নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান › বিস্তারিত পোস্টঃ

.এই ভারতীয় উপমহাদেশে একটা সময় ঠগিরা মানুষ হত্যা করে হিন্দু দেবী কালীর নামে উৎসর্গ করত ?

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:০৭


ঠগি’রা হলেন এক বিশেষ শ্রেণীর দস্যুদল যারা পথিকের গলায় রুমাল বা কাপড় জড়িয়ে হত্যা করত। ঠগিরা ১৩’শ থেকে ১৯ শতকে বাংলা এবং উত্তর ভারতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। তারা হিন্দুদের দেবী কালীরপূজা করত।তাদের কথা প্রথম জানা যায় ১৩৫৬ সালে ঐতিহাসিক জিয়াউদ্দীন বারানি লিখিত ফিরোজ শাহর ইতিহাস গ্রন্থে। ১৮৩০ সালে গর্ভনর জেনারেল লর্ড বেন্টিক ভারতে প্রশাসক উইলিয়াম হেনরি শ্লীম্যানকে ঠগিদের নির্মূল করতে নির্দেশ দেন। হেনরি শ্লীম্যান কয়েক বছরের চেষ্ঠার ফলে ঠগিদের নির্মূল করতে সমর্থ হয়েছিলেন।কিছু কিছু হিসেব অনুযায়ী ১৭৪০ সাল থেকে ১৮৪০ সাল এই ১০০ বছর পর্যন্ত ঠগিরা প্রায় ১ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ হত্যা করেছিল।ঠগিরা সাধারণত দলগতভাবে ব্যবসায়ী, তীর্থযাত্রীর কিংবা সৈন্যের ছদ্মবেশে ভ্রমণ করত এবং পথিমধ্যে অন্য তীর্থযাত্রীদের সাথে ভাল ব্যবহার করে তাদের সাথে মিশে যেত। তারপর তারা হঠাৎ করেই কোন যাত্রাবিরতিতে ভ্রমণকারীদের গলায় হলুদ রং এর কাপড় পেচিয়ে হত্যা করত। তাদের সম্পত্তি লুঠ করে মৃতদেহগুলোকে তারা হিন্দু দেবী কালীর নামে উৎসর্গ করত। হত্যার পর মৃতদেহগুলোকে একসাথে হাড় ভেঙ্গে কবর দিয়ে রাখত যাতে পচন প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত হয়।১৩৫৬ সালের জিয়াউদ্দীন বারানি লিখিত ফিরোজ শাহর ইতিহাস গ্রন্থে থেকে জানা যায় ১২৯০ সালে’র দিকে সুলতানের শাষন আমলে কিছু ঠগ ধরা পরে অবশ্য কেউ কেউ বলে তাদের সংখ্যা এক হাজার ছিল,আর তাদেরকে নয়া দিল্লী নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কিন্তু সুলতান তাদের একজনকেও হত্যা করেন নি বরং তাদেরকে নৌকায় তুরে ভাটির দেশে পাঠিয়ে দিতে নির্দেশ দেন যাতে তারা আর কোনদিন দিল্লীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে।স্যার এইস.এম এলিয়ট, ভারতের ইতিহাসে লিখেছেন,ঠগিরা সাধারনত বংশপরম্পরায় সেই হত্যাকান্ড ঘটাতো। একজন ঠগি বালক ১৮ বছর হলেই সে হত্যার অনুমতি পেয়ে যেত। ১৮১২ সালে ব্রিটিশ সরকার ঠগিদের কথা প্রথম জানতে পারে। সেসময় একটি গণকবরে ৫০টি মৃতদেহ গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করা অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। ঠগিরা তাদের দেবীকে বাংলায় ভবানী নামে ডাকত। তারা সাধারনত বছরের এক সময় ঘর সংসার করত এবং শরৎকালে দলগত ভাবে যাত্রা করত মানুষ হত্যার জন্য। ঠগিরা দলের সর্দারকে জমাদার নামে অভিহিত করত। ঠগিদের প্রধান তীর্থক্ষেত্র ছিল পশ্চিমবাংলার কালীঘাট এবং বিন্ধ্যাচলের ভবানী মন্দির।

ঠগিরা হত্যাকান্ডের জন্য একটি হলুদ রংএর রুমাল ব্যবহার করত যার র্দৈঘ্য ছিল মাত্র ৩০ ইঞি। রুমালটি ভাজ করে তার দুই মাথায় দুটি রুপার মুদ্রা দিযে বেধে দিত।ঠগিরা যখন কোন মানুষ হত্যা করতো,সে সময় একজনকে হত্যা করার জন্য তিনজন ঠগি থাকতো, তাদের মধ্যে একজন মাথা ঠেসে ধরতো, অন্যআরেকজন রুমালটি হত্যার শিকার ব্যাক্তির গলায় পেচিয়ে ধরত আর অরেকজন পা ধরে থাকত।ঠগিরা হত্যার পর লাশ গুলো মাটিতে পুতে ফেলত। কেউ পালিয়ে গেলে ঠগিদের অগ্রবর্তী দল তাদের হত্যা করতো। তারা সাধারনত ভিক্ষুক, সংগীতজ্ঞ, নৃত্যশিল্পী, ঝাড়ুদার, তেল বিক্রেতা, কাঠমিস্ত্রি, কামার, বিকলাঙ্গ, কুষ্ঠরোগী, গঙ্গাজলবাহক ও নারীদের হত্যা করত না ।

প্রথমদিকে কোন তীর্থযাত্রী নিখোজ হলে ব্রিটিশ শাষকরা এটাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে মনে করত কিন্তু যখন আস্তে আস্তে ব্রিটিশরাও নিখোজ হওয়া শুরু করল তখন গর্ভনর জেনারেল লর্ড বেন্টিক জানতে পাড়েন এটাতে একটি ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের হাত রয়েছে। তখন তিনি ১৮৩০ সালে ভারতের প্রশাসক উইলিয়াম হেনরি শ্লীম্যানকে ঠগীদের নির্মূল করতে নির্দেশ দেন।হেনরি ঠগিদের নির্মুল করতে গুপ্তচর নিয়োগ করেন যাতে তাদের গতিবিধি সম্পর্কে আগেই আচ করা যায়। ১৮৩০ সাল থেকে ১৮৪১ সাল পর্যন্ত তিনি প্রায় ৩৭০০ ঠগিকে ধরতে সমর্থ হন। ১৯৪০ সালের দিকে প্রায় ৫০০ ঠগির ফাঁসি দেওয়ার পর ঠগিদের সংখ্যা কমে আসে।
তথ্যসূত্রঃ
https://www.britannica.com/topic/thug
http://www.mahavidya.ca/2010/06/09/the-thuggee-cult/
http://articles.latimes.com/2003/aug/03/travel/tr-books3

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:৩১

অপ্‌সরা বলেছেন: ঠগীদের নিয়ে অনেক শুনেছি। পড়েছিও। অনেক ভালো লাগা এই পোস্টটিতে আরও জানতে পেরে। প্রিয়তে রাখলাম ভাইয়া।

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:০৭

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ আপু। আপনার পোস্টে গেছিলাম তবে মন্তব্য করার সাহস হয়নি।

২| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৩২

গরল বলেছেন: এদের আদর্শ কি ছিল, বা এরা কিসের অনুসারী ছিল, কিসের তাড়নাই বা এসব করত তারা?

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৪৩

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: এরা মনে হয় কালী পুজোর অনুসারী ছিল।

৩| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৮

রাজীব নুর বলেছেন: ্নতুন কিছু জানলাম।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৪৪

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: অনেকদিন পরে আপনাকে দেখলাম।আজকাল ব্লগে তেমন আপনার দেখা পাই না।

৪| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৯

আবু তালেব শেখ বলেছেন: আগে আংশিক জানতাম তবে এখন পুরোপুরি জানা হল

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৪৫

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ আবু তালেব ভাই।

৫| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৫৬

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: ভালো লাগলো অনেক কিছু জানা হলো। :)

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৪৬

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ হাসু ভাই।

৬| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৫৬

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: আরো জানতে চাই।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৪৬

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ হাসু ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.