নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আতাহার হোসাইন

উড়োজাহাজ

ফেসবুক প্রোফাইল-https://www.facebook.com/ataharh

উড়োজাহাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

জনতা সাবধান! বোমার আকার বড় হচ্ছে

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৪৭

উৎস্য: দৈনিক নিউজ

আমরা দীর্ঘদিন যাবত পত্রিকার মাধ্যমে মানুষকে বলে আসছি, ‘এখনই আমাদের ফেরার সময়’, ‘এখনই আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে’, ‘প্রচলিত ত্র“টিপূর্ণ সিস্টেম পাল্টানোর সময় এখনই’। আমরা জাতিকে আমাদের সাধ্যমত আপ্রাণ বোঝাতে চেষ্টা করছি, কিন্তু কোনভাবেই এই জাতি সে কথা তাদের কানে তুলছে না। ফলস্বরূপ তারা আজ অশান্তি ও নিরাপত্তাহীনতার চূড়ান্ত পর্যায়ে পতিত হয়েছে। সূচনালগ্নে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতায় রাজনীতির ময়দানে প্রথমে দেখলাম মিটিং, মিছিল, প্রতিবাদ, অবরোধ ইত্যাদি। পরে এর রূপ নিল ভাঙচুর ও জঙ্গিবাদী কার্যক্রমে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে রায় ঘোষণার পর দেখলাম বোমা, পটকাবাজি, পুলিশের সাথে সংঘর্ষের চিত্র। উভয় পক্ষের হতাহতের খবর। স্বভাবতঃই জনতা বিশৃঙ্খল হওয়ায় তাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি। অপরদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ক্ষয়ক্ষতিও খুব কম নয়। তাদের পেছনে রাষ্ট্রীয় ব্যয়ভার ও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির চিন্তা করতে গেলে তো আরো ভয়াবহ অবস্থা দাঁড়াবে। কিছু দিন আগেও দেশে হরতালের সময় দেখতাম জনতার বিক্ষোভ দমন করার জন্য পুলিশ লাঠিচার্জ ও কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতো। অধুনা এর সাথে যোগ হয় পিপার স্প্রে নামক এক ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক যা চোখে গেলে মারাত্মক ক্ষতি হয়, এমনকি চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। এ নিয়ে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার হৈ চৈ ও আদালতের নির্দেশনার পর তা পরিহার করা হয়। কিন্তু ইদানীং বিক্ষোভকারী ও হরতালে পিকেটারদের উপরে পুলিশ মুহুর্মুহু গুলি চালাতে দ্বিধাবোধ করে না।



মিছিলকারীরাও কম যায় নি। আগে তারা আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য সাধারণ ছোটখাট পটকার বিস্ফোরণ ঘটাতো। মানুষ শব্দ শুনে দিগি¦দিক পলায়ন করতো। এখন ক্ষতিকর আঘাত হানার জন্য তাতে স্প্রিন্টার ঢুকিয়ে সরাসরি ছুঁড়ে মারছে জনতার গায়ে। ফলাফল কারো হাত নেই, কারো চোখ নেই, কারো পা নেই, কারো বা সারা শরীর পুড়ে ছাই। অতঃপর হাসপাতালের বিছানায় কাতরাতে কাতরাতে মৃত্যুর সাথে আলিঙ্গন। এই কিছু দিন আগেও হরতাল পালিত হতো স্বত:স্ফূর্তভাবে। সে সময় মানুষ স্বেচ্ছায় দোকানপাট, গাড়ী চালানো বন্ধ রাখত। কিন্তু হরতালের মাত্রা বাড়তে বাড়তে মানুষ ত্যক্ত বিরক্ত হয়ে কিংবা জীবিকার তাগিদে এখন চেষ্টা করছে দোকানপাট, গাড়ি চালানো অব্যাহত রাখতে। কিন্তু হরতালকারীরা কৌশলে আরো এক কদম এগিয়েছে। হরতালের দিনে তারা পিকেটিং যাই করুক না কেন হরতালের আগের দিন দুপুর থেকেই শুরু হয় তাদের মূল কার্যক্রম। চলন্ত গাড়িতে পেট্রোল বোমা, ককটেল ও অগ্নিসংযোগ করে, মানুষ পুড়িয়ে ভয়াবহ আতঙ্ক বিস্তার করে সেই দিনই হরতালের নামে তাণ্ডবলীলা শুরু করে দেয়। পরের দিন নাকে তেল দিয়ে ঘুমালেও স্বয়ংক্রিয়ভাবে হরতাল পালিত হয়ে যায়, অর্থাৎ মানুষ স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ করে হরতাল পালন করতে এক প্রকারে বাধ্য হয়।



এই নিয়ে হৈ চৈ, বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে বুদ্ধিজীবীদের টক’শো মাতানো আর কলামিস্টদের কলমের কালি কম যায় নি। কিন্তু বন্ধ হয় নি এই কার্যক্রম। বরং বাড়তে বাড়তে এর আওতা এখন রাজপথ থেকে কূটনৈতিক পাড়া, আদালত ভবন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে, বিচারপতিদের বাসভবন, আইনজীবীদের কার্যালয়, থানা- পুলিশের ফাঁড়ি, সংবাদ মাধ্যমের কার্যালয়, সাংবাদিকের দেহ, রোগীবাহী এ্যাম্বুলেন্স, সাধারণ পথচারী, স্কুল-কলেজে গমনরত কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রী কেউই আর বাদ নেই। দিন দিন এর মাত্রা বাড়তে থাকল। এখন একটি ঘটনায় দগ্ধ হচ্ছে, চোখ হারাচ্ছে কিংবা চিরতরে পঙ্গু হচ্ছে একজন কিংবা দুইজন। এর পরেও যদি আমরা কেউ সতর্ক না হই তাহলে এই অপরাধ আকারে দিন দিন বেড়েই চলবে। দেখা যাবে একদিন এই ককটেল বিরাট আকার ধারণ কোরে বোমে পরিণত হয়েছে। ইদানীং এর লক্ষণ দেখাও যাচ্ছে। কয়েকদিন আগে টিভি পর্দায় দেখা গেল চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে পুঁতে রাখা একটি বোমা উদ্ধার করা হলো যার আকৃতি অনেক বড় এবং এর গায়ে আবার তার জোড়ানো।

যে হারে বোমাবাজির মাত্রা বাড়ছে, কিছু দিন পর হয়তো দেখা যাবে, যে বোমাবাজরা আজ পুলিশ দেখলে শুধুমাত্র তাদের গায়ে ছোট ছোট কককেটল অথবা পটকা মেরে চিপা গলিতে পালিয়ে যায়, তখন তারা আর পালাবে না। হয় তো দেখা যাবে নিজের বুকে বোমা বেঁধে শত শত লোক সমেত নিজেকে উড়িয়ে দিচ্ছে। এই দৃশ্য আমাদের কাছে মোটেও অপরিচিত নয়। খুব কাছের দেশ পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরাক ও সিরিয়ার ঘটনা প্রত্যহ মিডিয়ার কল্যাণে ঘরে বসে তা দেখতে পাচ্ছি।



প্রশ্ন আসতে পারে, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরাক ও সিরিয়ার জঙ্গি সন্ত্রাসীদের মত বাংলাদেশের পিকেটারগণ এত বড় বড় অস্ত্র পাবে কোথায়? আশা করি সচেতন ব্যক্তির কাছে এর উত্তর অজানা নয়। ইস্যু যখন থাকে আর মানুষও যখন পাওয়া যায় তখন অস্ত্রেরও অভাব হয় না। এর ভুরি ভুরি উদাহরণ দেওয়া যায়। যে কোন দেশের সংঘটিত যুদ্ধের দিকে তাকালেই আমরা দেখতে পাব প্রথমে মুক্তিযোদ্ধারা প্রায় খালি হাতেই নামে। কিন্তু স্বাধীনতা শেষে ঘরে ফেরার সময় প্রত্যেকের হাতেই থাকে অস্ত্র। সাম্প্রতিক সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাচ্ছি বিদ্রোহীদের হাতে ভারী অস্ত্রের ছড়াছড়ি। এসব অস্ত্র তারা কোথায় পেল?

এই সেদিনও ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুন সে দেশের পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে সগর্বে উচ্চারণ করেছেন সিরিয়ার বিদ্রোহীদের অর্থ ও অস্ত্র সরবরাহ করা নাকি ব্রিটেনের জন্য বৈধ কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।



সুতরাং আমাদের দেশে আজ যে পিকেটাররা পটকার বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে, দু’দিন পর তাদেরই হাতে যে গ্রেনেড কিংবা রকেট লাঞ্চার থাকবে না তার কোন গ্যারান্টি নেই। বিশেষ করে বর্তমানে বাংলাদেশ যখন ভূ-রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছে এবং বাংলাদেশ নিয়ে স্বার্থান্বেষী সাম্রাজ্যবাদী বিভিন্ন চক্রের লোলুপ দৃষ্টি বিদ্যমান। তারাও এসব বৈধতা দিয়েই অস্ত্রের চালান পাঠাবে এদেশে গৃহযুদ্ধ বাঁধিয়ে। কেউ বিরোধী জোটকে ইন্ধন দেবে, সেটা বুদ্ধি পরামর্শ হোক কিংবা অস্ত্র দিয়েই হোক, সরকারি দলের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। কেননা সাম্রাজ্যবাদীদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং চিন্তা চেতনা আগের চেয়ে এখন ভিন্ন। এখন আর তারা স্বসৈন্যে দেশ দখল করায় আগ্রহী নয়। বরং তারা জাতির মধ্যে বিভক্তি ঘটিয়ে তাদের দুর্বলতার সুযোগে তাদেরই অনুগত সরকার বসানোয় আগ্রহী। আর তাতেই তাদের কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়। আর চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট যদি চলতে থাকে তাহলে বোমার আকৃতি এবং বোমাবাজদের মানসিকতা পরিবর্তনের সাথে আক্রমণের মাত্রাও বাড়বে। তখন টাকার কুমির শিল্পপতি, বিদগ্ধ সাহিত্যিক, জাতির বিবেক সাংবাদিক, টাক মাথার বুদ্ধিজীবী, জীবন বাঁচিয়ে ডাক্তার, কূট-বুদ্ধিসম্পন্ন আইনজ্ঞ, রাশভারী বিচারপতি, কোমল হৃদয় আঁকিয়ে, সুরে মাতানো কোকিল কণ্ঠী সঙ্গীতজ্ঞ, খেটে খাওয়া রিক্সাওয়ালা, সাধারণ পথচারী, রাজনীতিতে বিনিয়োগকারী সংসদ সদস্য, ডাকাবুকো মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, উপদেষ্টারা কেউ আর বোমার আওতা থেকে বাদ যাবেন না। ইতোমধ্যে সেই চিত্র আমরা প্রত্যক্ষও করছি।



রাষ্ট্রের কর্ণধাররাও শিকার হচ্ছেন বোমাবাজদের টার্গেটে। কার দোষ বেশি আর কার দোষ কম তা বিবেচিত হবে না, হচ্ছেও না। আর এটা মহামারী আকার ধারণ করার খুব কাছাকাছি আমরা পৌঁছে গেছি। আর একটু আগালে পৃথিবীবাসীও অন্যদের ন্যায় খবরের পাতায় আমাদের মৃত্যুর সংবাদ জানবে আর টিভির পর্দায় মৃত্যুর দৃশ্য প্রত্যক্ষ করবে।

সুতরাং যারা দেশ পরিচালনা করছেন বা বিরোধী জোটে গিয়ে আন্দোলন করছেন এবং আড়ালে আবডালে কিংবা উঁচু তলায় বসে এসব নিয়ন্ত্রণ করছেন, যার যা করার অনুমতি দিচ্ছেন, শত্র“র ক্ষয়-ক্ষতিতে উল্লসিত হচ্ছেন, এখনই এসব থেকে নিজেদের হাতকে গুটিয়ে না নিলে এসব সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদী কার্যক্রম দিন দিন আরও বাড়বে। মানবজাতির কল্যাণকামী ও যামানার এমাম, এমামুয্যামান, জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নীর অনুসারী হিসেবে মানুষকে সতর্ক করা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব মনে করে আমরা বার বার আপনাদেরকে সতর্ক করে যাচ্ছি। এখনই এই সংস্কৃতি পরিহার করুন, এখনই ভ্রাতৃঘাতী হানাহানির সিস্টেম পরিহার করুন। জাতিকে একটি নির্দ্দিষ্ট লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য আপ্রাণ কাজ করুন।

লেখক: সদস্য, হেযবুত তওহীদ এবং যামানার এমামের অনুসারী।

ফোন: [যোগাযোগ: হেযবুত তওহীদ, ০১৬৭০১৭৪৬৪৩, ০১৭১১০০৫০২৫, ০১৯৩৩৭৬৭৭২৫।]

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.