নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিকৃতবুদ্ধির অধিকারী

বর্ষন মোহাম্মদ

অস্থিতিশীলতা, নষ্টামি, আর যাবতীয় প্রতারণা-প্রবণতার বিরুদ্ধে খেলা চলবে

বর্ষন মোহাম্মদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

হাজার বছরের গৌরবময় এক সমৃদ্ধ জনপদ ( পর্ব-১)

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:৫৭


পর্যটনের এক অপার সম্ভাবনার জেলার নাম মুন্সীগঞ্জ। আলুর পরিবর্তে মুন্সীগঞ্জ বাসীর দাবি পর্যটনের ব্র্যান্ডিং জেলা করা যেতে পারে। কেননা আলু এখন বাংলাদেশের অধিকাংশ জেলায়ই হয়ে থাকে। এই জেলার কৃষকেরা লোকসান ছাড়া কোন আলুতে লাভবান হচ্ছে না। তাই পর্যটনের ব্র্যান্ডিং জেলা করার দাবি উঠেছে এই জেলার ইতিহাস-ঐতিহ্য ও কীর্তিমানদের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য। কেননা ইতিহাস, ঐতিহ্য আর বহু কীর্তিমান মনীষীর স্মৃতিধন্য জেলা মুন্সীগঞ্জ।
উপমহাদেশে আজকের মুন্সীগঞ্জ তথা তৎকালীন বিক্রমপুর হাজার বছরের গৌরবময় এক সমৃদ্ধ জনপদের নাম। এ জেলার প্রাচীন নিদর্শন সমূহের সাথে জড়িয়ে রয়েছে হাজারো গৌরব গাঁথা, সুখ-দুঃখের নানা উপাখ্যান। শিক্ষা, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য, সাহিত্য, সংগীত, নাটক, নৃত্য, আবৃত্তি-সংস্কৃতির সব শাখায় সমৃদ্ধ এই মুন্সীগঞ্জ। এ জেলা সুপ্রাচীন চন্দ্ররাজাদের শাসনের অঞ্জলি থেকে শুরু করে বর্ম, পাল, সেন, মুঘল ও বার ভূঁইয়াদের কীর্তিতে সমুজ্জ্বল হয়ে একটি স্বাধীন বঙ্গ রাজ্যের রাজধানী বিক্রমপুরের কীর্তিময় অংশ। বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতিকে গতিশীল রাখতে এ জেলা পালন করছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
১৮৪৫ সালের মে মাসে ব্রিটিশ সরকার মহকুমা হিসেবে মুন্সীগঞ্জকে উন্নীত করেন। এরআগে মুন্সীগঞ্জ মুঘলদের একটি থানা ছিলো। ১৯৮৪ সালের ১লা মার্চ মুন্সীগঞ্জকে জেলায় উন্নীত করেন তৎকালীন সরকার। মুন্সীগঞ্জ জেলার প্রাচীন নাম বিক্রমপুর। আর রামপাল ছিলো বঙ্গসমতটের রাজধানী শহর। বিস্তারিত আমাদের মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি মোজাম্মেল হোসেন সজলের রিপোর্ট ও ভিডিও চিত্রেপর্যটনের এক অপার সম্ভাবনার জেলার নাম মুন্সীগঞ্জ। আলুর পরিবর্তে মুন্সীগঞ্জবাসীর দাবি পর্যটনের ব্র্যান্ডিং জেলা করা যেতে পারে। কেননা আলু এখন বাংলাদেশের অধিকাংশ জেলায়ই হয়ে থাকে। এই জেলার কৃষকেরা লোকসান ছাড়া কোন আলুতে লাভবান হচ্ছেনা। তাই পর্যটনের ব্র্যান্ডিং জেলা করার দাবি উঠেছে এই জেলার ইতিহাস-ঐতিহ্য ও কীর্তিমানদের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য। কেননা ইতিহাস, ঐতিহ্য আর বহু কীর্তিমান মনীষীর স্মৃতিধন্য জেলা মুন্সীগঞ্জ।
পদ্মা, মেঘনা, ধলেশ্বরী ও ইছামতি নদী বেষ্ঠিত মুন্সীগঞ্জ জেলার আয়তন ৯৫৪ দশমিক ৯৬ বর্গকিলোমিটার। ঢাকার খুব কাছের জেলা মুন্সীগঞ্জ। যোগাযোগ ব্যবস্থাও খুব উন্নত। মেঘনা নদী জেলার গজারিয়া উপজেলাকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। গজারিয়া উপজেলা বাদে জেলার বাকি ৫টি উপজেলার পিচঢালা পথ পেরিয়ে মুন্সীগঞ্জের প্রতœতত্ত্ব ও ঐতিহ্যবাহী স্পটে গাড়ি নিয়ে যাওয়া যায়। স্পষ্টগুলো রাস্তার পাশেই বিদ্যমান। দিনে এসে দিনেই ঢাকায় ফেরা যায়। কিন্তু প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষন ও সংরক্ষণের অভাবে প্রাচীন নিদর্শনগুলো হারিয়ে যেতে বসেছে। পর্যটনও বাড়ানো যাচ্ছে না।
ইদ্রাকপুর দুর্গঃ মুঘল স্থাপত্যের অনন্য স্বাক্ষী ইদ্রাকপুর কেল্লা বা ইদ্রাকপুর দুর্গ। মুন্সীগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্র কোর্টগাঁও গ্রামে দুর্গটির অবস্থান। দুর্গটি মীর জুমলা ১৬৫৮-১৬৬০ সালে নির্মাণ করেন। তখন মুঘল সম্রাট ছিলেন আওরঙ্গ জেব আলমগীর। টপোগ্রাফি অফ ঢাকাতে টেইলর সাহেব ও ঢাকা জেলার রির্পোটে মিষ্টার ক্লে দুর্গটিকে ইদ্রাকপুর দুর্গ হিসেবে লিখেছেন। দুর্গটি দৈর্ঘ্যে ২৪০ ফুট ও প্রস্থে ২১০ ফুট আয়তনের। মাটি থেকে ৩০ ফুট উচু একটি ড্রাম আকৃতির গোলাকার মঞ্চকে কেন্দ্র করে দুর্গটির বিস্তৃতি। দুর্গের প্রবেশের মূল ফটক উত্তর দিকে। প্রাচীর দেয়াল ২ থেকে ৩ ফুট চওড়া। দুর্গের প্রাচীর শাপলা পাপড়ির মতো। প্রতিটি পাপড়িতে একটি করে ছিদ্র। ছিদ্র দিয়ে কামান ব্যবহার করা হতো। দুর্গের উত্তর কোনে বিশালকার প্রবেশদ্বার রয়েছে। সিড়ি দিয়ে মূল দুর্গের চূড়ায় উঠা যায়। চারকোনে ৪টি সশস্ত্র প্রহরী মঞ্চ। উত্তর ও দক্ষিণ প্রাচীরের মাঝে আরও একটি করে ২টি প্রহরী মঞ্চ রয়েছে। মূল দুর্গটি ভূমি থেকে ২০ ফুট উঁচু। দেয়ালের বর্তমান উচ্চতা ৪-৫ ফুট। দুর্গের প্রবেশদ্বারের উত্তর পাশে একটি গুপ্ত পথ রয়েছে। কথিত আছে, এই গুপ্ত পথ দিয়ে ঢাকার লালবাগ কেল্লায় যাওয়া যেতো। অবশ্য এর সত্যতা পাওয়া যায়নি। তবে, গুপ্তপথ দিয়ে অন্য কোথাও যাওয়া যেতো এতে কোন সন্দেহ নেই। এ দুর্গ থেকে আবদুল্লাহপুর ও আসামে যুদ্ধ প্রেরিত হয়েছিলো। এক সময় ইদ্রাপুর দুর্গে মহকুমা প্রশাসনের বাস ভবন (১৮৪৫-১৯৮৪)ছিল। ১৯৮৪-৮৯ পর্যন্ত জেলা প্রশাসকসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বাসভবন ছিল। পরবর্তীতে এটা সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের পুরাতত্ত¡ বিভাগরে আওতাভুক্ত হয়। বর্তমানে দুর্গটি পর্যটকদের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে।
বারো আউলিয়ার মাজার : মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মহাকালী ইউনিয়নের কেওয়ার গ্রামে সারিবদ্ধভাবে ১২টি মাজার রয়েছে। সুদূর আরব থেকে ৪২১ হিজরি মোতাবেক ৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে ইসলাম প্রচারের জন্য মুন্সীগঞ্জে চলে আসেন ১২জন আউলিয়া। ১৯৭৮ সালে একটি মাজার সংস্কারের সময় একটি আরবি শিলালিপি পাওয়া যায়। এ লিপিতে ১২ জন অলির নাম ও কালেমা তায়্যিবা মসজিদ ও দিঘীর বিবরণ পাওয়া যায়।
অতীশ দীপঙ্করঃ শ্রী জ্ঞান অতীশ দীপঙ্কর ৯৮০ মতান্তরে ৯৮২ খ্রিস্টাব্দে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার বজ্রযোগিনী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। অতীশ দীপঙ্কর ছিলেন, একজন প্রখ্যাত বৌদ্ধ ধর্মীয় পন্ডিত-যিনি একজন বৌদ্ধ ভিক্ষু এবং বৌদ্ধধর্মপ্রচারক ছিলেন। বজ্রযোগিনীতে ৫২ ফুট উঁচু একটি স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হয়েছে। পাশেই রয়েছে ২১ ফুট কোনাকৃতির প্রাচীন স্মৃতি মন্দির। পাশাপাশি স্মৃতিফলকের খুব কাছেই নির্মাণ করা হয়েছে অতীশ দীপঙ্কর পাবলিক অডিটরিয়াম।

পুলঘাটা ইটের পুলটি প্রাচীন ও বিলুপ্ত বিক্রমপুর মহানগরের সীমানা পরিখা মীরকাদিম খালের উপর পানাম পুলঘাটা ও আব্দুল্লাপুর গ্রামকে সংযুক্ত করেছে। সেতুটির সঠিক নির্মাণকাল ও নির্মাতা সম্পর্কে জানা যায়নি তবে ধারণা করা হয় এটি নির্মিত হয়েছিল মুঘল আমলে ১৭শ(সতেরশ) শতকে রাজা বল্লাল সেনের সময়। সেতুটি তিন খিলান বিশিষ্ট ও এটি নির্মাণে চুন-সুড়কি ব্যবহার করা হয়েছিল।
মূল সেতু থেকে ৭ কিলোমিটার দক্ষিণে টঙ্গীবাড়ী ও ৭ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে শহর অবস্থিত। ধনুকাকৃতির পুলঘাটার ইটের পুলটি ৫২.৪২ মিটার লম্বা। বিভিন্ন সময় সেতুটি সংস্কারের ফলে এর আদিরূপ অনেকটাই বিলীন হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে সেতুটি রক্ষণাবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর।
হযরত মীর সাহেবের মসজিদ : মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মিরকাদিম পৌরসভার মিরাপাড়ায় তিন গম্বুজ বিশিষ্ট ঐতিহ্যবাহী মিরাপাড়া মসজিদ ও মাজারের অবস্থান। দৈর্ঘ্য ১৫২ ফুট ও প্রস্থে ১২৬ ফুট আয়তনের মসজিদটির নির্মাণ সাল ১৬৬০ থেকে ১৭০০ সালের মধ্যে। মসজিদের ভেতরের অংশের উত্তর কোনে হযরত মীর সাহেব (রহ.) এর মাজার রয়েছে। এখানে হাজার ভক্ত মানত করে থাকেন। এখানে পুরুষের চেয়ে মহিলা ভক্তদের আগমন বেশি। মহিলাদের জন্য এই মসজিদের নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে। সপ্তাহের বৃহস্পতিবার আসর থেকে এশার নামাজ পেরিয়ে রাত ১০ টা পর্যন্ত এখানে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

ক্ষয়ে যাওয়া প্রচীন মঠ গুলো ইতিহাস শাক্ষী: জেলার সদর থানার মহাকালি ইউনিয়নের কেওয়ার গ্রামে অবস্থিত চৌধুরী বাড়ি’র মঠ। সদর হতে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই মঠটি। এ মঠটি এখনও অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। এটির পশ্চিম পার্শ্বেই রয়েছে ছোট্ট একটি বাজার। এক সময় এই জনপদে হিন্দু সম্প্রদায়ের একক আধিপত্য ছিল। এলাকায় সেই সময় শ্রীনাথ চৌধুরী প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন। এলাকায় জনশ্রুতি আছে যে, শ্রীনাথ চৌধুরী তার পিতার সমাধি স্থলের ওপর এ মঠটি নির্মাণ করে ছিল।শ্রীনাথ চৌধুরীর সাথে ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছার কৃষ্টপুর এলাকার ভূপতি জমিদারের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। আর সেই ধারণা মতে, মুক্তাগাছার রাজা জগৎ কিশোর আচায্য চৌধুরীর পরিবারের সাথে তার পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। এই রাজ পরিবারের শ্রীনাথ চৌধুরীর “খুব সুন্দরী” এক কন্যাকেও বিয়ে দেন।রাজা জগৎ কিশোর আচায্য চৌধুরী বহুবারই এ বিক্রমপুরে এসেছিলেন এবং এ মঠটির যাবতীয় ব্যয় ভার রাজা জগৎ কিশোর আচায্য চৌধুরী বহন করেন। তিনি চৌধুরী বাড়ি হতে নদীর তীর পর্যন্ত একটি রাস্তাও তৈরি করে দেন। সে রাস্তাটি আজো আছে।চৌধুরী বাড়ির মঠ ও মন্দিরের সাবিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন প্রয়াত কেদারেশ্বর চৌধুরী। ওরফে জলা মোক্তার। তিনি পেশায় একজন অভিজ্ঞ মোক্তার ছিলেন। এলাকায় তিনি জলা মোক্তার নামে পরিচিত। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাক বাহিনীর দালালরা জলা মোক্তার সহ চৌধুরীবাড়ি থেকে ধরে এনে ১৭ জনকে হত্যা করে।মঠের নিচে যে মন্দির ছিল, সেখানে কয়েকটি কষ্টি পাথরের বিষ্ণু মূর্তি ছিল। এ মূর্তিগুলো স্বর্ণের চোখে অলংকৃত ছিল। এগুলো ’৭১-এর যুদ্ধের আগেই চুরি হয়ে যায়। মঠটির আনুমানিক উচ্চতা ২০০ ফুট।সদর থানার সর্ববৃহৎ উচ্চতা বিশিষ্ট মঠ এটি। অযত্ন অবহেলায় মঠটির নিম্নভাগের প্লাস্টার খসে পড়েছে, কিন্তু উপরিভাগ অক্ষত অবস্থায় আছে। মঠটির চতুর্দিকে ছোট্ট ছোট্ট ছিদ্র থাকায় নানা ধরণের পাখি বর্তমানে বসবাস করছে।
পাখির কলকাকলির শব্দে বিকেলে অন্য রকমের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এখানে আগত দর্শনার্থীদের জন্যে এটা খুবই আনন্দদায়ক ও মনোরম দৃশ্য।
এমনি ক্ষয়ে যাওয়া ইতিহাস শাক্ষী হয় আছে মুন্সীগঞ্জের প্রচীন মঠ গুলো । দেশি-বিদেশি অনেক পর্যটক মঠগুলোর ইতিহাস, ঐতিহ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। মঠগুলো এই অঞ্চলের ঐতিহ্য বহন করে আসছে। এসব মঠের কারণে এই অঞ্চলের সুনাম দেশব্যাপী।
ভ্রমণ প্রিয়সি-পর্যটকরা এখানে এসে এসব মঠ পরিদর্শন করে থাকেন। কিন্তু সঠিক দিক নির্দেশনা ও অব্যবস্থাপনার অভাবে মূল আকর্ষণ ব্যাহত হচ্ছে।
জানা যায়, জেলায় মঠের কোনো তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন বিক্রমপুর গবেষকরা। প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর জেলার স্বল্প কিছু মঠ নিজেদের অধীনে নিলেও বেশিরভাগই অবহেলায় অযত্নে পড়ে আছে। ছোট-বড় মিলিয়ে অনেক মঠ রয়েছে এ জেলায়, তবে সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই সংশ্লিষ্টদের।
অনসন্ধানে জানা যায়, সোনারং জোড়া মন্দির যা আসলে সোনারং জোড়া মঠ নামে পরিচিত বাংলাদেশের অষ্টাদশ শতাব্দীর একটি স্থাপনা। এটি জেলার টঙ্গীবাড়ী উপজেলার সোনারং গ্রামে অবস্থিত। প্রায় ১৫ মিটার উঁচু এই মঠটি রূপ চন্দ্র নির্মাণ করেন। জোড়া মঠটি আসলে একটি ‘বড় কালি মন্দির’ আরেকটি ‘ছোট কালি মন্দির’।
বাংলা পিডিয়ার তথ্য মতে, শ্রীনগর উপজেলার শ্যামসিদ্ধি গ্রামে অবস্থিত শ্যামসিদ্ধির মঠ। শ্যামসিদ্ধির মঠটি ১৮৩৬ খিৃস্টাব্দে শম্ভু নাথ মজুমদার নির্মাণ করেন। মঠটি বর্গাকার ও প্রতি বাহুর পরিমাপ ৬মিটার ও দেয়ালগুলো এক মিটার প্রশস্ত। ইটের তৈরি ২০মিটার উঁচু মঠটি ১ দশমিক ২০ মিটার উঁচু একটি মঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে।

টঙ্গীবাড়ী উপজেলার আউটশাহী গ্রামে আউটশাহী মঠটির অবস্থান। সিরাজদিখান উপজেলার তাজপুর গ্রামে পাশাপাশি তিনটি মঠ দাঁড়িয়ে আছে, যা তাজপুর মঠ নামে পরিচিত।
বাংলা ১৩০৫ সনে শ্রী রমেন্দ্র চন্দ্র সেনের স্মৃতি রক্ষার্থে মঠ তিনটি নির্মাণ করা হয়। সিরাজদিখান উপজেলার মালখানগর গ্রামে বোস জমিদারের বাড়ির পাশে এই মঠটি দেখা যায়। তবে অনুমান করা হয় বোস জমিদারের কেউ এই মঠটি নির্মাণ করেছিলেন। এর বয়স আনুমানিক ১০০-১৫০ বছর হবে।
রামপাল ইউনিয়নের কালির আটপাড়া এলাকায় মুন্সীগঞ্জ-টঙ্গীবাড়ী রাস্তার পাশে একটি পঞ্চচূড়ার মন্দির দেখা যায় যা কালির আটপাড়া মঠ, এর বয়স ১০০ বছর।
জেলার সদর উপজেলার মহাকালির কেওয়ার এলাকায় চৌধুরী বাজার মঠ। মহাকালি ইউনিয়ন পরিষদের পূর্ব দিকে এটি অবস্থিত। সিরাজদিখান উপজেলার তালতলা খালের পূর্বদিকে ফেগুনাসার গ্রামে সু-উচ্চ মঠটি অবস্থিত। রায় পরিবারের কেউ এর প্রতিষ্ঠাতা, তাই এটি রায়ের মঠ নামে পরিচিত।
টঙ্গীবাড়ীর আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয় পূর্ব দিকে আব্দুল্লাহপুর মঠ যা শতবর্ষেরও পুরনো। টঙ্গীবাড়ী বাজার থেকে দক্ষিণে কামারখাড়ার দিকে যাওয়ার সময় রাস্তার পূর্ব দিকে রাউৎভোগ এলাকায় রাউৎভোগ মঠ। স্থানীয়দের কাছে বোস বাড়ির মঠ নামে পরিচিত।
হিন্দু ধর্মের প্রাচীন প্রথা অনুযায়ী স্বামীর মৃত্যুর পর স্বামীর সঙ্গে স্ত্রীকেও সহমরণেও বাধ্য করতো। একে সতীদাহ প্রথা বলা হয়। বিক্রমপুরে যে সতীদাহ প্রথা চালু ছিলো তার একটি নির্দশন সতী ঠাকরুণের মঠ। এলাকায় মঠটি সতী ঠাকরুণের মঠ নামে পরিচিত।
এদিকে জেলার শ্রীনগরের মাইজপাড়া মঠটি মাইজপাড়া রায় বাড়ির মঠ নামে পরিচিত। ইংরেজি ২০১৪ সালে মঠের উপরের অংশটি সংস্কারের অভাবে ভেঙে যায়। কেয়টখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে কেয়টখালি মঠটি অবস্থিত। হাসাড়ার কুলুরটেক গ্রামে খালের উত্তর পাশে একটি মঠ দেখা যায়। এর বয়স আনুমানিকভাবে ১৫০ বছর। মঠে কোনো শিলালিপি পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় প্রভাবশালী হিন্দু বোস পরিবারের মঠ নাটেশ্বর মঠ নামে পরিচিত, আনুমানিকভাবে এর বয়স ১০০ বছর। নাটেশ্বর বৌদ্ধবিহারের পশ্চিম দিকে এর অবস্থান। সিরাজদিখান থেকে শ্রীনগর যাওয়ার পথে রাস্তার উত্তর পাশে খালের পাড়ে কোলা মঠ। স্থানীয় শ্রী ঈশ্বর চন্দ্র বসুর স্মতি রক্ষার্থে তার পুত্ররা এই মঠটি নির্মিত হয়।
এদিকে জেলার সচেতন মহল অবিযোগ করে বলছে, জেলার সরকারি ওয়েবসাইট গুলোতেও এসব মঠ সম্পর্কে সঠিক বর্ণনা ও দিক নির্দেশনা নেই। এসব মঠ দেখতে আসেন পর্যটকরা। কিন্তু সঠিক ইতিহাস ও পরিচর্যার অভাব রয়েছে। মঠগুলোর পরিসংখ্যান ও দিক নির্দেশনার ব্যবস্থা দুর্বল থাকায় পিছিয়ে পড়ছে এই অঞ্চলের সুনাম। মঠগুলোর প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন- সংগ্রহীত




মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৮

রাজীব নুর বলেছেন: আমার বাড়ি মুন্সিগঞ্জ।
আমি গর্বিত।

২| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:১৭

কামাল১৮ বলেছেন: জেলাটির নাম বিক্রমপুর রাখা উচিত ছিলো।স্মৃতির আড়ালে পড়ে যাচ্ছে বিক্রমপুর।

৩| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৩৮

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ১৯৯৬ সালে এক মাসের জন্য গিয়েছিলাম। তখন শহর হিসাবে খুব অনুন্নত ছিল। খাবার জন্য ভালো একটা রেস্টুরেন্ট খুঁজতে অনেক বেগ পেতে হয়েছিল। তবে ২০১৮ সালে আরেকবার গিয়েছিলাম গ্রামের এলাকায়। খুব সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য আছে। মুগ্ধ হয়েছি।

৪| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ১:৩৭

কাছের-মানুষ বলেছেন: তথ্যবহুল পোষ্ট।

৫| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:৫০

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: চমৎকার লেখা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.