![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবন মানে শুধুই যদি প্রাণ রসায়ন/ জোছনা রাতে মুগ্ধ কেন আমার নয়ন। [email protected]
মেটে রঙের বেশ বড় সাইজের টিকটিকি । দেয়াল বেয়ে ছুটে যায়। কখনও মেঝের ওপর পড়ে। তখন থপ করে শব্দ হয়। তারপর চোখের পলকে দৌড়ে পালায়। তো, এই প্রাণিটা এই বহুতলে কীভাবে এল? রিয়াদ খানিকটা বিস্মিত। তবে টিকটিকিটার শরীরটি কিন্তু বেশ নধর। কি এমন খায় যে ওরকম হল? তেলাপোকা? মশা? রিয়াদ মোবাইলে ওঠার ছবি তুলতে যায়। তার আগেই অদৃশ্য আলমারীর ওপাশে। রিয়াদ মুচকি হাসে। মনে মনে ভাবে: থাক, টিকটিকি মশায় এই ফ্ল্যাটে মনের আনন্দে থাক । সাধারণত গ্রামাঞ্চলে এসব প্রাণি ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ খেয়ে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখে। বহুতলে এ কথা প্রযোজ্য কিনা কে জানে, তবে বহুতলে তেলাপোকার সাংঘাতিক উৎপাত আছে। সেগুলোই ধরে ধরে এখন খাক।
ভয়ানক যান্ত্রিক এক শহরের একটি বহুতলে মানুষের চোখের আড়ালে এই নিরীহ প্রানিটি টিকে আছে ...প্রায় শব্দহীন ... ভাবলে রিয়াদ- এর কেমন যেন লাগে।
কিন্তু, বেচারা যে মানুষের লোভের বলি হয়ে অকালে প্রাণ হারাবে রিয়াদ তখনও জানত না ...
টিকটিকিটার হৃষ্টপুষ্ট সাইজ কিন্তু রিয়াদকে বেশ চিন্তায় ফেলে দিল। ওই টিকটিকিটা তক্ষকের ছোট জাত নয় তো? বাংলাদেশে তো এখন তক্ষক ধরার ধুম পড়েছে। তক্ষক কে সিলেট অঞ্চলে বলে ‘ককা’ বা ‘কক্কে’। অনেকে আবার ‘তক্কে’ও বলে। তো, কক্কে বা তক্কে -সে যাই হোক না কেন -প্রাণিটি দিয়ে নাকি বিদেশে দুরারোগ্য ব্যাধির কী সব মেডিসিন তৈরি করে। কাজেই ওই গাছবাসী নিরীহ প্রাণিটির ওপর দেশি-বিদেশি চোরা কারবারিদের লোভার্ত চোখ গিয়ে পড়েছে । গ্রামগঞ্জের তরুণ-যুবকরা টাকার লোভে হন্যে হয়ে বন-বাদার, জঙ্গল দাপিয়ে তক্ষক ধরে চোরা কারবারিদের কাছে চড়া দামে বিক্রি করছে।
জয়নাল কি চোরা কারবারিদের সঙ্গে জড়িত?
কথাটা বেশ ক’দিন ধরেই ভাবছে রিয়াদ। নইলে সেদিন জয়নাল ফোন করে তক্ষক-এর প্রসঙ্গ তুললই-বা কেন? জয়নাল এ পাড়ারই ছেলে। রিয়াদেরই সমবয়েসি হবে। জয়নাল অবশ্য পড়াশোনা বেশিদূর করেনি। ইন্টারমিডিয়েট পাস করে টুকটাক ব্যবসায় নেমে গেছে । সন্ধ্যার পর গলির মুখে আড্ডা মারে। কাজেই পড়াশোনা নিয়ে উদ্বিগ্ন রিয়াদের সঙ্গে জয়নালের একটা দূরত্ব তৈরি হয়ে গেছে । যোগাযোগ অবশ্য আগের মতোই রয়েছে। জয়নাল মাঝেমাঝে আসে রিয়াদদের ফ্ল্যাটে। রিয়াদের মা যান ওদের বাসায় সেতারা খালার সঙ্গে গল্প করতে।
রিয়াদ সে দিন সন্ধ্যায় ইউনিভারসিটি থেকে ফিরেছে। দরজা খুলে দিয়েছিল ঝুমা। রিয়াদের এই শ্যামলা ছিপছিপে চশমাপরা বোনটি বেশ সপ্রতিভ। এ বছরই জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পুরাতত্ত্বে ভর্তি হয়েছে। প্রকৃতি-পরিবেশ নিয়ে ভীষণ সচেতন। ‘বৃক্ষলোক’ নামে একটি পরিবেশবাদী সংগঠনের সক্রিয় সদস্য।
দরজা বন্ধ করে ঝুমা আবার কিচেনে চলে যায়। ড্রইংরুমে টিউব লাইট জ্বলে ছিল। সোফায় বসে ছিল জয়নাল । চা খাচ্ছিল। রিয়াদকে দেখে হাসল। বড় ফ্যাকাসে সে হাসি। রিয়াদ শুনেছে শেয়ারেও নাকি হেভি লস করেছে জয়নাল । পোশাক-আশাক অবশ্য মলিন নয়। কালো রঙের কর্ডের প্যান্টের ওপর সাদা রঙের ফুলহাতা গেঞ্জি ইন করে পরেছে। কোমরে চওড়া বেল্ট। গলায় চক্রাবক্রা মাফলার। মাঝেমাঝে কাশছিল জয়নাল। রোগা । কালোমতন চেহারা। ইদানীং নাকি পলিটিক্যাল কনেকশনও তৈরি হয়েছে তার।
উলটো দিকের সোফায় বসে ছিল মেহেদী ভাই। হাতে চায়ের কাপ। মেহেদী ভাইয়ের পরনে অফিসিয়াল ড্রেস। অফিস থেকে ফিরেছেন। কয়েকদিন আগে ফোন করে জয়নাল বলেছিল, তোর লগে আমার কথা আছে। রিয়াদ পাত্তা দেয়নি বলে মেহেদী ভাইকে ধরেছে হয়তো ।
চিটচিটে গরম। হাতমুখ ধুতে হবে। ফ্রিজ খুলে ঠান্ডা পানির বোতল নিয়ে নিজের ঘরে ঢুকে পড়ত রিয়াদ ... হঠাৎ ‘কক্কে’ শব্দটা কানে যেতেই সোফায় বসে পড়ল। গলায় ঢকঢক করে ঠান্ডা পানি ঢালে। আজকাল অস্বাভাবিক গরম পড়ে। চিরচেনা প্রকৃতি দ্রুত বদলে যাচ্ছে মানুষের লোভে বলি হয়ে ...
জয়নাল বলল, মেহেদী ভাই, আমার এক ফেরেনড আছে রমজান নাম। সেই রমজানে কইল তক্ষকের মাংস দিয়া নাকি বিদেশে ক্যানসার আর এইডসের ওষুধ তৈরি হয় ।
তাই নাকি? মেহেদী ভাই কে অবাক মনে হল। রিয়াদের এই বড় ভাইটি চারপাশে কী হচ্ছে না হচ্ছে সে ব্যাপারে কেমন কোনও ধারণা রাখে না। সময় পেলেই ঘুমায়। টিভিতে খেলাটেলাও তেমন দেখে না।
হ। গ্রামেগঞ্জে একেকটা তক্ষক কয়েক কোটি টাকায় বিক্রি হইতেছে। বলে চায়ে চুমুক দেয় জয়নাল।
কোটি টাকা? বলিস কী! মেহেদী ভাই প্রায় চেঁচিয়ে ওঠে। একটা প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরি করে মেহেদী ভাই । প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা দেখে। টাকার মূল্য বোঝে।
ঝুমা ড্রইংরুমে আসে। হাতে চায়ের কাপ। কাপটা রিয়াদকে দেয় । তারপর সোফায় বসে ঝুমা বলে, হ্যাঁ, ভাইয়া। আজকাল তক্ষক অনেক দামে বিক্রি হচ্ছে। কেন তুমি পেপারে পড়নি? তক্ষকের বৈজ্ঞানিক নাম নাইট হিরোন বা নিশি বক।
নিশি বক?
হ্যাঁ। নিশি বক। ভারি ভীরু প্রাণি, গাছের ডালে লুকিয়ে থাকে, ‘কক্কে’ ‘কক্কে’ বলে ডাকে। পোকামাকড় ধরে খায় । তো, চোরাকারবারিরা আজকাল যা শুরু করেছে তাতে বাংলাদেশ থেকে খুব তাড়াতাড়ি তক্ষক বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
তাই নাকি?
হ্যাঁ। সিলেটের কুলাউড়া ও জুড়ী উপজেলায় বেশি দামে বিক্রি করবে বলে অনেকেই গোপনে তক্কে ধরে যত্ন করে পালছে। তক্কে বাঁচিয়ে রাখার জন্য মাছ, তেলাপোকা এসব খাওয়াচ্ছে।
জয়নাল মাথা নাড়ে। চায়ের কাপ টেবিলের ওপর নামিয়ে রাখে। তারপর বলে, ৩শ’ থেকে ৫শ’ গ্রাম ওজনের একটা কক্কে দিলে ওরা ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা দেয়।
মাউ গড! ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা! তা ওরা কারা? মেহেদী ভাইয়ের মুখে চাপা উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
ওরা হইল ফরেন পার্টি।
ও।
ঝুমা বলে, একদল ফরেন স্মাগলার এতে ইনভলব হয়েছে ভাইয়া। ওরাই বাংলাদেশের প্রকৃতি-পরিবেশের বারোটা বাজাচ্ছে।
রিয়াদ চায়ে চুমুক দেয়। সে সামান্য হতাশ বোধ করে । কোনওদিন কাছ থেকে কক্কে দেখা হয়নি। কেবল দূর থেকে ডাক শুনেছে। ওদের দেশের বাড়ি কুলাউড়ার ব্রাহ্মণবাজার। বাড়ির পিছনের শিমূল গাছ, পাকুর গাছ আর অর্জুন গাছের জঙ্গল। সেসব অন্ধকার অন্ধকার গাছপালায় তক্ষকের বাস। তারাই ডাকত। রিয়াদ ছেলেবেলায় শুনেছে। দাদী তখনও বেঁচে ছিলেন। দাদী বলতেন, রিয়াদ, কক্কে ডাকে রে শোন। ওই বয়েসেই রিয়াদ কী ভাবে যেন বুঝত ... বাড়ির পিছনের ওই যে শিমূল গাছ, পাকুর গাছ আর অর্জুন গাছের জঙ্গল আর সেসব অন্ধকার অন্ধকার গাছপালায় জীবন্ত তক্ষক ...তার ডাক ... এইসব একাকার প্রাকৃতিক জীবনযাপন থেকে ওর দাদীও বিচ্ছিন্ন নন; আর বিচ্ছিন্ন নন বলেই দাদীর মন এত স্নেহময়ী, নরম আর কোমল। যে কারণে হতাশ বোধ করে রিয়াদ । লোভী চোরাচালানিরা ওই নিরীহ প্রাণি ধরে ধরে বিদেশি স্মাগলারদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে। এই চক্রে জড়িয়ে গেছে অনেক যুবক। জয়নাল তাদেরই একজন। ঘরের সেই টিকটিকিটার কথা তার মনে পড়ল একবার । দ্রুত একবার দেয়ালে চোখ বোলায়। না নেই। কোথায় পালিয়ে আছে। ফ্ল্যাটবাসী টিকটিকিটার আকার বেশ বড় বলে রিয়াদকে মাঝেমাঝে ভাবিয়ে তোলে। কোনও ধরণের 'মিউটেশন'- এর ফল নয় তো? সেদিন অবশ্য টিকটিকিটার একটা ছবি তুলতে পেরেছিল রিয়াদ। ফেসবুকেও "শকিং" ছবিটা আপলোড করেছিল। ভারি হইচই পড়ে গিয়েছিল। 'ফটোশপের কাজ' বলে অনেক গালমন্দও খেয়েছে ...
রিয়াদের দিকে তাকিয়ে জয়নাল বলে, আমার ফেরেন্ড রমজানে কইছে সিলেটে নাকি তক্কে আছে বেশি। আমার মায়ে কইল তোগো নাকি কুন আত্মীয়স্বজন থাকে কুলাউড়ায়?
ঝুমা বলল, কুলাউড়ার ব্রাহ্মণবাজার আমার দাদার বাড়ি। আমার এক ফুপু থাকেন সেখানে।
রিয়াদ- এর এই ফুপুর নাম আলাতুন। বিধবা। অনেক বয়েস হয়েছে আলাতুন ফুপুর। চোখেও কম দেখেন। তবে যক্ষের ধনের মতো বাপদাদার ভিটেমাটি আঁকড়ে ধরে রেখেছেন। বাড়ির পিছনে অন্ধকার অন্ধকার গাছগাছালির জঙ্গল এখনও আগের মতোই আছে। গত বছর একবার কুলাউড়া থেকে ঘুরে এসেছে রিয়াদ। তখন দেখেছে।
রিয়াদ -এর ভুঁরু কুঁচকে যায় । জয়নাল তাহলে প্ল্যান করেই এসেছে। ধান্ধাবাজ একটা ছেলে। কয়েকদিন আগে ফোন করে বলেছিল, তর লগে আমার কথা আছে। কথা তাহলে এই?
জয়নাল কুলাউড়া যেতে চায়। বলল, রিয়াদ তুই আমার লগে চল।
রিয়াদের গা গুলিয়ে ওঠে। বলে, না, না। আমি এখন যেতে পারব না। উনিশ তারিখ থেকে আমার পরীক্ষা।
কথাটা অবশ্য একেবারে মিথ্যে নয়।
জয়নাল এবার মেহদী ভাইকে সরাসরি কমিশনের প্রস্তাব দেয়। সিক্সটি-ফোরটি। মেহেদী ভাইয়ের গায়ের রং ফরসা। তার মুখটা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। বছর খানেক হল মেহেদী ভাই চাকরি করছে । বিয়ের কথাবার্তা চলছে। মা পাত্রী দেখছেন। বিয়ের আগে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কয়েক লাখ টাকা জমা হলে মন্দ কি। তারপরও আমতা আমতা করে মেহেদী ভাই বলে, আমার অফিস আছে রে জয়নাল । এখন তো ছুটি নেওয়া যাবে না। আমি ছুটি ম্যানেজ করে পরে তোকে জানাব।
ছিঃ! তুমি তক্ষক ধরবে ভাইয়া! ঝুমা চেঁচিয়ে ওঠে।
হ্যাঁ। সমস্যা কি? মেহেদী ভাইয়ের কন্ঠস্বর শীতল। মুখের ভাব নিমিষে কেমন বদলে গেছে। রিয়াদ অবাক। হাসিখুশি ভাইটা কমিশনের কথায় এভাবে বদলে গেল।
ঝুমা বলে, জান না বন্যপ্রাণি বিদেশে পাচার নিষিদ্ধ।
জয়নাল খ্যাকখ্যাক করে হাসে। বলে, বাংলাদেশের আইনকানুন হইল কুত্তার ল্যাজের নাহান। এইখানে টেকা দিলে সব সাইজ ...
কথাটা শুনে ঝুমার ফরসা মুখটা কালো হয়ে উঠল। বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রকোপ স্বীকার করলেও বাংলাদেশের সামগ্রিক চিত্র যে এমন হতাশাজনক ঝুমা তা কখনোই মানতে চায় না। অল্প অল্প কাঁপছে ঝুমা। ও উঠে দাঁড়ায়। তারপর ধুপধাপ পা ফেলে চলে যায়।
ঘটনা ঘটল দিন কয়েক পর। সকাল বেলায়। এর মধ্যে জয়নাল বেশ ক’বার ফোন করেছে। মেহেদী ভাই নেকস্ট উইকে ছুটি পাবে বলে জানিয়েছে। ওদের নেকস্ট বৃহস্পতিবার রাতের ট্রেনে কুলাউরা রওনা হওয়ার কথা। ঝুমার সঙ্গে মেহেদী ভাইয়ের কথা একরকম বন্ধ। মেহেদী ভাই অবশ্য ঝুমার অভিমান গায়ে মাখছে না। মেহেদী ভাই বিপুল কমিশনের স্বপ্ন বিভোর। মেহেদী ভাই ঝুমাকে স্নেহ করে, একমাত্র বোন; কাজেই তার আচরণ অস্বাভাবিক লাগছে রিয়াদ-এর কাছে।
ছুটির দিনের সকাল । এগারোটার মতো বাজে। ডাইনিং টেবিলে বসে নাশতা খাচ্ছিল রিয়াদ । চোখ টিভির দিকে। চ্যানেল নাইন বিপিএল- এর খেলা পুনঃপ্রচার করছিল। নাসির হোসেন এইমাত্র একটা তুরুখ চার পেটাল। ব্যাট চালানোয় কী নিপুন শৈলী ছিল,ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দেয়; রিয়াদ ওর ভিতরে ঝিরঝির স্পন্দন টের পায়।
নাশতা শেষ করে একবার বাজারের দিকে যাবে রিয়াদ। ড্রইংরুমে রোদ। মেহেদী ভাই বসে সোফায় । পরনে পায়জামা-পাঞ্জাবি। মেজাজ ফুরফুরে। আজ বিকেলে মেয়ে দেখতে যাওয়ার কথা মীরপুরে। মেহেদী ভাই টিভি দেখছিল না। নতুন কেনা অ্যানড্রয়েড মোবাইল নিয়ে ঝুঁকে নিবিষ্ট হয়ে আছে।
রিয়াদ এর খাওয়া প্রায় শেষ। ঝুমা চা নিয়ে এল। মা রান্নাঘরে। ছুটিছাঁটার দিনে মা-ই রান্নাবান্না করে। অন্যদিন ঝুমা। ঝুমা এরই মধ্যে কুলাউড়ায় ফোন করে আলাতুন ফুপুর সঙ্গে কথা বলেছে। বলেছে, মেহেদী ভাইয়া একটা বাজে লোককে নিয়ে তক্কে ধরতে তোমার ওখানে যাচ্ছে ফুপু। তক্কেগুলি যাতে পালিয়ে যায় তুমি সেই ব্যবস্থা কর।
আলাতুন ফুপু কথাট বুঝতে পারলেন কিনা কে জানে।
আর এভাবে লোভী মানুষের হাত থেকে তক্কে বাঁচানো যাবে কি না সে ব্যাপারেও রিয়াদ নিশ্চিন্ত নয়। ... ও দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
হঠাৎই দেয়ালের দিকে চোখ যেতেই সেই টিকটিকি দেখতে পেল রিয়াদ। মেহেদী ভাইও দেখেছিল। নইলে সে দ্রুত ঝুঁকে স্যান্ডেল তুলে দেয়ালের দিকে ছুঁড়তে যাবে কেন?
না! ভাইয়া! না! ঝুমা চিৎকার করে ওঠে।
ফটাস শব্দে দেয়ালে স্যান্ডেল আছড়ে পড়ে । টিকটিকিটা পড়ে যায় ফ্রিজের ওপাশে ...
কি হল রে? মা রান্নাঘর থেকে বলে।
ঘটনার আকস্মিকতায় রিয়াদ জমে গেছে। সে টের পায় তার শরীরের রক্ত দ্রুতগামী হয়ে উঠেছে।
মেহেদী ভাই ফ্রিজের কাছে পৌঁছে গেছেন। এরই মধ্যে মোবাইলে কাকে যেন কল করে ... জয়নাল? হ্যাঁ। একবার আয় তো ... হ্যাঁ, হ্যাঁ তক্কে ...আরে, গাধা। না দেখলে বুঝবি কি করে ... না, না, মারা যায়নি ... মারা যায়নি ... হ্যাঁ, আয় ... টিকটিকিই ... তবে বড় সাইজ ... দেখে ছোট সাইজের তক্কে বলেই মনে হয় ... আচ্ছা, এখুনি আয় ...
১৭ ই এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ২:৩৭
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ২:৪২
ইলুসন বলেছেন: আমাদের বাসায় এমন বড় সাইজের দুইটা আছে। এত বড় কেন আপনি জানেন? মিউটেশনের কথা লিখেছেন দেখলাম।
১৭ ই এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ২:৫২
ইমন জুবায়ের বলেছেন: আসলে আমাদের বাসাতেও এমন বড় সাইজের দুই/একটা টিকটিকি আছে। দিন কয়েক আগে আমার এক আত্মীয় অযাথা একটা টিকটিকি মারতে গেল দেখে প্লটা মাথায় এল। ...আর টিকটিকির সাইজ বড় দেখে আমিও মিউটিশনের কথা ভেবেছি ঠিকই তবে এ বিষয়ে প্রকৃত ব্যাখ্যার জন্য একজন প্রাণিবিজ্ঞানীর শরণাপন্ন ছাড়া উপায় নেই বলে আমি মনে করি।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
৩| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ২:৪৫
ঈষাম বলেছেন: আপনার লেখা অলটাইম দারুণ লাগে..
১৭ ই এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ২:৫২
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
৪| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৩:০২
রাহি বলেছেন: ভালা হইছে। পিলাচ
:-<
১৭ ই এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৩:০৯
ইমন জুবায়ের বলেছেন:
৫| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৩:১৬
রেজোওয়ানা বলেছেন: তক্ষক!
আমাদের ভার্সিটির হলের একটা ফ্রেশরুমে দুইটা তক্ষক বাস করতো, এবং সকাল দুপুর রাতে বিকট গলায় চিৎকার চেচেমেচি করতো! কালোর উপর সাদা সাদা গোল ছিট আছে গায়ে, আর পায়ের আঙ্গুল গুলো বেশ ছড়ানো!
মোটামুটি ভয়াবহ একটা প্রাণী!
আর সেটাকে নিয়ে এমন সুন্দর একটা গল্প লিখে ফেললেন!
১৭ ই এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৫:১১
ইমন জুবায়ের বলেছেন:
Click This Link
৬| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৩:১৮
রেজোওয়ানা বলেছেন: আর তক্ষক বেশ বড়, লম্বায় আধা হাত হবে!
১৭ ই এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৫:১৪
ইমন জুবায়ের বলেছেন: এইটা অবশ্য বিদেশি; নাম Tokay Gecko (Gekko gecko)
৭| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৫:২৪
আবু সালেহ বলেছেন: এই ব্যাটাকে নিয়ে এত সুন্দর গল্প লিখে ফেললেন....!!!
শুভ বৈশাখ.....
১৭ ই এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৫:২৭
ইমন জুবায়ের বলেছেন: শুভ বৈশাখ
৮| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ১২:৪৪
তৌফিক জোয়ার্দার বলেছেন: তক্ষকের জন্য খারাপ লাগছে
১৮ ই এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ১:২৪
ইমন জুবায়ের বলেছেন:
৯| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ১২:৫১
রুহান রুহান বলেছেন: ভাল লাগলো। প্লাস।
১৮ ই এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ১:২৫
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ।
১০| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:২৪
সোমহেপি বলেছেন: আমার রুমের নতুন একজন লোক এসেছে একদিন এসেই কাকে যেন ফোন-
ওবা কক্কে বালানি?আও বা আও।আধ ঘন্টার ভিতরত আও।
কিছুক্ষণপর তিনজন লোক এসে হাজির।নাম ক,খ,গ।
ক-তো কিতা বা গ তোমার কক্কের কিতা খবর ?২৫০গ্রাম অইছেনি?কয় পিস আছে কও।
গ-আছে বা কয়টা।দাম কত দিবা আগে কও।
ক-২৫০ গ্রাম পুরাপুরি আছে নি ।
গ-আছে বা আছে।
খ-কক্কে এইডা কিতা বা?
গ-(হাসতে হাসতে)মাল বে।ঐশ্বরীয়ার লাহান মাল ।খাইতে নি?
(সমস্বরে হাসি)
সেদিন থেকেই এর কাহিনীটা ভাল করে বুঝলাম।কয়েকদিন পর দেখি কোন একটা পত্রিকাতে একটা ফিচার ছেপেছে তক্ষক নিয়ে।
কতগুলো আকামলা মানুষ দুইদিন পর পর একেকটা হুজুগ তোলে।যত্তসব ফাউল কাজ আর কি।
২৪ শে এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৪:৩০
ইমন জুবায়ের বলেছেন: যত্তসব ফাউল কাজ আর কি।
আসলেই
১১| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৫৫
সানজিদা হোসেন বলেছেন: আমরা অনেক লোভী হয়ে যাচ্ছি। হিন্দি সিরিয়াল দেখে আমাদের গা ভরে গয়না পরতে ইচ্ছে হয়। রঙবেরং এর জামা কাপরে আমরা জীবনের রং খুঁজে পাই।
২৪ শে এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৫:৫৬
ইমন জুবায়ের বলেছেন: দিন দিন আমরা কেমন বিবর্ণ হয়ে উঠছি
১২| ১৯ শে এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৪:৪২
অক্টোপাস পল বলেছেন: ঢাবির হলগুলোতে টিকটিকির সাইজ দেখলে অবাক হতে হয়। এক একটা যেন মিনি ডাইনোসর! বিঘৎ খানেক লম্বা একটা আছে বাথরুমে।
২৪ শে এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৫:৫৭
ইমন জুবায়ের বলেছেন: সাইজ এত বড় কেন-প্রশ্ন সেটাই।
ধন্যবাদ।
১৩| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১২ রাত ১২:৩৫
অনিক আহসান বলেছেন: তক্ক নিয়া হূজূগের সময় আমি ঠাকুর গায়ে একটা যোগার করছিলাম.।.। কিছু খায় না দেখে ব্যাটা বদরে আবার দুই দিন পড়ে ছেড়ে দিছি ।
২৪ শে এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৫:৫৭
ইমন জুবায়ের বলেছেন: ১ কোটি টাকা লস!
১৪| ০২ রা মে, ২০১২ রাত ১০:৫৩
জেরী বলেছেন: আমি টিকটিকি,তেলাপোকা,মাকড়সা,পিপড়া এদেরকে মারি না। মারলে মনে হয় এরা অভিশাপ দিবে। হোষ্টলে থাকতে আমার বান্ধবী এই কথা বেশ ভালোভাবেই মাথায় লগইন করাইছে। তবে তেলাপোকা সামনে পরলে না মেরে উল্টা করে সাইডে ফেলে রাখি
০৩ রা মে, ২০১২ সকাল ১১:৪৮
ইমন জুবায়ের বলেছেন: সেই ভালো ...
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ২:৩১
খামখেয়ালী বলেছেন: চমৎকার.
+++