নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিকৃতবুদ্ধির অধিকারী

বর্ষন মোহাম্মদ

অস্থিতিশীলতা, নষ্টামি, আর যাবতীয় প্রতারণা-প্রবণতার বিরুদ্ধে খেলা চলবে

বর্ষন মোহাম্মদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গবেষণার নতুন দুয়ার বঙ্গীয় গ্রন্থ জাদুঘর

১৪ ই মার্চ, ২০২১ রাত ৮:৫৬

আধাপাকা এ ভবনের আধুনিকতার সঙ্গে রয়েছে গ্রামীণ ঐতিহ্যের ছোঁয়া গ্রন্থ জাদুঘরের ৩৫টি আলমারিতে ২০ হাজার বই সাজিয়ে রাখা হয়েছে.........
শিক্ষা, সংস্কৃতি, ইতিহাস, এতিহ্য আর কৃষ্টিতে ভরা মুন্সীগঞ্জ। এ মাটিতে জন্ম নিয়েছেন বিখ্যাত অনেক মনীষী। জ্ঞান-বিজ্ঞানে তাঁরা রেখে গেছেন অমর সব কীর্তি। সেই জ্ঞানের আলো আরো ছড়িয়ে দিতে এগিয়ে এসেছেন সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। তারই ধারাবাহিকতায় লৌহজং উপজেলার কনকসার গ্রামে উদ্বোধন করা হয় ‘বঙ্গীয় গ্রন্থ জাদুঘর’ নামের একটি লাইব্রেরি। অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠন লাইব্রেরিটি প্রতিষ্ঠা করে।
সরেজমিনে গিয়ে গ্রন্থ জাদুঘর দেখা যায়, হাজারো বই থরে থরে সাজানো রয়েছে আলমারির ভেতর। আধাপাকা এ ভবনের আধুনিকতার সঙ্গে রয়েছে গ্রামীণ ঐতিহ্যের ছোঁয়া। ওপরের সিলিংয়ে ব্যবহার করা হয়েছে বাঁশের চটি, যা গ্রামবাংলার কথা মনে করিয়ে দেয়। লাইব্রেরিতে দেখা হয় লাইব্রেরিয়ান রতন বর্মণ ও দীপক সূত্রধরের সঙ্গে। তাঁরা জানালেন, বঙ্গীয় গ্রন্থ জাদুঘর মূলত একটি গবেষণাকেন্দ্র। এখানে সাধারণ পাঠকদের তেমন আনাগোনা নেই। এখানে রয়েছে হাজার বছরের পুরনো বই। রয়েছে তালপাতায় লেখা যুগের বইও। যাঁরা বিভিন্ন গবেষণামূলক কাজ করেন, মূলত তাঁরাই এখানে আসেন। গবেষকদের থাকার জন্য এখানে রয়েছে চার তলাবিশিষ্ট একটি ছোট রেস্ট হাউস। পাশেই রয়েছে বিশাল দীঘি, মনোরম পরিবেশ। যাঁরা গবেষণাকাজে বই ব্যবহার করতে চান, তাঁরা গবেষণা করতে পারবেন এখানে থেকেই। কোনো মতেই বই বাইরে নিতে দেওয়া হয় না। ভবনের অন্য পাশে রয়েছে আব্দুল রহমান মাস্টার স্মৃতি পাঠাগার নামের একটি লাইব্রেরি। এটি বিশিষ্ট রাজনীতিক ও অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ড. নূহ-উল-আলম লেনিনের বাবার নামে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ১৯৯৮ সালে। লাইব্রেরিটি সাধারণের জন্য উন্মুক্ত। একই সঙ্গে এখানে রয়েছে একটি কম্পিউটার কেন্দ্র। শিক্ষার্থীরা সেখানে থেকে কম্পিউটারের ওপর প্রশিক্ষণ নিতে পারে।
অগ্রসর বিক্রমপুরের সভাপতি ড. নূহ-উল-আলম লেনিন বলেন, গ্রন্থ জাদুঘরটিতে বহু প্রাচীন বই রয়েছে। কেউ যদি উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করতে এখানকার বই পড়তে চায়, তবে তাকে অগ্রসর বিক্রমপুরের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। এখান থেকে বাইরে বই নেওয়া যাবে না। এখানে থেকে ফেলোশিপ দেওয়া হবে। এখানে থাকা-খাওয়ার বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। এখানেই বই নিয়ে ডিগ্রি বা গবেষণার জন্য পাঠ নিতে হবে। ভবিষ্যতে এখান থেকে স্কলারশিপ দেওয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ এখানে থেকে ফেলোশিপ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। মূলত এটি একটি আর্কাভই বা জাদুঘর গ্রন্থাগার। এখানে অনেক পুরনো বই সংরক্ষিত আছে। এখন বই ক্যাটালগিং চলবে। যিনি রিসার্চ করতে চাইবেন তাকে ওই ক্যাটালগিং দেওয়া হবে।
গ্রন্থ জাদুঘরের ৩৫টি আলমারিতে ২০ হাজার বই সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এখানে স্থান পেয়েছে তালপাতার বই, তুলট কাগজের বই, খোদাই করা ছাপার বই, সাহিত্য, সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধ, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বই ছাড়াও বাংলা সাহিত্যসহ নানা ধরনের বই।


মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই মার্চ, ২০২১ রাত ১১:৪৯

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



মল্যবান গ্রন্থ সমৃদ্ধ পাঠাগারটি প্রতিষ্ঠার জন্য ‘অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশন’ এর প্রতি রইল অনেক অনেক ধন্যবাদ
ও এর সভাপতি ড. নূহ-উল-আলম লেনিন এর প্রতি রইল শ্রদ্ধা । আমি ড. লেলিনের অনেক লেখার সাথে
পরিচিত আছি । তাঁর পিএইচডি গবেষণা অভিসন্দর্ভ ‘বাঙালি সমাজ ও বাংলা সাহিত্যে সাম্প্রদায়িকতা ও
মৌলবাদ: মূল প্রবণতা, পুনঃপাঠ ও পুনর্মূল্যায়ন’ একটি মুল্যবান গবেষনা ।

পাঠাগারটিতে থাকা ২০ হাজার গ্রন্থ সমগ্রের মাঝে অনেক প্রাচীন গ্রন্থ রয়েছে শুনে একদিকে যেমন খুশী
হয়েছি অন্যদিকে সেই গ্রন্থাগারে বসে গবেষনা করার সুযোগের অবকাঠামো ও সুবিধার কথা শুনে সেখানে থেকে
ফেলোশিপের সুযোগ নিয়ে কিছু গবেষনা কর্ম সাধনের জন্য ইচ্ছুকও হয়ে পড়ছি । তাদের সাথে যোগাযোগের
ঠিকানা দিলে খুশী হব ।

এখানে উল্লেখ্য, বাঙালীর এক বিস্ময়কর প্রতিভা পন্ডিত অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান এর জন্মস্থান এই
পাঠাগারটির বেশ কাছেই । বাঙালিরা এবং বেশিরভাগ ঐতিহাসিকরা বিশ্বাস করে, বর্তমান বাংলাদেশের
বজ্রযোগিনী গ্রামেই জন্ম হয়েছিল অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান মহাপন্ডিতের। বজ্রযোগিনী নামের সঙ্গে বজ্রযানি
বৌদ্ধ ধর্মের মিল থাকতে পারার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না ।

শুনেছি পন্ডিত অতীশ-দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান দুই শতাধিক গ্রন্থ রচনা, অনুবাদ ও সম্পাদনা করেছেন ।
বৌদ্ধ ধর্ম, রাজনীতি, জীবনী, স্তোত্রনামাসহ তাঞ্জুর নামে বিশাল এক শাস্ত্রগ্রন্থ তিনি সংকলন করেন।
বৌদ্ধ শাস্ত্র, চিকিৎসা বিদ্যা এবং কারিগরি বিদ্যা বিষয়ে তিনি অনেক গ্রন্থ রচনা করেন । প্রাচীন চর্যাগীতির
কবিদের মধ্যে পন্ডিত অতীশ দীপঙ্কর একজন ছিলেন । বিষয়টি গত বছর সামু প্রকাশিত মেগাজিনে আমার
প্রবন্ধে তথ্য উপাত্ত সহকারে বিষদভাবে উল্লেখ করা হয়েছে । অতীশ দীপঙ্কর অনেক সংস্কৃত এবং পালি বই
তিব্বতী ভাষায় অনুবাদ করেন যেগুলি পরে এ অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে বলে মনে করি।

সম্প্রতি বিক্রমপুর অঞ্চলে চলমান গবেষণায় মাটির নিচ থেকে বৌদ্ধ সভ্যতার যেসব ধ্বংসাবশেষ এ পর্যন্ত বেরিয়ে
এসেছে, তার ভিত্তিতে গবেষকেরা এ ধারণা করছেন যে সমন্বিত পরিকল্পনা আর নিপুণ স্থাপত্যশৈলীর মিশেলে
হাজার বছর আগেই বাংলাদেশে নগরসভ্যতা গড়ে উঠেছিল।বিষয়টি সামুতে প্রকাশিত আপনার
নাটেশ্বর বৌদ্ধ নগরী: এবার মিলল পিরামিড আকৃতির স্থাপনা শীর্ষক লেখাতেও উঠে এসেছে ।

বৌদ্ধ ধর্মপ্রচারক ও পণ্ডিত শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপঙ্করের জন্মস্থান প্রাচীন বিক্রমপুরে (বর্তমানে মুন্সিগঞ্জ জেলা) প্রত্নতাত্ত্বিক
খননে ধীরে ধীরে সেই পরিকল্পিত নগরেরই ছবি ফুটে উঠছে। জানা যায় মুন্সিগঞ্জের সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন
‘অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশন’-এর উদ্যোগে ও ব্যবস্থাপনায় পাঁচ বছর ধরে এ অঞ্চলে প্রত্নতাত্ত্বিক খননের কাজ
করছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান ঐতিহ্য অন্বেষণ। অতীশ দীপঙ্করের সঙ্গে এই বৌদ্ধ সভ্যতার নিবিড় সংযোগ রয়েছে।
তাঁর জন্মস্থানে বৌদ্ধবিহার, মন্দির-স্তূপের সমন্বয়ে পরিকল্পিত নগরের আভাস দেখে বোঝা যায়, জন্মের পর তাঁর
বেশ কিছুটা সময় এখানে কেটেছে। নতুন প্রত্নতাত্বিক নিদর্শনের মধ্যে বেশ বড় আকারের একটি মহাপাঠশালার ছবিও
নাকি পরিস্ফুট হযেছে , সে পাঠশালার শতাধিক শিক্ষার্থীর থাকার মত কুঠুরীর আভাস নাকি মিলেছে । দীপঙ্করের জীবিত
অবস্থায় কিংবা তাঁর সমসাময়িক কালে পাঠশালাটি চালু ছিল কিনা এবং সে সমমস্ত পাঠশালায় অতীশ দীপঙ্করের পুস্তক
পঠিত হত কিনা তা সমন্বিত ঐতিহাসিক গবেষণা ছাড়া সুনির্দিষ্টভাবে অবশ্য বলা যাবেনা ।

উল্লেখ্য দীপঙ্করের রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে বোধিপথপ্রদীপ, চর্যাসংগ্রহপ্রদীপ, সত্যদ্বয়াবতার, মধ্যমোপদেশ,
সংগ্রহগর্ভ, হৃদয়নিশ্চিন্ত, বোধিসত্ত্বমণ্যাবলি, বোধিসত্ত্বকর্মাদিমার্গাবতার, শরণাগতাদেশ, মহযানপথসাধনবর্ণসংগ্রহ,
শুভার্থসমুচ্চয়োপদেশ, দশকুশলকর্মোপদেশ, কর্মবিভঙ্গ, সমাধিসম্ভবপরিবর্ত, লোকোত্তরসপ্তকবিধি, গুহ্যক্রিয়াকর্ম,
চিত্তোৎপাদসম্বরবিধিকর্ম, শিক্ষাসমুচ্চয় অভিসময় ও বিমলরত্নলেখনা উল্লেখযোগ্য। তাই ধারণা করি এই গ্রন্থাগারে
রক্ষিত প্রাচীন পুথি পুস্তক গুলি পাঠ করে দেখলে পন্ডিত অতীশ দীপঙ্করের রচনা সম্ভারের কিছু হারিয়ে যাওয়া লেখার
সন্ধান পাওয়া যেতেও পারে । জানা যেতে পারে বাংলার হাজার বছরের ইতিহাস ও হারানো ঐতিহ্যের সন্ধান ।

মুল্যবান তথ্য সমৃদ্ধ পোষ্টটির জন্য ধন্যবাদ । পোষ্টটি প্রিয়তে গেল ।

শুভেচ্ছা রইল

২| ১৫ ই মার্চ, ২০২১ রাত ১২:৪৪

রাজীব নুর বলেছেন: খুব ভালো কাজ।
সবচেয়ে ভালো হতো যদি প্রতিটা গ্রাম আর মহল্লায় একটা করে লাইব্রেরী করা যেত। মসজিদের চেয়ে বেশী জরুরী লাইব্রেরী।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.