নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনোজগৎ এর ভাবনায় রাজনীতি, ঘোরাঘুরি আর লেখালেখি।

আতিকুর রহমান বিপ্লব

আতিকুর রহমান বিপ্লব › বিস্তারিত পোস্টঃ

পুলিশের হাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নির্যাতন। কাদের,লিমনদের পথ ধরে আজ লিখন, হবে কি কোন প্রতিবাদ ?

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:১৩



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কাদেরকে পুলিশ যখন রাতের আাধারে নির্যাতন করেছিল তখন সারা বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করেছিল। ক্যাম্পাস ছাড়িয়ে মিডিয়া টকশো সবখানে সরব হয়েছিল। ঝালকাঠির লিমনকে র‍্যাব যখন পঙ্গু করেছিল তখনও সারা দেশ উত্তাল হয়েছিল প্রতিবাদ হয়েছিল।

আজ আবারো সেই নির্যাতিতর দলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র শামসুল ইসলাম লিখন। হবে কি কোন প্রতিবাদ ???

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানজমেন্ট বিভাগের সপ্তম ব্যাচের পরিচিত মুখ শামসুল ইসলাম লিখন। তার MBA ফাইনাল পরীক্ষা চলছিল। কিন্তু পুলিশ নির্যাতন করে তাকে পঙ্গুত্তের দিকে নিয়ে যেয়ে এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। এজন্য চলতি পরীক্ষায় সে অংশগ্রহণ করতে পারছে না। পুলিশের আঘাতের কারনে তার উন্নত চিকিৎসার দরকার ,কিন্তু জামিনও পাচ্ছে না ।

ঘটনা কি ঘটেছিল ?

লিখনের বড় ভাইয়ের সাথে তার ব্যবসায়িক পার্টনারের ঝামেলা চলছিল। তার বড় ভাই এর চেক জালিয়াতির মামলা চলছিল তার ব্যবসায়িক পার্টনারের সাথে। মামলা চলাকালীন অবস্হায় তার পার্টনার মোহাম্মদপুর থানার এস আই শফিক কে ঘুষ দিয়ে লিখনের পরিবারের বিরুদ্ধেও লেলিয়ে দেয়। রাত-বিরাতে , দিনে-দুপুরে এস আই শফিক যখন তখন বিনা অনুমতিতে লিখনদের বাসায় ঢুকে তাদেরকে অকথ্য গালিগালাজ করত । তার মায়ের রুমে, বড় বোনের রুমে বিনা অনুমতিতে ঢুকে যেত । এরই ধারাবাহিকতায় ডিসেম্বর মাসের গত ৯ তারিখ বিকেলে এস আই শফিক ও তার একজন সহকর্মী পুনরায় বাসায় প্রবেশ করে । লিখন এর বৃদ্ধা মা আবারও জানিয়ে দেন তার বড় ছেলে দেশের বাহিরে । এস আই শফিকও বলে, জানি দেশের বাহিরে তারপরেও খুঁজতে আসছি । লিখন তখন বলে, সার্চ ওয়ারেন্ট আছে ? থাকলে দেন ।
শফিক এর জবাবে তুই আমারে সার্চ ওয়ারেন্ট শিখাস বলে মা-বাপ তুলে গালাগালি এবং কলার ধরে তাকে বাসার বাহিরে আনার চেষ্টা করে । লিখনের মা বাঁধা দিলে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় এস আই শফিক । সেখানে রশি দিয়ে বেঁধেই লিখনকে জনসম্মুখে অমানুষিক নির্যাতন করা হয় । তা দেখে রাস্তা ও আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এসে উদ্ধারের চেষ্টা করে । এরমধ্যেই লিখন মুক্তি পেয়ে শফিককে ধাক্কা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু সম্ভব হয় নি । মোহাম্মদপুর কাদেরিয়া মাদ্রাসার রাস্তা দিয়ে তাকে মারতে মারতে গাড়িতে তোলা হয় । গাড়ির মধ্যে আরো একদফা নির্যাতনে চালালে সেখানেই সে জ্ঞান হারায় । সেখান থেকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেয়া হয় । তারপর মোহাম্মদপুর থানা ।
এই ঘটনা জনগনের সামনে ঘটেছে এবং অনেক প্রত্যক্ষদর্শী আছে ।
তার পরের ঘটনা আরো মারাত্মক । থানায় তাকে কারো সাথে দেখা করতে দেয়া হয় নি । এমনকি আইনজীবির সাথেও না। যেটা স্পষ্টত সংবিধানের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন। উপরন্তু এস আই শফিক হুমকি প্রদান করে সে আওয়ামী লীগের একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের ভাতিজা ।
পরদিন অর্থাৎ ১০ তারিখ দুপুর ১.৩০ পর্যন্ত পুলিশ তার ব্যাপারে কোন তথ্য দেয় নি । এরপর আদালতে পাঠানোর পর জানানো হয় তার বিরুদ্ধে কর্তব্যরত পুলিশের গায়ে হাত দেয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে । আদালতে তাকে কোন আইনজীবি নিয়োগ দেয়ারও সুযোগ দেয়া হয় নি । সরকারী আইনজীবী অর্থাৎ পাবলিক প্রসিকিউটরের মাধ্যমে আদালতে যোগাযোগ করা হলে ১৫ মিনিটের মধ্যে তার পক্ষের কাগজ-পাতি চাওয়া হয় । উল্লেখ্য তার মানিব্যাগ সহ ভার্সিটির আই ডী কার্ড মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ গায়েব করে দিয়েছে । আর কোর্টে ৩.১৫ থেকে ৩.৩০ মিনিটের মধ্যে তার ডিপার্টমেন্ট থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপাতিও তোলা সম্ভব হয় নি। এমতাবস্থায় পুলিশ তার বিরুদ্ধে দশ দিনের রিমান্ডে চায়। আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করে নি এবং কাগজপত্রের অভাবে জামিনও পাওয়া যায় নি । উল্লেখ্য দুপুর ১২ টা থেকে তার সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছিল । তার বন্ধুরা যখন পরীক্ষার হলে ছিল , আদালতের কাঠগোড়ায় তখন সে আহত অবস্থায় দাঁড়িয়ে ছিল ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে , তার ডান পা মারাত্মক আহত , সম্ভবত ফ্র্যাকচার হয়েছে । তার মুখ ফোলা ও কালো দাগ রয়েছে । এবং কোমড় সোজা করে দাঁরাতে পারছিল না ।

আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, তথ্য অধিকার আইনে যে কোন আসামীর মামলা সম্পর্কিত তথ্য পাওয়ার অধিকার রয়েছে। পাশাপাশি আইনজীবি পাওয়ারও অধিকার আছে । বাংলাদেশের সংবিধানেও রাষ্টের একজন নাগরিককে আইনগত অধিকার দেয়া হয়েছে। এরপরও এস আই শফিক যে কোন মুল্যে লিখনকে জেলখাটানোর হুমকি দিয়েছে।

একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আইন সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এবং ওয়ারেন্ট দেখতে চাইতেই পারে। এটা তার অধিকার ।
ওয়ারেন্ট ছাড়া পুলিশ কেন ডিস্টার্ব করবে ??? কোন অধিকারে কোন ক্ষমতায় নির্যাতন করবে ???? বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের কিভাবে শায়েস্তা করতে হয় তা নাকি এস আই শফিকের চেয়ে ভালো কেউ জানে না। এটা তার নিজ মুখ থেকে বলা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই শফিক পুলিশের উর্দি পরে খাবারের হোটেলে কোন বিল দেয় না। আরও জানা গেছে , মোহাম্মদপুর থানার ও সি সাহেবও এই ঘটনায় নিজেকে সরিয়ে বারবার এস আই শফিকের সাথে কথা বলতে বলেছেন । সেইসাথে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত তিনজন সাবেক ছাত্রও মোহাম্মদপুর থানারই এস আই। কিন্তু তারাও এস আই শফিকের সাথে এই ব্যাপারে কোন কিছু বলতে রাজি ছিলেন না । কাজেই বোঝাই যাচ্ছে , এস আই শফিক কি জিনিস !!!
তার ক্ষমতা বা দাম্ভিকতার এটাই শেষ নয়। লিখনকে উদ্দেশ্য করে, তার বিশ্ববিদ্যালয়কে উদ্দেশ্য করে এবং নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে কি কথাগুলো সে বলেছে একবার দেখুন.........

*** তোগো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আমার পায়ের তলায় থাকে ।
*** খা** পোলা তুই ওয়ারেন্ট চাওয়ার কে ?
*** তোর চেহারা জঙ্গিদের মত ।
*** এরপর মোহাম্মদপুরে যত মামলা হবে , তোর নাম সেগুলোতে দেয়া হবে ।
*** আমি মির্জা আজমের ভাস্তি জামাই ।
*** আমি জাহাঙ্গীর কবির নানকের ভাতিজা ।

তাই ছাত্রসমাজ সহ পুরো দেশবাসী, আপনাদের কাছে আমাদের অনুরোধ নির্যাতিত লিখনের পাশে এসে দাড়িয়ে এবং এস আই শফিকের মত উর্দি পরিহিত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে নিজ নিজ জায়গা থেকে অবস্হান নিয়ে প্রতিবাদ করুন। এদের কোনক্রমেই প্রশ্রয় দেয়া যায় না। এদের হাতে বাংলার শিক্ষাঙ্গনের ছাত্ররা নির্যাতিত নিপীড়িত হয়ে আসছে। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হয়েও এরা ক্ষমতার দাপটে সংবিধানে দেয়া জনগণের অধিকারকে লঙ্ঘন করছে। এদের দ্বারা কাদের, লিমন, লিখনদের নামের পাল্লা দিনকে দিন ভারী হচ্ছে। আজ নাহয় লিখন আগামীতে অন্য কেউ !!! এভাবে আর কত !!!!

তথ্য : Jagannath University Alumni Association Facebook Page

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৪৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আইন সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এবং ওয়ারেন্ট দেখতে চাইতেই পারে। এটা তার অধিকার ।
ওয়ারেন্ট ছাড়া পুলিশ কেন ডিস্টার্ব করবে ??? কোন অধিকারে কোন ক্ষমতায় নির্যাতন করবে ???

এ যেন মগের মুল্লুক!!!!!!

মাৎসানায় সময়ে এতে বিস্মিত হতেও ভূলে গেছে সবাই। বিরোধী দমনের নামে পুলিশকে বেপরোয়া ক্ষমতার কুফল এসব! গুম, খুন, প্রশাসনের পরিচয়ে গায়েবের সংক্যা দিনদিন বাড়ছেই!!!!!!!!!

এ অবস্থা থেকে দেশ মুক্ত হোক। নাগরিক ফিরে তার তাঁর মৌলিক অধিকার।

২| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৫৮

সারাফাত রাজ বলেছেন: আল্লাহর রহমত যে ছেলেটা এখনো বেঁচে আছে।


কয়েক বছর বেশ অনেক পুলিশ নিয়োগ হচ্ছে, অদূর ভবিষ্যতে আরো প্রচুর সংখ্যক হবে। এর সাথে আমরা দিন দিন আরো বেশি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

আমার এক বান্ধবী ঠাট্টা করে বলতো যে, বাংলাদেশ থেকে পুলিশ উঠায়ে দিলে শতকরা ৬০ ভাগ খারাপ কাজ বন্ধ হয়ে যাবে। আজকে ওর ঠাট্টাটাকে খুব কঠিন সত্যি কথা মনে হচ্ছে।

৩| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৭

আতিকুর রহমান বিপ্লব বলেছেন: সুসংবাদ হচ্ছে লিখন ভাই জামিন পেয়েছে আজ দুপুরের পর। এখন সে বাসায়।

৪| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:১৮

শূণ্য পুরাণ বলেছেন: পুলিশী রাষ্ট্র!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.