![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একদিন,হঠাত্ই একদিন বাজার করে বাসায় ফেরার পর কলিংবেল চাপতে গিয়ে জহিরের মনে হলো-আজ নিশ্চয়ই নীরার অনেক কথা শুনতে হবে।কারণ লবঙ্গ নিয়ে আসা হয়নি।অথচ সে ভুলে যাবে বলে নীরা লিস্টে লিখে দিয়েছিল।
বড়মামীর হাতে গতসপ্তাহে নীরা করল্লার আচার বানানো শিখেছে।এই মেয়েটার আজব আজব কর্মকান্ড দেখে মাঝে সাঝে খুবই বিরক্ত হয় জহির।করল্লার আচারের কথা মনে পড়ায় তার মুখে সেদিনের মতো আবার থুথু জমা হলো।থুউউউ...
বাজারের ব্যাগটা নীরার হাতে দিয়েই জহির টেলিভিশনের সামনে বসে পড়লো।এর একমাত্র কারণ নীরার কথায় কান না দেয়া।
...বাজেট অধিবেশনে অর্থমন্ত্রীর অনুপস্হিতির তীব্র নিন্দা জানালেন সুরন্ঞ্জিত সেনগুপ্ত...
খবরটা শুনেই জহিরের মাথায় প্রথম যে কথাটি আসলো সেটা হলো,ডেল কার্নেগীর কোন একটা লেখায় তিনি বলেছিলেন-পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কাজ নিজের দোষ ধরা,আর সবচেয়ে সহজ কাজ হলো অন্যের সমালোচনা করা।...সুরন্ঞ্জিত এই কথাটির বাস্তব উদাহরণ।বেচারা সম্ভবত জানে না যে সমালোচনা করার জন্যও একটা যোগ্যতা থাকতে হয়;যেটা উনার নেই।
অনেকক্ষণ যাবত্ নীরার কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে জহিরের বেশ অবাক লাগলো।সে কৌতুহলী পায়ে রান্নাঘরে উঁকি দিয়ে দেখলো নীরা এখনো বাজারের ব্যাগ খোলেনি।
-কি ব্যাপার চোরের মতো লুকিয়ে কি দেখছো?
কিছুটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে জহির বললো-একটু চা করে দিতে পারবে?
কটু দৃষ্টি নিয়ে একবার শুধু তাকালো নীরা।এ দৃষ্টির অর্থ 'যাও গিয়ে বসো ঘরে,নিয়ে আসছি'।
মেয়েটাকে যখন প্রথম বউ করে ঘরে নিয়ে এসেছিল জহির তখন এ চোখ দুটোতে ছিল কোমলতা।কেমন যেন একটা মায়া মায়া ভাব।অথচ মাত্র ৭ বছরের ব্যবধানেই সেই কোমল চোখ দুটো কি কঠিন হয়ে গেছে।ভাবতেই কেমন যেন বোধ হয় জহিরের।সময়ের স্রোতে নীরার এই কঠিন মুখটা বড্ড অচেনা মনে হয়।
দুজন মানুষ একসাথে এতটা বছর এক ছাদের নীচে অথচ তাদের মধ্যে কি একটা শীতল দূরত্ব!ভালবাসার স্বার্থকতা না পাওয়ার মাঝে।দুজন দুজনের থেকে যোজন যোজন দূরে থাকবে;মাঝখানে শুধু বহমান থাকবে তাদের ভালবাসা।কাছাকাছি পাশাপাশি থাকলেই ভালবাসা গড়ে ওঠেনা,হয়ে ওঠেনা।যেটা হয় সেটা সংসার।
জহিরের কাছে সংসার শব্দটা খুব দুর্বোধ্য মনে হয়।এটা তার সংসার না।সংসারে ভালবাসা,খুনসুটি,আবেগ থাকে।এখানে তার কিছুই নেই।এটাকে বরংচ চার দেয়ালের একটা পৃথিবী ধরা যাক...যেখানে আকাশ নীল নয়,গাঢ় অন্ধকারও নয়;রংচটা ফ্যাকাসে আকাশ।
১০ ই আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৮
আসলাম মালিক বলেছেন: ক্ষত শুকিয়ে যাবার পরও একটা দাগ থেকেই যায় দাদা।
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:১৩
হাসান মাহবুব বলেছেন: রংচটা ফ্যাকাশে আকাশেও হয়তো কোনদিন রঙধনু উঠতে পারে। জীবন এবং সময় বড়ই খেয়ালী।