নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিকৃতবুদ্ধির অধিকারী

বর্ষন মোহাম্মদ

অস্থিতিশীলতা, নষ্টামি, আর যাবতীয় প্রতারণা-প্রবণতার বিরুদ্ধে খেলা চলবে

বর্ষন মোহাম্মদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফুরিয়ে যাচ্ছে ভূগর্ভস্থ পানি

২২ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ৯:১০


পৃথিবীর মোট আয়তনের তিন ভাগের দুই ভাগ পানি হলেও পানযোগ্য পানির পরিমাণ নিতান্তই অপ্রতুল। পানির যথেচ্ছ ও অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার, অমিতব্যয়ী অপচয়ের ফলে দিন দিন এই সংকট আরও বেড়ে যাচ্ছে। পৃথিবীর বুকে মানুষকে টিকে থাকতে তাই শুরু করতে হয়েছে সুপেয় পানির অনুসন্ধান।
গত শতকের শেষ সময়েও যেকোনো খাবারের দোকানে পানি ছিল ফ্রি। অর্থাৎ খাওয়ার পর পানি পানের জন্য আলাদা কোনো টাকা দিতে হতো না। খাওয়ার পর বিনা মূল্যে পানিপ্রাপ্তি ছিল ভোক্তার অধিকার। কিন্তু কয়েক দশকের ব্যবধানে পরিস্থিতি পুরোটাই পাল্টে গেছে। এখন খাবারের দোকানে আর ফ্রি পানি দেওয়া হয় না। খাবারের সঙ্গে পানিও কিনতে হয়।
একটা সময় ছিল যখন পানি বিক্রি করতে মানুষের আত্মসম্মানে লাগত। বড় বড় জনসমাবেশে, রড় রাস্তার পাশে, বাসস্ট্যান্ড বা লঞ্চ টার্মিনালে পানি বিক্রি করতে দেখা যেত। প্রতি গ্লাস কত টাকা জানতে চাইলে তারা বলত খুশি হইয়া যা দেন। কিন্তু সেই দিন পাল্টে গেছে। আর দশটা পণ্যের মতো আজ পানিও বিক্রি হচ্ছে। শুরুতে ব্যবসাটি ছিল ছোট পুঁজির উদোক্তাদের। হাল আমলে পানি ব্যবসায় নেমে পড়েছে বড় বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠান।
জানা গেছে ১৯৯০ সালে বোতলজাত পানির বাণিজ্য শুরু হয়। ওই সময় বোতলজাত পানি পান ছিল আভিজাত্যের বহিঃপ্রকাশ। সুপেয় পানি সহজলভ্য থাকায় বোতলজাত পানির প্রতি মানুষের ততটা আগ্রহও ছিল না। তিন দশকের ব্যবধানে ওয়াসার সরবরাহকৃত পানিতে ময়লা, আর্সেনিক দূষণ, ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়া, ভূ-উপরিস্থ পানিদূষণ ইত্যাদি কারণে সুপেয় পানির অভাব দেখা দিলে ‘বিশুদ্ধ’ বোতলজাত পানির প্রতি মানুষের আগ্রহের সৃষ্টি হয়। এই আগ্রহ বর্তমানে এতটাই বেড়েছে যে ঘর থেকে বের হলে সুস্থতার কথা বিবেচনায় সবার আগে সবাই নিরাপদ হিসেবে বোতলজাত পানি বেছে নেয়।
গবেষকরা বলছেন, প্রতি বছর পানির স্তর ১ মিটার থেকে ৩ মিটার পর্যন্ত নিচে নেমে যায়। গত ৫০ বছরে পানির স্তর এভাবে নেমে গেছে প্রায় ৭০ মিটার। মানুষের দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে ভূগর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত উত্তোলনকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। সঙ্কট মোকাবেলায় মাটির উপরিভাগের পানির ব্যবহার বাড়ানোর দাবি তাদের।
অন্যদিকে পানি সঙ্কটে থাকা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অনুসন্ধান চালিয়ে জানা গেছে, ৭০০ থেকে ৯০০ ফুট গভীর নলকূপেও মিলছে না পানি। এদিকে দেখা যাচ্ছে স্থানীয় জলাশয়গুলোতেও রয়েছে পর্যাপ্ত পানির অভাব। বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্রমাগত ব্যবহারযোগ্য পানির পরিমাণ হ্রাসের ফলে মানব সভ্যতা এখন হুমকির সম্মুখীন। বিশুদ্ধ বা সুপেয় পানির অভাব এখানে ক্রমেই প্রকট হচ্ছে। যতো মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় তার চেয়ে বেশি মানুষ প্রাণ হারায় বিশুদ্ধ পানির অভাবে। পানিবাহিত রোগের প্রভাবে মৃত্যুর পরিমান এখনো সবচেয়ে বেশি। ডায়রিয়া, কলেরাসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে প্রতিদিন মৃত্যু বরণ করে হাজারো মানুষ। এদের অধিকাংশই আবার শিশু।একটি পানি অধিকার বিষয়ক আইন রয়েছে। এ আইনে সুপেয় পানি এবং পরিচ্ছন্নতা ও পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য ব্যবহার্য পানি অধিকার হিসেবে বিবেচিত। পানির অধিকার যেমন সবারই রয়েছে তেমনি পানির অপচয় ও অপব্যবহার রোধ করা সবারই দায়িত্ব। কিন্তু পানির অধিকার আইন দিয়ে রক্ষা করা যায়না। প্রথমে চাই পানির সরবরাহ। এর পর অধিকারের প্রশ্ন। তাই পানি প্রাপ্তির বিষয়ে আমাদের ভূমিকা পালন করতে হবে। আসলে এখানে অধিকারের আগে দায়িত্বের বিষয়টিই চলে আসে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়া নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে গবেষকরা দেখেছেন, খাবার পানি, রান্না, গোসল, সেচসহ সব কাজে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরশীল । সুপেয় ও চাষাবাদের পানির চাহিদার প্রায় ৮০ শতাংশই ব্যবহার হয় ভূগর্ভস্থ স্তর থেকে। ১৯৬৮ সালে যখন দেশে ডিপ টিউবওয়েল বসানো শুরু হয়, তখন সর্বোচ্চ ৫০ ফুট নিচে টিউবওয়েল বসিয়েই পানি পাওয়া যেত। এখন ১৬০ ফুট বসিয়েও পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যাচ্ছে না।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান বলেন, এভাবে পানির স্তর নামতে থাকলে ভূমিধসের ঝুঁকি বাড়বে। জলাধার, জলীয়বাষ্প, মেঘ, বৃষ্টি হয়ে কীভাবে পানি চক্র পূরণ করে। আবার পৃথিবীতে পানির প্রাচুর্যও আছে। ভূপৃষ্ঠের ৭১ শতাংশই পানি দিয়ে পরিপূর্ণ, এ তথ্যও অনেকের অজানা নয়। তবে আপনি কি জানেন, এত অসীম জলরাশির মধ্যে স্বাদু পানি অর্থাৎ সুপেয় পানির পরিমাণ মাত্র ০.৩ ভাগ? তাতেও চিন্তার কিছু ছিল না, কেননা এই পরিমাণ মানুষের জন্য যথেষ্ট। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে, পৃথিবীর অনেক স্থানেই শুরু হয়েছে সুপেয় পানির জন্য হাহাকার। আর সেজন্যই সমগ্র মানবজাতিকে একটি সুনিশ্চিত ভবিষ্যতের জন্য একযোগে কাজ করতে হবে পানির অপচয় রোধ।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ৯:৪৬

শায়মা বলেছেন: কি ভয়ংকর কথা!

এমন হলে তো একদিন পৃথিবীতে পানি ছিলো এটাই ই্তিহাস হয়ে যাবে।

২| ২২ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ৯:৫৯

সোনাগাজী বলেছেন:



বর্ষাকালে পানি কি নীচের দিকে যেতে পারছে না? কি করা সম্ভব?

২২ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ১০:২০

বর্ষন মোহাম্মদ বলেছেন: বহুমাত্রিক প্রাকৃতিক সংকটের মুখে ‘মুন্সীগঞ্জ’ , প্রবহমান খালগুলোর করুণ মৃত্যুর গল্প ,সমগ্র জেলায় ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে প্রবাহমান জলাশয়, ভাই ধারাবাহিক ভাবে আমি দৈনিক পত্রিকায় ছাপা আমার প্রতিবেদন গুলো প্রকাশ করব যা জানা খুবই গুরুত্ব পুর্ন। আশা করি অনেক তথ্য বহুল লেখা প্রকাশ করতে পারবো। ব্রিটিশ আমলে ছিল পূর্ব বাংলার বৃহত্তর বাণিজ্যিক বন্দর
(যোগাযোগ অব্যবস্থাপনায় বন্দরের আদি ব্যাবসায় ভাটা ,দ্বিতীয় কলিকাতা হিসেবে পরিচিত মিরকাদিমের কমলা ঘাট বন্দর। এই বন্দরকে ঘিরে ভারত, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে বাণিজ্য করতে আসতো সওদাগররা। তৎকালীন সময়ে উপমহাদেশের একমাত্র বাণিজ্যিক বন্দর ছিলো মিরকাদিমের কমলা ঘাট। ধলেশ্বরীর শাখা নদী এবং ইছামতি নদীকে ঘিরে মিরকাদিম বন্দরের অবস্থান।
কালের বিবর্তনে প্রায় ২শ’ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই বন্দরটি অচল হয়ে পড়ে। আগামী কাল পাবেন । আমার প্রায় ৪ বছরের শ্রম ।) প্রায় ৫০ টা প্রতিবেদন দিবো আসতে আসতে) ধন্যবাদ

৩| ২২ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ১০:০০

নাহল তরকারি বলেছেন: ২০০১ সালে আমি হোটেলে পানি খেয়েছিলাম। আমার কাছ থেকে ১ টাকা নিছিলো।

৪| ২২ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ১০:৫২

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: এই টা একটা কাজের পোস্ট। এখন ই ভাবা দরকার। নইলে সামনে সমূহ বিপদ। নদী গুলো বাঁচাতে হবে। সুপেয় পানির সংকট হতে পারে বিশ্বজুড়ে। তিস্তা চুক্তি হওয়া দরকার খুব দ্রুত।

৫| ২৩ শে মার্চ, ২০২৩ সকাল ১০:৪০

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: পানি নিয়ে আমি চিন্তিত না। ততদিনে উন্নত প্রযুক্তি বের হয়ে সাগর, নদীর পানি সুপেয় করা সহজ হয়ে যাবে...

৬| ২৩ শে মার্চ, ২০২৩ সকাল ১১:২৮

শাওন আহমাদ বলেছেন: দরকারি পোস্ট! অবশ্য আমরা বিপদে না পড়ে সচেতন হই না। আগে বিপদ তারপর সচেতন।

৭| ২৩ শে মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১:১০

রাজীব নুর বলেছেন: পানি থাকবে না কেন? তিন হাত মাটি খুড়লেও পানি পাওয়া যাবে।

৮| ২৩ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ৯:৪৪

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: ভূর্গর্ভস্ত থেকে আমরা যে পানি উত্তলোন করি তা আবার ভূর্গর্ভস্তেই যায়, তাছাড়া পানির কোন ক্ষয় নেই তাই পৃথিবীতে পানি কমতির কোন কারণ নেই, সুতরাং পানি নিয়ে আমি মোটেও চিন্তিত নই। তবে দিন দিন পানি দূষিত হচ্ছে এটা অবশ্য চিন্তার বিষয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.