নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্রিটিশ শাসকদের বড় ভুলের বোজা বইছে আজ রোহিঙ্গারা

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:২৬


রোহিঙ্গা আদিবাসী জনগোষ্ঠী পশ্চিম মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের একটি উলেখযোগ্য নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী। আর রোহিঙ্গারা ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত। রোহিঙ্গাদের আলাদা ভাষা থাকলেও তা অলিখিত। মায়ানমারের আকিয়াব, রেথেডাং, বুথিডাং, মংডু, কিয়কতাও, মাম্ব্রা, পাত্তরকিল্লা, কাইউকপাইউ, পুন্যাগুন এবং পাউকতাউ এলাকায় এদের নিরঙ্কুশ বাস। তাছাড়াও মিনবিয়া, মাইবন ও আন এলাকায় মিশ্রভাবে বসবাস করে থাকেন রোহিঙ্গারা। ২০১২ সালের গনণা অনুযায়ী তখন প্রায় ৮০০ ০০০ রোহিঙ্গা মায়ানমারে বসবাস করত। মায়ানমার ছাড়াও ৫ লক্ষের অধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এবং প্রায় ৫লাখ সৌদিআরবে বসবাস করতো বলে ধারনা করা হয়, যারা বিভিন্ন সময় বার্মা সরকারের নির্যাতনের কারণে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। জাতিসংঘের তথ্যমতে রোহিঙ্গারা বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতিত এবং রাষ্ট্রবিহীন একটি জনগোষ্ঠী।

মিয়ানমারের রোসাং এর অপভ্রংশ রোহাং এটা আরাকানের মধ্যযুগীয় একটা নাম আর তখন থেকেই সে এলাকায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বসবাস। আরাকানের প্রাচীন নাম রূহ্ম জনপদ। ইতিহাস এবং ভূগোল বলছে রাখাইন প্রদেশে পূর্ব ভারত হতে প্রায় খৃষ্টপূর্ব ১৫০০ বছর পূর্বে অষ্ট্রিক জাতির একটি শাখা কুরুখ নৃগোষ্ঠী প্রথম বসতি স্থাপন করে তার পর থেকে ক্রমান্বয়ে বাঙালি হিন্দু পরব্রতীকালে ধরমান্তরিত মুসলিম ও পার্সিয়ান, তুর্কি, মোগল, আরবীয় এবং পাঠানরা বঙ্গোপসাগরের উপকূল বরাবর বসতি স্থাপন করে। এই সকল নৃগোষ্ঠীর শংকরজাত জনগোষ্ঠী হলো এই রোহিঙ্গা। বস্তুত রোহিঙ্গারা কথ্য ভাষায় চট্টগ্রামের স্থানীয় উচ্চারণের প্রভাব রয়েছে। উর্দু, হিন্দি, আরবি শব্দও রয়েছে। পক্ষান্তরে ১০৪৪ খ্রিষ্টাব্দে আরাকান রাজ্য দখলদার কট্টর বৌদ্ধ বর্মী রাজা আনাওহতা মগদের বারমা থেকে দক্ষিণাঞ্চলে রোহিংগাদের বিতাড়িত করে বৌদ্ধ বসতি স্থাপন করার নির্দেশ দেন বা করান। রাখাইনে দুটি সম্প্রদায়ের বসবাস দক্ষিণে বামার বংশোদ্ভুত মগ এবং উত্তরে ভারতীয় বংশোদ্ভুত রোহিঙ্গা। মগরা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। মগের মুল্লুক কথাটি বাংলাদেশে পরিচিত। দস্যুবৃত্তির কারণেই এমন নাম হয়েছে মগদের। এক সময় তাদের দৌরাত্ম্য ঢাকা পর্যন্ত পৌঁছেছিল। মোগলরা তাদের তাড়া করে জঙ্গলে ফেরত পাঠায়া দেন।

রাখাইন শব্দটি এসেছে পালী শব্দ রাক্ষাপুরা থেকে যার সংস্কৃত প্রতিশব্দ হলো রাক্ষসপুরা। অর্থাৎ রাক্ষসদের আবাসভুমি। প্রাচীন হিন্দু ধরমীয় শাস্ত্রাদিতে অস্ট্রিক মহাজাতিকে রাক্ষস জাতি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়াছিল। মজার ব্যাপার হলো মগ জাতির কিন্তু অষ্ট্রোলয়েড মহাজাতির সাথে কোন সম্পরক নেই তারা মঙ্গোলয়েড মহাজাতি অন্তর্ভুক্ত জাতি।রোহিঙ্গাদের সম্পর্কে একটি প্রচলিত গল্প রয়েছে এভাবে সপ্তম শতাব্দীতে বঙ্গোপসাগরে ডুবে যাওয়া একটি জাহাজ থেকে বেঁচে যাওয়া লোকজন উপকূলে আশ্রয় নিয়ে বলেন আল্লাহর রহমে বেঁচে গেছি। এই রহম থেকেই এসেছে রোহিঙ্গা।তবে মধ্যযুগে ওখানকার রাজসভার বাংলা সাহিত্যের লেখকরা ঐ রাজ্যকে রোসাং বা রোসাঙ্গ রাজ্য হিসাবে উল্লেখ করেছেন। রোসাঙ্গ রাজ্যের রাজভাষা ফার্সী ভাষার সাথে বাংলা ভাষাও রাজসভায় সমাদৃত ছিল।

ইতিহাস এটা জানায় যে ১৪৩০ থেকে ১৭৮৪ সাল পর্যন্ত ২২ হাজার বর্গমাইল আয়তনের রোহাঙ্গা স্বাধীন রাজ্য ছিল। মিয়ানমারের রাজা বোদাওফায়া এ রাজ্য দখল করার পর চরম বৌদ্ধ আধিপত্য শুরু হয়।এক সময়ে ব্রিটিশদের দখলে আসে এ ভূখণ্ড। তখন বড় ধরনের ভুল করে তারা এবং এটা ইচ্ছাকৃত কিনা সে প্রশ্ন জ্বলন্ত। তারা মিয়ানমারের ১৩৯টি জাতিগোষ্ঠীর তালিকা প্রস্তুত করে। কিন্তু তার মধ্যে রোহিঙ্গাদের নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল না। এ ধরনের বহু ভূল করে গেছে ব্রিটিশ শাসকরা,আর ব্রিটিশ শাসকদের এসব বড় ভুলের বোজা বইছে আজ রোহিঙ্গারা ।

১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি মিয়ানমার স্বাধীনতা অর্জন করে এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু হয়। সে সময়ে পার্লামেন্টে রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব ছিল। এ জনগোষ্ঠীর কয়েকজন পদস্থ সরকারি দায়িত্বও পালন করেন। কিন্তু ১৯৬২ সালে জেনারেল নে উইন সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করলে মিয়ানমারের যাত্রাপথ ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হতে শুরু করে। রোহিঙ্গাদের জন্য শুরু হয় দুর্ভোগের নতুন অধ্যায়। সামরিক জান্তা তাদের বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করে। তাদের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া হয়। ধর্মীয়ভাবেও অত্যাচার করা হতে থাকে। জোর করে কেড়ে নেওয়া হয়। বাধ্যতামূলক শ্রমে নিয়োজিত করা হতে থাকে। তাদের শিক্ষা স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ নেই। বিয়ে করার অনুমতি নেই। সন্তান হলে নিবন্ধন নেই। জাতিগত পরিচয় প্রকাশ করতে দেয়া হয় না। সংখ্যা যাতে না বাড়ে সে জন্য আরোপিত হয় একের পর এক বিধিনিষেধ।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৬

চাঁদগাজী বলেছেন:

জানলাম

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৭

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: জানার জন্য অনেক কৃতজ্ঞতা ।

২| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৭

চাঁদগাজী বলেছেন:



ওহ, ব্রিটিশ কি ভুল করেছিলো?

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৮

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: এক সময়ে ব্রিটিশদের দখলে আসে এ ভূখণ্ড। তখন বড় ধরনের ভুল করে তারা এবং এটা ইচ্ছাকৃত কিনা সে প্রশ্ন জ্বলন্ত। তারা মিয়ানমারের ১৩৯টি জাতিগোষ্ঠীর তালিকা প্রস্তুত করে। কিন্তু তার মধ্যে রোহিঙ্গাদের নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল না। এ ধরনের বহু ভূল করে গেছে ব্রিটিশ শাসকরা,আর ব্রিটিশ শাসকদের এসব বড় ভুলের বোজা বইছে আজ রোহিঙ্গারা ।

৩| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১০

চাঁদগাজী বলেছেন:


আমার মতে ওটা ছোট ভুল, বৃটিশ বড় ভুল করেছে, বাষ্টার্ড জলদস্যুদের স্বাধীনতা দিয়ে

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:৫৪

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: আর এখন সেসব ভুলের মাসুল হিসেবে প্রাণ দিতে হচ্ছে নিরহ মানুষদের।

৪| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪৩

জুন বলেছেন: তখন বড় ধরনের ভুল করে তারা এবং এটা ইচ্ছাকৃত কিনা সে প্রশ্ন জ্বলন্ত। তারা মিয়ানমারের ১৩৯টি জাতিগোষ্ঠীর তালিকা প্রস্তুত করে। কিন্তু তার মধ্যে রোহিঙ্গাদের নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল না। এ ধরনের বহু ভূল করে গেছে ব্রিটিশ শাসকরা,আর ব্রিটিশ শাসকদের এসব বড় ভুলের বোজা বইছে আজ রোহিঙ্গারা ।
এটা তারা কোন ভুল করে করে নাই ব্লগ সার্চম্যান। আমার জানামতে বৃটিশরা তাদের সাড়া দুনিয়ার বিভিন্ন উপনিবেশ থেকে বিতাড়িত হবার সময় ইচ্ছে করেই এসব কীর্তি করে গেছে যেন সেখানকার অধিবাসীরা যেন শান্তিতে থাকতে না পারে। কাশ্মীর, পাঞ্জা্‌ব, বাংলাকে দুই ভাগ এবং, মধ্যপ্রাচ্যের কুর্দিস্তানকে চার ভাগ করা এমন হাজার উদাহরন আপনি পাবেন ইতিহাস ঘাটলে ।

সুলিখিত পোষ্টে +

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:৫৫

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ জুন আপা।

৫| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:১০

কানিজ রিনা বলেছেন: আচ্ছা আমেরিকা ইউরোপে আমাদের দেশের
মানুষ চাকুরী করতে যায় স্বামীদের সাথে
মেয়েরাও যায়। সেখানে একটি শিশু জম্ম
নিলে সে দেশের নাগরীক হয়ে যায়। এইটাত
মানবতার আইন। ইটালিতে দশ বছর বসবাস
করলে নাগরিকত্ব পায়। সে আইন কি আমাদের
এশিয়ায় নাই। এআইনত আন্তরজাতিক।
তাহলে কেন মায়ানমার এই আইন উপেক্ষা
করবে। ভারত বলেবেড়ায় বাঙালীরা দুইকোটি
উদ্বাস্তু আছে। আবার আমরাও বলি ভারতের
দুইকোটি লোক অবৈধ ভাবে আমাদের দেশে
আছে। কিকরে মিয়ানমার রহিঙ্গাদের হাজার
বছরের মাতৃভূমি কেড়ে নেয়।
তাহলে কি এবিষয়ে এখনও বর্বর অসভ্য
হয়ে আছে এশিয়া? ধন্যবাদ।

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:৫৮

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: আমার কাছেও আপ এই বিষয়গুলো নিয়ে বিট্রিশদের ওপর কেমন জানি খতক্যা লাগে আসলেই তারা বিট্রিশই ছিল তাই এরকম
বিট্রিশপনা করে গেছেন।

৬| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:৫৭

ব্লগ মাস্টার বলেছেন: সুন্দর পোস্ট জানতে পারলাম এখন আর আনেক কিছু ।
বোদ্ধ শুকর খেককরা ধংস হোক ।

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:৫৯

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.