![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ব্যাংকিং খাতের সবচেয়ে চেনা মুখগুলোকে আমরা সবাই চিনি—ম্যানেজার, অফিসার, এক্সিকিউটিভরা যখন কোনো শাখায় বসে কাস্টমার সামলান, তখন আমরা ভাবি এটাই হয়তো ব্যাংকের সব কাজ।
কিন্তু এর বাইরেও আছে এক বিশাল সেনাবাহিনী, যারা নিরবচ্ছিন্ন পরিশ্রম করে যাচ্ছে প্রতিটি ব্যাংকের প্রাণরস রক্ষা করতে—এই সৈনিকরা হলেন SME Liability ডিপার্টমেন্টের সেইসব কর্মচারী, যারা Relationship Executive, Trainee Product Marketing Officer, Assistant কিংবা Senior Product Marketing Officer নামের ভার বইছেন কাঁধে।
তারা মাঠে নামেন প্রতিদিন। শহর থেকে মফস্বল, অনেক সময় দূরবর্তী অঞ্চলেও।
দোকানে দোকানে যান, পা চালিয়ে পাড়ায় পাড়ায় হাঁটেন, উদ্যোক্তাদের কথা শোনেন, কাস্টমারদের বোঝান—তাদের সঞ্চয় ব্যাংকে রাখতে। একেকজন যেন ঘামঝরা শ্রমে গড়ে তোলেন ব্যাংকের পুঁজি। অথচ যখন তারা কোনো শাখায় যান, তখন তাদের জন্য নেই কোনো চেয়ার, নেই টেবিল, এমনকি অনেক জায়গায় এক গ্লাস পানির সম্মানও দেওয়া হয় না। তাদের উপস্থিতি অনেক সময় ‘বিপদ’ হিসেবে দেখা হয়। অথচ সেই শাখার ডিপোজিট বাড়ানোর জন্য তারাই কিন্তু প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে যাচ্ছেন।
এভাবে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস টার্গেটের চাপে তারা জর্জরিত। টার্গেট পূরণ করতে না পারলে শুধুই তিরস্কার নয়, চাকরিরও ভয় থাকে মাথায়। অথচ সঠিকভাবে ইনসেন্টিভ দেওয়ার বেলায় দেখা যায় মাসের পর মাস গড়িমসি। ৪-৫ মাসের ইনসেন্টিভ বকেয়া পড়ে থাকে। অনেকে চাকরি ছেড়ে দেন হতাশ হয়ে, আবার অনেকে লজ্জায় মুখ ফুটে কিছু বলতে পারেন না।
সবচেয়ে করুণ যে বিষয়টি, তা হলো—এই কর্মীদের ‘মানুষ’ হিসেবে ভাবা হয় না অনেক সময়। ব্যাংকের আনুষ্ঠানিক কাঠামোতেও তারা অনেকাংশে ‘বহিরাগত’। অথচ তারা ব্যাংকের গ্রোথের একান্ত কারিগর।
প্রশ্ন হলো, এই বৈষম্য কবে শেষ হবে? কবে এই ফিল্ড ফোর্স পাবে ন্যায্য সম্মান?
বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর উচিত এই বৈষম্য ও অবিচারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া। ব্যাংকগুলোকে তাদের নিজস্ব নীতিমালায় এই কর্মীদের সুরক্ষা ও মর্যাদা নিশ্চিত করার বাধ্যবাধকতা তৈরি করতে হবে।
একটি ব্যাংকের স্থিতিশীলতা শুধু বিল্ডিং, সফিস্টিকেটেড সফটওয়্যার বা হাইপ্রোফাইল কর্মকর্তাদের উপর নির্ভর করে না—এর মূলে থাকে মাঠের সেই শ্রমিক, যার ঘামে ভিজে ওঠে ব্যাংকের লেনদেনপত্র।
এসব ‘অদৃশ্য’ কর্মীদের আর কতকাল অদৃশ্য রাখবো?
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই মে, ২০২৫ সকাল ১০:০৭
রাজীব নুর বলেছেন: সঠিক কথা বলেছেন।