।
নিজের দেশের ভাষা রেখে , পরের দেশের ভাষা নিয়ে টানাটানি করি বলেই , এদেশে কিছু হয় না । তাইতো রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর বলেছিলেন আগে চাই বাংলা ভাষার গাথুনি পরে ইংরেজি ভাষার পত্তন ।।
©somewhere in net ltd.