![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঈসা ভাই, আমুদে একটা মানুষ; হাসি ছাড়া কথাই বলতে পারেন না কারো সাথে। বেলকমে বাংলাদেশের তরি-তরকারী-মাছ-মশলার দোকান তার, সামর্থ্যের মধ্যে সম্ভব সকল নদীমাতৃক স্বাদের ভাঁড়ার ছিল প্রিয় ঈসা ভাইর দোকান। আফ্রিকার এই প্রতিকূল মাটিতে পুঁইশাক-পালং শাক-লাউ-ঝিঙ্গা-শসা-বেগুনসহ বাহারি শাক-সবজি চাষাবাদের স্পর্ধা বেলকমে একমাত্র ঈসা ভাই-ই দেখাতে পেরেছিলেন। দুপুরে খবর এল, ঈসা ভাই নেই, না ফেরার দেশে চলে গ্যাছেন। স্তব্দ হয়ে গেলাম, এই আকস্মিক অসম্ভবে নিজেকে সান্ত্বনা দেয়ার মত কোন শব্দ নেই আমার অভিধানে। কয়েক দিনের ব্যবধানে একটি মানুষ এত অকস্মাৎ নিখোঁজ হয়ে যেতে পারে আফ্রিকায়। গেলো সপ্তাহে কয়েক জন নিগ্রো সন্ত্রাসী তার দোকান রোবারিং করতে এলে তিনি নিগ্রোদের হাতে গুলিবিদ্ধ হন, তৎক্ষণাৎ তাকে ব্লুমপন্টেইন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বুকের কাছাকাছি লেগেছিল গুলি, অপারেশানের পর ডাক্তার জানালো শংকামুক্ত। ভেবেছিলাম বেঁচেই যাবেন, আফ্রিকাতে এমন দু-চারটা বুলেটের আঘাত আর পাংগার কোপ হজম করে বেঁচে যাওয়া বাঙালির সংখ্যা নেহায়েত কম না। আমার নিজের পিঠেও এখনও ছুরির আঘাতের চিহ্ন আছে। কিন্তু হায়, অনেকের মত বুক-পকেটে কৃষ্ণ উন্মাদদের নিপীড়নের ক্ষত নিয়ে ফেরা হল না তার। ক্যারাম-বোর্ডটি এখনও চারপায়ে দাড়িয়ে আছে, লাল গুটিটাও প্রস্তুত, শুধু নেই এক জনের উস্কানি__ 'চল ভাই, এক দান খেলি'। চিংড়ি-ভর্তার প্রলোভন আর দেবে না কেউ, পুঁই শাকের ফলনও আর হয়ত হবে না বেলকমে। যমের কাছে বাজেয়াপ্ত হয়ে গ্যাছে হায় ঈসা ভাইর তল্লাটে কত কত রঙচটে সকাল-দুপুর-বিকেল। মৃত্যু আমার কাছে সহজ-স্বাভাবিক-প্রাকিতিক সত্য, তাই কারো মৃত্যুতে খুব বেশি বিমর্ষ হই না আমি। আমি ব্যথিত হই কারো অপমৃত্যুতে, কারো অনাকাক্ষিত অকাল প্রয়াণে। জীবনের অস্বাভাবিক-অপরিণত পরিসমাপ্তি কিছুতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। জীবন-জীবিকার টানাটানির পাকতালে পড়ে আজ আমরা আশ্রিত আফ্রিকার এই বিভীষিকাময় জনপদে, আমরা ক্রীতদাস তো নই নিগ্রোদের। তিনবেলা এখানে গ্রোসারি দোকানগুলোতে কলুর বলদের পরিশ্রম করে কটা পয়সা নিচ্ছি তোদের ইকোনমি থেকে, চুরি তো করছিনে, ভিক্ষে তো মাগছিনে। ইংরেজ প্রভুদের মত পাছায় চাবুক চালিয়ে তোদের বুকের পাঁজর বিক্রি করে তো আর বাঙালিরা অর্থ উপার্জন করছে না এখানে, নিজেদের শ্রম-ঘাম-মেধার রিটার্নটুকুই নিচ্ছি শুধু। তবে কেন এই অবিচার? যত্র-তত্র মাকুলাদের উপর এমন বর্বর-পাশবিক নিপীড়ন? একের পর এক বাঙালি হতাহত হওয়ার পরও কেন আফ্রিকান পুলিশের এমন নীরবতা? কেন প্রকাশ্যে গুলি করে মাকুলা মারা হলেও এর কোন সুবিচার হয় না আফ্রিকার আদালতে? কোন একটি সেকেন্ডের জন্যও আফ্রিকাতে নিরাপদ নয় উপমহাদেশীয় চামড়ার মানুষেরা? কৃষ্ণাঙ্গ নই বলেই আমরা কি তবে মানুষ নই? জবাব দে, হারামজাদা মাদিবা...
জানি হয়ত আরও অনেক ঈসা ভাই ক্ষয়ে যাবে, আরও অনেক রক্তপানের পর এই আদিম-হিংস্র কৃষ্ণাঙ্গ ভামপায়ারগুলো মানুষ হবে একদিন। উইন্টারের সেই স্নো-বিস্তীর্ণ আভোগ্রাডোবহুল নিরাপদ সকালটা আমাদের দেখা হবে না ঈসা ভাই। তবু যেখানেই থাকো, ভালো থেকো...
(বিঃদ্রঃ 'মাকুলা' একটা প্রচল গালি এখানে, যার অর্থ কুলি। উপমহাদেশীয়দের আফ্রিকান নিগ্রোরা এই নামে ডাকে।)
এই লেখাটি আমার এক বন্ধুর ফেসবুক থেকে নেয়া হয়েছে। লেখক এখানে তার মনের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। যদিও লেখাটা অনেকটা বর্ণবাদী বলে মনে হবে।
২| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৩ ভোর ৪:১৫
পিওর গাধা বলেছেন: আমার এক পরিচিত জন মাস চারেক আগে দক্ষিন আফ্রিকায় নৃশংসভাবে খুন হয়
৩| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৩ ভোর ৫:৫২
রিফাত হোসেন বলেছেন:
কিন্তু কিছু আফ্রিকান আসলেই নিরীহ । আবার কিছু আছে রগচটা ।
দুইটার মিডিয়াম বা বাঙালী ঘরনার কাউকে পাইলাম না ।
৪| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৩ ভোর ৫:৫৮
রিফাত হোসেন বলেছেন: আমি আপনার শিরোনাম পরে ভরকেই গিয়েছিলাম,পরিবর্তন করা উচিত । এর মানে এই নয় যে সব বাংলাদেশীদেরকেই টার্গেট করে ।
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই সন্ত্রাসীরা টার্গেট করে পয়সার জন্য ! এটাতে দেশী বিদেশী কাউকে খেয়াল করে না ।
এরা যদি মাকুলা বলে তাহলে আরেকটা তাদের জানা উচিত ছিল যে আফ্রিকা বলতেই আমি বুঝতাম জঙলী জানোয়ার, উগলাবুলা বা কুলির থেকেও বা দাস থেকেও ভিন্ন কিছু ! কিন্তু চিন্তা পরিবর্তন করেছি । এরা কাল হলেও আমাদের মতই মানুষ আমাদের মতই চিন্তা ভাবনা করে । কিন্তু তারা বড় ধরনের অরাজকতার মধ্যে আছে ।
মাকুলা শব্দটা প্রথম শুনলাম , পরিচিত না । আমার জানামতে এশিয়া থেকেও বড় ক্রাইসিসের মধ্যে তারা (আফ্রিকানরা) দিনাতিপাত করে, তার মাকুলা জাকুলা যতই হোক ।
৫| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৮
সাদা রং- বলেছেন: আমার ২/৩ রিলেটিভ আছে আফ্রিকাতে,তারা এখনো বেছে আছে।
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা এপ্রিল, ২০১৩ ভোর ৪:১৪
পিওর গাধা বলেছেন: আমার এক পরিচিত জন মাস চারেক আগে দক্ষিন আফ্রিকায় নৃশংসভাবে খুন হয়