![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের মানুষের তিক্ত অভিজ্ঞতার ইতিহাস আছে।দ্বি-জাতি তত্বের কারণে ভারত ভেঙ্গে মুসলিম ও হিন্দুদের জন্য আলাদা দুটি পৃথক রাষ্ট্র গঠন করা হয় ।মুসলিমদের জন্য গঠন করা রাষ্ট্র বেশ কিছু সমস্যার মুখে ছিল তার একটি হলো ভূকৌশলগত অবস্থান।পাকিস্তান জন্মের পর থেকে নিজের অখন্ডতা রক্ষার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে।তারা হাজার মাইল দূরে অবস্থান করা একটি ভূখন্ড নিজের রাষ্ট্রের অংশ করে নেয় যা পূর্ব পাকিস্তান নামে পরিচিত হয় এবং এখন স্বাধীন বাংলাদেশ নামে পরিচিত।বাংলাদেশ কাগজে কলমে স্বাধীন মাত্র।এই দেশ সামরিক,অর্থনৈতিক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা আজ পর্যন্ত লাভ করেনি।আগামীতে লাভ করতে পারবে কিনা তা বলা সম্ভব নয়।
পাকিস্তান শুরু থেকে সামরিক একনায়কদের অপশাসনের হাতে পড়ে যায়।সামরিক জান্তারা সব সময় ভুল সিধান্তা গ্রহণ করে তা ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় আর বাংলাদেশের মাটিতে ৭১ সালে গণহত্যা চালিয়ে তারা আবার প্রমাণ করে ছাড়ে।চায়না,আমেরিকা ও মুসলিম বিশ্বের দান খয়রাতে চলা পাকিস্তান মনে করেছিল পূর্ব পাকিস্তানের উপর জেনোসাইড চালালে তারা নিশ্চুপ হয়ে যাবে অথচ তাদের অনুমান ছিল ভুল।পাক বাহিনী ৭১ সালের যুদ্ধে চরমভাবে পরাজিত হয় মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতের সেনাবাহিনীর কাছে।পাকিস্তান পরাজিত হয়ে তার সামরিক ক্যাম্প গুটিয়ে নিয়ে গেলেও ইতিহাস তাদের ক্ষমা করতে পারেনি।৭১ সালে যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পাক বাহিনী লক্ষাধিক বাংলাদেশী নারী-পুরুষকে হত্যা করে এবং ধর্ষণ করে লক্ষ লক্ষ বাংলাদেশী নারীদের যা সবচেয়ে ঘৃণ্য কাজ।বাংলাদেশ জন্ম নেওয়ার পর থেকে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে অনেক।পাকিস্তান অনেক গণতান্ত্রিক সরকারকে পেয়েছে যারা বাংলঅদেশের উপর চালানো জেনোসাইডের জন্য বাংলাদেশের মানুষের কাছে ক্ষমা চাইতে পারেননি।আবার যদি ক্ষমা চাইতে সামান্য ইচ্ছা পোষণ করেন তার পক্ষেও সম্ভব না এই মহান কাজটি করা।আমরা সবাই জানি দক্ষিণ এশিয়ার মানুষ শিক্ষা ও বিজ্ঞানে পিছিয়ে আছে।যারা শিক্ষা ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে তারা বিবেকবান জাতি নয়।এই কথা ভারত,পাকিস্তান ও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।বাংলাদেশের মানুষ চায় পাকিস্তান তার চালানো হত্যা কান্ডের জন্য ক্ষমা চাইবে।আসলে বাস্তবতা বিবেচনা করলে এমটা এখন সম্ভব না।পাকিস্তানে শিক্ষিত মনুষের সংখ্যা সবে মাত্র বৃদ্ধি পাচ্ছে।যদি কোন পাকিস্তানি রাষ্ট্র নেতা ৭১ ঘৃণ্য কাজের জন্য ক্ষমা চান তাহলে পরের দিন তাকে নিঁখোজ হতে হবে ১০০% গ্যারান্টি।তাই বাস্তব বিবেচনা করে বলা যায় বর্তমানে পাকিস্তানের কোন নেতার পক্ষে এই সময়ে ৭১ সালের হত্যা কান্ডের জন্য ক্ষমা চাওয়া সম্ভব নয়।
এখন কোটি টাকার প্রশ্ন হলো,বাংলাদেশীরা কি পাকিস্তানীদের সু-সম্পর্ক রক্ষা করে চলবে নাকি তাদের শত্রুতা করবে?
আমার ব্যক্তিগত উত্তর হলো আধুনিক যুগে চলতে হলে সব দেশের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করে চলতে হবে।তথ্য ও প্রযুক্তির যুগে কোন দেশের সাথে সম্পর্কহীন হয়ে না চলাই উত্তম।পাকিস্তান এমনকি ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক না রাখার দাবি মূর্খতা ছাড়া আর কিছু না।সব দেশের সাথে শিক্ষা,বাণিজ্য ও সামরিক সম্পর্ক রাখা বুদ্ধিমানের কাজ।অন্যের স্বার্থ রক্ষার জন্য নিজের সুবিধা বাতিল করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়।বাংলাদেশের পরাষ্ট্রনীতি হালকা বলেই আজ মিয়ানমারকে কিছু বলা যাচ্ছে না।তারা আমাদের ভেরতে নিজ দেশের বেকার জনগণ প্রবেশ করিয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে চলে যাচ্ছে।এখন বাংলাদেশের কোন মূল্য আন্তজাতিক মহলে নেই বলে মিয়ানমারকে যথাযথ সামরিক শিক্ষা দিতে আমরা ব্যর্থ।বিশেষ করে আমাদের সার্কভুক্ত দেশগুলো এক নয় বলে আজকে এই অপকর্ম সইতে হচ্ছে।সার্ক একটি খানা পিনার সংগঠন মাত্র ভারত পাকিস্তানের জাতিগত দ্বন্দের কারণে।আমাদের সব জাতিগত বিভেদ ভুলে এক হয়ে কাজ করতে হবে।ইউরোপ কত যুদ্ধ করেছে নিজেরা নিজেরা কিন্তু তারা এখন ইউনিয়ন গঠন করে শিল্প,সাহিত্যের সব ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে।তারা যদি পারে তাহলে আমরা কেন পারব না!!আমাদের সীমাবদ্ধতা একটি তা হলো আমরা শিক্ষিত জাতি গঠন করতে পারি নাই।যে দিন আমরা নিজের দেশের নাগরিকদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করব সেই দিন আমরা এক হয়ে কাজ করতে পারব।আমরা তখন সব অনৈতিক কাজের জন্য ক্ষমা চাইতে পারব।পাকিস্তান সেই দিন ৭১ সালের গণহত্যার জন্য ক্ষমা চাইবে।কাশ্মির সেই দিন স্বাধীনতা লাভ করতে পারবে।মোটের উপরে আমরা সাধারণ মানুষ তখন স্বাধীনতা লাভ করতে পারব।এর আগে আমরা রাজনীতিবিদদের বলির পাঁঠা হয়েই থাকব।
এবার আসি আফ্রিদি ও পাকিস্তানের ক্রিকেট টিমের বিষয়ে।আমাদের দেশে হাজার হাজার ভক্ত আছে পাকিস্তানের ক্রিকেট টিমের।তারা পাকিস্তানের খেলয়াড়কে চরম ভাবে স্বাপর্ট করেন।শুধু পাকিস্তান নয় ভারত,দ:আফ্রিকা,শ্রী লঙ্কা,অস্ট্রেলিয়া ও ওয়স্টে ইন্ডিজের সমর্থক আছে আমাদের মধ্যে।
বাংলাদেশের কিছু জাতীয়তাবাদী জুঙ্গির কাছে বাংলাদেশের টিমের বাইরে অন্য টিমের স্বাপর্ট করা হারাম।তারা মনে করেন যারা নিজ দেশের টিমের বাইরে আর কোন দলের স্বাপর্ট করে তারা রাজাকার,দেশ প্রেমহীন মানুষ বিশেষ করে যদি কেউ পাকিস্তানের ক্রিকেট টিমের স্বাপর্টার হয়।
এক্ষেত্রে আমার ব্যক্তিগত মতামত হলো একজন খেলা পাগল মানুষ হিসাবে আপনি যে কোন দেশের ক্রিকেট টিমকে স্বাপর্ট করতে পারেন।তবে যদি আপনার দেশের দল সেই প্রতিযোগিতায় থাকে তাহলে নিজ দেশের দলকে বেছে নেওয়া উচিত।উল্লেখ্য আপনি কোন দলের সমর্থক হলেই তারা বিজয়ী হবে এমন নয়।যারা মাঠে খেলছেন তাদের দক্ষতার উপর জয়-পরাজয় নির্রভর করছে।মদ্দা কথা হলো খেলা কোন রাজনীতির মাঠ নয় বা যুদ্ধ ক্ষেত্র নয় যে আপনি নিজের দেশের দলের বাইরে আর কোন দলকে স্বাপর্ট করতে পারবেন না।খেলার সাথে রাজনীতি ও যুদ্ধ এক করবেন না প্লিজ।খেলা ধুলা একটি বিনোদনের জায়গা সেখানে আপনাদের মত রাজনৈতিক কিটেরা না আসলেই ভাল হয়।
পাকিস্তানের ক্রিকেট টিম ও আফ্রিদিকে বাংলাদেশের যে কেউ সমর্থন করতে পারবে।এটা তার ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দ।কেউ জোর করে নিধারণ করে দিতে পারবে না।আপনারা মানুষের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করুন তাহলে মানুষ সুস্থ থাকবে।
৭১ সালের যুদ্ধের কারণে পাকিস্তানের খেলয়াড় কিংবা তাদের নাগরিকদের ঘৃণার চোখে দেখা একধরনের ন্যাৎসিবাদ।পাকিস্তানের খেলয়াড়রা বা সাধারণ নাগরিকরা কেউ সামরিক জান্তার অপরাধের জন্য দায়ী নয়।রাষ্ট্র যারা পরিচালনা করেন তাদের নীতি নিধারণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ,পাকিস্তান,ভারতের জনগণ সমন্য প্রভাব রাখতে পারে না।এই কারণে পাকিস্তানের ক্রিকেট টিমকে ৭১ সালের হত্যাকান্ডের জন্য দোষী মনে করা ধার্মিকদের মত অন্ধত্ব ছাড়া আর কিছু নয়।আপনি নিজেও অনেক সময় জার্মান ফুটবল দলকে স্বাপর্ট করে।এর জন্য আপনি নিশ্চয় ন্যাৎসি হয়ে যান না।মানুষের সাথে মানুষের আত্মার(রুপক) মহামিলন হবেই আপনি কখনো তা প্রতিরোধ করতে পারবেন না।খেলার মাধ্যমে মানুষ যদি নিজের জাতীয়তাবাদ ভুলে একে আপরকে জড়িয়ে ধরে।একজন অন্য জনের জন্য ভালবাসা উদগ্রীরণ করে তাহলে আপনার এত সমস্যা কেন।কোন ব্যক্তি যদি পাকিস্তান বা ভারতের কোন খেলয়াড়কে জড়িয়ে ধরে বা আইকন মনে করেন তাহলে কোন দোষ নেই।এটা তার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা।তার উদার মনের কাজ ও ব্যক্তিগত অধিকার ক্ষুণ্ণ করার কোন নৈতিক অধিকার আপনার নেই।
নিজ দেশের বাইরে আফ্রিদিকে অনেকে আইকন মনে করেন।ভারত,বাংলাদেশের জুঙ্গি জাতীয়তাবাদী ছাড়া কম বেশি সবাই তার অসাধারণ খেলা উপভোগ করার জন্য অপেক্ষার প্রহর গুণতে থাকে।এরা তার বড় পাগল ফ্যান।এদের মধ্যে অনেক ভারতীয়ে মত বাংলাদেশের মানুষ আছেন যারা সুযোগ পেলে পছন্দের খেলয়াড়ের সাথে সেলফি তুলতে কিংবা তাকে জড়িয়ে ধরতে পারার সুযোগ হাত ছাড়া করবেন না।তাই বিপিএল খেলায় অংশ নেওয়া আফ্রিদিকে জড়িয়ে ধরে বাংলাদেশের কেউ ভুল কাজ করেন নি।এই কাজের জন্য তার দেশ প্রেম উঠে গিয়ে তিনি বা আপনি পাকিস্তানের নাগরিক হয়ে গেছে বলে যারা মনে করেন তারা মূর্খ।আবার একদল চেতনা বাজ এই আফ্রিদিকে জড়িয়ে ধরার কারণে তাদের দেশপ্রেমের অনুভূতিতে আঘাত পেয়েছেন।পাকিস্তান টিমের কোন খেলয়াড়কে স্বাপর্ট করলে তারা মনে করেন দেশের স্বাধীনতা হারায়ে গেছে।আমি বলি আরে ব্যাটা দেশ প্রেম ও স্বাধীনতা কি আপনার মত নুলা কিছু যে সামান্য উদারতায় ধ্বংস হয়ে যাবে।যারা কোন দেশের খেলয়াড়কে স্বাপর্ট করার জন্য অন্যকে রাজাকার ও রাষ্ট্র বিরুধী করার আপচেষ্টা করছেন তাদের বলি আপনার মত জুঙ্গি জাতীয়তাবাদী নরকের কীটরা বিশ্বযুদ্ধ করেছে,কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে মানুষের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে
মানুষের মধ্যে জন্ম দিয়েছে ঘৃণা ও বিদ্বেষ।পৃথিবীতে অনেক কৃত্রিম লেভেল আছে যা মানুষের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে।এগুলোর মধ্যে ধর্ম হচ্ছে প্রথম বিভাজনের লেভেল এরপর জাতীয়তাবাদ ও বর্ণসহ অন্য লেভেল।ধর্ম,জাতীয়তাবাদ ও বর্ণের মত কৃত্রিম বিভাজনের কারণে আজকে সারা বিশ্বের বড় সমস্যাগুলো তৈরী হয়েছে।যদি আমরা ধর্ম,জাতীয়তাবাদ ও বর্ণেরমত জুঙ্গিবাদী লেভেল মুক্ত পৃথিবী গড়তে পারি তাহলে সেই পৃথিবী বর্তমানের হিংসা বিদ্বেষী পৃথিবীর চেয়ে হাজার হাজার গুণে সুখী,সমৃদ্ধ হবে ১০০% গ্যারান্টি।
©somewhere in net ltd.