নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কিছু না

অশুভ

নাথিং

অশুভ › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্মৃতিকথনঃ ডিপার্টমেন্ট ট্যুর টু সেন্টমার্টিন

২৩ শে মে, ২০২৩ বিকাল ৫:০০

এই লেখাটা বেশ কয়েকদিন আগেই ড্রাফট করেছিলাম। শেষ করতে পারিনি বলে পোস্ট করা হয়নি। অবশেষে আজকে লেখাটা শেষ করতে পারলাম। অনেক দিন পর ব্লগে ঢুঁ মারছিলাম। দেখলাম স্মৃতি নিয়ে অনেক লেখাজোকা চলতেছে। প্রতিযোগীতার সময় কি এখনো আছে না শেষ হয়ে গেছে?

নিজে থেকে বানিয়ে সম্পূর্ণ নতুন কিছু লেখা আমার পক্ষে খুবই দুঃস্যাধ্য ব্যাপার। আমি যদি কখনো কোনো গল্প-টল্প কিছু লিখি তা আসলে প্রকৃত কোনো ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত। সেজন্যই স্মৃতিকথা লেখা আমার জন্য তুলনামূলক সহজ। তাই কিছু লিখতে বসলাম।

আমাদের ডিপার্টমেন্টের রীতি ছিল ৩য় বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীরা বিভাগের সকল অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। সেটা হোক নবীণবরণ বা বিদায় অনুষ্ঠান কিংবা শিক্ষাসফর। আমাদের বিভাগের শিক্ষাসফরকে মূলত বনভোজন বা পিকনিক বলা যেতে পারে। তখন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় বর্ষের ছাত্র। ঠিক আমাদের ইমিডিয়েট সিনিয়র ভাইদের দায়িত্ব ছিল শিক্ষাসফর আয়োজনের। র‍্যাগিং কালচারের জন্য বড় ভাইদের সাথে আমরা খুবই ফ্রী, বিশেষ করে ইমিডিয়েট সিনিয়রদের সাথে। তাই ট্যুর নিয়ে খুব এক্সাইডেট ছিলাম। তার উপর ডিপার্টমেন্ট থেকে প্রথমবার সেন্টমার্টিনে যাওয়ার অনুমতি পাওয়া গেছে।

আমাদের ট্যুর প্ল্যান ছিল ক্যাম্পাস থেকে সোজা টেকনাফ হয়ে সেন্টমার্টিন। কক্সবাজারে থেকে সময় নষ্ট করতে চাই নি। ছাত্রছাত্রী সব মিলিয়ে প্রায় ১০০ জন। সম্ভবত তিনটি বাস আগের দিন রাত ৮-৯ টার মধ্যে সেই উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাস থেকে ছাড়ে। নুরজাহানে যাত্রাবিরতী ছিল। মাঝে জ্যামের কারণে অনেকটা সময় নষ্ট হয়। সকাল ৮ টার কাছাকাছি সময়ে আমরা চট্টগ্রামে পৌছাই। সকাল ৯ টায় টেকনাফ থেকে শীপ ছাড়ার কথা। শীপ ধরতে পারবো কিনা তা নিয়ে সবাই সংকিত ছিলাম। সেজন্য বাথরুম পেলেও বাস আর থামতে দেওয়া হয় নি। আমাদের বাস থেকে ক্রমাগত শীপের দায়িত্বরত একজনের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছিল। অবশেষে আমাদের জন্য একটা শীপ ৯:৩০ পর্যন্ত অপেক্ষা করবে বলে জানায়। কিন্তু বিধী বাম। টেকনাফে পৌছাতে পৌছাতে ৯:৪৫ পার। শীপও আমাদের ছেড়েই চলে গেছে। সারা সকাল মুত্রচেপে রেখে যে কষ্ট পেয়েছি তার চেয়েও বেশী কষ্ট পেলাম শীপ মিস করায়। তবে একটি দেখার মত দৃশ্যের অবতারনা হলো যখন সবাই বাস থেকে নামলাম। টেকনাফে শীপে ওঠার ঝেটিতে যে দুএকটা জরাজীর্ণ টয়লেট ছিল সেগুলো মেয়েদের দখলে দিয়ে আমরা ছেলেরা সবাই পাশের ধানক্ষেতে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে গেলাম। একজন আবার পিছন থেকে ছবিও তুলল। পরে গুণে দেখা গেল প্রায় ৩০ টা ছেলে এক লাইনে দাঁড়িয়ে মুত্রবিসর্জন করছে।

তো মুত্রবিসর্জনের সমস্যা সমাধানের পর শুরু হলো নতুন চিন্তা। সেন্টমার্টিনে পৌছাবো কীভাবে। স্যার আর সিনিয়র ভাইদের সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত হলো ট্রলার ভাড়া করে যাব। কিন্তু এখানেও বিপত্তি। কয়েকজন ট্রলারে সমুদ্রপাড়ি দিতে ভয় পাচ্ছে। তাদের প্রস্তাব কক্সবাজারে ব্যাক করে ট্যুর সেখানেই করা। এখানে বলে রাখি, ট্যুর প্ল্যান ছিলো ২ দিন ৩ রাত। এক রাতে যাব আরেক রাতে ক্যাম্পাসে ফিরব আর মাঝের এক রাত সেন্ট মার্টিনে থাকবো। সে অনুযায়ী সেন্টমার্টিনের অবকাশ নামক হোটেলে বুকিংও করা হয়ে গেছে। এখন ফিরে যাবার অবস্থাও নেই। সবশেষে স্যারদের হস্তক্ষেপে সবাই রাজি হলো ট্রলারে করে যাওয়ার জন্য।

সিনিয়র ভাইরা আর স্যারেরা যখন ট্রলার ভাড়া করায় ব্যস্ত তখন আমরা ব্যস্ত টেকনাফের সবচেয়ে বিখ্যাত আর সস্তা লণ্ডন রাম কেনায়। সালটা ২০০৬। তখন ঢাকায় কেরুর বোতলও কিনতে হতো ৪০০-৫০০ টাকায়। আর সেখানে লণ্ডন রামের বোতল মাত্র ৫০-৭০ টাকা। জীবনে যে বন্ধু বা সিনিয়র ভাইরা কোনোদিন ড্রিংস করে না, তারাও দেখি দুই বগলে দুইটা লণ্ডন রাম নিয়ে ঘুরতেছে। সবার টালমাটাল অবস্থা। এর মধ্যে ট্রলার ভাড়া করা হয়ে গেলো। মোট ৩ টা ট্রলারে করে আমরা সমুদ্র পাড়ি দিব। আমার ট্যুর এক্সাইটমেন্ট তখন ট্রিপল। একেতো সেন্টমার্টিন ট্যুর তার উপর সস্তা রাম তার উপর ট্রলারে সমূদ্রপাড়ি দেওয়ার এডভ্যাঞ্চার। আমাদের মাঝে যারা ঝানু খোর ছিল তারা বুদ্ধি করে দুই ট্রলারে দুই স্যারকে তুলে দিলো। আর আমরা সব খোরেরা একটা ট্রলারে।

টেকনাফ ছাড়ার দুই মিনিটের মাথায় জিসান ভাই একটা বোতল ওপেন করল। খোলার আধা মিনিটের মাথায় দেখলাম বোতল খালি। সবাই একেরপর এক ঢকঢক করে পুরো বোতল সাবার করে দিল। সেদিন যাত্রাপথে সম্ভবত ৬-৭ টা বোতল শেষ হয়। দুপুর ২ টার দিকে যখন আমরা সেন্টমার্টিনে পৌছাই ততক্ষণে আমাদের ট্রলারের কারোরই আর সোজা হয়ে থাকার ক্ষমতা নাই। ঝেটিতে নেমেই পায়েচালিত ভ্যান ভাড়া করে আমরা অবকাশে পৌছাই। দুপুরে একটু খাওয়ার পরই ঘুম। ঘুম থেকে উঠি সম্ভবত ৪:৩০ এর দিকে। ঘুমিয়ে বেশ ঝরঝরে লাগছিলো। পড়ন্ত বিকেলে সমূদ্র দেখতে বেরিয়ে পড়লাম।

অবকাশের (হোটেল) পাশেই একটি সুন্দর বীচ ছিলো। সেখানেই চলল সমূদ্র দর্শন আর বীচ ফুটবল। সন্ধ্যার প্রাক্কালে আমাদের সার্কেলের সবাই সবজি (গাঁজা) নিয়ে বসে পড়লাম। আমি, মাহমুদ, অভি, সাইফুল, মনোয়ার-১ (মটু), জিকো, আতা আর রুবেল। পার্থ আর মনোয়ার-২ (ডাকু) সবজি না খেলেও আমাদের সাথেই বসল। মনোয়ার-২ এর ডাকনাম ডাকু। নামের পেছনে একটা ছোট্ট ইতিহাস আছে। ক্লাসে দুইটা মনোয়ারের কারণে এমনিতেও কনফিউশন থাকতো তাই দুজনকে আলাদা করার জন্য মোটা মনোয়ারকে মটু বলে ডাকতাম। মনোয়ার-২ এর চোখের নিচে কালো জন্মদাগ ছিল। ফার্স্ট ইয়ারে একদিন সবাই মিলে আড্ডা দিচ্ছিলাম তখন হঠাৎ অভি মনোয়ার-২ এর দিকে তাকিয়ে বলে "চোখের নিচে তোর কালো দাগের জন্য তোরে আলিফ লায়লার ডাকাতের মত লাগে।" তখন থেকেই মনোয়ার-২ এর পার্মানেন্ট নাম হয়ে গেল ডাকু মনোয়ার ওরফে শুধু ডাকু

ঘটনায় ফিরে যাই। আমার কাজ ছিল সিগারেটের ভিতর থেকে তামাক বের করা আর সাইফুলের কাজ সবজি কুচি করা। সবশেষে মটু মনোয়ার আর বাকী সবাই সবজি আর তামাকের মিশ্রণ সিগারেটের ভিতরে ভরত। মানুষ বেশি থাকায় আমি ৩-৪ টা সিগারেটের তামাক বের করে ফেললাম। এদিকে সবজি কুচি শেষ হয় নাই। হঠাৎ ডাকু বলল সেও আজকে সবজি খাবে। সবাই হাসতে হাসতে পড়ে যাওয়ার অবস্থা। যে জীবনে সিগারেটও খায় নাই, সে খাবে সবজি!! এই ফাকে আমার মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি আসল। আমি সবজি মিশানো ছাড়াই সিগারেট থেকে বের করা তামাকগুলা আবার আরেকটা সিগারেটের মধ্যে ভরা শুরু করলাম। সাইফুল বলে ওই ব্যাটা কী করছ্? আমি চোখ মেরে বললাম চুপ থাকতে। তামাকগুলা ভরা শেষ হওয়ার পর, মটুর দিকে এগিয়ে দিলাম। আর বললাম
আমি: "মামা তুই সত্যিই খাইতে চাস?"
ডাকু: "হ। আজকে আমি খামুই। দেখমু এইটার মধ্যে কী আছে।"
আমি: "এইটা খাইস না। তুই যদি খাইতেই চাস পরেরটা নে।"
ডাকু: "কেন? পরেরটা কেন?"
আমি: "এইটা একটু বেশি কড়া হইয়া গেছে। প্রথমটা একটু কড়া না হইলে চলে না। এইজন্য কইতাছি পরেরটা খা।"
ডাকু: "খামু যখন কড়াটাই খামু।"
মাঝখান থেকে সাইফুল বলে উঠল "শুভ, ওরে এইটাই দে। দেখি হালায় কত খাইতে পারে।" এই কথা শোনার পর ডাকুর আরও জেধ চেপে গেল। সে মটুরে বলল "মটু ধরাইয়া দে। আমি ধরাইতে পারুম না।" সবাই সমস্বরে বলল "হ। স্টিকটা ধরাইয়া ডাকুরে দে।" পার্থ আর ডাকু ছাড়া সবাই খুব মজা নিতাছে। ওই দুইজনের ধারণাও নাই স্টিকটায় কিচ্ছু নাই। ওইটা জাস্ট একটা সিগারেট। মটু ধরাইয়া
স্টিকটা ডাকুর কাছে দিল। অভি ডাকুরে বলল "মামা কইস্যা দুইটা টান দে। খবরদার আগুন যেন না পড়ে।" ডাকু খুব কনফিডেন্টের সাথে স্টিকটা নিয়া দিলো জোরে একটা টান। আর খুকখুক কইরা কাশা শুরু করল। আমি বললাম "বাদ দে। প্রথম দিন আর বেশি খাওয়ার দরকার নাই।" কিন্তু ডাকু ঘোরের মধ্যে তখন। সে বলে "না। আমি আরও খামু।" এই বইলা আরও দু-তিনটা টান দিল। তারপর তার মুখে রাজ্য জয়ের হাসি। হৈমন্তির স্বামীর নকল করে বলে উঠল "খাইছি। আজকে আমি তাহাকে খাইছি। অনেক শখ ছিল। আজকে সেইটা পূরণ হইল।" ওর এই কথা শুনে আমরা খাওয়ার আগেই টাল।

কিছুক্ষণ পরে আসল স্টিক বানানো হইল। আর সবার হাতে হাতে ঘুরতে লাগল। ডাকুরে সবাই বললাম "প্রথম দিনের জন্য এনাফ। আর খাইস না।" সে আর খেতে চাইল না। বেচারা বুঝতেও পারলো না তার সাথে কী হইতাছে। কিছুক্ষণ পর জিকো ডাকুরে বলল "প্রথম প্রথম খাইছস। একটু পরে মাথা ঘুরাইতে পারে। এইটা নিয়া ভয় পাইস না।" ডাকু সাথেসাথেই বলে উঠল "আসলেই আমার মাথা ঘুরাইতাছে।" আতা ডাকুরে ভয় দেখানোর জন্য বলল "প্রথম দিন খাওয়ার পর আমার নার্ভাস ব্রেকডাউন হইছিল।" আতার সাথে সুর মিলিয়ে মাহমুদ বলে "আমারও ব্ল্যাক আউট হইছিল"। এইসব কথা শুনতে শুনতে বেচারা ডাকু আরও ঘাবড়ে গেল। পার্থরে বলল "পার্থ, আমারে নিয়া রুমে চল। আমি একা একা যাইতে পারুম না।" পার্থ বেচারার মন খারাপ। বীচ থেকে যাইতে ইচ্ছে করতেছেনা আবার জিগরী দোস্তের মাথা ঘোরা নিয়াও চিন্তিত। শেষমেষ, পার্থ আর ডাকু রুমে চলে গেল আর আমরা আসর জমাইয়া ফেললাম।

মিনিট দশেক পরে পার্থ দৌড়াতে দৌড়াতে এসে বলল "তোরা ডাকুরে কী খাওয়াইছস। ডাকু নি:শ্বাস নিতে পারতেছেনা। শ্বাসকস্ট হইতাছে।" সাইফুল আমারে বলে "তুই কি কিছু মিশাইছিলি?" আমি বললাম "শালা। আমি যখন ওই নকলটা বানাইছি, তখনতো তোর সবজি কাটাই হয় নাই। মিশামু কেমনে?" অভি বলে "শালায় ভং ধরছে।" পার্থ বেশ চিন্তিত হয়ে বলে "ভং ধরে নাই। আমার সাথে চল। গেলেই বুঝতে পারবি।" অগত্যা সবাই মিলে ডাকুর কাছে গেলাম। আমাদের কাতর কন্ঠে বলে, "তোদের কথা শোনা উচিৎ ছিল। প্রথম দিন এত বেশি খাওয়া উচিৎ হয়ে নাই।" মটু ভিলেনের মত হাহাহা করে হেসে বলে, "আমাগো কথা শোনো নাই মামা। এখন তুমি পালাবা কোথায়। সবজি তোর উপর ভর করছে।" আমাদের কেউ হাসি আটকে রাখতে পারতেছিলাম না। আমাদের হাসি দেখে বেচারা ডাকু আরও চুপসে গেল। সে বলে "সাইফুল একবার আমারে কইছিল, যদি বেশি নেশা উঠে যায় তাহলে তেতুল/লেবুর মত টক জাতীয় কিছু খেলে নেশা কমে যায়।" জিকো ডাকুকে বলে "মামা। তুই যে হাই হইছস তাতে লেবুতে কাজ হবে না। হাসপাতালে নিতে হবে। কিন্তু সেন্টমার্টিনে হাসপাতাল নাই মনে হয়। কোনোমতে আজকের রাতটা পার করে দে। কালকে সকাল সকাল ট্রলারে করে তোরে সোজা কক্সবাজারের কোনো হাসপাতালে নিয়া যাব।" এই কথা শুনে ডাকুর মুখ আরও শুকিয়ে যায়।

বেচারার কষ্ট দেখে একফাকে চুপি চুপি আমি বলে দিলাম যে সে শুধু সিগারেটের তামাক খেয়েছে। অন্য কিছু খায় নি। কিন্তু কে শোনে কার কথা। ডাকু উল্টো ভাবা শুরু করল আমিই মশকরা করতেছি। এদিকে পার্থ হোটেল থেকে পুরো এক গ্লাস লেবুর রস নিয়ে আসল। ডাকু সেটা ঢকঢক করে এক নিমিষেই শেষ করে ফেলল। তার পাঁচ মিনিট পর ডাকু পুরোপুরি স্বাভাবিক। কে বলবে কিছুক্ষণ আগেই আমার এই বন্ধুটি শয্যাশায়ী ছিল। যদিও লেবুর রসটা পরদিন তাকে বেশ ভুগিয়েছে। একটু পর পর টয়লেটে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ায় সব জায়গা ভালো করে ঘুরতে পারে নাই। পুরো ট্যুরটা তার জন্য বিভীষিকাময় ছিল।

সেদিন একটা জিনিস বুঝতে পেরেছিলাম মানুষের মস্তিষ্ক বা মনই সবকিছুর মূল নিয়ন্ত্রক। ডাকুর সাথে এখনো দেখা বা কথা হলে আমার ওই ঘটনাটা মনে পড়ে। অবশ্য ট্যুর থেকে ফেরার পথে এর চেয়েও মজাদার একটা ঘটনা ঘটেছিল ডাকুর সাথে। ঘটনাক্রমে সেটারও মূল হোতা ছিলাম আমি। পুরো ঘটনা লিখতে গেলে অনেক বড় হয়ে যাবে। সেজন্য আজকে এপর্যন্তই।

বি.দ্র.: গাজা নিয়ে খোলাখুলি কথা বলায় কেউ আবার এটার উপর উৎসাহী হয়ে যাবেন না। বিশেষ করে তরুণ ব্লগার যারা আছেন তাদের প্রতি কথাটা বললাম।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৯/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে মে, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:১৫

শেরজা তপন বলেছেন: অনেকদিন পরে ব্লগে আপনাকে দেখে মনে হল ঘরের মানুষ ফিরে এসছে। খুব ভাল লাগছে।
*আপনার বোঝার একটু ভুল হয়েছে- ব্লগে একটা প্রতিযোগিতা চলছে সত্য কিন্তু সেটা বাল্যস্মৃতির! যেটা এমাসের শেষ অব্দি চলবে।
এবার লিখার কথায় আসি;
আমি নিজেকে আপনার সত্যিকারে শুভাকাঙ্ক্ষী ভেবে নীচের কথাগুলো বলছি। আশা করি কষ্ট পাবেন না।
সহপাঠি ও সিনিয়রদের সাথে সেন্টমার্টিন ভ্রমনের মজার একটা ঘটনা একদম আড্ডার ভঙ্গীতে উপস্থাপন করেছেন! যারা আপনার টোনটা ধরতে পারবে তারা মজা পাবে নিশ্চিত। কিন্তু যেহেতু এটা প্রতিযোগীতার বিষয় সেহেতু ভাষা প্রয়োগে আরেকটু সতর্ক হবার প্রয়োজন ছিল। স্যারদের সাথে ভ্রমণে গিয়ে একগাদা স্টুডেন্ট দিনের বেলাতেই পুরো মাতাল হয়ে ট্রলার থেকে নামতে পারছে না এমন বিষয়টা সবাই হজম করতে পারবে না। এরপরে ঘন্টা কয়েক বাদেই গাঁজার উৎসব। মনে হচ্ছিল যে মদ -গাঁজা খাওয়াই ছিল ভ্রমণের মুল উদ্দেশ্য। নীচে যদিও সতর্ক করেছেন তবুও স্টুডেন্টদের আউটিং এর ব্যাপারে একটা ভুল ম্যাসেজ দেয়।
অবশ্য এ ঘটনা থেকে একটা চরম উপলব্ধিবোধ আপনার হয়েছে সেটা হল; সেদিন একটা জিনিস বুঝতে পেরেছিলাম মানুষের মস্তিষ্ক বা মনই সবকিছুর মূল নিয়ন্ত্রক।
তবে সমবয়েসীদের পিকনিকে এমন উড়াধুরা কাণ্ডকারখানা হামেশাই ঘটে।
পরের আরো বেশী মজার ঘটনাটা জানার অপেক্ষায় রইলাম...

* সকাল আটটায় যদি চট্টগ্রামে পৌছান তবে নয়টায় সাড়ে নয়টায় সেন্টমার্টিনে কিভাবে পৌছাবেন?

২৪ শে মে, ২০২৩ রাত ১২:২৯

অশুভ বলেছেন: কী যে বলেন ভাইয়া! আপনার কথায় কষ্ট পেলে হয়। আপনি আমার ব্লগিং জীবনের একটা বড় অনুপ্রেরণা। লেখাটা লিখতে গিয়ে আমি নিজেও ভাবছি বোধ হয় একটু খোলামেলা ভাবে লিখে ফেলছি। এজন্যই শেষে একটা সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ লিখে দিয়েছি। সত্যি কথা বলতে কি পার্টিকুলার ওই সময়টাতে আমার জীবনের সাথে এসব বিষয় অনেকটা অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। তাই স্মৃতিতে এই কথাগুলো এমনিতেই চলে আসে। আটকাতে পারি না।

স্যারদের সাথে ভ্রমণে গিয়ে একগাদা স্টুডেন্ট দিনের বেলাতেই পুরো মাতাল হয়ে ট্রলার থেকে নামতে পারছে না এমন বিষয়টা সবাই হজম করতে পারবে না।
-আসলে সবাই কিন্তু এরকম করে নাই। ১০০+ শিক্ষার্থীর মাঝে হয়ত আমরা ১০-১৫ জন এ কাজের জন্য দোষী।

মনে হচ্ছিল যে মদ -গাঁজা খাওয়াই ছিল ভ্রমণের মুল উদ্দেশ্য।
-সত্যি করে বলছি শেরজা ভাই। সেসময়টা ভ্রমণের মূল আকর্ষণই ছিল এটা। অন্তত আমার কাছে। ওই বয়ষে অনেক পাকনামো করেছি। সেসব মনে পড়লে এখন কিছুটা হলেও অসস্তি বোধ করি।

আপনার এমন দিক-নির্দেশনামূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন প্রিয় শেরজা ভাই।

২| ২৩ শে মে, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:২২

রানার ব্লগ বলেছেন: স্মৃতি কথন ভালো লেগেছে । স্মৃতি কথন বানিয়ে লেখা যায় না । উহা আপনার অতীত থেকে টেনে বের করে আনতে হয় । তাতে হালকা রঙ মেশাতে হয় ভাষার চাতুর্যে ।

২৪ শে মে, ২০২৩ রাত ১২:৩১

অশুভ বলেছেন: মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ রানা ভাই। আসলেই স্মৃতিকথন বানিয়ে লেখা যায় না। তবে তাতে রং মেশানোর কাজটা বোধ হয় খুব ভালো করে পারি না।

৩| ২৩ শে মে, ২০২৩ রাত ৮:৩৬

শায়মা বলেছেন: যাক এই উপলক্ষে স্মৃতিটাকে ঝালাই করে নেওয়া গেলো। :)

২৪ শে মে, ২০২৩ রাত ১২:৩৫

অশুভ বলেছেন: স্মৃতিটা ঝালাই হলেও মনে একটা শুন্যতা তৈরী হয়। হঠাৎ হঠাৎ মনে হয় এতো ব্যস্ত জীবন ছেড়ে আবার যদি আগের মত ছন্নছাড়া হতে পারতাম। সেই বন্ধু, সেই ক্যাম্পাস আর সেই আমি। :(

মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।

৪| ২৩ শে মে, ২০২৩ রাত ৯:০৪

একলব্য২১ বলেছেন: লন্ডন রাম কি মেড ইন বার্মা।

আপনার লেখা পড়ে প্রচুর হাসলাম। :)

২৪ শে মে, ২০২৩ রাত ১২:৩৭

অশুভ বলেছেন: জী ভাই। লন্ডন রাম মেইড ইন বার্মা। :D
আমার স্মৃতিকথন আপনাকে হাসাতে পেরেছে জেনে অত্যন্ত আনন্দিত।
মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

৫| ২৪ শে মে, ২০২৩ দুপুর ১২:১৫

আহমেদ জী এস বলেছেন: অশুভ,




আপনাদের ডাকু মামার সাথে অশুভ কাজ করে ফেলেছেন। ঠিক হয়নি। সত্যি সত্যি খারাপ কিছু হয়ে যেতে পারতো।
যাকগে, সে ঘটনাতো বহু বছর আগের তাই তখন কি হতে পারতো, তা এখন বলে লাভ নেই।

খুব মজাসে ভার্সিটি জীবন কাটিয়েছেন ! স্মৃতিকথন ৩০ জনের মূত্র বিসর্জনের মতো ছড়ছড়ে (ঝরঝরে) হয়েছে। :#)

২৪ শে মে, ২০২৩ বিকাল ৩:০৮

অশুভ বলেছেন: আহমেদ জী এস ভাইয়া
আসলেই ডাকুর সাথে অমানবিক কাজ হয়ে গেছে। কিন্তু বয়সটাই ছিল এরকম ফাইজলামি আর মজা করার। :D
সত্যি করে বলতে, আমার ভার্সিটি জীবনটা খুব মজায় কেটেছে। এত্ত এত্ত মজার স্মৃতি আছে যে বাকী জীবন ওইসব স্মৃতির জাবর কাটতে কাটতে পার করে দেয়া যাবে।
মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

৬| ২৪ শে মে, ২০২৩ বিকাল ৩:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: জীবনে আমি দুবার গাঁজা খেয়েছি। দারুন অভিজ্ঞতা হয়েছে।
আপনার লেখা সুন্দর হয়েছে।

২৪ শে মে, ২০২৩ বিকাল ৩:৫৩

অশুভ বলেছেন: গাঁজা না খাওয়াই ভালো। লেখায় আপনার প্রশংসা পাওয়ায় অত্যন্ত আনন্দিত। মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ রাজীব ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.