নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেশে চলমান সঙ্কটের সমাধানের লক্ষ্যে দৌড়ঝাঁপ চলছে। দেশি-বিদেশি নানা উদ্যোগ চলছে প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, কানাডা ও চীনসহ বহুদেশের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের চলমান সঙ্কট। অপরদিকে রাজনৈতিক সঙ্কটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অংশটি এদেশের সাধারণ নাগরিকগণ। তাদের সব ধরনের কাকুতি মিনতি উপেক্ষা করে বিবদমান দলগুলি যখন সংঘাত-সংঘর্ষ চালিয়েই যাচ্ছে তখন উপায়ন্তর জনগণ অসম্মানজনক হলেও বিদেশীদের হস্তক্ষেপকে মেনে নিয়েছে ‘তবুও যদি শান্তি আসে এই আশায়।’ এরই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ গত শুক্রবার দেশে এসেছেন জাতিসংঘের মহাসচিবের বিশেষ দূত অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো। দেশে এসেই তিনি একে একে দেশের শীর্ষ পর্যায়ের দায়িত্বশীলদের সাথে সাক্ষাৎ করে চলেছেন। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিরোধী দলীয় নেত্রী, রাষ্ট্রপতি, জাতীয় পার্টির প্রধান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ আরো অনেকের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। প্রাথমিকভাবে তিনি একদফা সাক্ষাৎ করেছেন, সবার কথা শুনেছেন। পরবর্তীতে তিনি প্রয়োজনে তাদের সাথে আবারও সাক্ষাৎ করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, সাক্ষাতে তারানকো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জানতে চান, নির্বাচন পেছানো যায় কি-না। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জিজ্ঞেস করতে হবে। তবে যা করতে হয়, সংবিধানের মধ্যে থেকেই করতে হবে। তিনি বলেন, সব দলকে নিয়েই নির্বাচনের চেষ্টা করতে হবে তবে সেটা সংবিধানের মধ্যে থেকেই হতে হবে।
অন্যদিকে তারানকোর সাথে বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন নির্বাচন পেছানোর ব্যাপারে বলেছেন, দুই দল একমত হলে এবং প্রকাশ্যে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিলেই কেবল এক সপ্তাহ নির্বাচন পেছানোর কথা ভাববে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সিইসি তারানকোকে বলেন, আমাদের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নির্বাচন করা ছাড়া আর কোনো উপায়ই ইসির হাতে নেই। তবে সব দল ঐক্যমত্যে পৌঁছলেই কেবল সংবিধানের মধ্যে থেকে ৭/৮ দিন নির্বাচন পেছানোর সুযোগ আছে। সেক্ষেত্রে দলগুলোকে অবশ্যই প্রকাশ্যে ঘোষণা দিতে হবে, তারা নির্বাচনে অংশ নেবে। তবে সিইসির বক্তব্য সম্পর্কে তারানকো কোনো মন্তব্য করেন নি। সবার সঙ্গে আলোচনায় তিনি ইসির বক্তব্য পৌঁছে দেবেন বলে সিইসিকে জানিয়েছেন। রোববার বেলা ১১টায় সিইসির অফিসকক্ষে সোয়া ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ ব্যাপারে পরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সংবাদ মাধ্যমকে বিস্তারিত জানানোর কথা রয়েছে।
তাই ঘুরে ফিরে প্রশ্ন আসছে একটিই। আর তা হচ্ছে সব দল নির্বাচনে আসবে তো? আর আসলেও কিভাবে আসতে পারে? কারণ মনে রাখতে হবে বিরোধীপক্ষের দাবী শুধুমাত্র নির্বাচনী তফসিল বাতিল করা নয়, তাদের অন্যতম প্রধান দাবী হচ্ছে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন। তাদের এই দাবী রক্ষা করতে হলে বর্তমান সরকারকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। ২৪ জানুয়ারির পর নির্বাচন অনুষ্ঠান করা যেমন সাংবিধানিক সঙ্কট সৃষ্টি করবে তেমনি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সম্পন্ন করাও সাংবিধানিক সঙ্কট সৃষ্টি করবে। তাই দেখা যায় সংবিধান অনুসারে সঙ্কট মোকাবেলা করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। সুতরাং চলমান সঙ্কটের ইতি টানতে হলে হয় সংবিধানকে লঙ্ঘন করতে হবে নয় কোন না কোন পক্ষকে ছাড় দিতেই হবে। এতদুভয়ের মধ্য থেকে দুই কূল রক্ষা করে তারানকো কি প্রধানমন্ত্রী বা বিরোধী দলীয় নেত্রীকে বাগে আনতে পারবেন? তবে শুধু বিএনপিকে বাগে আনলেই চলবে না।
বিএনপির সাথে থাকা লেজ অর্থাৎ জামায়াতে ইসলামী কি নির্বাচন মেনে নেবে? কারণ, এমনিতেই তারা আদালতের রায়ে নির্বাচন অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বিএনপির সাথে তাদের জোট থাকায় তারা চাইবেই যাতে বিএনপি কিছুতেই নির্বাচনে না যায়। আর বিএনপিও তাতে সায় দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ সাংগঠনিক দিক দিয়ে বিএনপির নিজস্ব দুর্বলতা এবং কথিত ইসলামপন্থীদের ভোট বাগাতে তাদেরকে হাতে রাখতেই হবে। তাই বিএনপি তাদেরকে খুশি না করে নিজে নির্বাচনে যেতে চাইবে না। এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে অনেকেই মনে করছেন সঙ্কট কাটানো একটি দীর্ঘস্থায়ী ব্যাপার। সাময়িকভাবে কিংবা সংবিধান দিয়ে উভয় পক্ষকে বাগে আনা সহজ নয়। সঙ্কটের শিকড় বহু গভীরে পৌঁছেছে। এসব উৎপাটন না করে কিংবা জোর করে নির্বাচন অনুষ্ঠান করে স্থায়ী শান্তি আনা যাবে না।
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:১৮
পাঠক১৯৭১ বলেছেন: সকল দলকে নির্বাচনে আসতে হবে, এ ধরণের কোন বাঁধাধরা নেই; এখন যেভাবে এগুচ্ছে, সেটাই সঠিক।
যারা অবরোধ ও হরতাল দিয়েছে, তাদিকে অবরোধের শক্তি দিয়ে ক্ষমতায় যেতে হবে, তাদেরকে ভোটে আসতে দিলে ভুল হবে।