নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিকৃতবুদ্ধির অধিকারী

বর্ষন মোহাম্মদ

অস্থিতিশীলতা, নষ্টামি, আর যাবতীয় প্রতারণা-প্রবণতার বিরুদ্ধে খেলা চলবে

বর্ষন মোহাম্মদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ক্ষয়ে যাওয়া ইতিহাস সাক্ষী হয় আছে প্রচীন মঠ গুলো

১৩ ই মার্চ, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২১


মুন্সীগঞ্জ সদর থানার মহাকালি ইউনিয়নের কেওয়ার গ্রামে অবস্থিত চৌধুরী বাড়ি’র মঠ। সদর হতে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই মঠটি। এ মঠটি এখনও অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। এটির পশ্চিম পার্শ্বেই রয়েছে ছোট্ট একটি বাজার। এক সময় এই জনপদে হিন্দু সম্প্রদায়ের একক আধিপত্য ছিল। এলাকায় সেই সময় শ্রীনাথ চৌধুরী প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন। এলাকায় জনশ্রুতি আছে যে, শ্রীনাথ চৌধুরী তার পিতার সমাধি স্থলের ওপর এ মঠটি নির্মাণ করে ছিল।
শ্রীনাথ চৌধুরীর সাথে ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছার কৃষ্টপুর এলাকার ভূপতি জমিদারের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। আর সেই ধারণা মতে, মুক্তাগাছার রাজা জগৎ কিশোর আচায্য চৌধুরীর পরিবারের সাথে তার পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। এই রাজ পরিবারের শ্রীনাথ চৌধুরীর “খুব সুন্দরী” এক কন্যাকেও বিয়ে দেন।রাজা জগৎ কিশোর আচায্য চৌধুরী বহুবারই এ বিক্রমপুরে এসেছিলেন এবং এ মঠটির যাবতীয় ব্যয় ভার রাজা জগৎ কিশোর আচায্য চৌধুরী বহন করেন। তিনি চৌধুরী বাড়ি হতে নদীর তীর পর্যন্ত একটি রাস্তাও তৈরি করে দেন। সে রাস্তাটি আজো আছে।
চৌধুরী বাড়ির মঠ ও মন্দিরের সাবিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন প্রয়াত কেদারেশ্বর চৌধুরী। ওরফে জলা মোক্তার। তিনি পেশায় একজন অভিজ্ঞ মোক্তার ছিলেন। এলাকায় তিনি জলা মোক্তার নামে পরিচিত। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাক বাহিনীর দালালরা জলা মোক্তার সহ চৌধুরীবাড়ি থেকে ধরে এনে ১৭ জনকে হত্যা করে।
মঠের নিচে যে মন্দির ছিল, সেখানে কয়েকটি কষ্টি পাথরের বিষ্ণু মূর্তি ছিল। এ মূর্তিগুলো স্বর্ণের চোখে অলংকৃত ছিল। এগুলো ’৭১-এর যুদ্ধের আগেই চুরি হয়ে যায়। মঠটির আনুমানিক উচ্চতা ২০০ ফুট।
সদর থানার সর্ববৃহৎ উচ্চতা বিশিষ্ট মঠ এটি। অযত্ন অবহেলায় মঠটির নিম্নভাগের প্লাস্টার খসে পড়েছে, কিন্তু উপরিভাগ অক্ষত অবস্থায় আছে। মঠটির চতুর্দিকে ছোট্ট ছোট্ট ছিদ্র থাকায় নানা ধরণের পাখি বর্তমানে বসবাস করছে।
পাখির কলকাকলির শব্দে বিকেলে অন্য রকমের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এখানে আগত দর্শনার্থীদের জন্যে এটা খুবই আনন্দদায়ক ও মনোরম দৃশ্য।
এমনি ক্ষয়ে যাওয়া ইতিহাস শাক্ষী হয় আছে মুন্সীগঞ্জের প্রচীন মঠ গুলো । দেশি-বিদেশি অনেক পর্যটক মঠগুলোর ইতিহাস, ঐতিহ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। মঠগুলো এই অঞ্চলের ঐতিহ্য বহন করে আসছে। এসব মঠের কারণে এই অঞ্চলের সুনাম দেশব্যাপী।
ভ্রমণ প্রিয়সি-পর্যটকরা এখানে এসে এসব মঠ পরিদর্শন করে থাকেন। কিন্তু সঠিক দিক নির্দেশনা ও অব্যবস্থাপনার অভাবে মূল আকর্ষণ ব্যাহত হচ্ছে।
জানা যায়, জেলায় মঠের কোনো তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন বিক্রমপুর গবেষকরা। প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর জেলার স্বল্প কিছু মঠ নিজেদের অধীনে নিলেও বেশিরভাগই অবহেলায় অযত্নে পড়ে আছে। ছোট-বড় মিলিয়ে অনেক মঠ রয়েছে এ জেলায়, তবে সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই সংশ্লিষ্টদের।
অনসন্ধানে জানা যায়, সোনারং জোড়া মন্দির যা আসলে সোনারং জোড়া মঠ নামে পরিচিত বাংলাদেশের অষ্টাদশ শতাব্দীর একটি স্থাপনা। এটি জেলার টঙ্গীবাড়ী উপজেলার সোনারং গ্রামে অবস্থিত। প্রায় ১৫ মিটার উঁচু এই মঠটি রূপ চন্দ্র নির্মাণ করেন। জোড়া মঠটি আসলে একটি ‘বড় কালি মন্দির’ আরেকটি ‘ছোট কালি মন্দির’।
বাংলা পিডিয়ার তথ্য মতে, শ্রীনগর উপজেলার শ্যামসিদ্ধি গ্রামে অবস্থিত শ্যামসিদ্ধির মঠ। শ্যামসিদ্ধির মঠটি ১৮৩৬ খিৃস্টাব্দে শম্ভু নাথ মজুমদার নির্মাণ করেন। মঠটি বর্গাকার ও প্রতি বাহুর পরিমাপ ৬মিটার ও দেয়ালগুলো এক মিটার প্রশস্ত। ইটের তৈরি ২০মিটার উঁচু মঠটি ১ দশমিক ২০ মিটার উঁচু একটি মঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে।
টঙ্গীবাড়ী উপজেলার আউটশাহী গ্রামে আউটশাহী মঠটির অবস্থান। সিরাজদিখান উপজেলার তাজপুর গ্রামে পাশাপাশি তিনটি মঠ দাঁড়িয়ে আছে, যা তাজপুর মঠ নামে পরিচিত।
বাংলা ১৩০৫ সনে শ্রী রমেন্দ্র চন্দ্র সেনের স্মৃতি রক্ষার্থে মঠ তিনটি নির্মাণ করা হয়। সিরাজদিখান উপজেলার মালখানগর গ্রামে বোস জমিদারের বাড়ির পাশে এই মঠটি দেখা যায়। তবে অনুমান করা হয় বোস জমিদারের কেউ এই মঠটি নির্মাণ করেছিলেন। এর বয়স আনুমানিক ১০০-১৫০ বছর হবে।
রামপাল ইউনিয়নের কালির আটপাড়া এলাকায় মুন্সীগঞ্জ-টঙ্গীবাড়ী রাস্তার পাশে একটি পঞ্চচূড়ার মন্দির দেখা যায় যা কালির আটপাড়া মঠ, এর বয়স ১০০ বছর।
জেলার সদর উপজেলার মহাকালির কেওয়ার এলাকায় চৌধুরী বাজার মঠ। মহাকালি ইউনিয়ন পরিষদের পূর্ব দিকে এটি অবস্থিত। সিরাজদিখান উপজেলার তালতলা খালের পূর্বদিকে ফেগুনাসার গ্রামে সু-উচ্চ মঠটি অবস্থিত। রায় পরিবারের কেউ এর প্রতিষ্ঠাতা, তাই এটি রায়ের মঠ নামে পরিচিত।
টঙ্গীবাড়ীর আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয় পূর্ব দিকে আব্দুল্লাহপুর মঠ যা শতবর্ষেরও পুরনো। টঙ্গীবাড়ী বাজার থেকে দক্ষিণে কামারখাড়ার দিকে যাওয়ার সময় রাস্তার পূর্ব দিকে রাউৎভোগ এলাকায় রাউৎভোগ মঠ। স্থানীয়দের কাছে বোস বাড়ির মঠ নামে পরিচিত।
হিন্দু ধর্মের প্রাচীন প্রথা অনুযায়ী স্বামীর মৃত্যুর পর স্বামীর সঙ্গে স্ত্রীকেও সহমরণেও বাধ্য করতো। একে সতীদাহ প্রথা বলা হয়। বিক্রমপুরে যে সতীদাহ প্রথা চালু ছিলো তার একটি নির্দশন সতী ঠাকরুণের মঠ। এলাকায় মঠটি সতী ঠাকরুণের মঠ নামে পরিচিত।
এদিকে জেলার শ্রীনগরের মাইজপাড়া মঠটি মাইজপাড়া রায় বাড়ির মঠ নামে পরিচিত। ইংরেজি ২০১৪ সালে মঠের উপরের অংশটি সংস্কারের অভাবে ভেঙে যায়। কেয়টখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে কেয়টখালি মঠটি অবস্থিত। হাসাড়ার কুলুরটেক গ্রামে খালের উত্তর পাশে একটি মঠ দেখা যায়। এর বয়স আনুমানিকভাবে ১৫০ বছর। মঠে কোনো শিলালিপি পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় প্রভাবশালী হিন্দু বোস পরিবারের মঠ নাটেশ্বর মঠ নামে পরিচিত, আনুমানিকভাবে এর বয়স ১০০ বছর। নাটেশ্বর বৌদ্ধবিহারের পশ্চিম দিকে এর অবস্থান। সিরাজদিখান থেকে শ্রীনগর যাওয়ার পথে রাস্তার উত্তর পাশে খালের পাড়ে কোলা মঠ। স্থানীয় শ্রী ঈশ্বর চন্দ্র বসুর স্মতি রক্ষার্থে তার পুত্ররা এই মঠটি নির্মিত হয়।
এদিকে জেলার সচেতন মহল অবিযোগ করে বলছে,

জেলার সরকারি ওয়েবসাইট গুলোতেও এসব মঠ সম্পর্কে সঠিক বর্ণনা ও দিক নির্দেশনা নেই। এসব মঠ দেখতে আসেন পর্যটকরা। কিন্তু সঠিক ইতিহাস ও পরিচর্যার অভাব রয়েছে। মঠগুলোর পরিসংখ্যান ও দিক নির্দেশনার ব্যবস্থা দুর্বল থাকায় পিছিয়ে পড়ছে এই অঞ্চলের সুনাম। মঠগুলোর প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই মার্চ, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৭

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনার বাড়ী কি সেই এলাকায়?

১৩ ই মার্চ, ২০২১ রাত ৮:৪৩

বর্ষন মোহাম্মদ বলেছেন: আমার বাসা মুন্সীগঞ্জ সদর । নির্বাহী সম্পাদক ( দৈনিক মুন্সীগঞ্জের খবর)

২| ১৩ ই মার্চ, ২০২১ রাত ৯:০৫

চাঁদগাজী বলেছেন:



নির্বাহী সম্পাদক ( দৈনিক মুন্সীগঞ্জের খবর), এটাই আপনার মুল কাজ? এখান থেকেই আপনার আয়?

৩| ১৪ ই মার্চ, ২০২১ রাত ১:২৯

রাজীব নুর বলেছেন: আমার বাড়ি মুন্সিগঞ্জ। শ্রী নগর থানা।

শিরোনাম টা ঠিক করুন। বানান ভুল আছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.