নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভালো মানুষ হিসাবে নিজেকে দাবি করি না কখনোই, চেষ্টা করছি ভালো মানুষ হতে। জানিনা কবে ভালো হতে পারব! আর আমি এমনিতে বেশ ঠাণ্ডা, কিন্তু রেগে গেলে ভয়াবহ! স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি, তার যদিও অধিকাংশই ভেঙ্গে যায়! আশার পিঠে আশা বেঁধে তবুও নির্লজ্

অতনু কুমার সেন

সংক্ষেপে নিজের সম্পর্কে মূল্যায়নঃ ভালো মানুষ হিসাবে নিজেকে দাবি করি না কখনোই, চেষ্টা করছি ভালো মানুষ হতে। জানিনা কবে ভালো হতে পারব! আর আমি এমনিতে বেশ ঠাণ্ডা, কিন্তু রেগে গেলে ভয়াবহ! একটু introvert টাইপের। স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি, তার যদিও অধিকাংশই ভেঙ্গে যায়! আশার পিঠে আশা বেঁধে তবুও নির্লজ্জের মত স্বপ্ন দেখে যাই। স্বপ্ন দেখি আকাশ ছুবো, মেঘের ভেলায় উড়ে যাব, নিজের রঙে রাঙ্গিয়ে দিব, সত্য ও সুন্দরের আলো ফোটাবো। জানিনা পারব কি ব্যর্থ হবো। চেষ্টা তবু করেই যাবো।

অতনু কুমার সেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঢাকার সবচেয়ে বড় লোক পরিবারের ছেলে মাগফার উদ্দিন চৌধুরী আজাদ। তখনকার দিনে এলভিস প্রিসলির গান শোনার জন্য এক ধাক্কায় ১০০০ টাকার রেকর্ড কিনে আনতো।

১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৮:২৩


তাঁদের বাড়িতে হরিণ ছিল, সরোবরে সাঁতার কাটত ধবল রাজহাঁস, মশলার বাগান থেকে ভেসে আসত দারুচিনির গন্ধ। (ডাকে পাখি খোলো আঁখি, এই গানটার শুটিং হয়েছিল তাদের বাড়িতে)।
.
.আজাদ ক্লাস সিক্সে পড়ে, সেন্ট গ্রেগরি। ১৯৬০ এর দশক। আজাদের বাবা আরেকটা বিয়ে করবেন। আজাদের মা বললেন, তুমি বিয়ে করবে না, যদি করো, আমি একমাত্র ছেলে আজাদকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাব। আজাদের বাবা আরেকটা বিয়ে করলে আজাদের মা সাফিয়া তার বালকপুতের হাত ধরে ওই রাজপ্রাসাদ পরিত্যাগ করেন এবং একটা পর্ণকুটীরে আশ্রয় নেন। ছেলেকে লেখাপড়া শেখান।
.
. আজাদ ১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ন্তজাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে মাস্টার্স পাস করে।
তাঁর বন্ধুরা যোগ দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধে, ফিরে এসেছে আগরতলা থেকে, ট্রেনিং নিয়ে। তার ঢাকায় গেরিলা অপারেশন করে। বন্ধুরা আজাদকে বলল, চল, আমাদের সাথে, অপারেশন করবি। তুই তো বন্দুক পিস্তল চালাতে জানিস। তোর আব্বার তো বন্দুক আছে, পিস্তল আছে, তুই সেগুলো দিয়ে অনেকবার শিকার করেছিস।
.
.আজাদ বলল, এই জগতে মা ছাড়া আমার কেউ নেই, আর মায়েরও আমি ছাড়া আর কেউ নেই। মা অনুমতি দিলেই কেবল আমি যুদ্ধে যেতে পারি।
মাকে আজাদ বলল, মা, আমি কি যুদ্ধে যেতে পারি?
মা বললেন, নিশ্চয়ই, তোমাকে আমার প্রয়োজনের জন্য মানুষ করিনি, দেশ ও দশের জন্যই তোমাকে মানুষ করা হয়েছে।
.
.আজাদ যুদ্ধে গেল। দুটো অপারেশনে অংশ নিল। তাদের বাড়িতে অস্ত্র লুকিয়ে রাখা হলো। গেরিলারা আশ্রয় নিল।
.
.১৯৭১ সালের ৩০ আগস্ট। ধরা পড়ে ক্র্যাক প্লাটুনের একদল সাহসী মুক্তিযোদ্ধা। সেসময় আজাদকেও আটক করা হয়। তাকে ধরে নিয়ে রাখা হলো রমনা থানা সংলগ্ন ড্রাম ফ্যাক্টরি সংলগ্ন এম.পি হোস্টেলের মিলিটারি টর্চার সেলে।
.
.গরাদের ওপারে দাঁড়িয়ে থাকা আজাদকে তাঁর মা চিনতে পারেন না। প্রচণ্ড মারের চোটে চোখমুখ ফুলে গেছে, ঠোঁট কেটে ঝুলছে, ভুরুর কাছটা কেটে গভীর গর্ত হয়ে গেছে।
.
.–“মা, কি করব? এরা তো খুব মারে। স্বীকার করতে বলে সব। সবার নাম বলতে বলে।“
–“বাবা, তুমি কারোর নাম বলোনি তো?
–না মা, বলি নাই। কিন্তু ভয় লাগে, যদি আরও মারে, যদি বলে দেই…!
.
.–বাবারে, যখন মারবে, তুমি শক্ত হয়ে থেকো। সহ্য করো। কারো নাম বলো না।
–আচ্ছা মা। ভাত খেতে ইচ্ছে করে। দুইদিন ভাত খাই না। কালকে ভাত দিয়েছিল, আমি ভাগে পাই নাই।
–আচ্ছা, কালকে যখন আসব, তোমার জন্য ভাত নিয়ে আসব।
.
.সাফিয়া বেগমের ভেতরটা দুমড়ে-মুচড়ে যায়। গায়ে হাত তোলা তো দূরে থাক, ছেলের গায়ে একটা ফুলের টোকা লাগতে দেননি কোনোদিন। সেই ছেলেকে ওরা এভাবে মেরেছে… এভাবে…
.
.মুরগির মাংস, ভাত, আলুভর্তা আর বেগুনভাজি টিফিন ক্যারিয়ারে ভরে পরদিন সারারাত রমনা থানায় দাড়িয়ে থাকেন সাফিয়া বেগম, কিন্তু আজাদকে আর দেখতে পাননি। তেজগাঁও থানা, এমপি হোস্টেল, ক্যান্টনমেন্ট-সব জায়গায় খুজলেন, হাতে তখন টিফিন ক্যারিয়ার ধরা, কিন্তু আজাদকে আর খুঁজে পেলেন না।
.
.ছেলে একবেলা ভাত খেতে চেয়েছিলেন। মা পারেননি ছেলের মুখে ভাত তুলে দিতে। সেই কষ্ট-যাতনা থেকে পুরো ১৪টি বছর ভাত মুখে তুলেন নি মা! তিনি অপেক্ষায় ছিলেন ১৪ টা বছর ছেলেকে ভাত খাওয়াবেন বলে। বিশ্বাস ছিলো তাঁর আজাদ ফিরবে। ছেলের অপেক্ষায় শুধু ভাতই নয়, ১৪বছর তিনি কোন বিছানায় শোন নি।
.
. শনের মেঝেতে শুয়েছেন শীত গ্রীষ্ম কোন কিছুতেই তিনি পাল্টান নি তার এই পাষাণ শয্যা। আর এর মুল কারণ আজাদ রমনা থানায় আটককালে বিছানা পায় নি।
.
.প্রজন্ম কিংবদন্তি আজাদদের চিনেনা, চিনে হলিউডের অ্যাকশন চলচিত্রের হিরো দের। তাইতো আজো শহীদের মাটিতে পাকিস্তানের প্রতি প্রেম উথলে উঠে বারেবারে।

. শুভ জন্মদিন শহীদ মাগফার উদ্দিন চৌধুরী আজাদ।
.
.আজ আজাদের জন্মদিন। বিনম্র শ্রদ্ধা রইলো শহীদ মাগফার উদ্দিন চৌধুরী আজাদের প্রতি। ♥

মন্তব্য ২১ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৮:৩৮

ঢাবিয়ান বলেছেন: মুক্তিযোদ্ধা আজাদের এই কাহীনিটা পড়েছিলাম অনেক আগেই। দুঃখ হয় যে তাদের এই আত্মত্যাগের বিনিময়ে যা হবার কথা ছিল তা হয় নাই।

১৬ ই জুলাই, ২০১৯ ভোর ৪:০০

অতনু কুমার সেন বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ!!

২| ১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৮:৩৯

পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: আপনি কি কপি করেছেন?

আজাদের জন্ম ১৯৪৬ সালের ১১ জুলাই। আনিসুল হকের মা উপন্যাসটা আযাদের মাকে নিয়ে লেখা।

ওপারে ভালো থাকুক আযাদরা

১৬ ই জুলাই, ২০১৯ ভোর ৪:০০

অতনু কুমার সেন বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ!!

৩| ১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৯:১৮

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: বিনম্র শ্রদ্ধা আজাদের প্রতি।

১৬ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৩:৫৯

অতনু কুমার সেন বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ!!

৪| ১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৯:১৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বিনম্র শ্রদ্ধা শহীদ আজাদের প্রতি।

এ সত্য গুলো না জানার দায় নতুন প্রজন্মের নয়... দলান্ধ রাজনীতিবিদদের।
যারা মুক্তিযুদ্ধকেও দলিয় বিবেচনায় বিচার করে। তারা অপরাধী।
অপরাধী মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়। তারা দেশব্যাপি সকল মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের কাহিনীকি সংকলিত করেছে?
দায়ী তথ্য মন্ত্রনালয়। তারা কি প্রতি বছর মুক্তিযুদ্ধের উপর ২-৩ টা ছবির জন্য রাষ্ট্রীয় অনুদান দিয়েছে।
দায়ী সো কলড চেতনাবাজরা! যারা মূখে ফেনা তুলে ফেলে -অথচ কাজের বেলা শুন্য!

স্মরন করিয়ে দেয়ায় কৃতজ্ঞতা।
পোষ্টে +++

১৬ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৩:৫৯

অতনু কুমার সেন বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ!!

৫| ১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৯:৪০

ইসিয়াক বলেছেন: বিনম্র শ্রদ্ধা শহীদ আজাদের প্রতি।

১৬ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৩:৫৮

অতনু কুমার সেন বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ!!

৬| ১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১০:১৫

কালো যাদুকর বলেছেন: আমি পড়িনি আগে। অনেক ধন্যবাদ । শুভ জন্মদিন শহীদ আজাদ।

১৬ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৩:৫৮

অতনু কুমার সেন বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ!!

৭| ১৩ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১১:১০

রাজীব নুর বলেছেন: আজাদ ভাইকে সালাম।

১৬ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৩:৫৮

অতনু কুমার সেন বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ!!

৮| ১৪ ই জুলাই, ২০১৯ দুপুর ১২:৫৩

রায়হান চৌঃ বলেছেন: শহীদ আজাদ এর প্রতি সন্মান শ্রদ্বা..............

পাকিস্থান বা ভারত প্রেমী এরা ১৯৭১ এর বীজ নয় কি ?

১৬ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৩:৫৮

অতনু কুমার সেন বলেছেন: ধন্যবাদ!!

৯| ১৪ ই জুলাই, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৫৮

সোহানী বলেছেন: হাঁ, এদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা পেলাম তারপর এদেরকেই ভুলেগেলাম। হায়রে অভাগা আমরা........।

ভালো লাগলো । শহীদ আজাদ এর প্রতি বিনম্র শ্রদ্বা।

১৬ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৩:৫৬

অতনু কুমার সেন বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ!!

১০| ১৪ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৮:৪৪

কলাবাগান১ বলেছেন: উপরে কিছু রাজাকারদের পক্ষে বলা ব্লগার দের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি মায়া কান্না দেখে হাসি পেল। জামাতি-বিনপি আমলে এরা মুখ বন্ধ করে রেখেছিল যখন শিবির এর পান্ডা রা মুক্তিযোদ্ধা পিঠে ফ্লাইং কিক দিয়েছিল..।রাজাকার শাহ আজিজ কে প্রধানমন্ত্রী করা হয়েছিল....

১৬ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৩:৫৬

অতনু কুমার সেন বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ!!

১১| ২০ শে জুলাই, ২০১৯ দুপুর ২:২৮

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: বিনম্র শ্রদ্ধা শহীদ আজাদ !
++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.