নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান › বিস্তারিত পোস্টঃ

জেরুজালেমের পুরনো শহর এবং তার ইতিহাস

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:৫৩


খ্রিষ্টপূর্ব ১১শ শতকে রাজা দাউদ (রাঃ)জেরুজালেম জয়ের পূর্বে শহরটি জেবুসিয়দের বাসস্থান ছিল। এই শহরটি মজবুত নগরপ্রাচীর দ্বারা সুরক্ষিত ছিল। রাজা দাউদ (রাঃ)কর্তৃক শাসিত শহর যেটি দাউদের শহর বলে পরিচিত তা পুরনো শহরের দেওয়ালের দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থিত। তার পুত্র রাজা সুলায়মানের শহরের দেওয়াল সম্প্রসারিত করেন। তারপর ৪৪০ খ্রিষ্টপূর্বের দিকে পারস্য আমলে নেহেমিয়াব্যবিলন থেকে ফিরে আসেন এবং এর পুনর্নির্মাণ করেন। ৪১ থেকে ৪৪ খ্রিষ্টাব্দে জুডিয়ার রাজা আগ্রিপ্পা তৃতীয় দেওয়াল নামক নতুন নগরপ্রাচীর নির্মাণ করেন।৭ম শতকে বা ৬৩৭ সালে খলিফা উমর ইবনুল খাত্তাবের শাসনামলে মুসলিমরা জেরুজালেম জয় করেন।আর খলিফা উমর একে মুসলিম সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করে নেন। তিনি শহরের বাসিন্দাদের নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে চুক্তিবদ্ধ করেন। জেরুজালেম অবরোধের পর সফ্রোনিয়াস খলিফা উমরকে স্বাগতম জানান। কারণ জেরুজালেমের চার্চের কাছে পরিচিত বাইবেলের একটি ভবিষ্যতবাণীতে একজন দরিদ্র কিন্তু ন্যায়পরায়ণ এবং শক্তিশালী ব্যক্তি জেরুজালেমের খ্রিষ্টানদের রক্ষক এবং মিত্র হিসেবে আবির্ভূত হবেন। এমন উল্লেখ ছিল। সফ্রোনিয়াস বিশ্বাস করতেন যে সাদাসিধে জীবনযাপনকারী বীর যোদ্ধা উমর এই ভবিষ্যতবাণীকে পূর্ণ করেছেন। আলেক্সান্দ্রিয়ার পেট্রিয়ার্ক ইউটিকিয়াসের লেখা উমর চার্চ অব দ্য হলি সেপালচার পরিদর্শন করেন এবং উঠোনে বসেন। নামাজের সময় হলে তিনি চার্চের বাইরে গিয়ে নামাজ আদায় করেন যাতে পরবর্তীতে কেউ তার নামাজের কারণকে ব্যবহার করে কেউ পরবর্তীকালে এই চার্চকে মসজিদে রূপান্তর না করেন। তিনি এও উল্লেখ করেন যে উমর একটি আদেশনামা লিখে তা পেট্রিয়ার্ককে হস্তান্তর করেন। আর তাতে উক্ত স্থানে মুসলিমদের প্রার্থনা করতে নিষেধ করা হয় বলে ইউটিকিয়াস তার লেখায় উল্লেখ করেছেন। ১০৯৯ সালে প্রথম ক্রুসেডের সময় ইউরোপীয় খ্রিষ্টান সেনাবাহিনী জেরুজালেম দখল করে এবং ১১৮৭ সালের ২রা অক্টোবর সুলতান সালাউদ্দিন আইয়ুবীর কর্তৃক তা বিজিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তাতে তাদের কর্তৃত্ব বহাল ছিল। তিনি ইহুদিদেরকে সে শহরে বসবাসের অনুমতি দেন। ১২১৯ সালে দামেস্কের সুলতান মুয়াজ্জিম নগরের দেওয়াল ধ্বংস করেন। ১২৪৩ সালে মিশরের সাথে চুক্তি অনুযায়ী জেরুজালেম জার্মানির দ্বিতীয় ফ্রেডেরিখের হস্তগত হয়। ১২৩৯ সালে তিনি দেওয়াল পুনর্নির্মাণ করেন। কিন্তু কেরাকের আমির দাউদ সেগুলোকে ধ্বংস করে দেন। ১২৪৩ সালে জেরুজালেম পুনরায় খ্রিষ্টানদের দখলে আসে এবং দেয়ালগুলো সংস্কার করা হয়। ১২৪৪ সালে খোয়ারিজমিয় তাতররা শহরটি দখল করেন এবং সুলতান মালিক আলমুয়াত্তাম নগরপ্রাচীর ভেঙে ফেলেন। ফলে শহর আবার প্রতিরক্ষাহীন হয়ে পড়ে এবং শহরের মর্যাদা হুমকির মুখে পড়ে।

বর্তমান দেওয়ালগুলো ১৫৩৮ সালে উসমানীয় সাম্রাজ্যের সুলতান প্রথম সুলাইমান কর্তৃক নির্মিত হয়েছিল। দেওয়ালগুলো প্রায় ৪.৫ কিমি. বা ২.৮ মাইল বা দীর্ঘ ও ৫ থেকে ১৫ মিটার প্রায় ১৬ থেকে ৪৯ ফুট পর্যন্ত উঁচু এবং ৩ মিটার প্রায় ১০ ফুট পুরু। সব মিলিয়ে পুরনো শহরে মোট ৪৩টি প্রহরা টাওয়ার এবং ১১ টি গেট আছে। এদের মধ্যে সাতটি বর্তমানে উন্মুক্ত।
তুষারাবৃত পুরনো শহর, ২০০৮
পুরনো শহরটিকে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে তালিকাভুক্ত করার জন্য ১৯৮০ সালে জর্ডান প্রথম প্রস্তাব করেন। ১৯৮১ সালে এটিকে তালিকাভুক্ত করা হয়।১৯৮২ সালে আবার জর্ডানই একে ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে গণ্য করার অনুরোধ জানায়। জর্ডানের এখতিয়ার নেই উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্র এই অনুরোধের বিরোধিতা করে। সেইসাথে আরো উল্লেখ করে যে এক্ষেত্রে ইসরায়েলের সম্মতি প্রয়োজন কারণ তারা প্রত্যক্ষভাবে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণ করছে। ২০১১ সালে ইউনেস্কো বিবৃতি দেয় যে তারা পূর্ব জেরুজালেমকে অধীকৃত ফিলিস্তিনি এলাকার অংশ বলে গণ্য করে এবং জেরুজালেমের অবস্থান স্থায়ী ভিত্তিতে সমাধান করার জন্য।
কোটেলের সামনের চত্বর খালি করার দৃশ্য, জুলাই ১৯৬৭
ক্রুসেডার রাজ্য জেরুজালেমের সময় জেরুজালেমের পুরনো শহরে চারটি ফটোক ছিল। এদের প্রত্যেকটি একেক পাশে অবস্থিত ছিল। বর্তমানে অবস্থিত দেয়ালগুলো প্রথম সুলায়মানকর্তৃক নির্মিত হয় ও এর ফটক সংখ্যা এগারোটি। তবে সাতটি উন্মুক্ত রয়েছে। ১৮৮৭ সাল পর্যন্ত ফটকগুলো সূর্যাস্তের আগে বন্ধ করে দেয়া হত ও সূর্যোদয়ের সময় বন্ধ করে দেয়া হত। নিম্নোক্ত চার্ট অনুযায়ী ফটকগুলো বিভিন্ন নামে পরিচিত। বিভিন্ন ঐতিহাসিক সময়কালে ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মাধ্যমে নামগুলো চালু হয় ।
পশ্চিম দেয়ালের চত্বর

পুরনো শহরে একটি ক্ষুদ্র মরোক্কান মহল্লাও ছিল। ছয় দিনের যুদ্ধ শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ পর পশ্চিম দেওয়ালে দর্শনার্থীদের বেশি সুবিধা দেয়ার জন্য এটি ধ্বংস করে ফেলা হয়েছিল। যে অংশটি ধ্বংস করা হয়নি সেটি বর্তমানে ইহুদি মহল্লার অংশ হিসেবে রয়েছে। তারপর থেকে অমুসলিমরা মাগরিবি ব্রিজ দিয়ে টেম্পল মাউন্টে যেতে পারে। এটি অমুসলিমদের জন্য একমাত্র প্রবেশ পথ।
তথ্যসূত্রঃ http://whc.unesco.org/en/list/148

মন্তব্য ২১ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (২১) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:৫৯

রাজীব নুর বলেছেন: আবারও নতুন করে জানলাম।

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:০৭

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: আকাশ থেকে হারাম আল শরিফের দক্ষিণ অংশের
দুঃখের বিষয় আশ্রয় পাওয়া মানুষগুলোই এখন এর মালিক। :(

২| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:২৩

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: সংক্ষিপ্ত হলেও জেরুজালেম এর ইতিসাহ জেনে ভাল লাগলো ।

জর্ডানের এখতিয়ার নেই উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্র এই অনুরোধের বিরোধিতা করে। সেইসাথে আরো উল্লেখ করে যে এক্ষেত্রে ইসরায়েলের সম্মতি প্রয়োজন কারণ তারা প্রত্যক্ষভাবে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণ করছে।

বোল্ড স্থানে ইসরায়েলের স্থলে জেরুজালেম হবে।

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ ভোর ৬:০৫

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ লিটন ভাই। ঠিক করে দিচ্ছি।

৩| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:০৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ১৮৮৭ সাল থেকে সূর্যোদয় সূর্যাস্তে ফটক বন্ধ খোলার জায়গায় দুবারই বন্ধ এসেছে!!!

মুসলিমদের েএকতাবদ্ধ হবার এক যুগান্তকারী ক্ষণ!
নোংরা সউদ গং নগ্ন হয়ে গেছে!
তারা যে আর মুসলিম নেই- একজন সাধারন বিশ্বাসীও তা বলে দিতে পারে!

জেরুজালেম ইস্যুতেই তাদের কদর্য ইহুদী প্রীতি ষ্পষ্ট! তারা কোরআনের বিরোধিতায় লিপ্ত!
সউদ গং দের ক্ষমতাচ্যুত করতে বাকী বিশ্ব মুসলিমদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
কারণ মক্কা-মদীনা কোন লেবাস ধারী ভন্ড মুসলিমদের হাতে থাকতে পারে না।

কে আছ জোয়ান - হও আগুয়ান
হাকিছে ভবিষ্যত
এ তুফান ভারী দিতে হবে পারি
দিতে হবে তরী পার!

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১:০৮

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় ভৃগু ভাই।

৪| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৩

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: দুনিয়ার মজদুর বিশ্ব মুসলিম এক হও ।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১:১০

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় হাসু ভাই।

৫| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৬

মাহিরাহি বলেছেন: Jerusalem: Malaysia army 'ready' to play role

http://www.aljazeera.com/news/2017/12/jerusalem-malaysia-army-ready-play-role-171210083417291.html

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১:০৯

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: শেয়ার করায় ধন্যবাদ মাহিরাহি ভাই।

৬| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৫০

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
জেরুজালেমের বাইতুলমুকাদ্দাস মসজিদ সহ ৪-৫টি মসজিদে প্রাচিনকাল থেকে ৩ ধর্মের লোকজন
নামাজ/প্রে করছে। কোন বাধা নেই।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১:১১

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: সুন্দর কমেন্ট। ধন্যবাদ প্রিয় হাসান ভাই।

৭| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:১০

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: আল্লাহ মুসলমানদেরকে জয়যুক্ত করুন, আমিন।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১:১৩

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় মুহাম্মদ জহিরুল ভাই।

৮| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১:৩৩

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: অনেক কিছু জানা হল।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১:১৪

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় ঠ্যঠা মফিজ ভাই।

৯| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৩১

জাহাঙ্গীর কবীর নয়ন বলেছেন: ট্রাম্পের বিরুদ্ধে জিহাদের ডাক দিচ্ছেন নাকি? ভালোকথা। ইতোমধ্যে একজন বঙ্গবাসী সে ডাকে সাড়াও দিয়াছেন।
ভাই আপনাদের ইসলামপ্রীতি( অথবা বলা ভালো জেরুজালেম প্রীতি) দেখি আরবদের চেয়েও বেশী।
ভালোকথা,
হতভাগা শহর জেরুজালেম
তারে নিয়ে কান্না করে সব জাহেল-জালেম

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১:০৭

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: আলোচনায় অংশ গ্রহণে ধন্যবাদ কবি ।

১০| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:৩৯

টারজান০০০০৭ বলেছেন: ওহ জেরুজালেম ! হায় ফিলিস্তিনি, তুমি আজ সন্ত্রাসী !!!!!!!!!!!

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৪০

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

১১| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:৩১

জাহাঙ্গীর কবীর নয়ন বলেছেন:


এসব পোস্ট লিখে লাভ নেই। আকায়েদের মতো কতক জঙ্গিই পয়দা হবে কেবল। এরচেয়ে গান শুনুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.